জিডিপিতে অতুষ্ট ভারতকে উদ্ধারে সিপিডি


জিডিপিতে অতুষ্ট ভারতকে উদ্ধারে সিপিডি

গৌতম দাস

০২ নভেম্বর ২০২০, ০০:০৬ সোমবার

https://wp.me/p1sCvy-3f7

 

India’s annual GDP growth (contraction), AJ

সামগ্রিক অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধির অবস্থা কী বা কতটুকু হয়েছে এর একটা মাপক হল জিডিপি। এর অনেক সীমাবদ্ধতা সত্বেও এটাই এখনও রাষ্ট্রের অর্থনীতির প্রধান মাপক হয়ে হাজির আছে। জিডিপি হল Gross Domestic Product (GDP) বা বাংলায় মোট দেশজ উতপাদন। এর অর্থ আরেকটু খুলে বললে, এখানে ‘গ্রস’ মানে আমরা যেমন বলি মোটের উপর, সেটাই। অর্থাৎ গ্রস মানে কোন কিছু বাদ দেয়া ছাড়াই অর্থে, এভাবে মোট। যেমন মোট বেতন বা গ্রস সেলারি। কারণ ‘আসল বেতন’ বুঝতে ‘মোট বেতন’ থেকে এরপর ট্যাক্স বা অন্যান্য নানান কিছু বাদ দিলে বুঝা যেতে পারে বাসায় আনা বেতনটা কত। আর ডোমেস্টিক বা দেশজ শব্দটা এখানে নেয়া হয়েছে এটা বুঝানোর জন্য যে যা  দেশে উতপন্ন পণ্য বা সেবা নয় এখানে হিসাবের মধ্যে তা বাদ দেয়া হয়েছে এটা বুঝাতে। অর্থাৎ ভৌগলিক বাউন্ডারি এখানে গুরুত্বপুর্ণ এবং সীমানার বাইরের জিনিষ বাদ। তাহলে বিদেশে আয় বা রেমিট্যান্স কী জিডিপির ভিতরে হিসাবে ধরা হয়? জবাব হল আয় হিসাবে ধরা হয় হয় না। কিন্তু ব্যয় করার সক্ষমতা হিসাবে যে বাসায় এই রেমিট্যান্স এসে ঢুকেছে ওদের ব্যয়ের সক্ষমতা হিসাবে গোনায় অন্তর্ভুক্ত বলে ধরা হয়। অর্থাৎ পরোক্ষে অন্তর্ভুক্ত করে ধরা হয়। একারণেই বাংলাদেশে  বছরের ৩৬৫ দিনের মধ্যে প্রায় ১৭০ দিন হরতাল থাকলেও জিডিপি গণনায় এর প্রভাব তেমন না। কারণ, বছরের অর্ধেকদিন হরতাল থাকলেও কোন ভুরঙ্গমারি উপজেলার কোন মা ছেলের পাঠানো টাকা পেয়ে উপজেলা বাজারে এসেছে টিন-সিমেন্ট ইত্যাদি বাড়ি তৈরির পণ্য কিনতে আসে। এতে বাংলাদেশের অর্থনীতি হরতালে ঝিমিয়ে পড়া ঠেকিয়ে উলটা চাঙ্গা থাকার জন্য চাপ অনুভব করে হরতালের নেতি প্রভাব অনেকটাই সামলে ফেলে থাকে। আসলে জিডিপি গণনায় আয়ের চেয়ে ব্যয়ের সক্ষমতা দিয়ে আয়কে বুঝার ও ধরার চেষ্টা করা হয়, এটাই মূল কারণ। যেমন মোট জিডিপি মানে হল, জিডিপি=ভোগ+বিনিয়োগ+সরকারি ব্যয়+(রপ্তানি-আমদানি)।

GDP = consumption + investment + (government spending) + (exports − imports).

