ভারতের নির্বাচনের ফলাফল ও প্রতিক্রিয়া প্রভাব
গৌতম দাস
ভারতের নির্বাচনে অন্তত পাঁচটা মিডিয়ার পরিচালিত সবগুলো জনমত জরিপ আর পরে ভোটের বুথ ফেরত নির্বাচন জরিপের ফলাফলের ইঙ্গিতকে সত্যি প্রমাণ করেছে ১৬ মে থেকে চলমান প্রকাশিত আসল নির্বাচনী ফলাফল। এসব অনুসরণ করে রিপোর্টের সর্বশেষ অবস্থা দেখা গেছে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি জোট ছাড়াই একা বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা (২৭২ আসনের বেশি) অর্জন করেছে। আর বিজেপির জোটের মিলিত মোট ৩৪২ আসনের দিকে ধাবমান। বহু রাজ্যেই লোকসভা আসনের সবগুলোই বিজেপি নিজের ব্যাগে ঢুকাতে সফল হয়েছে। ইতোমধ্যে ভারতের মিডিয়া আলোচনা মন্তব্য টকশোতে এমন সংখ্যাগরিষ্ঠতায় বিজেপি উঠে আসার পিছনের কারণ খুঁজতে মোদি “আসছে” এই ঝড় একটা প্রধান কারণ বলে সকলে একবাক্যে স্বীকার করতে শুরু করেছে। অন্যান্য কারণ হিসাবে যথাক্রমে দুর্নীতি, দ্রব্যমুল্য আর কুশাসন কে বলা হচ্ছে। আমরা মোদি ঝড় কথাটার অর্থ কি সেদিকে আমাদের মনোযোগ দিতে পারি।
ভারতের জনগণের প্রধান আকাঙ্খার অভিমুখ ফলে এই অর্থে আকাঙ্খিত রাজনীতির অভিমুখ হল -কাজ সৃষ্টি, মানে বিনিয়োগ ব্যবসায় অগ্রগতিতে কাজ সৃষ্টি – রাইজিং ইকোনমি এসব। ভারত যে সম্ভাবনার মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে, এতে এর অভিমুখ যা তৈরি হয়েছে এককথায় সেটাকে বলা হয় “রাইজিং ইকোনমির” দেশ হওয়ার সম্ভাবনাকে বাস্তব করে তোলার বাসনা। যদিও এটা সম্ভাবনা, করে দেখানো হয়ে গেছে এমন নয়। সেজন্য একে বাস্তব করে দেখাতে এই সম্ভাবনার ইঙ্গিতের রাজনৈতিক অর্থ তাতপর্য বুঝবার মত রাজনীতি, তা পরিচালনার জন্য রাজনৈতিক নেতৃত্ত্ব, সংশ্লিষ্ট করণীয় কাজের হোম ওয়ার্ক প্রস্তুতি, প্রয়োজনীয় দক্ষতা ও যোগ্য হয়ে উঠা – এই সব মিলিয়ে এক শব্দে বললে দরকার এক যোগ্য রাজনীতি ও নেতৃত্ত্ব। গত নির্বাচনে ২০০৯ সালের সময় ভারত ছিল “রাইজিং ইকোনমি” হয়ে উত্থিত হতে পারে কি না সে অর্থে উত্থানের পর্বে। কংগ্রেস জনগণের মধ্যে আশা আকাঙ্খার আস্থা তৈরি করতে পেরেছিল, তাই জিতেছিল। কারণ ইতোমধ্যেই নতুন নতুন কাজ সৃষ্টি হতে দেখা শুরু হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু গত পাঁচ বছরে এটা ক্রমশ সকলের কাছে প্রকাশিত হয়ে পড়ে যে কংগ্রেস একাজের অযোগ্য। বড় বিদেশি বিনিয়োগ যা ভারতে এসেছিল সেগুলোকে কাজের কনট্রাক্ট দেবার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের শক্ত নীতিগত নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতার উপর দাঁড়িয়ে সামঞ্জস্যপুর্ণ ও উপযুক্ত আইন-কানুন তৈরি আর এর অধীনে এক দক্ষ বিতরণে ব্যবস্থা হাজির করতে কংগ্রেস সরকার সীমাহীনভাবে ব্যর্থ বলে প্রমাণিত হয়েছে। প্রমাণ হয়েছে কংগ্রেস বিনিয়োগ সামলানোর অযোগ্য। ভারত কি হতে চাইছে সেই অভিমুখ সম্ভাবনা বুঝতে সে অক্ষম। মোবাইল ফোনের লাইসেন্স দেয়া, কয়লা তোলার কন্ট্যাক্ট দেয়া ক্ষেত্রে