বুড়া সিংহ আমেরিকার বাংলাদেশের কাছে বাসনা
গৌতম দাস
১৯ মার্চ ২০২১ শুক্রবার
ডঃ আলী রিয়াজ আমেরিকার এক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর এবং প্রথম আলোতে কলাম লিখেন। তিনি সম্প্রতি যৌথ নামে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির রাজনীতি ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষক সাইমুম পারভেজ এর সাথে মিলে এক মতামত ছেপেছেন। সেই আর্টিকেলের নাম …”ভূরাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ”। বলা হয়েছে এটা নাকি চার পর্বের এক রচনা যার প্রথম পর্ব এটা। এর আগে কখনও প্রথম আলোতে তাঁর যৌথ নামের লেখা চোখে পড়ে নাই। কিন্তু কোন যৌথ নামের লেখা মানে ঐ লেখায় প্রকাশিত অবস্থান নিশ্চয় লেখকদ্বয়েরই, এই বলেই পাঠক বুঝবে ও ধরে নিবে। আমরাও তা ধরে নিয়েই কিছু কথা বলব।
প্রথমত, ঐ লেখায় এমন কিছু প্রসঙ্গ ও সে প্রসঙ্গে আলী রিয়াজদের বক্তব্য আছে তা দেখে মনে হয়েছে – গত ১৪ বছরের বাংলাদেশের বাস্তবতা ও পরিস্থিতি সম্পর্কে অন্তত আলী রিয়াজের যা মূল্যায়ন ও অবস্থান ছিল (যা আমাদের অনেকেরই পছন্দের অথবা অপছন্দের যাই হোক না কেন) এটা তা থেকে পরিবর্তিত কিন্তু নতুন উপলব্দ একটা পরিস্থিতিতে এসে এবার আলী রিয়াজ নতুন করে কিছু কথা বলছেন। এখন এটা কতটা নতুন আদৌ নতুন কিনা আবার সে সম্পর্কে কর্তা ও বক্তা কতটা অবগত তা নিয়ে মতান্তর থাকতে বা হতে পারে। তবে নিঃসন্দেহে এটা নতুন অবস্থান। এবং কয়েকটা জায়গায় ১৪ বছর আগের কথার দায় পুরা অস্বীকার করে বিপরীত অবস্থানও আছে। বিশেষ করে এই লেখার শেষ দুই বাক্য নিজেই নিজ আগের সব অবস্থানেরই বিরোধী। সেটা এরকমঃ
“কিন্তু এ অঞ্চলে চীনের প্রভাব কমাতে শুধু ভারতের ওপর নির্ভরতা বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের গ্রহণযোগ্যতার জন্য ইতিবাচক নয়। তার বদলে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র দুই দেশেরই উচিত নিজেদের স্বার্থ ও বোঝাপড়ার ভিত্তিতে অগ্রসর হওয়া।”
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের গ্রহণযোগ্যতা আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র নিজেই নষ্ট করেছে। এছাড়া এই গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে আমাদের কেন আগ্রহ হবে, কী লাভ করার জন্য? আবার চীনের প্রভাব কমাতে হবে কেন? সেটাই বা কী পাবার জন্য? এসবের কোন হদিস তিনি দেন নাই। অথচ এটাই আমেরিকার স্বার্থ হয়তবা। আর আলী রিয়াজ ধরে নিয়েছেন যে বাংলাদেশ যেন এটাকেই নিজের স্বার্থ মনে করবেই! নাকি করতেই হবে? ঠিক জানা যায় নাই। আমেরিকা পরাশক্তি হয়ত কিন্তু বুড়া বাঘ আসলে! কিন্তু চীনের প্রভাব কমাতে হবে এটা না পাবলিক ডিম্যান্ড না সরকারের!
