নেপালে শ্রীলঙ্কার ভুত দেখছে নয়াদিল্লি


নেপালে শ্রীলঙ্কার ভুত দেখছে নয়াদিল্লি

গৌতম দাস
১৯ ডিসেম্বর ২০১৭, রবিবার, ০০:২১

https://wp.me/p1sCvy-2oW

 

অবশেষে এখন এ’কথা বলা যায় যে, নেপাল এখন নিজ রাষ্ট্রে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা কায়েম করতে পেরেছে এবং তা এগিয়ে যেতে পারবে। নেপালের প্রধান তিন দলের মধ্যকার দুটোই কমিউনিস্ট পার্টি। দুই কমিউনিস্ট পার্টি এবারের নির্বাচনে এক কমিউনিস্ট  জোট (‘লেফট অ্যালায়েন্স’) গড়ে নির্বাচনে লড়ে জিতেছে। অ্যালায়েন্স গঠনের ঘোষণা দেয়ার সময় এক কমিউনিস্ট, মাওবাদী দলের চেয়ারম্যান পুষ্প কমল দাহাল বলেছিলেন, এই অ্যালায়েন্স তাঁরা করছেন নেপালের রাজনীতিকে স্থিতিশীলতা দেয়ার জন্য, স্থিতিশীল সরকার দেয়ার জন্য [grand Left alliance will “end Nepal’s elongated political instability” ]। নেপাল গত ৯ বছরে বিপুল রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার ভেতর দিয়ে গেছে। এখন দাহালের আকাঙ্খা ও অনুমান সঠিক প্রমাণ হল। নেপালের এই নির্বাচনে কমিউনিস্ট অ্যালায়েন্স সংসদে ৭১ শতাংশের মতো আসন লাভ করেছে।

গত ১৯৯৬ সাল থেকে যদি ধরি, সশস্ত্র রাজনৈতিক লাইনে চেয়ারম্যান পুষ্প কমল দাহালের ‘মাওবাদী সেন্টার’ দল অথবা CPN (Maoist Centre)  প্রথম যখন রাজতন্ত্র উৎখাত ও ক্ষমতা দখলের লড়াই ঘোষণা দিয়ে শুরু করেছিল। সেই থেকে হিসাব কষতে বসলে গত ২০ বছরের বেশি সময়, এটা রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনের দিক থেকে অবশ্যই নেপালের জনগণের এক বিরাট লম্বা পথপরিক্রমা। আর কে না জানে লক্ষ্যে পৌঁছানোতে পথ যত লম্বা হয়ে যায়, ততই সেখানে আরো বেশি অনিশ্চয়তা হাজির হয়ে যায়, আর তা বিপজ্জনক হয়। তবুও আজ প্রায় ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম শেষে এক কথায় বললে নেপালের সাফল্য অনেক। আর এতে অন্তত তিনটি বড় অর্জন আছে।

এক. শত বছরেরও বেশি পুরনো নেপালি রাজতন্ত্রের শাসনকে উৎখাত ও অবসান ঘটানো। দুই. দুইবারের চেষ্টায় অনিশ্চয়তার সাত বছরের শেষে নেপালকে সর্বপ্রথম একটি রিপাবলিক রাষ্ট্র হিসেবে গঠন করা সম্ভব হয়। অর্থাৎ রাজতান্ত্রিকতার বিপরীতে রিপাবলিক বা লোকতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন সফল হয়। কনস্টিটিউশন রচনার কাজ সফলভাবে সমাপ্ত করা এবং এই কাজ শেষে প্রথম কনস্টিটিউশন প্রক্লেমেশন – ২০১৫ ঘোষণা দিতে নেপাল সফল হয়। আর তিন. নতুন কনস্টিটিউশনের অধীনে প্রথমবার সাধারণ নির্বাচন বা সংসদের নির্বাচন সম্পন্ন করা হয়। শুধু তাই নয়, ভোটের ফলাফলে নেপালের প্রধান তিন রাজনৈতিক দলের মধ্যে একটি দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনের কিছু কম (গণনার প্রাথমিক পর্যায়ের ১৬৫ আসনের মধ্যে ৮০ আসন) পেয়েছে। এই দল হল, চেয়ারম্যান খাড়গা প্রসাদ শর্মা অলির কমিউনিস্ট পার্টি (CPN-UML)  । আর এরা অপর কমিউনিস্ট ‘মাওবাদী সেন্টার’ দলের সাথে মিলে প্রায় ৭১ শতাংশ আসন পেয়েছে। অর্থাৎ এই তৃতীয় অর্জন সম্পর্কে বলা যায়, এখন সহজেই একটি স্থিতিশীল সরকার গঠিত হতে যাচ্ছে। ফলে সম্ভাব্য নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অলির নেতৃত্বে নেপাল এক নতুন ও স্থিতিশীল সরকার গঠন করতে পারবে।