বড় দুর্নীতি এগুলো এর প্রমাণ। আবার বিদেশি বিনিয়োগ আসার পর সেগুলো ভারতে কেমন করে কাজ করবে রাষ্ট্র কতটা কিভাবে কেন তা নিয়ন্ত্রণ করবে এই প্রশ্নে কংগ্রেস প্রধানত মনমোহনমুখী আর মনমোহন বিশ্বব্যাংকের অনুসৃত কাছাখোলা নীতিতে। তেল ঘি সব একদর করে ফেলা। ইনসুরেন্স ব্যবসা (বিশেষ করে মেডিকেল ইন্সুরেন্স), শেয়ার বাজার, রিটেল চেন শপ ইত্যাদির উতপাদন নয় টাকায় টাকা আনার মত ব্যবসার জায়গায়ও বিদেশী বিনিয়োগকে প্রবেশাধিকার দিতে তিনি কসুর করেন নাই। কারখানা বা উতপাদক পুঁজি আর ব্যাংকের মত টাকার ব্যবসায় পুঁজি – পুঁজির এই দুই চরিত্রের মধ্যেও মোটাদাগের কোন ভাগ বাছবিচার তিনি আরোপ করেন নাই। অর্থনীতি এই দুইয়ের ভুমিকা প্রভাব প্রতিক্রিয়া যে দুই রকম হবে তা তিনি বুঝে বা মেনে চলতে চান নাই। দিন শেষে যখন টের পেয়েছেন পুঁজির এমন সারকুলেশন বা বিচলনে এতে ভারতের ভাগে কিছু জোটে নাই, বরং আসা পুঁজি মুনাফাসহ আবার ভেগে গেছে তখন খুদে দোকানদারের মাইয়োপিক চোখে দেখার মত স্বভাবে ট্যাক্স আরোপ করতে গেছেন। ফলে তা বিয়ে ফুরিয়ে বাজনার মত হয়েছে। শেষ বেলার এই আচমকা ঝটকায় এতে বাকি যারা বিনিয়োগকারি ছিল এবার তাদের এক বড় অংশ ভেগে যাওয়া শুরু করেছিল। রেট্রস্পকেপ্টিভ এফেক্টে অর্থাৎ বিনিয়োগের ভারতে প্রবেশের আগে জারি করা নয় বরং বিনিয়োগ এসে কয়েক বছর ব্যবসা করার পর এবার ট্যাক্সের আইন জারি ও তা আগের প্রবেশের সময় থেকে প্রযোজ্য হবে বলে ঘোষণা দেওয়াতে সরকারকেই আদালতে মামলা খেতে হয়েছে এবং বিদেশি বিনিয়োগকারির কাছে সর্বোচ্চ আদালতে হারতে হয়েছে। আর এর নীট লাভালাভ হল সরকার ও সরকার পরিচালনার উপর বিনিয়োগকারিদের অনাস্থা, অবিশ্বাস। এক পর্যায়ে এর সামগ্রিক ফলাফল রুপির মারাত্মক দরপতন – মানে সম্পদ পাচার বা বের হয়ে যাওয়া। “রাইজিং ইকোনমির” রাইজিং-এ ছেদ পড়া। সাধারণ জনগণের দিক থেকে দেখা দৃষ্টিতে এগুলোই দুর্নীতি, দ্রব্যমুল্যবৃদ্ধি আর কুশাসন ইত্যাদি – শব্দগুলোর অর্থ এটাই।
বিপরীতে মোদিকে যদি দেখি তিনি সারা ভারতের তুলনায় অবশ্যই ছোট আর রাজ্যগুলোর তুলনায় এক মধ্যম সাইজের রাজ্য সফলভাবে চালিয়েছেন। গত ১২ বছর ধরে পরপর তিন টার্মের মুখ্যমন্ত্রী, ব্যবসা-বান্ধব বা ব্যবসা-ফোকাসের রাজনীতির মোদি তিনি। তাঁর প্রশাসন মানে তাঁর রাজ্যে “কাজ সৃষ্টি” একাজে তিনি সফল। সারা ভারতব্যাপী ব্যবসা-বিনিয়োগ সহায়ক ও উপযোগি হিসাবে কে কেমন সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রণালয়ের এক ষ্টাডিতেও মোদির রাজ্য প্রশংসিত। একা তাঁর গুজরাট রাজ্যের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৮-১০% তুলনায় সারা ভারতের গড় ৫%। ফলে মোদির সফলতা কেবল রাজনৈতিক প্রচারণা নয়। এসব কারণে হতাশগ্রস্থ আকাঙ্খা মার খাওয়া জনগণ এবার মোদির উপর বাজি ধরতে ছুটে এসেছেন। ইলেকশন কৌশলের দিক থেকে মোদিকে আগেই হবু প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসাবে বিজেপির সভায় আগাম পাশ করিয়ে নেয়া ও