মানুষ বা দেশ-রাষ্ট্র এসব কিছুরই স্বার্থ বদলে যেতে পারে, ফলে তা থেকে সব কিছুর অবস্থান, সবই বদলাতেই পারে। আবার বদল মানেই তা খারাপ তা নয়, আবার তা ভাল হবেই তাও নয়। তবে বদলের ভাল-মন্দ নিয়ে পর্যালোচনা মূল্যায়ন তো অবশ্যই হবে। তবু সবার চেয়ে গুরুত্বপুর্ণ হল, বক্তা এটাকে বদল বলে স্বীকার করছেন, নাকি অস্বীকার করে বদলে যেতে চাচ্ছেন – সেদিকটা। তাঁর স্বীকার করা বা না-করাটা এথিক্যাল চোখে এখানে আমরা দেখব না। তবে কেউ অস্বীকার করতে চাইলে কোন্ অসুবিধার কথা ভেবে কেউ তা স্বীকার করতে চাচ্ছেন না সেটা জেনে রাখা জরুরি। তবে কিছু তামাসার দিকও এসব ক্ষেত্রে থাকতে পারে। যেমন অনেক সময় বদলের মানে হয় আগের “গাধামি অবস্থানকে” পরোক্ষে স্বীকার করে নিয়ে হলেও নিজেকে বদলে নেয়া। আমরা সেসব দেখব। কথাগুলো একটা তালিকা করে করে আগানো যাক যে কী কী বদল আমরা দেখছিঃ
১। ………”বুশ প্রশাসনের তথাকথিত “সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের” বিবেচনা থেকে”………
এটা দেখতেও বেশ তামাসার যে আলী রিয়াজ লিখছেন তথাকথিত “সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ”। মানে এটা “সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ” বলা হলেও তা ছিল না – তিনি তাই বলছেন। বুশের এই সিগনেচার শ্লোগান, এই ক্যাম্পেইনকে নিয়ে আলী রিয়াজ এর আগে কখনও আপত্তি-মতান্তর অবস্থান দেখিয়েছেন জানা যায় না। বরং কোন আমেরিকান “থিঙ্কট্যাঙ্ক ফেলো” হিসাবে কারও এমন প্রকাশ্য ভিন্ন মূল্যায়ন নজরে আসে নাই। আমেরিকান “থিঙ্কট্যাঙ্ক ফেলো” হিসাবে আলী রিয়াজের নিয়োগ ২০০৭ সালের আগে-পিছের আমাদের মিলিটারি টেকওভার মানে ১/১১ এর সময়ের, যতটুকু মনে পড়ে। অন্তত যখন থেকে আমরা আমেরিকার বাংলাদেশ সম্পর্কিত পলিসি মেকিং করিডোরে তাঁকে “বাংলাদেশ এক্সপার্ট” হিসাবে দৃশ্যমান দেখছি। অর্থাৎ সেটা তখনও বুশ প্রশাসনের সেকেন্ড টার্ম চলছিল। কাজেই “সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের” তখনও বর্তমান আর সেই পটভুমিতেই তিনি “থিঙ্কট্যাঙ্ক ফেলো” হিসাবে সম্পর্কিত হয়েছিলেন। পরে অবশ্য ওবামা আমলে এই শ্লোগান শুধরে নেওয়ার সুযোগ নিয়ে তবে বিনা ঘোষণায় ওবামা ধীরে ধীরে এটা ফেস-আউট করে দেন। কিন্তু আভ্যন্তরীণ পলিসিতে “সন্ত্রাসের যুদ্ধ” সেটা একইভাবে চলমান ছিল। কেবল জাতিবাদী পাগলা ট্রাম্পের আমলে এসে, খরচ কমানোর জিদে তাঁর প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে আমরা বলতে শুনেছিলেন টেররিজম তাঁর নীতিতে সেকেন্ডারি। তাহলে আলী রিয়াজ এখন “তথাকথিত” বলা মানে, এই বিশেষণ ব্যবহার করা শুরু করেছেন। নট ব্যাড, তাঁকে স্বাগত। কিন্তু কবে থেকে এবং কী বিবেচনায় সেটা তা জানবার কৌতুহল নিবারণ হল না, থেকেই গেল। আর সেটা না জানা পর্যন্ত এটা কী জেনুইন বা কেমন স্থায়ী অবস্থান কীনা সন্দেহ থেকে গেল। কারণ, “তথাকথিত” বলা মানে আমেরিকার অন্তত চার টার্মের প্রশাসনের কোর নীতির বিরোধিতা ও সমালোচক অবস্থান। অথচ তিনি তো পরামর্শক! তাই কতটা মানানসই? কোণা থেকে সে প্রশ্ন উঠতে পারে!