প্রায় ২০ বছর পরের নেপাল এই প্রথম স্থিতিশীলভাবেই পূর্ণ সময়কালের সরকার কায়েম করতে পারবে, আর সেই সরকার দৃঢ়তার সাথে যে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণে সক্ষম হবে। এর পিছনের প্রধান কারণ হল, অপর কমিউনিস্ট পার্টি  ‘মাওবাদী সেন্টার’-এর সাথে ইতোমধ্যে গত অক্টোবরে এরা যে জোটটা গঠন করেছে, সেটা শুধু কোনো নির্বাচনী জোট নয়,  বরং একটা এক দলে পৌঁছানোর লক্ষ্যে একটা জোট। [The two parties also said they would work for their formal merger……]।   ফলে কেবল সংখ্যাগরিষ্ঠতার ঘাটতি মিটানো নয়, সরকারের নানান রাজনৈতিক কর্মসূচি ও নীতি সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে মতের অমিলগুলো সামলে এক সিদ্ধান্ত পৌছানোর সুযোগ এখানে বেশি থাকবে। এই নির্বাচনে মাওবাদীরা দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনপ্রাপ্ত দল (১৬৫ আসনের মধ্যে ৩৬ আসন), আর তৃতীয় নেপালি কংগ্রেস (১৬৫ আসনের মধ্যে ২৩ আসন)। তবে নতুন গঠিত এই কমিউনিস্ট অ্যালায়েন্সে আরো একটা দল আছে। সেটা বাবুরাম ভট্টরায়ের নয়াশক্তি পার্টি, এই দলের একা তিনি জিতেছেন। তিনি আসলে ছিলেন মাওবাদী দলের সাবেক দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ নেতা, রাজতন্ত্রের পরাজয়ের পর ২০১১ সালের প্রধানমন্ত্রীও ছিলেন, পরে দল ছেড়ে বের হয়ে যান। এখন জোটে ফিরে আসলেন। প্রথম কনষ্টিটিউশন গঠনকালীন সরকারের (২০০৮-২০১১) সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে সরকার গঠন করে ছিল মাওবাদীরা। ফলে ঐ সময়ে ভারতের সাথে স্বার্থ বিরোধের বিষয়গুলো নিয়ে সবচেয়ে বেশি সংঘাতের মুখোমুখি হওয়া ও চাপ সামলানোর বিপদের ঝড়ঝাপ্টা গুলো সবচেয়ে তাদের উপর দিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ভারতীয়দের চাপের মুখে তা মোকাবিলা করতে গিয়ে বাবুরাম  “ভারতীয়দের সাথে পারা যাবে না” ফলে “নরম পথে আগাতে হবে” ধরণের অবস্থানের কারণে দাহালের সাথে বিরোধে, শেষে দল থেকে বিচ্ছিন্নই হয়ে যান। পরে আলাদা দল করেন, তিনি এবার জোটে ফিরে এসেছেন। তাহলে অল্পকথায় তিনটি গুরুত্বপুর্ণ অর্জন হলঃ রাজতন্ত্রের উৎখাত, নতুন লোকতান্ত্রিক রাষ্ট্রের কনস্টিটিউশন রচনা ও ঘোষণা আর শেষে এক স্থিতিশীল ও নির্বাচিত সরকার গঠন পথে এসে পৌছানো।

নেপালের রাজনৈতিক ক্ষমতা কাঠামো তিন স্তর বিশিষ্ট – ফেডারল (কেন্দ্র), প্রাদেশিক ও স্থানীয় সরকার – এভাবে এবং এভাবেই নতুন কনস্টিটিউশন অনুসারে গঠিত। বিশেষ দিকটা হল, তিন স্তরের নির্বাচন এ বছরই অনুষ্ঠিত হয়েছে, যা এক বিরাট সাফল্য। কারণ গত বছরের এই সময়েও নেপালের রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা এত চরম অবস্থায় ছিল যে, এক বছর পরে সরকারের আয়ু শেষ হবার পরে এই সময়ে নেপালের রাজনৈতিক পরিস্থিতির অর্জন আজ এই উচ্চতায় উঠবে তা তখন বিশ্বাস করা যেত না।