নির্বাচনের বহু আগে থেকেই তা প্রজেক্ট করা খুবই গুরুত্ত্বপুর্ণ ও নির্ধারক ভুমিকা রেখেছে। এটা হতাশ জনগণের কাছে প্রধান ম্যাসেজ, আশার আলো হিসাবে খুবই কাজ করেছে। এবিষয়টাকেই মোদি জ্বর বা মোদি ঝড় বা মোদি ফ্যাক্টর বলে চেনানো হচ্ছে মিডিয়ায়। গত ২০০৯ সালের নির্বাচনে বিজেপির মোট ভোট ছিল ২০%। এবার এপর্যন্ত গণনায় এটা ৫৩% এর কাছাকাছি, বিপরীতে কংগ্রেসের জোটসহ হিসাবে এবার সম্ভাব্য ৬১ আসন বা ২৩% ভোট। পাঁচ বছর আগের ২০% জন সমর্থনকে টেনে ৫৩% এ আনতে পারার সাফল্যের রহস্য যে মোদি ফ্যাক্টর তা আজ আর কেউ অস্বীকার করতে পারছেন না। এমনকি বিজেপির বয়স্ক নেতা এল কে আদবানী যিনি মোদির প্রধানমন্ত্রী পদের এতদিন ন্যাচারাল দাবিদার ছিলেন, মোদিকে প্রধানমন্ত্রী করার দলীয় সিদ্ধান্তে যিনি সবচেয়ে অখুশি এবং দল থেকে পদত্যাগও করেছিলেন একবার তিনি নির্বাচনের ফলাফলের পর প্রথম মিডিয়া মন্তব্যে বলছেন দলের এই বিশাল বিজয়, মোদির এই বিশাল উত্থান কেন হল তা বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে নিজের সহ সব দলের রাজনীতিকের জন্যই জরুরি।
আবার মোদি ঝড় বা হিন্দিতে লহর বা বিশাল ঢেঊ ভারতে (যেগুলো ৫-১৫ লোকসভা আসনের) ছোট এবং নতুন গঠন করা রাজ্য (যার আসল অর্থ এগুলো সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া অঞ্চল তাই তাদের প্রতিবাদ চিতকারের ফলে প্রথম অর্জন আলাদা রাজ্য মানে আলাদা করে কেন্দ্রীয় রিসোর্স এলোকেশন বা কেন্দ্রের হাতে থাকা সম্পদের ভাগ নেয়ার উদ্যোগ) সেসব রাজ্যেও মারাত্মকভাবে পড়েছে। দেখা গেছে এসব রাজ্যের সবগুলো আসন একচেটিয়া বিজেপির পকেটে। যেমন উত্তরাঞ্চল ৭ আসনের ৭ টাই, ছত্রিশগড় ১১ আসনের ৯ টা, আর ঝাড়খন্ডে ১৪ আসনের ১২ টা সবগুলো বিজেপির পকেটে এসেছে। এর অর্থ মোদি উত্থান বা ব্যবসা-বিনিয়োগের প্রতীক মোদির উঠে আসার অর্থ তাতপর্য তারাও ঠিকই বুঝেছে। তাই ঢেলে ভোট দিয়ে জিতিয়েছে। বিজেপির সবসময়ের খারাপ অবস্থার রাজ্যগুলোর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ ও দক্ষিণ ভারতের কেরালা বা তামিলনাড়ু অন্যতম। এক পশ্চিমবঙ্গে তুলনামূলক অর্থে ভাল বলতে হবে – এখানে আগের মাত্র এক আসনের বদলে এবার অর্জন দুই আসন। আর মমতার তৃণমূল কংগ্রেস খুবই ভাল করেছে। তাঁর মুসলিম কনষ্টিটুয়েন্সী দখলের নীতি কৌশল ঠিক মতই কাজ করেছে, ফল দিয়েছে এখন বলা যায় (এবিষয়ে আমার আগের লেখার শেষ অংশে কিছু গুরুত্বপুর্ণ অবজারভেশন আছে, আগ্রহিরা দেখতে পারেন); পশ্চিমবঙ্গের মোট ৪২ আসনের মধ্যে মমতার তৃনমূল কংগ্রেস একাই ৩৪ আসন পকেটে পু্রতে পেরেছে। এতে বামফ্রন্টের গত নির্বাচনের তুলনায় এবার ১৫ আসন হারানো আর মমতার তা লাভ ঘটেছে। ওদিকে কেরালায় মোদির বিজেপি শুন্য আসনেই থেকে গেছে। আর তামিলনাডুতে গত পঁচিশ বছরে ধারাবাহিকতায় বিজেপি বা কংগ্রেস ধরনের কোন সর্বভারতীয় দলের স্থান সেখানে নাই সেটাই বজায় থেকেছে। তামিলনাড়ুর দুই ডিএমকে দলের পাল্টাপাল্টি সব আসন পাওয়া রেওয়াজে এবারের