ভেনিজুয়েলা সঙ্কট কিসের ইঙ্গিত


ভেনিজুয়েলা সঙ্কট কিসের ইঙ্গিত

গৌতম দাস

০১ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০৬

https://wp.me/p1sCvy-2yM

প্রেসিডেন্ট দাবিদার হুয়ান গুয়াইদো ও প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো – ফাইল ছবি

ল্যাটিন আমেরিকা বা দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ভেনিজুয়েলা। এই ভেনিজুয়েলারই নেতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজ [Hugo Chávez] কমিউনিস্টদের নয়নমণি, তাদের সাফল্যের প্রতীক ছিলেন। ২০১৩ সালে প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় অসুস্থতায় তিনি মারা যান। যদিও সেনাবাহিনীর এই সাবেক লে. কর্নেল ক্ষমতায় তার উত্থান এই সেদিন, মানে ১৯৯৮-৯৯ সালের এবং তা স্বল্পকালীনও – মাত্র ১৪ বছরের শাসন। ভেনিজুয়েলায় যা তার উল্লেখযোগ্য অবদান বলে কমিউনিস্টেরা মনে করে তা হল একধরনের “সমাজতন্ত্র কায়েম” করেন তিনি, বিশেষত ২০০৭ সালের পর থেকে। শ্যাভেজের মৃত্যুর পর তার ভাইস প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো ২০১৩ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। খুবই মার্জিনাল (৫০.৬২%) ভোটে তিনি সেবার জিতেছিলেন।

আর এর পরের টার্মের নির্বাচন হয় ২০১৮ সালের মে মাসে। কিন্তু এখানে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে বলে অভিযোগ করে বিরোধীরা নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছিল। তবুও মাদুরো নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে গত ১১ জানুয়ারি ২০১৯ শপথ নেন। ওদিকে গত ২০১৫ সালে ভেনিজুয়েলার পার্লামেন্ট নির্বাচন হয়েছিল, যার ফলাফল ছিল বিরোধী দলের বিজয়-প্রাধান্যে। তাই মাদুরোর শপথের প্রতিক্রিয়ায় পার্লামেন্ট হয়ে উঠে বিরোধীদের বিকল্প ক্ষমতা প্রদর্শনের কেন্দ্র। মাদুরোর এই দ্বিতীয় শপথের পর থেকে পার্লামেন্টে থেকে তারা মাদুরোকে প্রেসিডেন্ট না মানার তৎপরতাও শুরু করেছিল। তারা পাল্টা প্রস্তাব পাস করে, মাদুরো সঠিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট নন, তাই পার্লামেন্ট অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে সংসদের বিরোধী দলের নেতা হুয়ান গুয়াইদোকে [Juan Guaidó] মনোনীত করছে [declared himself interim president on 23 January ]। এতে ভেনিজুয়েলার অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে আমেরিকার উপস্থিতি ও স্বার্থ খুবই খোলাখুলি হয়ে যায়। আর বাস্তবতা হয়ে দাঁড়ায়, এক রাষ্ট্রে দুই প্রেসিডেন্টের দাবিদার – বলাই বাহুল্য, এটা ঐ রাষ্ট্রের ইমেজের জন্য খুবই খারাপ।

দেশে-বিদেশে এর বিভক্ত প্রতিক্রিয়া ছড়িয়ে পড়েছিল। তবুও এক সোজা লাইন টেনে বলা যায়, দেশের ভেতরে তবে পার্লামেন্টের বাইরে আর কেউই এটা মানেনি বা প্রভাব নেই। অর্থাৎ নির্বাহী প্রেসিডেন্ট মাদুরোর নিয়ন্ত্রণে স্বভাবতই সব সরকারি অফিস প্রশাসন তো আছেই; সেই সাথে বিচার বিভাগও তার পক্ষে। ফলে দাঁড়ায়, পার্লামেন্ট ছাড়া রাষ্ট্রের অবশিষ্ট দুই মূল প্রতিষ্ঠান মাদুরোর পক্ষে। তবে সেই সাথে নির্ধারক সেনাবাহিনীর জেনারেলরাও মাদুরোর পক্ষে। মাদুরো জেনারেলদের সাথে ক্ষমতা ও বৈষয়িক সুবিধা শেয়ার করেন বলে প্রচলিত আছে। কিন্তু দেশের বাইরে?