আচ্ছা, গত ২০ বছরের পথপরিক্রমায় কারা নেপালের গণস্বার্থের দিক থেকে বিচারে এর রাজনীতিক-ভিলেন ছিল? এই প্রশ্নের জবাব হবে, ২০০৬ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত স্বভাবতই সেই ভিলেন, তিনি ছিলেন নেপালের রাজা জ্ঞানেন্দ্র। তবে এরপর রাজতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে  পাল্টা মাওবাদীসহ নেপালের রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে নিয়ে জোট বাঁধা ও এর উপরে ভারত ও আমেরিকার সমর্থন আনা ইত্যাদি – এই ঘটনাগুলো ঘটার সময় নির্ধারক ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছিল ভারত। হ্যা, ইতিবাচক। তা সত্ত্বেও নতুন সরকারের আমলে কনস্টিটিউশন গঠনের কাল থেকে ক্রমেই ভারত নেতিবাচক বিরাট ভিলেনের ভূমিকায় হাজির হতে থাকে। সেই থেকে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বাজে এক ভিলেন হয়ে আছে ভারত। গানের ভাষায় বললে- ‘ওরা চাহিতে জানে না দয়াময়’। ভারত চাইতেই জানে না। নেপালের কাছে ‘কিভাবে’ আর ‘কী’ চাইতে হয় – কী চাওয়া যায় না – তা জানে না। নেহরুর হাতে ভিত্তি পাওয়া ও গড়া স্বাধীন ভারত, আর এ থেকে সবচেয়ে বাজে ও ভুল শিক্ষা পাওয়া আমলা-গোয়েন্দা প্রশাসনের ভারত, এরাই মূলত সেই ভিলেন। নেহরু ভেবেছিলেন কলোনি-উত্তর স্বাধীন ভারত, একালে ব্রিটিশদের ফেলে যাওয়া সুবিধাগুলো তিনি ব্রিটিশদের মতই নিজেও ব্যবহার করবেন। এটা তার প্রিরোগেটিভ (prerogative) বা পড়ে পাওয়া চারআনা বিশেষ সুবিধা, প্রাধিকার। তিনি বুঝতেই পারেননি যে, এর অর্থ হল, তাতে ভারত এক কলোনিয়াল ক্ষমতা বলে আগাম কল্পনা করে নিতে হবে বা করা হয়ে যায়। এর চেয়েও আর একটা গুরুত্বপুর্ণ দিক। তিনি সে সময়কে মানে এর তাতপর্যকেও বুঝতে পারেন নাই। কারণ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে যে নতুন দুনিয়া গড়ে তোলা হচ্ছিল, সেটা আর যুদ্ধের আগের মত কলোনি-শাসিত দুনিয়া নয়, কোনো ইউরোপীয় কলোনি-শাসকের দুনিয়া নয়। বরং এক বিরাট ভিন্নতায় আমেরিকার  নেতৃত্বের এক নতুন দুনিয়া। মৌলিকভাবে এটা বরং খোদ পুরনো কলোনি-অর্থনৈতিক-সম্পর্কেরই অবসান। আর আমেরিকার নেতৃত্বে গ্লোবাল ক্যাপিটালিজমের-অর্থনীতিক-সম্পর্কের দুনিয়া। কলোনি শাসনমুক্ত স্বাধীন রাষ্ট্রগুলোসহ আমেরিকার গড়ে তোলা এটা নতুন এক গ্লোবাল ক্যাপিটালিজমের অর্থনীতি সম্পর্কের দুনিয়া। যেখানে আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক জাতিসংঘ ও বিশ্ববাণিজ্য নিয়ন্ত্রণের প্রতিষ্ঠান – ইত্যাদির মত বহুরাষ্ট্রীয় (মাল্টিলেটারাল) প্রতিষ্ঠান এবারের নতুন দুনিয়ায় আছে।