পালা জয়ললিতার আন্না-ডিএমকের, মোট ৩৯ আসনের মধ্যে তাঁর পকেটে ৩৭ আসন। আর বাকি দুটা বিজেপির। তবে এবার অন্য ডিএমকের (নেতা করুণানিধি) ভরাডুবি্র ক্ষেত্রে এক বিশেষ ইস্যু ছিল। কারণ থ্রি-জি বা মোবাইল লাইসেন্স বিতরণে অর্থ-দুর্নীতি আদালতে প্রমাণিত হওয়ায় করুণানিধির দলের প্রতিনিধি হিসাবে কেন্দ্রীয় টেলিফোন মন্ত্রী এখন জেলখানায়। করুণানিধির ডিএমকে বিগত কংগ্রেস সরকারের জোট সদস্য। সবচেয়ে তাতপর্যপুর্ণ ফলাফল এসেছে উত্তরপ্রদেশে। মোট ৮০ আসনের মধ্যে ৭৩ আসন বিজেপি জোটের পকেটে। শুধু এতটুকুওই নয় এর আর এক বিশেষ অর্থ আছে। উত্তর প্রদেশের মায়াবতীর বিএসপি কোন আসন পায় নাই, আর সমাজবাদী দল যারা বর্তমানে রাজ্য সরকারে আছে তারা পেয়েছে মাত্র ৫ আসন। এই দুই দলকে পরাজিত করার তাতপর্য হল এরাই কংগ্রেসের সাথে হর্স টেডিং কোন জোট সরকার করার হুমকি হয়ে উঠত। অথবা কংগ্রেস বাদে কোন তৃতীয় জোটের মুল উপাদান হত। ফলে সবচেয়ে বেশি আসনের রাজ্য, উত্তর প্রদেশে ৭৩ আসন মোদির জয়লাভের জন্য খুবই নির্ধারক। অন্যদিকে বিহার। বিহারে ক্ষমতাসীন মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের আঞ্চলিক দল জেডিইউ নির্বাচনের আগে বিজেপি জোট ত্যাগ করেছিল। কিন্তু ফলাফলে দেখা যাচ্ছে নীতিশ কুমারের ১৮ আসন নিয়ে গেছে বিজেপি। বিহারের মোট ৪০ আসনের ৩১ আসন লাভ করেছে বিজেপি। এই হল মোদি লহর।
পুঁজিতন্ত্রের জমজমাট বিকাশ উত্থানের এক বিশেষ স্বভাব হল এই উত্থান এক মেল্টিং পট হয়ে হাজির হয়। মেল্টিং পট মানে নানান ধাতুর মিশ্রণ একপাত্রে রেখে সবাইকে গলিয়ে পুর্ব পরিচয় মিলিয়ে দেয়া। পুরানা ধরনের সব সামাজিক বিরোধ (যেমন ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকভাবে উত্থিত বিরোধ) একপাত্রে রেখে ঘুটা দিয়ে মিলিয়ে দেয়া বা কম প্রভাবের করে ফেলা – এসব ক্ষমতা পুঁজিতন্ত্রের জমজমাট বিকাশ উত্থানের আছে। এতে মানুষে মানুষে বিভেদমূলক পুরানা সব চিহ্ন লোপ পায়, সব বিরোধ এতে মিলিয়ে যায় না তবে পুরানা বিরোধ ও এর প্রকাশগুলো প্রভাবহীন হয়ে যায় আর নতুন নতুন সামাজিক বিরোধ নতুন রূপে হাজির হয়। এখন দেখা যায় এক পপুলার ধারণা হল কংগ্রেস অসাম্প্রদায়িক দল আর বিজেপি সাম্প্রদায়িক হিন্দুত্ত্বের দল। অথচ এই ধারণা ভিত্তিহীন। মূলত দুটোই হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল। তফাত খালি এটুকু যে হিন্দুত্ত্বের ভিত্তিতে সংগঠিত ভারতরাষ্ট্র খাড়া করার ব্যাপারে উভয় দলেরই ইচ্ছাটা কমন কিন্তু কংগ্রেস লুকিয়ে একে হাজির করে সেকুলারিজমের মোড়কে আর বিজেপি কোন লুকানোর ধার ধারে না। তফাত এতটুকুই। এজন্য বিজেপির বদনাম। জন্মভিত্তির দিক থেকে ও জন্মাবধি বিজেপি হিন্দুত্ত্ব না-লুকানো এক রাজনৈতিক দল। এবারের নির্বাচনে মোদির উত্থান – এটা অর্থনীতি বা ব্যবসাকে মুখ্য করা মোদির উত্থান, যদিও দল হিসাবে এটা সেই হিন্দুত্ত্ব না-লুকানো বিজেপিই। হিন্দুত্ত্ব না-লুকানো আসল এই ধারার প্রতীকি নেতা আদভানী। মোদির উত্থানের