ট্রাম্পের আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আঞ্চলিক দক্ষিণ আমেরিকার রাষ্ট্র জোট  ওএএস [ Organization of American States, OAS] , এসব মিলিয়ে মোট প্রায় ষাটেরও বেশি বিভিন্ন রাষ্ট্র ভেনিজুয়েলার বিরোধী নেতা গুয়াইদোকে ইতোমধ্যে স্বীকৃতি দিয়েছে। আর পাল্টা রাশিয়া এবং চীন থেকে ইরান, সিরিয়া, তুরস্ক, এরা মাদুরোর পক্ষে। এক কথায় যেন নতুন করে এক ‘কোল্ড ওয়ার’-এর দুই পক্ষ দল। এ ঘটনায় সবচেয়ে বাজে দিক হল এটাই। যার কারণেই হোক, পরিস্থিতিকে ‘সোভিয়েত ইউনিয়ন বনাম আমেরিকা’ এমন দুই পক্ষে বিভক্ত হয়ে কোল্ড ওয়ার বা ঠাণ্ডা যুদ্ধেরীক লড়াই যেন ফিরে এসেছে – এমন ভাব তৈরি করা, এভাবে ফেলে দেয়া একেবারেই ঠিক হয়নি। কারণ, দুনিয়াকে আমরা চাইলেই আবার ‘দুই অর্থনৈতিক ব্যবস্থায়’ ফেলে দিতে পারব না। কারণ, দুনিয়ায় এমন কিছুই আর বাস্তবে নেই। এ জন্য এমন ভান ভনিতা ছায়ার সাথে লড়াই – এটা কারো পক্ষেই কোনো কাজের কাজ হয়নি। এটা দুই পক্ষের জন্যই এক অচলাবস্থা।

আরও কঠিন বাস্তবতার দিকটা হল, এখন কথিত সেই ‘সমাজতন্ত্র’ কোথাও আর টিকে থাকতে পারেনি, টিকে নেই কোথাও। কাজেই ভান করে যেন মাদুরোর পক্ষে এক “সমাজতান্ত্রিক জোট” উঠে দাড়িয়েছে, এই ভাব ধরার সুযোগ নেই। কারণ, রাষ্ট্রের সব কিছুই একমাত্র সরকারি মালিকানায় – এমন চিত্রের সেই সমাজতন্ত্রের রাষ্ট্র বলতে একালে আর কেউ অবশিষ্ট নাই। ফলে যে চিত্রের রাষ্ট্রগুলো এখন আর নাই তাই এদেরই কোন “সোভিয়েত” ব্লক বা আলাদা অর্থনৈতিক ব্যবস্থার কোন রাষ্ট্র-জোট আর নাই। গত ১৯৯১ সালের পর থেকে বলা যায়, সারা দুনিয়ার সব রাষ্ট্র এখন একই গ্লোবাল ক্যাপিটালিজম ব্যবস্থার অন্তর্গত। এমনকি মিয়ানমার অথবা আরো নির্দিষ্ট করে বলতে হয় উত্তর কোরিয়াও এখন মূলত চীনের মাধ্যমে গ্লোবাল ক্যাপিটালিজম ব্যবস্থায় যুক্ত। কাজেই এ কালে প্রতারণা করা ছাড়া, “কথিত সমাজতন্ত্রী” ভাব ধরার আর কিছুই নেই। ‘সমাজতন্ত্র’ কারও কাছে খুব ভালো জিনিস হয়ত। ছিল অথবা আছে এখনও। তবুও দুনিয়ায় এমন কিছু একটা এককালে চালু থাকলেও এখন সেটা “এক মৃত অভিজ্ঞতা” ছাড়া আর কিছু নয়। কাজেই এ কালের রাশিয়া অথবা প্রেসিডেন্ট পুতিন মানেই “সমাজতন্ত্রী” নয়। এমন আকার ইঙ্গিত করা,  ভং-চং ধরারও কিছু নাই। এমনকি তার সাগরেদ হিসেবে ইঙ্গিতে চীনকে সাথে দেখতে পেলেও কথা একই থাকে।

বরং, একালে বলা যায় চীন-রাশিয়া মিলে তারা হয়ত আমেরিকার বিরোধীও। তবুও তা যেকোনো দুই বিরোধী স্বার্থের রাষ্ট্রের মতই। এর বেশি গুরুত্ব বা  তাতপর্য এর নাই।  এটা “সাম্রাজ্যবাদ” হিসেবে আমেরিকার বিরুদ্ধে চীন-রাশিয়া কোন অবস্থান এমন মানের ইঙ্গিত দিয়ে নৈতিকতার সুড়সুড়ি তুলতে হবে – এমন চেষ্টা ফাঁপা কাজ তো বটেই, তা অগ্রহণযোগ্য ও খারাপ কাজ। কাজেই ‘সমাজতন্ত্রের’ পক্ষ নেয়া হচ্ছে মনে করে এখনকার রাশিয়া বা চীনকে সমর্থন করা কিংবা সাম্রাজ্যবাদের বিপক্ষে থাকা বুঝা; কিংবা আমেরিকার ও ইইউর বিরোধিতা করা কিংবা ভেনিজুয়েলার মাদুরোকে কোলে তুলে নেয়া – এসব প্রতিটি কাজই এখন নিজের সাথে প্রতারণা, মিথ্যা প্রবোধ দেয়া হয়ে দাঁড়াবে। এর চেয়ে বাস্তবতার মুখোমুখি হওয়া কাজের হতে পারে। ভেনিজুয়েলা সঙ্কটের গোড়া কোথায় তা নতুন করে বুঝতে চেষ্টা করতে পারি।