২। ……”জর্জ ডব্লিউ বুশের আমল থেকেই যুক্তরাষ্ট্র মূলত ভারতের চোখেই বাংলাদেশকে দেখে এসেছে।………
অবিশ্বাস্য! এটা সত্যই অবিশ্বাস্য যে এটা তাঁর কথা। বরং একথাটাই আমরা বলে এসেছি যে থিঙ্কট্যাংক “আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইন্সটিটিউটের” ডাকা সভা-সেমিনারে স্টেট ডিপার্টমেন্টের আন্ডার সেক্রেটারির উপস্থিতিতে এই সিদ্ধান্ত উঠে এসেছিল। ২০০৭ সালের মে-জুন মাসের দিকের ঘটনা এটা। আর এর কোট-আনকোট ভাষাটা সেটা ঐ সভারই রেজুলেশন ছিল। এছাড়া, ওদিকে আমেরিকান কোন প্রশাসনিক কর্তা বা যারা দেশি-বিদেশি বাংলাদেশ-কনসাল্টেন্ট বা এক্সপার্ট তারাও এটা কখনও স্বীকার করেন নাই, কোন লিখিত রচনায় এসব কথা রেফার বা শেয়ার করেন নাই। পবিত্র রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা(?) হবে হয়ত! তবে বাংলাদেশি অনেক স্টুডেন্ট একাদেমিককে ক্ষুব্ধ হতে দেখেছি তারা জানিয়েছেন এক বাংলাদেশ এক্সপার্ট এটার অস্তিত্বই ঝেড়ে অস্বীকার করেছেন। এমন সিদ্ধান্তের কোন কথা তাঁর নলেজে নাই – এটা জানিয়েছেন। সেই থেকে ব্যাপারটা বেমালুম হাওয়া, স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সকলেই একেবারে লুকিয়ে মুখবন্ধ করে ফেলেছিলেন। অথচ সবাই জানতেন ঠিক কী হয়েছে। কারণ, ভারতের চোখেই বাংলাদেশকে দেখা বলে যা বলা হয়েছে বা বাইরে এসেছে তা খুবই নগন্য অংশমাত্র। আর এর পিছনে বাস্তবে এর আরও ভয়াবহ দিক আছে। সেটা হল এটাই ছিল পুরা বাংলাদেশকেই ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার আমেরিকান সিদ্ধান্ত। যে কারণে বেপরোয়া হয়ে ভারতের এমন লাভালাভ হাসিলের মহানায়ক প্রণব মুখার্জি এই ক্রেডিট নিবার লোভ সামলাতে না পেরে অবলীলায় নিজেই বইয়ে লিখছেন তিনিই ছিলেন, হাসিনা আর মঈনের মধ্যস্থতাকারি গ্যারান্টার।
এটা কেবলমাত্র একালে প্রায় ১২ বছরেরও বেশি সময় পরে আমরা গত বছর ২০২০ অক্টোবরে দেখছিলাম, যখন আমেরিকান উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টেফান বিগান বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন, বাংলাদেশ সরকার মানে মন্ত্রী মোমেন সাংবাদিকদের দিয়ে কথাটা তুলিয়ে এরপর নিজেই সাফাই দিয়ে বলতে থাকেন, “দিল্লির চোখে বাংলাদেশকে দেখে না যুক্তরাষ্ট্র”। আসলে মোমেন বলতে চাইছিলেন ও বলেছেনও অন্যকিছু। তিনি স্টেফান বিগানকে একথাটাই বলেন যে, তোমাদের সাথে আগের যে সম্পর্ক ছিল, যেভাবে হাসিনা সরকার ছিল আমেরিকার তৈরি, ভারতের হাতে তুলে দেয়া সরকার – সেটা নাই। “ওদিন গয়া”। এখন হাসিনা সরকার আমেরিকার তো নয়ই; এছাড়া নতুন করে কতটুকু ভারতের আর কতটুকু নিজেকে ক্ষমতায় রাখতে চাইলে চীনের হওয়া দরকার; সেই ভারসাম্যটাও হাসিনাই নির্ধারণ করেছেন। মূলকথা সেই ২০১১ সালের পর থেকেই হাসিনার উপর আমেরিকার প্রভাব-ক্ষমতা শুণ্য হয়েছিল। নিজ পাপের শাস্তি আমেরিকা এভাবেই পাওয়া শুরু করেছিল। তাহলে এতদিনে হলেও আলী রিয়াজ নিজেই বুশ যে নিজেই বাংলাদেশকে বেচে দিয়েছিল সেই কাজের স্বাক্ষ্য দিচ্ছেন। কেন? এর একটা কারণ তিনি উল্লেখ করেছেন। নিচে দেখেন।
৩। ……“এর পেছনে একটা বড় কারণ হচ্ছে, এ অঞ্চলে ভারতীয় আধিপত্য নিশ্চিত করে যুক্তরাষ্ট্র পরাশক্তি চীনকে ঠেকাতে চায়।”