আগে পর্যন্ত তিনিই প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী ছিলেন। এর অর্থ ব্যবসায়ী মোদির উত্থান বিজেপির ভিতর নতুন মাত্রা তৈরি করেছে, এনেছে। একারণে এলেখায় সময়ে বিজেপি আর মোদির বিজেপি বলে একটা তফাত মেনে চলেছি। এখন ব্যবসা-অভিমুখি মোদি কি ব্যবসা বিনিয়োগে রাইজিং অর্থনীতির ইন্ডিয়ার নেতৃত্ত্ব দিতে এই নতুন পরিচয়কে প্রধান করে হিন্দুত্ত্বের রাজনীতিকে গৌণ করে পিছনে ফেলে হাজির হতে পারবেন? দলকে নতুন মুখ্য ভিত্তির উপর দাঁড় করাতে পারবেন? কথাটা পড়তে হবে হিন্দুত্ত্ব মুখ্য না গৌণ হবে এদিক থেকে, হিন্দুত্ত্ব এই ভিত্তি বাদ দেয়া অর্থে নয়। কারণ সেটা ফ্যান্টাসির আশা হয়ে যাবে। তাহলে আদবানীর বদলে মোদির উত্থান এর পক্ষে ম্যান্ডেট বা নির্বাচনে জনগণের রায় পাওয়া কথার অর্থ তাতপর্য হল রায়ের দিক থেকে এর ইঙ্গিত হল – হিন্দুত্ত্ব গৌণ করে ব্যবসা বিনিয়োগের দিক মুখ্য করে কাজ সৃষ্টির রাইজিং অর্থনীতির ইন্ডিয়ার নেতা হিসাবে দেখতে মোদিকে জনগণ রায় দিয়েছে। এই অর্থে এটা বিজেপি নয়, বরং মোদির বিজেপির জয় হয়েছে। এখন দেখার বিষয় মোদি জনগণের রায়ের অর্থ তাতপর্য রক্ষা কতটুকু করেন। সক্ষম হন।
মোদির নিজেকে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী ঘোষণার পরে পরে, আজ থেকে দুমাসের বেশ আগে এই অঞ্চলে আমেরিকান উপপররাষ্ট্র মন্ত্রী নিশা দেশাইয়ের সাথে মোদির আলোচনার বিস্তারিত কখনও মিডিয়ায় আসে নাই। মোদির রাইজিং ইন্ডিয়ার নেতা হয়ে হাজির হবার ক্ষেত্রে আমেরিকার সঙ্গে নীতি কৌশলগত আলাপ রফা কোথায় গিয়ে দাড়ায়, কি রূপ নেয় তা গুরুত্ত্বপুর্ণ। এটা মনে করার কারণ নাই যে এবিষয়ে তারা ইতোমধ্যে যথেষ্ট আলাপ আলোচনা করে নাই, যদিও মিডিয়ায় এর প্রকাশ নাই। সুনির্দিষ্টভাবে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে, বিগত কংগ্রেস সরকারের “আমার হাসিনা সরকারই চাই” এমন অবস্থান এটা আমেরিকার সাথে কংগ্রেসের ভারতের মুখ্য সংঘাতের পয়েন্ট ছিল। মোদির বিজেপির জয়লাভের সাথে সাথে অন্তত হাসিনার সাথে কংগ্রেস সরকার “বিশেষ সম্পর্কের” দিন গত হল; কারণ কংগ্রেস সরকারই গত হয়েছে। যদিও রাজনৈতিক নেতৃত্ত্ব অর্থে ভারত রাষ্ট্রের বদল ঘটেছে তবে ভারতের আমলা গোয়েন্দা ইত্যাদির প্রশাসন অর্থে ভারত রাষ্ট্র একই আছে। অবশ্য ভারতের প্রশাসন রাজনৈতিক নেতৃত্ত্ব বিনা তর্ক সুপ্রিম ও অনুসরণে বাধ্য একথা মেনে পরিচালিত হতে অভ্যস্ত। বাংলাদেশে “আমার হাসিনা সরকারই চাই” এমন অবস্থান ধরে রাখার পক্ষে – মোদির কোন দৃশ্যমান বিশেষ কারণ এখনও জানা যায় নাই। ফলে “বাংলাদেশের জনগণ যাকেই তাদের প্রতিনিধি ও নেতা নির্বাচিত করুক আমরা তার সাথেই কাজ করতে চাই” – এমন কমন এক অবস্থানে আমেরিকা ও মোদির সরকারকে আগামিতে আসতে দেখতে পাওয়া কঠিন কিছু নয়।
[এই লেখায় বহু ফিগার যা লেখা হয়েছে তা নির্বাচনের চুড়ান্ত ফলাফল নয়, বরং ট্রেন্ড হিসাবে যা লেখার সময় পর্যন্ত মিডিয়ায় হাজির হয়েছে সে ভিত্তিতে রচিত। চুড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হলে ফিগারগুলো অল্প কিছু অদলবদল হতে পারে।]