আর সবশেষে জিডিপিতে প্রডাক্ট (উতপাদন) বলতেও শুধু উতপন্ন পণ্য না বরং পণ্য ও সেবা (সেবা মানে যেমন খাওয়া বা থাকার হোটেল যেটা বিক্রি করে) দুটাই ধরে নেয়া হয়। এখানে পণ্য ও সেবার মুল্য মানে। এক বছরে পণ্য ও সেবা কতটা নতুন মুল্য (এডেড ভ্যালু) যোগ করল তাই জিডিপিতে বিবেচ্য।
তবে এভাবে জিডিপি মাপকের বহু সমালোচনা আছে, যার অনেকটাই জেনুইন। যেমন জিডিপি দেশের প্রবৃদ্ধি মাপে হয়ত কিন্তু তা সমাজে মানুষের আয়ের বৈষম্য তুলে ধরে না বা জানা যায় না। এটাকে অনেকে বলতে পারেন, এখানে প্রবৃদ্ধির কথা তুলে ধরে সরকার আয়ের বৈষম্যের দিকটা লুকিয়েছে। মানুষকে বিভ্রান্ত করা হয়েছে।  জিডিপির প্রবৃদ্ধি দিয়ে বৈষম্য ঢেকে ফেলার মত করে উপস্থাপন বা কথা বলা অবশ্যই রাজনীতিকদের খুবই অগ্রহণযোগ্য ও খারাপ দোষ। যদিও আবার মনে রাখতে হবে, যা যা আমরা জানতে চাই কোন একটা মাপকই এমন সবকিছুর মাপক-প্রকাশক হবে না, তুলে ধরে না। তাই আয় বৈষম্যটা আলাদা ফিগার চার্ট বা গ্রাফ থেকে দেখে নিয়ে রাজনীতিবিদদের ধরতে বা শায়েস্তা করতে হবে।
তাই সারকথায়, অর্থনীতিতে মাপামাপির রেওয়াজ বলে কিছু তো থাকারই কথা, থাকবেই। বাইরের লোককে তা দেখাতে চাই আর না চাই অন্তত নিজের তো জানা দরকার যে অর্থনীতি আগাল না পিছাল এবং কতটুকু। তাই সব দেশেরই স্ট্যাটিস্টিক্যাল (পরিসংখ্যান) ব্যুরো নামের প্রতিষ্ঠান থাকে। সেখানে কোন পদ্ধতিতে কেমনে কী মাপবে তারও ছকে বাধা অনেক নিয়ম আছে। এছাড়া দুনিয়ার সব রাষ্ট্র প্রায় একই নিয়মে মাপামাপি করে থাকে আরও অন্য একটা কারণে। কেন?
সেটা হল, দুনিয়াতে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংক নামে দুটা গ্লোবাল অর্থনৈতিক বহুরাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের উপস্থিতি; সেই ১৯৪৫ সাল থেকে যার শুরু। বেচাকেনা, পণ্য বিনিময় ও ব্যবসাবাণিজ্যের আন্তঃরাষ্ট্রীয় ও গ্লোবাল ও বাস্তব করে তুলেছে এ দুই প্রতিষ্ঠান। গ্লোবাল অর্থনীতির নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানও বলা যায় আইএমএফ-কে। যেটা গ্লোবাল সিস্টেমটাকে একটা অর্ডারে, এর নিয়ম ও ব্যবস্থাকে ধরে রেখেছে। যদিও এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আছে যেগুলোর অনেক কিছুই সত্যি। যার মূল কারণ এই দুনিয়াটা অসম ও ব্যাপক বৈষম্যের দুনিয়া। এরই ভিতরে আন্তঃরাষ্ট্রীয় কোনো গ্লোবাল বাণিজ্য চালু রাখতে বা একটা সিস্টেম চালু ও খাড়া রাখতে গেলে সেখানেও ঐ বৈষম্য থাকবেই, প্রভাবিত করবেই। গ্লোবাল অর্ডারের নেতা আমেরিকা এসব প্রতিষ্ঠানেও আধিপত্য নিয়ে বসবেই। আর তাতে সিস্টেমের সুবিধাগুলো গরিব রাষ্ট্রের অনুকূলে যাবে না এটাই স্বাভাবিক। এক কথায় এ’দুই প্রতিষ্ঠান ব্যাংকের মালিকানার মতোই নিয়মে খাড়া করা হয়েছে যে, যার যত শেয়ার মালিকানা তার গলার স্বর তত উঁচু। এটাই একেবারে মূল কারণ। কিন্তু  সাবধান! সে জন্য গ্লোবাল বাণিজ্য ব্যবস্থারই দরকার নেই বা আইএমএফ-বিশ্বব্যাংক নিপাত যাক ধরনের স্লোগান তোলা হবে নির্বুদ্ধিতা এবং আত্মঘাতী। কারণ  প্রধানত আমাদের অবশ্যই দরকার এক গ্লোবাল বাণিজ্য ব্যবস্থা; আর এরপরের দাবি এটা যেন  বৈষম্যহীন না হলেও অন্তত যেন কম বৈষম্যমূলক হয়! তাই বিদ্যমান ব্যবস্থার বৈষম্য সম্পর্কে আপত্তি ও বৈষম্যের কথা তুলে যেতে হবে। কিন্তু সাবধান নিপাত যাক নয়!