মূল কথায় এখানে অপর রাষ্ট্রের ওপর প্রভাব ও সম্পর্ক রাখা এবং সুবিধা নেয়া ও কিছু দেয়ার তরিকাই আলাদা। এখানে রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে বিনিময় সম্পর্ক আর পুরান কলোনিয়াল একেবারেই নয়, বরং আলাদা। নেহরু এর খবর নেন নাই বা রাখেননি। এ কথার সবচেয়ে ভালো প্রমাণ হল, নেহরুর করা ‘নেপাল-ভারত চুক্তি ১৯৫০’। যেটা আসলে এর আগে ব্রিটিশদের করা ‘নেপাল-ব্রিটেন চুক্তি ১৯২৩’ এর কার্বন কপি। এই চুক্তি থেকে এটা পরিষ্কার, নেহেরু ভারতকে কলোনি-শাসকের ভূমিকায় নামিয়েছিলেন, দেখেছিলেন। আগে ব্রিটিশ কলোনির এক ভেসেল রাষ্ট্র বা করদরাজ্য ছিল নেপাল। ব্রিটিশদের নেপালকে সরাসরি কলোনি না করে ভেসেল রাষ্ট্র করে সুবিধা দেয়ার পেছনে অনেক কারণ আছে। পরবর্তিতে যোগ হওয়া নতুন এক কারণ হল, সিপাহী বিদ্রোহ কালে নেপালের রাজাদের বৃটিশের পক্ষে গোর্খা সৈন্য নিয়ে অবস্থান নেওয়া। এই বিদ্রোহের আগে পুরো নেপাল ব্রিটিশরা দখলে নিয়েছিল। কিন্তু সিপাহি বিদ্রোহে ব্রিটিশদের পক্ষ নেয়াতে বিদ্রোহ পরাজিত করার শেষে এই ভেসেল রাষ্ট্রের জন্ম আরও পাকাপোক্ত হয়। তাই নেপাল-ব্রিটেন এর মধ্যে আগের অনেক চুক্তি ছিল, আমরা জানতে পাই। বিভিন্ন সময়ে ব্রিটিশরা তাতে নতুন নতুন অনেক ছাড় যোগ করেছিল। এমন সর্বশেষের চুক্তিটিই হল, ১৯২৩ সালের চুক্তি। কিন্তু নেপালের ল্যান্ডলকড অবস্থার সুযোগ নিয়ে, পুরান সেই চুক্তি অনুসরণ বা অনুকরণ করে একই দাসত্ব চুক্তি করেছিল নেহরুর ‘রিপাবলিক ভারত’। ওই চুক্তিটিই এখনো বহাল আছে। প্রশ্নটা আসলে, একালে কারও দুরবস্থার সুযোগ নিয়ে তাকে দাস বানানোর সুযোগ পেলেও আপনি তা নেবেন কি না? নেহরু সেটা দাবির সাথে নিয়ে নিয়েছিলেন। কারণ নেহরুর মৌলিক আগাম অনুমান হল, “স্বাধীন ভারত সেটা বৃটিশ কলোনি ভারতেরই উত্তরসুরি ও ধারাবাহিকতা”। অর্থাৎ ভারত নিজে স্বাধীন তবে এটা এখন নিজেই এক কলোনি শাসক। ফলে কন্টিনিউয়েশন বা ধারাবাহিকতা।  তাই, এই কলোনি ওরিয়েন্টেশনে বা ধাঁচে নিজ নতুন আমলা-গোয়েন্দা প্রশাসনের ভিত গড়েছিলেন নেহেরু। নেহেরুর সেট করে দেওয়া ‘সেই ট্রাডিশন’ এখনও চলছে।

গত অক্টোবরে কমিউনিস্টদের লেফট অ্যালায়েন্স গঠন হওয়ার পর তাদের যৌথ নির্বাচনী ম্যানুফেস্টো প্রকাশিত হয়। জাপান থেকে প্রকাশিত ডিপ্লোম্যাট ম্যাগাজিন ১ ডিসেম্বর বলছে, ঐ ম্যানুফেস্টোতে বলা হয়েছে – লেফট অ্যালায়েন্স নির্বাচনে জিতলে পরে তাদের দ্বারা গঠিত অ্যালায়েন্স সরকার এরপর ‘ইন্ডিয়া-নেপাল শান্তি ও বন্ধুত্ব চুক্তি-১৯৫০’ বাতিল করবে এবং একটা নতুন চুক্তি করবে। এখন নির্বাচন সমাপ্ত হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, ওই আকাঙ্খা মত অ্যালায়েন্সের পক্ষে নির্বাচনী ফলাফল এসেছে। ফলে এখন স্বভাবতই ঐ চুক্তি বাতিলের প্রসঙ্গ উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে ভারতের সাথে সংঘাতে আর এক পর্ব শুরু হবে, আর এক খাতা খোলা হবে।