মোদির জয়লাভে বিশ্ব প্রতিক্রিয়া
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মোদিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। বাংলাদেশে প্রকাশিত মিডিয়া রিপোর্টে ঐ অভিনন্দন বার্তায় কি আছে এর তেমন ধারণা পাওয়া যায় না, সাদামাটা এক লাইনের রুটিন ধরনের এক বক্তব্য ছাড়া। কিন্তু ভারতের প্রভাবশালী ইংরাজি দৈনিক “হিন্দু” পত্রিকা এব্যাপারে কিছু আলো ঢেলেছেন। “হিন্দু” পত্রিকার ঐ রিপোর্টের শিরোনামটাই বেশ মজার “People trust you: Hasina tells Modi”। এছাড়া গুরুত্বপুর্ণ বন্ধনীযুক্ত করা শব্দাবলীগুলো মানে যেগুলো মূল চিঠি থেকে সরাসরি নেয়া সেগুলো এমনঃ ১। “ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কের বন্ধন “ক্রম উচ্চ শিখড়ে নিবার” লক্ষ্যে এক সঙ্গে কাজ করে যাবে। ২। ভারতের জনগণ আপনার (মোদির) প্রতি যে দৃঢ় রায় ব্যক্ত করেছে সেটা “আপনার ডায়নামিক, উদ্বুব্ধ করার যোগ্য এবং দুরদর্শী নেতৃত্ত্বের গুণাবলীর স্বাক্ষ্য দেয় এবং তা বৃহত্তম গণতন্ত্রের দেশের জনগণের আপনার উপর আস্থা ও বিশ্বাসের বহিঃপ্রকাশ”। ৩। ভারত ও বাংলাদেশ এক “স্বাভাবিক ও অটুট বন্ধনের পার্টনার” হিসাবে চিহ্নিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের উভয়ের অংশীদারি ইতিহাস ও সংস্কৃতি……আমাদের অবিচ্ছেদ্য বন্ধুত্ত্বের বন্ধন চিরদিনের মত পাকা হয়েছে যখন ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ ………”। ৪। অপ্রত্যক্ষভাবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পারস্পরিক সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য গুরুত্বপুর্ণ ল্যান্ডমার্ক উন্নতির কথার উদ্ধৃতি দিয়ে হাসিনা বলেন, “দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে দুই দেশ যৌথভাবে বড় বড় পা ফেলে সম্প্রতিকালে আগিয়েছে” আর জোর দিচ্ছে এর অনুভুত উষ্ণতা আমাদের “অবশ্যই সামনে এগিয়ে নিতে হবে”। ৫। সবশেষে মোদিকে বাংলাদেশ ভ্রমণের দাওয়াত দিয়ে হাসিনা বলেছেন, “বাংলাদেশ যেন তার প্রথম গন্তব্য হয়”। [এটা নিজ দায়িত্ত্বে করা ভাবানুবাদ, “হিন্দুর” মূল রিপোর্ট দেখতে লিঙ্কে ক্লিক করে নিতে পারেন]
বিএনপির বেগম জিয়ায়ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। অভিনন্দন বার্তায় খালেদা জিয়া আরো লিখেছেন, “দুই দেশে মধ্যে যেসব বিষয় এখনো অমীমাংসিত রয়েছে, সেগুলো স্বচ্ছ ও সামগ্রিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে পারস্পরিক লাভের ভিত্তিতে সমাধান খুঁজে বের করা সম্ভব হবে।’’ পুরা বিবৃতি এখানে দেখতে পারেন।