এবারের জিডিপি নিয়ে কথা শুরু কী থেকেঃ
এবারের ঘটনার শুরু মূলত ভারতের ইস্যু আর তা মিডিয়ার কারণে যতটুকু যা বাংলাদেশেও হাজির। মূল ঘটনা, বাংলাদেশ জিডিপির মাপে ভারতকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। সে কারণে যেমন, ভারতের মিডিয়ার মতই প্রথম আলোও লিখছে, “ভারতে তোলপাড়, বাংলাদেশে আত্মতৃপ্তি।’ আইএমএফের এক প্রতিবেদন নিয়েই সব আলোচনা। বাংলাদেশ তো আগেই জিডিপিতে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে দিয়েছিল। এবার মাথাপিছু জিডিপিতে পেছনে ফেলতে যাচ্ছে ভারতকে। ভারত কেন পিছিয়ে পড়ল, তার চেয়েও বড় আলোচনা, বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে গেল”।

কিন্তু কোনও দেশ অর্থনীতিতে ভালো করবে তো অন্যদেশ কেউ খারাপ, তাতে তোলপাড় হবে কেন? এর একটা সাধারণ জবাব হল, ইতোমধ্যেই করোনাকালের অর্থনীতি পাক্কা সাত মাস প্রায় বসে পার করেছে, তাই বিশ্বজুড়েই একটা মন্দা বয়ে যাচ্ছে। কাজেই এটা আরও কতটা খারাপ হতে পারে, কত ক্ষতি করেছে মুলত কবে পুনরুদ্ধার পাবে, এসব নিয়ে মাপামাপির মাতামাতি তো হবেই। কিন্তু না ভারতের এই মাতামাতি এর চেয়েও বেশি এবং কারণও ভিন্ন।

প্রথম কারণঃ
ভারতের মাতামাতিটা আইএমএফ [IMF] নিজেই তৈরি করেছে। তার ইকোনমিক আউটলুক রিপোর্ট প্রকাশ করে। কেন? ভারতের অর্থনীতি জাগছে না ডুবছে সেটা আইএমএফের এক বিশেষ আগ্রহের বিষয়। অবশ্যই। এর পিছনের জেনুইন ও প্রকাশ্য কারণটা হল, ভারতের জনসংখ্যা- ১৩৮ কোটি, এক বিশাল ফিগার। দুনিয়ার মোট জনসংখ্যার পাঁচভাগের একভাগের পুরাটাই ভারতের বাসিন্দা। ফলে অন্ততপক্ষে এক বিরাট ভোক্তা বাজার এটা।  যদিও এই বৈশিষ্টটাকে ভারতে ইতি ও নেতি ব্যবহার, দুটাই করে থাকে। এছাড়া তা নিয়ে হবু গ্লোবাল নেতা হওয়ার স্বপ্নসহ ন্যূনতম শর্ত পূরণ করা গুটিকয়েক দেশের একটা ভারত। যদিও এটুকুতেই সে কোন একদিন গ্লোবাল নেতা হবেই তা নিশ্চিত হয় না। কিন্তু একটা বড় শর্ত পূরণ হয় অবশ্যই। আবার অন্য দিকে আইএমএফ নিজের জন্মের ম্যান্ডেটেই বলা আছে যে, বিগত ১৯৩০ সালের মত গ্লোবাল মহামন্দা যেন দুনিয়াতে আর না আসে সেটা ঠেকাতেই মূলত এই আইএমএফের জন্ম। কাজেই ভারতের অর্থনীতি ভালো করা মানেই গ্লোবাল অর্থনীতিতে এর বড় ইতিবাচক প্রভাব থাকবে – যেটা আইএমএফের নিজের ইচ্ছা ও অস্তিত্বের পক্ষে এক বড় সাফাই।

আবার অন্য দিকে আইএমএফের অপ্রকাশ্য ভারতপ্রীতির একটা দিক আছে। সেটার কারণ হল, আইএমএফের রিপ্লেসমেন্ট (আগামি বিকল্প) প্রতিষ্ঠান হিসেবে যেমন ব্রিকস [BRICS] উদ্যোগ ইতোমধ্যেই সক্রিয়  হয়েছে চীনের নেতৃত্বে। যদিও ভারত সেখানে আবার চীনের প্রধান সহযোগী। ওদিকে এটাও সত্যি চীন এখনঅও আইএমএফের বড় সদস্য হয়ে আছে ছেড়ে যায় নাই। যদিও চীনের বড় মালিকানা শেয়ার কিনে-নেয়া আমেরিকা ঠেকিয়ে রেখে দিয়েছে। তবু আসন্ন নতুন গ্লোবাল নেতা হিসাবে চীন আসন নিয়ে নিলে পরে সেই চীনের সাথে আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের সম্পর্ক কোথায় গিয়ে ঠেকে তা ভাবলে এনিয়ে অপ্রকাশ্য রাখা কোন অস্বস্তি আইএমএফের স্টাফদের থাকা অস্বাভাবিক নয়। যদিও তারা খুবই উচ্চস্তরের প্রফেশনাল ব্যক্তিত্বের লোক; আমেরিকান স্বার্থ আর নিজ প্রাতিষ্ঠানিক স্বার্থ যে আলাদা তা যতটা তাদের পক্ষে সম্ভব আলাদা রাখার চেষ্টা করে যান। ওদিকে ব্রিকস এখন আইএমএফের মতই প্রতিষ্ঠান তবে কেবলমাত্র পাঁচ সদস্য-রাষ্ট্রের জন্য। কিন্তু  একই দুনিয়াতে দুইটা আইএমএফ একসঙ্গে থাকতে পারে না। কারণ প্রতিষ্ঠান হিসাবে আইএমএফের ভুমিকা, গ্লোবাল অর্থনীতির নিয়ন্ত্রকের ভুমিকা। কাজেই এখন ব্রিকসের ততপরতা কেবল পাঁচ সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ বলে অন্যান্য রাষ্ট্রের কাছে এর কোন ভুমিকা নাই বা টের পায় না। কিন্তু চীন নেতার আসন নিয়ে বসে গেলে এটা এমন আর থাকবে না।