এই নির্বাচনের শুরু থেকে নয়াদিল্লি খুবই অস্বস্তিতে ছিল। আর ফল প্রকাশের পর সেটা আরো বেশি হয়ে এখন উলটা অনুভূতিশূন্য হয়ে গেছে। এমনিতেই গত অক্টোবরে নেপালের দুই কমিউনিস্ট পার্টির অ্যালায়েন্স গঠন হওয়ার পর থেকে নয়াদিল্লি আসন্ন নির্বাচনে নিজের জন্য নানান বিপদ আসন্ন বলে আঁচ করতে শুরু করেছিল। যেমন সুবীর ভৌমিকের নেপালের নির্বাচন প্রসঙ্গে ‘সাউথ এশিয়ান মনিটর’ অনলাইনে তার লেখা দিয়েছেন। সেই লেখার শিরোনাম দিয়েছেন, ‘নেপালের নির্বাচনকে ভারতের নিজের পরাজয় হিসেবে দেখা উচিত!’  তবে সুবীরের এবারের লেখাটি ভারতের আমলা-গোয়েন্দা প্রশাসনকে সান্ত্বনা দেয়ার ভঙ্গিতে লেখা। তাই সম্ভবত ভারতের অনেক ভুলত্রুটি এখানে স্বীকার করে নেয়া হয়েছে। ভারতকে আমল না করে ২০১৫ সালের অক্টোবরে নেপালের কনস্টিটিউশন ঘোষণা করে দেওয়াতে টানা ছয় মাস ল্যান্ডলক নেপালে সকল ‘পণ্য  আমদানি অবরোধ’ করে রেখেছিল নয়াদিল্লি। নিত্যপ্রয়োজনীয় রান্নার গ্যাস থেকে যানবাহনের জ্বালানিসহ সব কিছু ছয়মাস বন্ধ রাখলে গরীব মানুষের জীবনে এর প্রভাব কী হতে পারে তা অনুমেয়। তাই বলা বাহুল্য ভারতের দিক থেকে এটা কাউন্টার-প্রডাকটিভ হয়েছে।  প্রচ্ছন্নে সুবীরের লেখায় ভারতের সিদ্ধান্ত ভুল এটা স্বীকার করে নেয়া হয়েছে। ঐ ঘটনাই নেপালের গরীব সাধারণ মানুষকে ভারতের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ও কঠোরভাবে বিমুখ করে তোলে, যার প্রভাব এখনো প্রবল।  আর খুব সম্ভবত, এসব ভোটারদেরই নিজের ব্যাগে তুলে নিতে পেরেছে,  চরম ভারত-বিরোধিতার লাইনের চেয়ারম্যান অলির কমিউনিস্ট দল। মোট ১৬৫ এর মধ্যে ৮০ আসন – এভাবে বিপুল সংখ্যার আসন পেয়েছে এই নির্বাচনে।ওদিকে সুবীর তাঁর লেখায়, আবার শ্রীলঙ্কার গত নির্বাচন ও এর পরবর্তী পরিস্থিতির সাথে নয়াদিল্লি এখন নেপালকে তুলনা করে দেখছে সে খবর জানিয়েছে। শ্রীলঙ্কা প্রসঙ্গে তাদের এখনকার মূল্যায়ন নাকি – শেষ বিচারে শ্রীলঙ্কায় সমুদ্রবন্দর নির্মাণ ও অন্যান্য ইস্যুতে চীনকে আসলে ঠেকানো যায়নি। নেপালেও গেল না। তাই সুবীর যেন শিরোনামে বলছেন, হতাশ হয়েন না 

শ্রীলঙ্কার মত নেপালের বেলায় কোন সমুদ্রবন্দর নির্মাণ তার ইস্যু ছিল না। শ্রীলঙ্কার হাম্মনটোটা গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ ২০১০ সালে শেষ হবার পরও তা ভারত চালু না করতে দিয়ে পাঁচ বছর আটকে রাখতে পেরেছিল, নির্বাচন রাজনীতিতে, সরকার গঠনে হাত ঢুকিয়ে। কিন্তু শেষ বিচারে বন্দর চালু হওয়া ভারত ঠেকাতে পারে নাই। ভারত ঘেঁষা চলতি সরকারই চীনের সাথে সংশোধিত চুক্তি করে বন্দর চালু করে ফেলেছে। তাই ভারত এখন এটাকে নিজের হার মনে করে, সেকথাই সুবীর তুলে এনেছে। তুলনায় নেপালে বন্দর না হলেও চীনের সাথে বাঁধ নির্মাণ ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের আড়াই বিলিয়ন ডলারের এক প্রকল্প আছে বা ছিল। যে সরকারের অধীনে চলতি নির্বাচন সমাপ্ত হল সেটা নেপালি কংগ্রেস দলের। তবে তা মাওবাদী দলের সমর্থনে গড়া এক কোয়ালিশন সরকার। নেপালে পানিবিদ্যুতের প্রচুর সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও সুবীর বলছেন, এখানে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় মাত্র ৭৫৩ মেগাওয়াটের মত। ২০১৫ সালের শেষে কমিউনিস্ট অলির সরকারের আমলে চীনের সাথে তিনি ১২০০ মেগাওয়াটের ঐ বাঁধ ও জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের চুক্তি করেছিলেন, সেটাই আড়াই বিলিয়ন ডলারের চুক্তির। কিন্তু চলতি নেপালের প্রথমপর্যায়ের নির্বাচন শুরুর কয়েক দিন মা্ত্র আগে গত নভেম্বরে নেপালি কংগ্রেস সরকার ঐ চুক্তি বাতিল করে দেয়। তাই আইনত সেই চুক্তি ‘ছিল’ বলতে হচ্ছে। অজুহাত উন্মুক্ত আন্তর্জাতিক টেন্ডার করা হয় নাই। এতে নেপালকে ঘিরে চীন-ভারত রেষারেষি আরো সরাসরি নির্বাচনে হাজির হয়ে পড়ে তখন থেকেই। স্বভাবতই কমিউনিস্ট অ্যালায়েন্স এখন নির্বাচনে বিজয় লাভ করাতে ওই প্রকল্প ও চুক্তি আবার জীবিত হবে বলে সবাই অনুমান করছেন। মজার কথা হচ্ছে, সুবীর ভৌমিক ওই চুক্তি জীবিত করার পক্ষে কথা বলেছেন। বলছেন এটাই নেপালের স্বার্থ। এই প্রকল্প চীনের চীনের বেল্ট-রোড মেগা প্রকল্পে অংশ বলে ঘোষণা করা ছিল। এমনকি তা সত্ত্বেও চীনের বেল্ট-রোড প্রকল্পে যুক্ত হয়ে আরো অবকাঠামো প্রকল্প নেপালের আনার পক্ষে তিনি কথা বলছেন।