কমিউনিস্টরা বলতে পছন্দ করবেন হয়ত যে শ্যাভেজ ভেনিজুয়েলার তেলসম্পদ জাতীয়করণ করেছেন, গরিবের জন্য তেল বিক্রির অর্থ পাকা বহুতল বাড়ি, শিক্ষা-চিকিৎসায় ব্যয় ইত্যাদির ‘সমাজতন্ত্র কায়েম’ করেছিলেন; সে জন্য “সাম্রাজ্যবাদীরা” ভেনিজুয়েলার জন্য বাধা ও নানান সমস্যা সৃষ্টি করেছে। ভেনিজুয়েলার বর্তমান সঙ্কটে রাশিয়া ঠিক এ ব্যাখ্যাই দিচ্ছে।

আসলে তেল জাতীয়করণ আর গরিবের জন্য খরচ ব্যাপারটাকে সমাজতন্ত্র বলি আর না বলি, ভেনেজুয়েলার সঙ্কট সেজন্য হয়নি। আবার যদিও বেজ ফ্যাক্টস হল, ভেনিজুয়েলায় তেল জাতীয়করণ শ্যাভেজ করেননি, এটা ১৯৭৬ সাল থেকে আগেই করা ছিল। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন তেল কোম্পানি (PDVSA) -এর জন্ম তখন থেকেই। শ্যাভেজ ২০০৭ সালে যেটা করেছেন, সেটা কী তাহলে? দুনিয়ায় যা তেল প্রতিদিন ভোগ-ব্যবহার হয়ে যায়, ভেনিজুয়েলা এর ১৩ শতাংশ একা উৎপাদন করে থাকে বা সক্ষম। কিন্তু তার এই সক্ষমতার প্রধান তেলক্ষেত্র এমন এলাকাকে বলে ‘অরিনোকো বেল্ট’। [ ভেনেজুয়েলায় একুশশত কিলোমিটার লম্বা বিস্তৃত অরিনোকো নদীর দক্ষিণ অঞ্চল জুড়ে দুনিয়ার বৃহত্তম এই তেল ক্ষেত্রে ]।  কিন্তু যেখানকার তেল তুলতে বড় বাধা ছিল যে, প্রথম দিকে এই তেল ক্ষেত্রে প্রস্তুত করতে প্রচুর বিনিয়োগ প্রয়োজন ছিল।

সে কারণে সরকারি মালিকানাধীন তেলক্ষেত্রের উপরই তা তেল তোলার অবস্থায় আনতে “তেল উত্তোলন বিনিয়োগ প্রকল্প” নেয়া হয়েছিল। আর বিদেশী কোম্পানিকেই বিনিয়োগ এনে এই প্রকল্প চালাতে দেয়া হয়েছিল।  আসলে মুল কারণ ছিল, দুনিয়াতে তেলের চাহিদা ক্রমে বাড়তে থাকায়  ১৯৯৭ সালের দিকে ভেনেজুয়েলার ‘অরিনোকো বেল্ট’ এর তেল উত্তোলনে বিদেশি কোম্পানি বিনিয়োগে আগ্রহী হয়ে উঠেছিল। এভাবে কূপ তৈরি বহু আগেই শেষ করে কোম্পানিগুলো, যখন বহু আগেই উৎপাদনেও চলে গেছিল, এরই কয়েক বছর পর ২০০৭ সালে ওই কোম্পানিগুলোকেই হুগো শ্যাভেজের সরকার চাপের মুখে দেশ থেকে বের করে দেয়। এ কাজকে ‘সমাজতন্ত্র’ বলে দাবি কমিউনিস্টরা করুক আর যা-ই করুক, আইনি দিক থেকে ব্যাপারটা হল একটা প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছে যে পার্টনার, তাকেই কোম্পানি থেকে গায়ের জোরে বের করে দেয়ার মত। তাই এসব ক্ষেত্রে দেশ-বিদেশে যেমনটা হয়, তেমনই এখানেও ক্ষতিপূরণ মামলা হবেই, হয়েছিলও। আর তাতে কোন কোনটার মালিকানা বিতর্ক মামলায় ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়ে গেছে, আবার কোনটার মামলা এখনো পেন্ডিং। এখন একে ‘সমাজতন্ত্র’ নামে ডেকে কেউ সুখ পেতে চাইলে পেতে পারে, প্রপাগান্ডা করতে চাইলে করতে পারে।