অতএব সব মিলিয়ে ভারতের অর্থনীতির প্রতি আইএমএফের কড়া নজর আছে ও  থাকবে। এছাড়া ওদিকে আসলে করোনার প্রভাব পড়তে শুরুর বহু আগে থেকেই ব্যাপকভাবে ডুবতে থাকা ভারতের অর্থনীতি, পরবর্তিতে  করোনার প্রভাবে আরও চরমভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে। গত কোয়ার্টারে (একটা বছরকে তিন মাস করে একেক কোয়ার্টারে ভাগ করে দেখলে) ভারতের জিডিপি ছিল নেগেটিভ ২৪%, যেটা অর্থবছর শেষে গড়ে প্রায় নেগেটিভ ১০.৪% হতে পারে বলে অনুমান-আশঙ্কা করা হচ্ছে। অর্থনীতিতে পিছিয়ে থাকা দেশ যেমন এশিয়ার কোন দেশে নেগেটিভ জিডিপি হতে দেখা যায় না। নেগেটিভ বা খুবই কম (২% এর মধ্যে) জিডিপি হয় সাধারণত অগ্রসর অর্থনীতির পশ্চিমা দেশগুলোর।

এই প্রেক্ষিতে ভারতের চলতি বছর শেষে অনুমিত জিডিপি নেগেটিভ ১০.৪% হওয়া তাই খুবই খারাপ লক্ষণ। আর সেটাকেই ফোকাস করতে আইএমএফ কথাটা বাংলাদেশকে টেনে এনে একটা তুলনা করে বলেছে। এছাড়া ব্যাপারটাকে আরো করুণ দুরবস্থা করে তুলেছে কলকাতার এক ব্যক্তিত্বের দুঃখ প্রকাশ করা এক টুইট-বার্তা। তিনি বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু। গত ১৫ অক্টোবর তিনি লিখেছেন, “আইএমএফের প্রাক্কলন দেখাচ্ছে যে ২০২১ সালে বাংলাদেশ মাথাপিছু জিডিপিতে ভারতকে ছাড়িয়ে যাবে। যেকোনো উদীয়মান অর্থনীতির ভালো করাটা সুসংবাদ। তবে অবাক করা বিষয় হচ্ছে, পাঁচ বছর আগেও যে ভারত ২৫ শতাংশ বেশি এগিয়ে ছিল, সেই ভারত এখন পিছিয়ে যাচ্ছে। এখন ভারতের প্রয়োজন একটি সাহসী আর্থিক ও মুদ্রানীতি তৈরি করা”। [এই অনুবাদটা প্রথম আলো থেকে নেওয়া]। এসব তথ্য মোদীর মাজা ভেঙে দিয়েছে, মোদীকে উদাম করে দিয়েছে। যেটা সেই ২০১৬ সালে ভারতে মোদীর নোট বাতিলের সময় থেকে তিনি ভারতের অর্থনৈতিক দুরাবস্তা লুকিয়ে চলেছেন। বিশেষ করে আগামী আট মাসের মধ্যে যখন মোদীকে বিহার, পশ্চিমবঙ্গ আর আসামের মত গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য-নির্বাচন মোকাবেলা করতে হবে। তখন আইএমএফ এভাবে সব উদাম করে দিয়েছে। আর এতে বিরোধীরা এই প্রথম মোদীকে শক্ত ও অস্বীকার-অযোগ্য এমন ডাটা দিয়ে ঘায়েল করার সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে। অবশ্য অনেকেই আবার মোদীকে রক্ষা করতে এগিয়েও আসছে!