নয়াদিল্লি ঘোরতরভাবে চীনের বেল্ট-রোড প্রকল্পের বিরোধী। এটা ভারতের প্রকাশ্য বিদেশ নীতি ও অবস্থান। ভারতের কোনো ‘বন্ধু’ বা পড়শি রাষ্ট্র বেল্ট-রোড প্রকল্পে যুক্ত থাকুক এটা দেখতে বা সহ্য করতে সে একেবারেই রাজি নয় (ফলে বাংলাদেশের সাথেও এটা এক অনৈক্যের বিরাট ইস্যু)। কিন্তু নেপালের বেলায় সুবীর বলতে চাইছেন, নেপালের এখন দরকার বিদ্যুৎসহ অবকাঠামোগত খাতে প্রচুর বিনিয়োগ। না হলে নেপালের অর্থনীতি দাঁড়াবে না। ইতোমধ্যে সদ্যগঠিত নেপালে জয়লাভ করা কমিউনিস্ট অ্যালায়েন্স, আগামী ১০ বছরের মধ্যে নেপালকে মাথাপিছু পাঁচ হাজার ডলার আয়ের অর্থনীতির দেশে উন্নীত করার ঘোষণা দিয়েছে। এদিকে চীনের মতই ভারতকেও নেপাল কিছু বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করতে দিয়েছিল ২০১৫ সালের শুরুর দিকে। কিন্তু আজও সেসব প্রকল্পের কোনো কাজই শুরু হয়নি বলে সুবীর জানাচ্ছেন। অর্থাৎ একদিকে ভারতের সক্ষমতা দক্ষতা সামর্থ্য নেই, অন্য দিকে চীনের আছে, সুবীর এই তুলনা আনছেন। আবার চীনের বিনিয়োগ সক্ষমতার তুলনায় ভারত যে কিছুই না, সেটা শ্রীলঙ্কাতেও দেখা গেছে। ফলে সুবীর ভারতের আমলা-গোয়েন্দা প্রশাসনের কাছে ‘স্মার্ট হতে’ পরামর্শ রেখেছেন। আসলে সুবীরেরই খুবই স্মার্ট পরামর্শ এটা। কারণ তিনি যুক্তি তুলে ধরে বলছেন, প্রশাসনের উচিত চীন-নেপালের বিদ্যুৎ প্রকল্পে বাধা না দিয়ে বরং সহযোগিতা করা। পরামর্শ খুবই অ-ভারতীয় অথবা অ-চিরাচরিত ভারতীয় পরামর্শ। কিন্তু সেক্ষেত্রে সুবীর বুদ্ধি দিচ্ছেন, এইবার যে বাড়তি বিদ্যুৎ তৈরি হবে তা যেন ভারত কিনে নেয়। আর এইবার ইঙ্গিত দিয়েছেন ওই বিদ্যুৎ বাংলাদেশ বিক্রি করে দিবার টাউটারি নিতে, নগদ লাভ এখানেই। অর্থাৎ ভারত যে উতপাদন আয়োজনে অক্ষম তা স্বীকার করে নিয়ে সুবীর টাউটারিতে নামতে বলছেন, তাই কী? তবে টাউট মারচেন্ডাইজ (tout merchandise ) খারাপ ব্যবসা নয়, ভারত যেটুকু ভাল পারে। এখানে আমাদের জানা থাকা ভাল যে, ভারত নেপালকে এমন ‘কলোনি-চুক্তির’ মধ্যে রেখেছে যে, ভারতের অনুমতি ছাড়া অন্য কাউকে নেপাল নিজ উতপাদিত বিদ্যুৎ বিক্রি করতে পারে না।