ওবামার অফিস হোয়াইট হাউস থেকে প্রেস সেক্রেটারি এক বার্তায় জানিয়েছে, তাঁরা ভারতের নির্বাচনে বিজেপির “ঐতিহাসিক” বিজয়ে মোদিকে অভিনন্দন জানাচ্ছে এবং হবু নতুন প্রধানমন্ত্রী মোদি সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে একসাথে কাজ করার অপেক্ষা করছে। এই প্রসঙ্গে রিপোর্ট এ দৈনিক হিন্দু অনুযোগের সুরে জানিয়েছিল, ইসরায়েল বা অষ্ট্রেলিয়াসহ অন্যান্য সরকার প্রধানের মত ওবামা মোদিকে – ব্যক্তিগতভাবে তখনও পর্যন্ত অভিনন্দন – জানায় নি। কিন্তু এই রিপোর্ট প্রকাশের চার ঘন্টা পরে আমেরিকান টাইমস অনলাইনে জানাচ্ছে, “ওবামা মোদিকে ফোনে অভিনন্দন জানিয়েছে এবং সুবিধাজনক সময়ে ওয়াশিংটন সফরের দাওয়াত রেখেছেন”। টাইমস মন্তব্য করেছে, ভারতীয় কুটনীতিক খোবড়াগোরাকে কেন্দ্র করে উভয়ের মধ্যে আনুষ্ঠানিক সম্পর্কে যে অস্বস্তি দেখা দিয়েছিল তা কাটিয়ে উঠে পুন উদ্যোগ শুরু করার সুযোগ হিসাবে নিয়েছে হোয়াইট হাউজ। ভার্জিনিয়ার সিনেটর Tim Kaine পুরা সিনেটের পক্ষ থেকে মোদিকে অভিনন্দন জানিয়ে এক বিবৃতিতে বলেছে, “We have a historic opportunity before us to leverage this partnership to make our citizens safer, healthier, and more prosperous. Let us seize this moment and ensure that the potential of our partnership is fully realized. Jai Hind.” লক্ষ্যণীয় তিনি বার্তা শেষ করেছেন একেবারে “জয় হিন্দ” বলে।
রাশিয়ারও সুযোগ হাতছাড়া না করারই কথা। রাশিয়ান পররাষ্ট্র মন্ত্রী বিবৃতিতে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
আমেরিকান এনজিও থিঙ্কট্যাঙ্ক, Carnegie Endowment for International Peace –এই প্রতিষ্ঠানের এক গবেষক Ashley J. Tellis এর লেখা ছাপিয়েছে দৈনিক হিন্দু পত্রিকা। তিনি বলছেন মোদির জয়লাভ ভারত-আমেরিকার সম্পর্কে নতু উদ্দীপনা এনেছে। তবে ২০০৫ সালে মোদিকে আমেরিকান ভিসা পাবার ক্ষেত্রে আপত্তি বা অনাকাঙ্খিত এটা জানানোর পরে হোয়াইট হাউজের এখন কেবল অভিনন্দন আর আমরা হবু নতুন প্রধানমন্ত্রীর সাথে কাজ করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় – এমন জানিয়ে যেন “যা হয়ে গেছে তা গেছে এখন ভুলে যাও” ধরনের বার্তা মোদির মন নরম করার জন্য যথেষ্ট হবে না বলে Ashley মনে করেন। তাঁর পরামর্শ, এজন্য একবার “সরি” বলা না হলেও নিদেনপক্ষে ওবামার ব্যক্তিগতভাবে মোদিকে ওয়াশিংটন ভ্রমণের জন্য দাওয়াত পাঠানো সঠিক পদক্ষেপ হতে পারে। এই পরামর্শের লাইনে কি না তা আমরা নিশ্চিত জানি না, তবে আগেই বলেছি ওবামা ফোনে মোদিকে অভিনন্দনসহ ভ্রমণের দাওয়াতও রেখেছেন এটা জানা গেছে। Ashley মনে করেন, আমেরিকা ও মোদি ভুল পথ যাত্রা দিয়ে শুরু করেছিল। তিনি ইঙ্গিত করছেন ২০০৫ সালে মোদিকে আমেরিকার ভিসা দেয়া সম্পর্কিত আপত্তি আরোপের বিষয়ে। Ashley বলছেন, তবে এর মানে মোদি গায়ে পরে আমেরিকার মন জয়ে চেষ্টা করবেন ব্যাপারটা তেমন নয়। এর ভিতরেও মোদি আমলে যদি ভারত-আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে কোন জোয়ার আসে সেটা ঘটবে ভারতের স্বার্থে প্রাথমিকভাবে কিছু পদক্ষেপে আগিয়ে থাকার কথা যদি মোদি চিন্তা করেন সেজন্য যদিও আমেরিকার তাতে বেশ লাভ হবে। মনমোহনের দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রীর জমানায় আমেরিকার-ভারতের সম্পর্ক গতি হারিয়েছিল বিশেষত তার অর্থনৈতিক নীতি উল্টামুখে চলতে শুরু করার জন্য আর আমেরিকার সাথে প্রতিরক্ষা ও ষ্ট্রাটেজিক সহযোগিতার ঝুলে পড়ার প্রশ্নে। Ashley অনুমান করেন, মোদি সম্ভবত উভয়ের স্বার্থে এই দুই ইস্যুতে ভারতীয় নীতিতে কিছু পরিবর্তন আনবেন। কারণ মোদি বুঝেন ভারতের প্রতিরক্ষা নীতিতে প্রতিরক্ষা বিষয়ক কেনাকাটা ও উচ্চ পর্যায়ের ব্যবস্থাপনা আগের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে এনথনির আমল থেকে পিছিয়ে পড়ে আছে। Ashley মনে করেন মোদির নেতৃত্ত্বে যদি ভারতের অর্থনীতি উঠে দাড়ায় তবে তা আমেরিকার জাতীয় স্বার্থের পক্ষে যাবে, এবং তা আমেরিকার এশিয়ান ষ্টাট্রেজিক লক্ষ্য পূরণের করবে। Ashley এর কথাগুলোকে এককথায় বললে, আমেরিকা-ভারতের সম্পর্কের রমরমা দিকটা আবার ফিরে আসুক এমন কামনা তাঁর লেখার প্রতিটা ছত্রে ফুটে বেরিয়েছে। Ashley এর মূল লেখাটা ছাপা হয়েছিল তাঁর প্রতিষ্ঠানের পত্রিকায় গত ১২ মে, সেটাই কাটছাট করে মোদির জয়লাভের খবরের পর এবার দৈনিক হিন্দু তে তা ছাপা হয়েছে। তবে একথা ঠিক ভারতের দিক থেকেও অন্তত প্রতিরক্ষা বিষয়ে ভারত-আমেরিকা সহযোগিতা ভারতের জন্য খুবই গুরুত্বপুর্ণ এমন অনুভব ভারতেরও, যা বর্তমানে গতি হারিয়ে বসে আছে।
ওদিকে পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়াও খুবই উষ্ণ, অধীর আগ্রহের।
এক প্রাক্তন চীনা কূটনীতিকের সাক্ষাতকার নেয়া হয়েছে। তিনি মনে করেন, মোদি “চীনের সাথে সম্পর্কের ইতিহাস পুনলিখিত করার ক্ষমতা রাখেন”। নির্বাচনী প্রচারণার সময় মোদি চীন সংলগ্ন ভারতের শহর অরুণাচলে চীনকে “সম্প্রসারণবাদী” বলে যে উত্তেজক বক্তব্য রেখেছিলেন সে ঘটনাকে এই কূটনীতিক একেবারেই তুচ্ছ করে কোন গুরুত্ব দিতেই রাজী হলেন না। বললেন ভারতের নির্বাচনে আসলে যেসব কথাবার্তা হয় তা আমাদেরকে পড়তে হবে আভ্যন্তরীণ ইস্যু হিসাবে। (domestic agenda and China was not a significant topic.) বরং ইন্ডিয়া-চীন সম্পর্ক এখন পরিপক্ক হয়েছে যে এসব বিষয় আভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ইস্যু করা হয় না। তিনি মোদির দিকে ইঙ্গিত করে এও বললেন, “ঐতিহাসিকভাবে দেখা গেছে চীন ডান-ঘেঁষা রাজনীতিক বা রাষ্ট্র নেতার সাথে সম্পর্ক সবচেয়ে ভালভাবে নাড়াচাড়া মোকাবিলা করতে পারে”।
সামগ্রিকভাবে দেখলে মোদির জয়লাভে সব বিদেশি রাষ্ট্রের ভিতরই একধরনের রিলিফ বা স্বস্তির ভাব দেখা গেছে যেন সকলে বহুদিন ধরে এক চাপের মধ্যে ছিল যেখান থেকে মুক্তির দিন, নতুন আশা, নতুন সম্ভাবনা সময় সমাগত। চীনের প্রতিক্রিয়াতেও এমন ভাবটাই আছে। যদিও Ashley আশঙ্কা করেছেন মোদির (মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মোদি এর আগে চারবার চীন সফর করেছেন) সাথে চীনের পুরানা ভাল সম্পর্কের কারণে না চীন আমেরিকার চেয়ে এগিয়ে যায়। এই হল মোটা দাগে মোদির জয়লাভে বিশ্ব প্রতিক্রিয়া।