তবে হুগো শ্যাভেজ এর চেয়েও আরো গুরুত্বপূর্ণ সঙ্কট তৈরি করেছিলেন অন্যখানে। আমরা সে দিকটা বুঝতে যাবো। মাটির নিচের তিন ডলারের তেল ১৭০ ডলারে বেচার চেয়ে আরামের কাজ আর কী হতে পারে! এর চেয়ে আরামের ‘সমাজতন্ত্র’ আর কী হতে পারে! শ্যাভেজ এ মজাই খেয়েছেন। দুনিয়ায় তেলের দাম কিন্তু সব সময়ই সাব্যস্ত হয়েছে কোন ‘সমাজতন্ত্র’ ব্যবস্থা নয় বরং, ‘বাজার’ মানে, একেবারে গ্লোবাল পুঁজিতান্ত্রিক বাজারব্যবস্থা দিয়ে। ২০০৭ সালের দিকে তেলের বাজার তখনও তুঙ্গে ছিল, কারণ চীনের জিডিপি তখনো ডাবল ডিজিটে। তাই চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতিতে তার জ্বালানি চাহিদা মানে চীনের সম্ভাব্য ব্যাপক তেলের চাহিদাও ছিল তুঙ্গে ফোরকাস্ট। এ দিকটায় নজর করে তেলের বাজারের ফোরকাস্ট খুবই তেজী ছিল।  যদিও ২০০৭ সালের শেষে (২০০৭-০৮) এসে, আমেরিকা টের পায় যে আফগান-ইরাক ওয়ার অন টেররের অন্তহীন যুদ্ধে জড়িয়ে আমেরিকান রাষ্ট্র নিজ অর্থনৈতিক সক্ষমতা ছাড়িয়ে খরচ করে ফেলেছে। কিন্তু ওদিকে যুদ্ধ শেষেরও কোন নামগন্ধ নাই। সামগ্রিক পরিণতিতে আমেরিকার নেতৃত্বের গ্লোবাল অর্থনীতিতে (দ্বিতীয়) মহামন্দা হাজির হয়েছিল।

এতে আমেরিকা-ইউরোপের অর্থনীতি ঢলে পড়লেও কিন্তু চীনের অর্থনীতির গতি কিছু কমে  সিঙ্গেল ডিজিটের জিডিপিতে এসে আটকে বহাল ছিল। কিন্তু ২০১৪ সালের শেষে (এনার্জি স্টাটিস্টিক্সের প্রতিষ্ঠান, US Energy Information Administration (EIA); এটা আমেরিকান সরকারের হলেও তেলের বাজারে সবার কাছে বিশ্বস্ত) EIA -এর দেয়া চাহিদার ফোরকাস্ট (নিম্নহার) প্রকাশ পায়। এর ফলে তেলে বিনিয়োগকারীরা সদলে আগেই পুঁজি তুলে নেয়া শুরু করেছিল। এতে এরপর থেকে তেলের দাম প্রবলভাবে ক্রমেই কমতে কমতে একপর্যায়ে ৩০ ডলারেও গেছিল, যা এখন ৫৫-৬০ ডলার/ব্যারেলের মধ্যে। সেই থেকে এর ধাক্কা ভেনিজুয়েলার মতো রাষ্ট্র ও ‘সমাজতন্ত্রী’ সরকার আর সহ্য করতে পারেনি। তত দিনে অবশ্য শ্যাভেজ মারা (২০১৩) গেছেন, মাদুরো এসেছেন ক্ষমতায়।

তাহলে ভুলটা কোথায়? মফস্বলের এক দোকানদার বাবা তার দুই ছেলেকে নিয়ে ব্যবসা করেন। সারা দিন তার দোকান খোলা থাকে আর প্রতিদিন তার ক্যাশবাক্স ভর্তি হতে থাকে নগদ ও গোনা হয়নি এমন পরিমাণ টাকায়, তার ব্যবসা এমনই চালু। কিন্তু প্রতিদিন সেই বাবা সন্তানদের সাবধান করে একটা কথাই কেবল বলেন, বাবারা মনে রাখবা, বাক্সের সব টাকা আমার নয়। ব্যবসায় লভ্যাংশ যেটা, কেবল সেটা আমার, সেই টাকা থেকে সংসারে খরচ করতে পার। কেন? কারণ তিনি আসলে বলছিলেন ব্যবসার পুঁজিতে হাত না দিতে, পুঁজি না খেয়ে ফেলতে। ক্যাশবাক্সের কাঁড়ি কাঁড়ি মোট টাকা মানে তা হল ব্যবসায় বিনিয়োগ আর মুনাফার যোগফল। কাজেই, কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা দেখে ছেলেদের যেন মাথা খারাপ না হয়ে যায়।