দ্বিতীয় কারণঃ
মিথ্যা বলার এক বিরাট অসুবিধা হল কখন যে তা নিজেরই বিরুদ্ধে হাজির বা ব্যবহৃত হয়ে যায়। এটা অনেকটা অন্যের কথা ভেবে খুঁড়ে রাখা গর্তে নিজেরই পড়ে যাবার মত। ভারতের রাজনীতিকদের বিশেষ করে মোদীর অবস্থা হয়েছে তাই। ভারতের হিন্দুমনের কাছে একটা কমন ব্যাখ্যা থাকতে দেখা যায় যে, সাতচল্লিশের ভারতভাগে যেন শুধু বাংলাদেশ থেকেই হিন্দুরাই ভারতে মাইগ্রেশন করেছে। উল্টাটাও যেন সত্যি না বা ব্যাপারটা যেন উভমুখি ছিল না। ভিত্তিহীন হলেও এই কথা তারা সেই সাতচল্লিশ থেকে আউড়ে চলেছে। একালে ভারতের দুইটা রাজনৈতিক দল বা গ্রুপের নিজপক্ষের রাজনীতি এমন ভাষ্যের উপর দাঁড়িয়ে আছে। এরা হল – এক, আসামের মুসলমানবিদ্বেষী অসমীয় এবং বোড়ো এদুই জাতিবাদিরা। আর দুই, সারা ভারতজুড়ে বিজেপির মোদী-অমিতের বয়ান তো আছেই। মিথ্যা বয়ান দিয়ে হিন্দুমনকে খেপিয়ে মুসলমান খেদানোর নাগরিকত্ব আইনের পক্ষে সাফাই তৈরি করতে মোদী-অমিত এসব করেছে। বিশেষত অমিতের বয়ানে ঘুসপিটা (অনুপ্রবেশকারী মুসলমান), উইপোকাকে পিষে মেরে ফেলা, বঙ্গোপসাগরে ছুড়ে ফেলা ইত্যাদির উন্মাদনা বয়ান নিয়ে তিনি এসেছেন। যেটা দাঁড়িয়ে আছে এই ভিত্তিতে যেন বাংলাদেশটা এতই গরিব-দুস্থ যে সমৃদ্ধ ও মহান ভারতের হিন্দুদের সম্পদ খেয়ে নিচ্ছে।  যেন এরা হিন্দুদের সম্পদ খেতে দলে দলে এখনো ভারতেই যাচ্ছে। আর এটাই নাকি ভারতের প্রধান সমস্যা। তাই এর সমাধান করতেই মোদী মুসলমান খেদানোর নতুন নাগরিকত্ব আইন করছেন। এমনকি দেখা যাচ্ছে, বীণা সিক্রির মত প্রাক্তন ভারতীয় রাষ্ট্রদুত এমন বয়ান প্রকাশ্যে অনুমোদন করেন। অতএব বিজেপির এখান থেকে সিদ্ধান্ত হল,   হিন্দুমন (ভোটার) যেন ‘দেশ রক্ষার্থে’ এই ভেবে ঘৃণায় জেগে ওঠে, আর এ কাজে সহায়তা করতে শুধু বিজেপিকেই ভোট দেয় – এই হল বিজেপির ভোট-রাজনীতির মূখ্য বয়ান।
কিন্তু মোদী-অমিতের কপাল আসলেই খারাপ!  কারণ, আইএমএফের ইকোনমিক আউটলুক রিপোর্ট বাংলাদেশের সাথে তুলনায় ভারতের অর্থনীতি কত পিছনে গেছে; আর কৌশিক বসুর প্রকাশিত দুঃখে ২৫ বছরের পরাজয়ের বাণী ইত্যাদি সবই মোদীকে একেবারে ন্যাংটা করে দিয়েছে। এখন আসন্ন নির্বাচনগুলোও সামলানো কঠিন হয়ে যাবে। কারণ, ভারত বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে পড়া অর্থনীতির দেশ এটা যখন আইএমএফের মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান তথ্যপ্রমাণ দিয়ে সাক্ষ্য দেয় তার মানে তো মোদীর (বাংলাদেশ থেকে মুসলমান অনুপ্রবেশকারিরা আসছেই) এই বয়ান একেবারেই ফুটা হয়ে যাওয়া! তার নাগরিকত্ব আইনসহ পুরো হিন্দুত্ববাদের বয়ানে মারাত্মক ধস নেমে আসা! বাংলাদেশের অর্থনীতির ট্রেন্ড যদি ভারতের চেয়ে উন্নত বা ভালই হয় তাহলে সেই বাংলাদেশ থেকেই ইকোনমিক (মুসলমান) মাইগ্রেন্টদের ভারতে যাচ্ছে এই বয়ানের ভিত্তিই নাড়িয়ে দেয়, ভিত্তি আর থাকে না। কাজেই মোদীর মুখ্য বয়ানই যদি মিথ্যা হয়ে যায় তবে বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে আর আসামে মোদী-অমিত নির্বাচন করবেন কী দিয়ে, কোন বয়ানে? এই হলো তাদের মারাত্মক সঙ্কটে পরে যাবার দিকটা। ফলে তারা এখন দিগিবিদিক শূন্য হয়ে জিডিপি মাপামাপি – এটারই ত্রুটি খুঁজতে নেমেছে বা নামিয়েছে  যে জিডিপি জিনিষটাই “বেঠিক” তা প্রমানে নেমে পড়!