তবে আমাদের মতো দেশের বেলায় পাল্টা আরেকটা কথা সমান গুরুত্ব দিতে হবে। চীনের নেয়া অবকাঠামো প্রকল্পগুলোতে (যেমন বাংলাদেশেও) এক বিরাট কালো দাগ আছে। কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে এখানে প্রতিযোগিতামূলক বাজার যাচাই, কোনো ওপেন টেন্ডার হয় না। শুধু তাই না প্রকল্পের কোনো টেন্ডার করতে যাতে না হয়, বালাই যেন না থাকে, টেন্ডার করার আইনি বাধ্যবাধকতা যাতে এড়ানো যায়; তাই প্রকল্পগুলো জিটুজি (গভর্নমেন্ট টু গভর্নমেন্ট)-এর অধীনে সম্পন্ন করার চুক্তি করা হয়। আর এতে টেন্ডার ডাকার বাধ্যবাধকতা এড়িয়ে যায় বলে স্বভাবতই প্রকল্প মূল্যের কোনো মা-বাপ থাকে না। এ ছাড়া লোকাল এজেন্টের নামে অর্থ সরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা বা সুযোগও থাকে। বিশ্বব্যাংকের অনেক বদনাম আছে বা ছিল। তা সত্ত্বেও তুলনায় বিশ্বব্যাংকের প্রকল্প অন্তত কোনো ওপেন আন্তর্জাতিক টেন্ডার ছাড়া সেক্ষেত্রে কো্ন প্রকল্প নিতে দেয়না।  বহুরাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হিসাবে এটুকু অগ্রগতি তাদের ঝুলিতে আছে। এমনকি জাপান সরকার দাতা হলেও জাপানি ঠিকাদারকেই কাজ দেয়ার কোনোই বাধ্যবাধকতা থাকে না। এই নীতি কার্যকর করার সক্ষমতা তাদের আছে, ইতোমধ্যেই সেটা দেখিয়েছে। চীনের বিশ্বব্যাংক AIIB গঠনের প্রাক্কালে একে বহুরাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হিসাবে দাবি করাতে এর বিরুদ্ধে মোক্ষম এই অভিযোগই তুলেছিল আমেরিকা। যদিও আমেরিকা নিজের বিরাট স্বার্থক্ষুন্ন হওয়ার কারণে নিয়মিতভাবে AIIB গঠনের বিরোধিতা করে গেছিল কিন্তু তা সত্ত্বেও আমেরিকান অভিযোগ মিথ্যা ছিল না, তা বাস্তব।

তবে সেটা যাই হোক, সুবীরের লেখায় এই প্রথম ভারতের অভ্যন্তরীণ আমলা-গোয়েন্দা প্রশাসনকে নিজেদের দুর্বলতা ও সক্ষমতা-দক্ষতা সামর্থের অযোগ্যতা বা ঘাটতির দিকে নজর ফেরাতে তাগিদ দিতে দেখা গেল। সুবীরের এই লেখা থেকে মনে করার কারণ আছে যে, ভারতের প্রশাসন বিপদে আছে বলে অন্তত কেউ কেউ মনে করছেন, এ নিয়ে টনক নড়ারও কেউ কেউ আছে। আসলে ভারত বিপদ দেখছে; একের পর এক ভারতের পড়শি রাষ্ট্রে চীন প্রকল্প নিয়ে ঢুকে পড়ছে, আর ভারতের কিছু করার থাকছে না। এটা না দেখতে পাবার কারণ নাই, তবে স্বীকার করতে দেখা যায় না। সুবির তাই পরিস্কার করেই বলছে, ভারত এখন শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রেও আসলে শেষে কিছু ঠেকানো যায়নি বলে তারা মনে করে। অর্থাৎ ভারতের বিদেশ নীতিতে করণীয় – “শ্রীলঙ্কা মডেল বলেও কিছু দাড়ালো না।

কিন্তু আসলেই ব্যাপারটি এমন হওয়ার কথা নয় কি? ভারতের যদি সক্ষমতা-দক্ষতা-সামর্থ্য না থাকে, আর তা থেকে সৃষ্ট নানা দুর্বলতা তাকে ঘিরে রাখে, তবে এমনই কি হওয়ার কথা নয়। আসলে প্রথম প্রশ্ন করা উচিত যে, ভারত কেন অর্থনৈতিক বা বৈষয়িক সক্ষমতার দিক থেকে নিজেকে চীনের প্রতিদ্বন্দ্বী বা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার যোগ্য বলে বিবেচনা করছে? কিসের ভিত্তিতে?

দেখা যাচ্ছে, ভিত্তিহীন সব অনুমানের ওপর দাঁড়িয়ে ভারতের আমলা-গোয়েন্দা প্রশাসন পড়শিদের উপর ছড়ি ঘোরানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে আর ধপাধপ পড়ছে – শ্রীলঙ্কা আর এরপর নেপাল…। সুবীর ভৌমিকই বলছেন, শ্রীলঙ্কার পর নেপালেও নাকি নয়াদিল্লি, শ্রীলঙ্কার ভূত দেখতে পাচ্ছে। [But again, the ghosts of Sri Lanka may return to haunt Delhi…] তা হলে? এরপর কোথায়?