সমাজতন্ত্রী শ্যাভেজ-মাদুরোরা বাজার খুবই অপছন্দ করেন, কিন্তু ফুলে-ফেঁপে ওঠা ১৭০ ডলারের তেলের বাজার কামনা করেন, ব্যাপারটা তাই হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ১৭০ ডলার এক ব্যারেল তেলের মধ্যে ১৭০ ডলার পরিমাণ ভ্যালু (value addition) ভেনিজুয়েলা যোগ করেনি। তবুও ওই দামেই তা বিক্রি হয়েছে, কারণ বাজারের প্রবল চাহিদা। আর সেটা আবার কোনো স্থানীয় বাজার না গ্লোবাল পুঁজিতান্ত্রিক বাজারে সেটি নির্ধারিত। ফলে এই বিপুল আয়ের ওপর চোখবুজে ভরসা করে খরচের ফর্দ আর দায় নিয়ে ফেলা অনুচিত হলেও শ্যাভেজরা তাই করেছিল। সরকার সমাজতন্ত্রের নামে ‘গরিবের জন্য অর্থ ব্যয়ের পপুলার কর্মসূচি’ খুলে বসেছিল। ফলে এটা স্থায়ী সরকারি ব্যয়ের খাত হয়ে উঠেছিল। বিপরীতে আয়ের সংস্থানের ব্যবস্থাটার কোন স্থায়ীত্ব না থাকলেও। তাই তেলের দাম পড়ে গেলে তখন এই ব্যয় নির্বাহে সরকার হিমশিম। ফলাফলে অতিরিক্ত টাকা ছাপানো, ফাইন্যান্সিয়াল মিসম্যানেজমেন্ট, মুদ্রাস্ফীতি ইত্যাদি।

তবে দ্বিতীয় আরো বড় ভুলটা হল, তেল বেচে পাওয়া অর্থ থেকে সরাসরি পপুলার সামাজিক কর্মসুচিতে খরচ না করে বরং একে আগে কোনো উৎপাদনে, কোনো কৃষি বা শিল্প কাজে বিনিয়োগ হিসেবে ব্যবহারের পরিকল্পনা করা উচিত ছিল। এরপর সেই উৎপাদনের লাভালাভ থেকে একটা অংশই কেবল ‘গরিবের জন্য অর্থব্যয়ের পপুলার কর্মসূচিতে ব্যয়’ বা ব্যবহার করা উচিত ছিল। এতে শুরুতে গরিবের জন্য কর্মসূচি চালু করতে কয়েক বছর একটু দেরি হত অবশ্যই। কিন্তু ক্রমেই একবার চালু করতে পারলে তা স্থির ও দৃঢ়ভাবে চলত। মাঝপথে তেলের দাম পড়ে গেলেও তা রাষ্ট্রের জন্য দায় হয়ে উঠত না। তেলের আয়ের সাথে গরিবের জন্য ব্যয়ের সরাসরি কোনো সম্পর্ক না করা ছিল এর সূত্র বা চাবিকাঠি।

ক্যাপিটালিজমের স্বভাব না বুঝে ক্যাপিটালিজমের বিরোধিতা, খামখা সব পদক্ষেপ আর উদ্ভট দাবি অনেক অর্থনীতি ডুবিয়ে দিতে পারে। সমাজতন্ত্রীরা আজীবন এগুলোই করে এসেছে। সমাজতন্ত্রী চিন্তার আরেক আজিব বৈশিষ্ট্য হল – নাগরিকের সব মৌলিক খরচের (অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থান) দায় রাষ্ট্রকেই নিতে হবে – তা সবার আগেই দাবি করে অথবা ধরে নেয়। কিন্তু রাষ্ট্র কোথা থেকে তা জোগাড় করবে, সামর্থ্য আছে কি না, হয়েছে কি না বা কতটা সেসব কোনো কিছু দেখা ছাড়াই এমন দাবি তারা করে থাকে। তারা ধরে নেয় রাষ্ট্রের এই সামর্থ্য আছে বা থাকবেই বা থাকে। অথচ প্রথম কাজ ছিল রাষ্ট্রের আয় ও খরচের সামর্থ বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দেয়া।  আর পরে বাড়া সামর্থের অনুপাতে খরচের পরিকল্পনা করা।