জিডিপির প্রগতিবাদী সমালোচনাঃ
ব্যাপার হল, দুনিয়ার কোন একটাই স্ট্যাটিস্টিক্যাল ফিগার, গ্রাফ বা ম্যাপ তা আমাদের প্রয়োজনীয় সব তথ্য দিতে পারে না, সব প্রশ্নের তা জবাব নয়। অর্থাৎ সব তথ্য একটা চার্ট থেকে পাওয়া যাবে না। সব ফিগার বা গ্রাফেই এমন সীমাবদ্ধতা থাকে। জিডিপির পরিমাপও তেমনই।
জিডিপি বা বাংলায় মোট দেশজ উৎপাদন-এর মানে হল, গত অর্থবছরের তুলনায় এবার মোট পণ্য ও সেবা মূল্যে (অ্যাডেড ভ্যালু) কতটুকু বেড়েছে আর তা মুদ্রায় (সাধারণত ডলারে) কত, এরই প্রকাশ। তবে সাথে আমদানি করা পণ্য ও সেবা যা এসেছে তা বাদ দিয়ে হিসাব করতে হবে। এরপরে দেশের মোট জিডিপিকে আবার দেশের জনসংখ্যা দিয়ে ভাগ করে গড়ে মাথাপিছু জিডিপির ধারণা তৈরি করা হয়। এটা একেবারেই রাফ বা মোটের উপর ধরনের ধারণা। এখানে মাথাপিছু মানে সমাজের প্রতিটা মানুষের এটা ন্যূনতম আয় তা বুঝা কোনভাবেই ঠিক হবে না আর তা দাবিও করা হচ্ছে না। বরং হরেদরে সবাই সমান হলে কি হত এমন একটা গড় ধারণা মাত্র।  গড় শব্দটার অর্থও তাই। এছাড়া জিডিপির আরেক সীমাবদ্ধতা আছে তা হল, সব দেশে ও মুদ্রার ক্রয়ক্ষমতা (পারচেসিং পাওয়ার) এক নয়। ফলে দুটা দেশের মধ্যে জিডিপির তুলনা করতে বসার ক্ষেত্রে এটা জিডিপি পরিমাপের এক বিরাট সীমাবদ্ধতা। তবে একালে এরই সংশোধন হিসেবে আইএমএফ-বিশ্বব্যাংক ইতোমধ্যে পিপিপি (পারচেসিং পাওয়ার প্যারিটি) Purchasing Power Parity (PPP) সূত্র প্রয়োগ করে সব রাষ্ট্রের জিডিপিকেই পরস্পর তুলনাযোগ্য করে এনেছে।

প্রগতিবাদ ও জিডিপিঃ এবারের আইএমএফের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২০ অর্থবছর শেষে বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি হবে ১৮৮৮ ডলার, আর ভারতের মাথাপিছু জিডিপি হবে ১৮৭৭ ডলার। অর্থাৎ ভারতের চেয়ে বাংলাদেশের গড় আয় বেশি হয়ে যাবে। আর এই কথাটাতেই বিজেপি ও আমাদের দেশের “ভারতপ্রীতি থাকা কর্তব্য মনে করা” কিছু মানুষের চিত্ত জ্বলে গেছে।
আসলে গড় মাথাপিছু আয় কত সেটা হল, দেশের সাথে দেশের তুলনার প্রয়োজনে তাদেরকে কিছুটা অন্তত তুলনীয় করতে কী করা যায় সেই অর্থে এটা একটা মাপক। তাই মোট আয় ভাগ মোট জনসংখ্যা, এই সোজা ফর্মুলার ব্যবহার। আগেই বলেছি, পদ্ধতিমাত্রেরই ওর সীমাবদ্ধতা থাকবেই। তবে সবচেয়ে বড়কথা, এটা মনে করা মারাত্মক ভুল যে কোনো দেশের মানুষের ন্যূনতম আয় আর মাথাপিছু জিডিপি এক। অবশ্যই তা নয়। বরং মাথাপিছু আয় আর মানুষের ন্যূনতম আয়ের ফিগার (যেটা শিল্পশ্রমিকের ন্যূনতম মজুরির) সাথে তুলনা করলেই বোঝা সম্ভব সমাজের আয়-বৈষম্য কত মারাত্মক।