পাঠকের জন্য একটা সতর্কতা দিয়ে শেষ করব। বাইরের মিডিয়ার মত দেশেরও অনেক মিডিয়া – নেপালে একটা কমিউনিস্ট এলায়েন্স তৈরি হয়েছে আর চীন (মানে সেটাও তো কমিনিস্ট) – এভাবে সব মিলিয়ে বিষয়টাকে “চীনপন্থী”, বা “কমিউনিস্ট” ঘটনা বলে ইঙ্গিত হাজির করার চেষ্টা করছে। এই অনুমান ইঙ্গিত শতভাগ ভুল, ভিত্তিহীন। যে চিন্তা কাঠামোতে দাঁড়িয়ে এমন কথা বলা হচ্ছে তা কোল্ড ওয়ারের যুগের; যেন ষাটের দশকের দুনিয়ায় আমরা এখনও দাঁড়িয়ে আছি – এই ভিত্তিহীন অনুমানে বলা কথা। আমরা এখন একুশ শতকে, সকল রাষ্ট্র যখন একই গ্লোবাল ক্যাপিটালিজমে পরস্পরের সাথে গভীর বিনিময় সম্পর্কে লেপ্টে গেছি ও আছি। সবচেয়ে বড় কথা এই লেপ্টে যাওয়া আর কখনও  কোল্ড ওয়ারের মত আগের যুগে ফেরত যাবে না। তাই পুরানা চিন্তা কাঠামো আর বাস্তবতায় পুরানি টার্ম ব্যবহার করে কথা বলা আর সঠিক নয়। তাই এই ঘটনা কোনভাবেই আর “নেপালি কমিউনিস্ট আর চীনের” কোন বামপন্থা ততপরতা একেবারেই নয়। যেমন আগামিতে নেপালে দুই কমিউনিস্টকেই বাদ দিয়ে নেপালি কংগ্রেসের সাথে চীনের ঘনিষ্ট হওয়া খুবই সম্ভব। আসলে একালে ‘বামপন্থা’ বা ‘ডানপন্থা’ বলে কোন কিছুকে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা অর্থহীন।

আর একটা তথ্যঃ নেপালের কেন্দ্রীয় সংসদ সদস্য নির্বাচন শেষ হয় নাই। মোট আসন ২৭৫ যার মধ্যে ১৬৫ আসন আসবে সরাসরি প্রত্যেক আসনের ভোট কাউন্টে, একজনকে নির্বাচিত ঘোষণা করে। এই রচনাটা লেখা হয়েছে প্রাপ্ত ১৬৫ আসনের ফলাফলের ভিত্তিতে।  আর বাকি ১১০ আসনের ফলাফল পুরণ হবে দলগুলোর আনুপাতিক ভোট প্রাপ্তি থেকে। অর্থাৎ সব আসন মিলিয়ে একটা দল মোট ভোটারের কত পার্শেন্ট ভোট পেয়েছে সে অনুপাতে এই ১১০ আসন ভাগ করে দেয়া হবে। অর্থাৎ কোন দল একটা আসনেও সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে জিততে না পারে যদি, তাহলেও এবার আনুপাতিক ১১০ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবার সুযোগ আছে।  আনুপাতিক ১১০ আসনের গণনা এটা ঘরে বসে গণনা করে কয়েকদিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করে দিবে। এই রচনাটা লেখা হয়েছে ১৬৫ আসনের ভিত্তিতে বলে আনুপাতিক আসন এরপর যোগ হলে আনুপাতিক ভাবেই সব দলের আসন বাড়বে, তাই তেমন কোন হরফের হবে না। এভাবে নেপালের (ফেডারেল) সংসদে মোট আসন বা সংসদ সদস্য ২৭৫ জনেরই নির্বাচন সম্পন্ন হবে।

লেখক : রাজনৈতিক বিশ্লেষক
goutamdas1958@hotmail.com

[এই লেখাটা এর আগে গত ১৭ ডিসেম্বর ২০১৭ দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকার অনলাইনে (প্রিন্টে পরের দিন) ‘নেপালে নির্বাচনের ফলাফল : শ্রীলঙ্কার ভূত দেখছে নয়াদিল্লি’ শিরোনামে ছাপা হয়েছিল। পরবর্তিতে সে লেখাটাই এখানে  আরও নতুন তথ্যসহ বহু আপডেট করা হয়েছে।  ফলে  সেটা নতুন করে সংযোজিত ও এডিটেড এক সম্পুর্ণ নতুন ভার্সান হিসাবে এখানে ছাপা হল। ]

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s