আফ্রিকার দেশগুলো কলোনিমুক্ত স্বাধীন হয়েছিল মোটামুটি ষাটের দশকের শুরু থেকে। তাদের কাছেও সমাজতন্ত্র-ভাবনা এমন এক কাঙ্খিত বটিকাও ছিল। আফ্রিকার  জাম্বিয়া ১৯৬২ সালে স্বাধীন হয়েছিল। এর এমন স্বাধীনতা সংগ্রামী নেতা ও স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্টের নাম কেনেথ কাউন্ডা। এ কালে চাকরি সুত্রে জাম্বিয়ায় বসবাস কালে শুনেছি, তিনি নাকি সেকালে বাসায় তৈরি মদ খেয়ে জনগণের পেট খারাপের কষ্ট পাওয়া পছন্দ করতেন না। তাই কারখানায় তৈরি মদ ট্যাঙ্ক লরিতে নিয়ে বিতরণের ব্যবস্থা করতে গেছিলেন। সম্ভবত মদও যেহেতু এক প্রকার খাওয়া্‌ মানে অন্নের সংস্থান। ফলে সেটাও রাষ্ট্রের খাওয়ানোর দায় নিতে গেছিলেন তিনি। ১৯৯১ সালের পর এসে জাম্বিয়া রাষ্ট্র দেউলিয়া হয়ে গেছিল, যা এখন একালে আবার অনেক কষ্টে ধীরেসুস্থে বিদেশী (চীনা ও বিশ্বব্যাংকের) বিনিয়োগ, দান-অনুদানে আবার জাগানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

ভেনিজুয়েলার সঙ্কট অবশ্য ওপরে যেগুলো বললাম, এগুলোই সব নয়। এর উপরে আরো নানান ডালপালাও আছে। যেমন ওই ২০০৭ সালের আরো ঘটনা হল, যখন সমগ্র দুনিয়ায় সমাজতন্ত্র এক মৃত অভিজ্ঞতা মাত্র, (১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের সমাজতন্ত্র ভেঙে গেছে) যা নিজ উদ্যোগে ভেঙে পড়েছে তা সবাই জানে। কিন্তু তবু শ্যাভেজ সেখান থেকে কোন শিক্ষা , সাবধানতা সতর্কতা ছারাই ভেনিজুয়েলার টেলিকম, বিদ্যুৎ, পানি, সিমেন্ট, স্টিল, ব্যাংক ইত্যাদি সব কিছু জাতীয়করণ করেন। পরবর্তীকালে এসব প্রতিষ্ঠানের পরিচালনের বিস্তারিত সব দিক প্রসঙ্গ যদি সরিয়েও রাখি, তবুও ভেনিজুয়েলার ক্ষেত্রে এর প্রধান প্রসঙ্গ হয়ে উঠেছিল এবং এখনও হয়ে আছে – এগুলোর অদক্ষভাবে প্রচুর খরচে পরিচালনা।

আর সব কিছুকে ছাড়িয়ে যাওয়া দিক দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়া, সেটা তো আছেই। সরকারের হাতে মালিকানা রাখলে সে প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজমেন্ট বা পরিচালনা যে এক অসহনীয় সমস্যা, এ কথা তো ২০০৭ সাল নাগাদ সমগ্র দুনিয়ার সমাজতন্ত্রীদের কানে ঢুকে যাওয়ার কথা। ভেনিজুয়েলার ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, সেটা ঘটেনি। ভেনেজুয়েলার দুর্নীতি জনমনে কত মারাত্মক উদ্বেগের তা একটা চিহ্ন হল – এ বছর জানুয়ারিতে মাদুরো প্রেসিডেন্টের শপথ অনুষ্ঠানে তিনি তা উল্লেখ করে বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে তিনি ‘বিশেষ ব্যবস্থা’ নেবেন। [He concluded by highlighting that the recovery of Venezuela’s economy and the fight against corruption and indolence are the government’s priorities for the near future,]। এমন সব কিছু অব্যবস্থার প্রভাব কত প্রবল তা বোঝার আরেক সহজ জায়গা হল মুদ্রাস্ফীতি। আপনার যদি ১০ হাজার টাকা থেকে থাকে, তবে এক বছর পর ওর মূল্য ভেনিজুয়েলায় এখন ৫৯ পয়সা। বলা হচ্ছে, ভেনিজুয়েলায় মুদ্রাস্ফীতি এখন ১০৮৭.৫২ শতাংশ। [which means that bolívar savings worth $10,000 at the start of the year dwindle to 59 cents by the end. ]