প্রগতিবাদিতার আড়ালে সিপিডিঃ
গত ১৩ অক্টোবর আইএমএফের ইকোনমিক আউটলুক রিপোর্ট প্রকাশের পর থেকে  ভারতের জিডিপি বা অর্থনৈতিক পারফরমেন্স নিয়ে মোদী সরকার চারদিক থেকে  কঠিন সমালোচনার মুখে পড়া শুরু হয়েছিল। প্রথম আলো ১৪ অক্টোবর মোদীর সমালোচনা নিয়ে রিপোর্ট করতে শুরু করেছিল আর সবার মত। এমনকি ১৯ অক্টোবর নিজস্ব স্টাফও এক রিপোর্ট করেছিল সেটাও মোদীর জিডিপি ফেল করার সমালোচনা করেই করা। কিন্তু একই সাথে সেদিনই আবার সিপিডির [CPD] এক উলটা গান – “কেন ভারত ও বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপির তুলনা বেঠিক” – এই শিরোনামের রিপোর্টও প্রকাশ করে। অর্থাৎ একই দিনে সিপিডির ‘জিডিপির তুলনা বেঠিক’ আর নিজের রিপোর্টে জিডিপির তুলনা সঠিক বলে দুটা রিপোর্ট প্রথম আলো ছেপেছিল।
এখন এটা বেশ কৌতুকের যখন একটা থিংকট্যাংক বা অর্থনীতিতে দাতা প্রকল্পে অথবা অবকাঠামো প্রকল্পে কনসাল্টেন্সি করা প্রতিষ্ঠান একালে যখন একই সাথে নিজেকে কথিত ‘প্রগতিবাদী’ সংগঠন হিসেবেও তুলে ধরতে চায়। অথচ প্রগতির ভাষ্যমতে কনসাল্টেন্সি আর কমিউনিস্টগিরি এক সাথে চালানো যায় না, চলার কথা নয়। অথচ সিপিডির ভারতের সাথে আমাদের ‘জিডিপির তুলনা বেঠিক’ বলে লিখে এই লেখা ভারতের প্রতি প্রীতিবশতই করা তাই প্রমাণ করেছে। সিপিডি যে চিন্তাগত অবস্থান আর যে টাইপের কনসাল্টেন্সি করা প্রতিষ্ঠান তাতে জন্মের পর থেকে জিডিপি মাপা ও তুলনাকে “সঠিক” ও ইতিবাচক ভাবে ধরে নিয়ে সিপিডি এপর্যন্ত চলে এসেছে। জিডিপির গণনার ভিত্তিতেই কোন দেশের পারফরমেন্স নিয়ে কথা বলেই নিজ কাজ করে এসেছে। কিন্তু সেই সিপিডি আইএমএফের রিপোর্টে মোদীর বেড়াছেড়া অবস্থা দেখে যেন আর বসে থাকতে পারেনি। অর্থাৎ ভারতের সমালোচনা শুরু হলে হঠাত সেক্ষেত্রে এর বেলাতে এসে সিপিডি জিডিপি গণনা বেঠিক বলে ফতোয়া দিয়ে ‘প্রগতিবাদী’ অবস্থানে হাজির হয়েছে। অথচ এমনকি ২০০৭ সালের তত্ববধায়ক সরকার আনার পক্ষে কাজ করার পুর্বপ্রস্তুতির সময়ও সিপিডি আগের বিএনপি সরকারের অর্থনৈতিক পারফরমেন্সের সমালোচনা করেছিল এই জিডিপি মাপা ও তুলনা করেই, এই ভিত্তিতেই। ার তা নিয়ে এক মামলাও হয়েছিল। অর্থাৎ এবার ভারতের জিডিপি সমালোচনা উঠার সময় থেকে আমরা দেখছি সিপিডির জিডিপি অরুচির শুরু হয়ে গেছে! এটা আর তার ভাল লাগছে না!
যদিও আমরা দেখি সিপিডির এমন ভারতপ্রীতির কাজ নতুন নয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকার আনতে ২০০৪ সাল থেকেই সিপিডি নির্বাচনে ‘সৎ প্রার্থী দিতে হবে’ এই আন্দোলন করেছিল। এরপর ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার হয়ে বাংলাদেশকে ভারতের শিখণ্ডি করে ভারতের হাতেই বাংলাদেশকে তুলে দেওয়ার কাজ সম্পন্ন করার পর এখন তা পরিণতিতে নিশীথ ভোটের সরকার হয়ে ঠেকছে। সেকালের এক কোটি টাকার দুর্নীতি উচ্ছেদের দুদক এখন দুর্নীতি মাপে হাজার কোটিতে। ভারতের নর্থ-ইস্ট আসামকে দিতে চায় বিনা পয়সার করিডোর, পোর্ট, সাথে প্রায়োরিটি ইত্যাদি। অথচ সে সময় যারা ভারতকে ট্রানজিট দেওয়া এবং ট্রানজিটের নামে করিডোর দেওয়ার বিরোধীতা করেছিল সিপিডির চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান তাদের গালাগালি করে বলেছিল – “I think it’s a debate of ignorant people,” the veteran economist added.। সিপিডি ঐ বিরোধিতাকারীদের বললেন  – ওরা মূর্খ! “ট্রানজিট দেওয়া নিয়ে বিতর্ককে ‘অশিক্ষিত বির্তক’ বলে অভিহিত করেছেন সিপিডি চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান” – এখানে দেখুন।
অথচ আজ যখন বিনা পয়সার করিডোর দেয়া শুধু না, প্রায়োরিটিতে পোর্ট সার্ভিস দেওয়াতে গিয়ে ঠেকেছে সব কিছু তখন “শিক্ষিত” সিপিডি চেয়ারম্যান রেহমান সোবহানের কোন বিরোধিতা দূরে থাক একটা রা-কারতে দেখি না আমরা। আমরা অসহায় অনুভব করি! এইভাবে বয়ান-চিন্তায় ও নৈতিকভাবে দেউলিয়া সিপিডিকে আমরা এখন দেখছি মোদীকে রক্ষার পক্ষে দাঁড়িয়েছে।