অনেকে ইঙ্গিতে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেন যে, ভেনিজুয়েলা সমাজতন্ত্রী রাষ্ট্র, সে জন্য নাকি পুতিনের রাশিয়ার সাথে খুব দহরম-মহরম। এমন ভিত্তিহীন অনুমান অনেকের মনে কাজ করে থাকে। কিন্তু পুতিনের সাথে সমাজতন্ত্রের সম্পর্ক কী? পুতিন বা রাশিয়া কী এমন দাবি করেছে  যে রাশিয়া সমাজতন্ত্রী রাষ্ট্র, আছে? তবু এমন “সমাজতন্ত্র- বিক্রেতা” এখনও আছে। এরা আসলে রাশিয়ার রাষ্ট্রস্বার্থের তাঁবেদার ও ভাঁড়। বাস্তবে, ভেনিজুয়েলা এখন রাশিয়ার বিরাট বিনিয়োগের ক্ষেত্র, ২০০৬ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত রাশিয়ার মোট বিনিয়োগ প্রায় ১৭ বিলিয়ন ডলার [Since 2006 Russia has lent Venezuela at least $17bn. ]। ইকোনমিস্ট এক রিপোর্টের শিরোনাম বলছে, [Vladimir Putin fights for his own future ] অর্থাৎ অর্থনৈতিক অবস্থা ভেঙে পড়ার কারণে মাদুরোকে যদি শেষে বিদায়ই নিতে হয়, তবে নিজের বিনিয়োগ নিয়ে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে রাশিয়া।

অর্থনীতি ভেঙে পড়া, দুর্নীতিতে ডুবে যাওয়া ও অব্যবস্থায় অচল ইত্যাদির সরকারের ক্ষেত্রে যা হয়, এখানে তা ঘটেছে। এর একপর্যায়ে সরকার গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিজের পক্ষে সরাসরি ক্যাডার গুণ্ডা বা মিলিশিয়া নামাতে হয়, বিরোধী জমায়েতে হামলা করতে হয় যারা আবার পুলিশবাহিনীর প্রটেকশন পেয়ে থাকে – এসবই ঘটে গেছে ভেনিজুয়েলায়। জবরদস্তিতে ক্ষমতায় থাকার সব কর্মাদি এখানে সম্পন্ন করা হয়েছে। সবার ওপরে মাদুরোকে  আবার কেউ উলটে ফেলে দেয় তা থেকে রক্ষা করতে পুতিনের দেয়া প্রটেকশন, সেটা তো আছেই।

ইকোনমিস্টের আরেক অবজারভেশন হল – […hollowing out of institutions and the privatisation of state power is precisely what Russia and Venezuela have in common]। অর্থাৎ এখানে মাদুরো আর পুতিনের মধ্যে এক বড় মিল আছে। সেটা হল, উভয় ব্যক্তিরই দখলে থাকা বা পরিচালিত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর যার যা ভূমিকা তা হল, প্রশাসন পাবলিকের পক্ষ থেকে গণস্বার্থ দেখা ও মনিটরিং বা নিয়ন্ত্রণ করা ইত্যাদি সব দায়িত্ব বাদ দিয়ে এখন উলটা্ “প্রতিষ্ঠানগুলোকেই ফোকলা” আর অকেজো করে ফেলা হয়েছে। প্রশাসনিক বিজনেস রুলের রুল বই দিয়ে এগুলো আর পরিচালিত নয়। এগুলো পরিচালিত হয় ব্যক্তি-মুখের নির্দেশে। এটা যেন ‘রাষ্ট্রক্ষমতারই এক প্রাইভেটাইজেশন’ এমন ঘটে গেছে। আর কে না জানে, যখন রাষ্ট্রের নির্বাহীদের কেউ কব্জা করে নেয়, তখন তার রাষ্ট্রীয় সম্পদও তাদের দখলে চলে যায়, রাষ্ট্র এক পরিত্যক্ত এলাকা হয়ে যায়।

এসবের মিলিত এখন আর এক রূপ হল, ‘প্রাইভেট আর্মির’ সমাধান। ইকোনমিস্ট-সহ অনেকে জানাচ্ছে, ইতোমধ্যে মাদুরোর কোনো সম্ভাব্য ক্ষমতাচ্যুতি ঠেকাতে রাশিয়া ইতোমধ্যে কয়েক শ’ রাশিয়ান ‘প্রাইভেট আর্মি’ বা ওয়াগনার (Wagner mercenaries) পাঠিয়েছে।

‘প্রাইভেট আর্মি’- এটা ইদানীংকালের আরেক নতুন ফেনোমেনা। তবে সাবধান, এটা পুতিনের রাশিয়াই প্রথম দেখিয়েছে তা মোটেও নয়। ইরাকে বা আফগানিস্তানে ব্লাক-ওয়াটার[Blackwater] বাহিনীর কথা আমরা শুনেছিলাম। এরাই ছিল সেখানে আমেরিকান ‘প্রাইভেট আর্মি’ সরবরাহের কোম্পানি। পরে অবশ্য এক স্থানিয় বাজারে সাধারণ মানুষকে নির্বিচারে গুলি ছুড়ে মারার অভিযোগে কেলেঙ্কারিতে পড়ে এই বাহিনী আমেরিকায় ফিরে যায়। মজার ব্যাপার হল, মিয়ানমারের এক ইংরেজি দৈনিক খবরে দাবি করা হয়েছে যে, চীন সেই ব্লাক-ওয়াটার কোম্পানিকেই নতুন নামে মিয়ানমারে নিয়োগ করতে যাচ্ছে। অর্থাৎ রাষ্ট্রের নাগরিকদের অধিকার চুলায় যাক, আমেরিকা, রাশিয়া অথবা চীন প্রত্যেকেই নিজেদের ব্যবসার স্বার্থে প্রাইভেট গুন্ডাবাহিনী পাঠিয়ে হলেও তা করতে চায়। এব্যাপারে তাদের মধ্যে কোন নীতিগত ফারাক নাই।

ভেনিজুয়েলাবাসীর জীবন দুর্বিষহ করে তোলার ক্ষেত্রে আরেক বিরাট অবদান ট্রাম্পের আমেরিকার। এ কালে আমেরিকা যার ওপরে ইচ্ছা “অবরোধ আরোপ” করে রাখছে। এই অবরোধের সোজা মানে, সেই রাষ্ট্রের পক্ষে ডলারে কোনো কিছু বেচা/কেনা করা বন্ধ করে দেয়া। ফলে ভেনিজুয়েলার এখন ডলারে তেল বিক্রি বন্ধ। এ ছাড়া ওষুধের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয়গুলো পণ্যের আমদানিতেও এর বাধা তোইরি করে রাখা  তো আছেই। অথচ ১৯৪৪ সালে ডলারকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা বলে গ্রহণ করার সময় আমেরিকা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল নিজে অন্য রাষ্ট্রকে ডলারে পণ্য কেনাবেচা করতে বাধা দিবার সুযোগ নিজের হাতে রাখবে এমন কোনো শর্ত ছিল না।

সামগ্রিক দিক থেকে দেখলে ভেনিজুয়েলার বিরাট আরেক ভুলটা হল বিপ্লবীপনার মোহে শেষে রাশিয়া ও আমেরিকার প্রতিদ্বন্দ্বিতা, প্রতিযোগিতার ফাঁদে পড়া। অথচ সরাসরি কারো কব্জায় পড়া এড়িয়ে যাওয়া – এই নীতি অনুসরণ করে পথ চলা সঠিক ছিল। এ ছাড়া নিজ দেশের রাজনীতিতে অভ্যন্তরীণ যতই বিরোধ থাক, নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও অবিতর্কিত রাখা খুবই জরুরি। অন্যথায় আভ্যন্তরীণ বিরোধকে ছোট বা সীমিত  ও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখা কঠিন হয়ে যায়। কারণ, সমাজে নানা রকম স্বার্থদ্বন্দ্ব থাকবেই, যা এক চলমান ঘটনা। কিন্তু তা এক ‘পারমিশিবেল রেঞ্জের’ মধ্যে রাখতে পারতে হয়। আমরাই একমাত্র ভাল অথবা সমাজতন্ত্রী এসব প্রচার করে সমাজকে অন্তত গভীর দুই ভাগে বিভক্ত করে ফেললে নিজের দেশ বাইরের দেশ ও লোকের স্বার্থের ঘুঁটি হয়েই ওঠে। ভেনিজুয়েলার অবস্থা হয়েছে এটাই।

লেখক : রাজনৈতিক বিশ্লেষক
goutamdas1958@hotmail.com

 

 

[এই লেখাটা এর আগে গত ৩০ মার্চ ২০১৯ দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকার অনলাইনে (প্রিন্টে পরের দিন) ভেনিজুয়েলা কিসের ইঙ্গিত দিচ্ছে – এই শিরোনামে ছাপা হয়েছিল। পরবর্তিতে সে লেখাটাই এখানে আরও নতুন তথ্যসহ বহু আপডেট করা হয়েছে। ফলে সেটা নতুন করে সংযোজিত ও এডিটেড এক সম্পুর্ণ নতুন ভার্সান হিসাবে এখানে ছাপা হল। ]

 

 

 

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Twitter picture

You are commenting using your Twitter account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s