সিপিডির দাবি, আইএমএফের রিপোর্ট পিপিপির ধারণা ছাড়াই জিডিপি হিসাব কষেছে কাজেই এই জিডিপি তুলনাই নাকি “ঝুটা হ্যায়”!  অথচ ফ্যাক্টস হল, আইএমএফের নিজের দাবি, তার World Economic Outlook (WEO) রিপোর্ট পিপিপি অ্যাডজাস্টমেন্ট ব্যবহার করেই  তা করা শুরু করেছিল সেই ১৯৯৩ সাল থেকে। তাহলে কিসের ভিত্তিতে সিপিডির এই দাবি যে, এবারের ১৩ অক্টোবরের রিপোর্ট পিপিপি ব্যবহার ছাড়াই জিডিপি মাপামাপি করেছে? আর এমন দাবির পক্ষে সিপিডির প্রমাণ কী? এছাড়া সিপিডির দাবি যদি সত্যিই হয় সেক্ষেত্রে আবার আইএমএফ হঠাৎ ব্যতিক্রম করে এবার পিপিপি ব্যবহার করবে না কেন, এর ব্যাখ্যা কী? এসব ব্যাখ্যা না দেওয়া পর্যন্ত সিপিডির দাবির বিশ্বাসযোগ্যতা কোথায়?

আবার সিপিডির দাবিতে বলা হয়েছে, জিডিপি নিয়ে বাংলাদেশ আত্মতুষ্টিতে ভুগছে -“বাংলাদেশের আত্মতুষ্টিতে ভোগা ঠিক হবে না”। প্রথমত বাংলাদেশে পাবলিকের মনে জিডিপি কোনো আলোচনার ইস্যুই নয়। কেবল টেকনিক্যাল অর্থনৈতিক আলোচনার জগতেই জিডিপির কদর পায়, তাই হবার কথা। কিন্তু সে জগতেও, আবার আমাদের স্ট্যাটিস্টিকস বিভাগে দলীয় লোকজন বসানো আর ডাটা ম্যানিপুলেট করার পর থেকে,  স্বাধীনভাবে যারা জিডিপি মাপামাপিতে আগ্রহী ছিলেন তারাও অনাগ্রহী হয়ে যায়। কারণ এদের ম্যানিপুলেশনের প্রধান কায়দা হল জিডিপি তুলনার ভিত্তিবছর বদলে মাপা শুরু করা। এতে আমাদের জিডিপি ২-২.৫% বাড়িয়ে দেখানো আছে বলে এখন মনে করা হয়। মজার কথা হল, মোদীর ভারতেও প্রায় একই পার্সেন্টে তাদের জিডিপি ম্যানিপুলেট করা হয়েছে বলে তাদের অর্থনীতিবিদদের অনুমান। সার কথায় বাংলাদেশে আত্মতুষ্টিতে ভুগতে পারে একমাত্র সরকার, বাকি সবাই অনাগ্রহী। যদিও সেই সরকারও এখন বুঝে, তার সম্পর্কে পাবলিকের ধারণা এতই খারাপ যে জিডিপি কোন আত্মতুষ্টি জাগাবে না। তাই এবার সরকারও তেমন চেষ্টা করেনি।

লেখক : রাজনৈতিক বিশ্লেষক
goutamdas1958@hotmail.com

 

[এই লেখাটা  গত  ৩১  অক্টোবর ২০২০, দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকার ওয়েবে ও  পরদিনই প্রিন্টেও  “ভারতের জিডিপিতে অতুষ্টি ” – এই শিরোনামে উপ-সম্পাদকীয়তে ছাপা হয়েছিল।  পরবর্তিতে ঐ লেখাটাকে এখানে আরও নতুন তথ্যসহ বহু আপডেট করা হয়েছে। ফলে সেটা নতুন করে সংযোজিত ও এডিটেড এক সম্পুর্ণ নতুন ভার্সান হিসাবে ও নতুন শিরোনামে এখানে আজ ছাপা হল। ]

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s