কী সাংঘাতিক, এক ভয়ংকর কথা! আলী রিয়াজ অবলীলায় বলছেন। তিনি স্বাক্ষ্য দিয়ে বলছেন একথা যে ভারতীয় আধিপত্য আমেরিকার কাছে পছন্দের ও নিজস্বার্থের। তাই বুশ বাংলাদেশকে ভারতের হাতে তুলে দিয়েছিল। ওদিকে চীন আমেরিকার শত্রু ও অপছন্দের এক বিরোধী শক্তি। কিন্তু শুধু একারণেই তাহলে বাংলাদেশকে বলি হয়ে যেতে হবে ও হয়েছে। এটাই আলী রিয়াজের স্বাক্ষ্য! অর্থাৎ এখানে ন্যায়-অন্যায়, ইনসাফ অথবা নীতি বলে কিছু নাই। সবই নৃশংস রাষ্ট্রস্বার্থ। তাই যেন নৃশংসভাবেই আলী রিয়াজ এটা বলে যেতে পারছেন। কিন্তু দুটা প্রশ্নঃ
ক) আপনি তো পরামর্শক, বাংলাদেশ এক্সপার্ট। তাহলে এই বাংলাদেশকে বেচে দেওয়ার ইস্যুতে আপনার পরামর্শ কী ছিল? সেই ডকুমেন্ট আমাদের না জানালে আমাদের মধ্যে বিশ্বাস ও আস্থা জন্মানোর সম্ভাবনা দেখি না।
খ) তাহলে, ২০০৭ সালের টেকওভার আর ২০০৯ সালের হাসিনা সরকার বসানো – সেসময় আমেরিকা এই ক্ষমতা বদলের উদ্দেশ্য জঙ্গিদমনের উপযোগী করে বাংলাদেশ সরকারকে সাজানো বলা হয়েছিল – সেগুলো সব তাহলে মিথ্যা কথা ছিল?
আবার আলী রিয়াজকে একটা “থ্যাঙ্কস” দিতেই হয় আমেরিকার মারাত্মক সব খারাপ কাজগুলো স্বীকার করার জন্য। তিনি পরিস্কার করে শেষে লিখে দিয়েছেন “যুক্তরাষ্ট্র পরাশক্তি চীনকে ঠেকাতে চায়”। তবে বাংলায় লেখেছেন বলে এর চেনা-প্রতীক হয়ে যাওয়া শব্দটা “China Containment” বা এর বাংলা “চীন ঠেকানো” – এভাবে লিখেন নাই বলে অনেক চিনতে পারছেন না হয়ত। এই চীন ঠেকাতে চায় বলেই আমেরিকার উপহার হিসাবে বাংলাদেশকে ১/১১-এ দখল করে ভারতের হাতে তুলে দিয়েছিল।
৪। ……”প্রায় এক দশক ধরে ভারত আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশে কর্তৃত্ববাদী সরকারব্যবস্থা টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করেছে।”…
কথা সত্য কিন্তু একথার দায় আমেরিকান (বুশ থেকে এপর্যন্ত সকল) প্রশাসন ও তাঁর পরামর্শকদের সবার আগে নেয়া উচিত। এরপরেই কেবল আমরা কোন নাগরিক বা রাজনীতিবিদ এনিয়ে আমেরিকার সাথে কথা বলতে পারি। আগের বাক্যে আলী রিয়াজ আপনি নিজেই বলছেন ……”ভারতীয় আধিপত্য নিশ্চিত করে যুক্তরাষ্ট্র পরাশক্তি চীনকে ঠেকাতে চায়”। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ কী চীনের বদলে ভারতীয় আধিপত্য চেয়েছিল? না কোন আধিপত্যই চেয়েছিল? আমরা বিক্রি হলাম কেন?
আবার অদ্ভুত স্ববিরোধিতাটা দেখেন; উপরের তিন ও চার নম্বর পয়েন্ট স্ববিরোধী। আলী রিয়াজ তিন নম্বরে লিখেছেন, যুক্তরাষ্ট্রই ভারতীয় আধিপত্য এনেছে। আমেরিকা ইচ্ছা-পরিকল্পনা করেই বাংলাদেশে আমাদেরকে ভারতীয় আধিপত্যের কুয়ার মধ্যে ফেলে দিয়েছিল। তাতে ভারত যা খুশি তাই করছে। বাংলাদেশের বুক চিরে ভারত বিনা পয়সায় করিডোর নিয়ে যাচ্ছে। আবার চার নম্বর পয়েন্টে রিয়াজ লিখছেন, …”ভারত আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশে কর্তৃত্ববাদী সরকারব্যবস্থা টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করেছে”। তাহলে কথা দুটা মিলিয়ে একসাথে পড়লে দাড়ায় মুল অপরাধী তো আমেরিকা। তাহলে আলী রিয়াজ যে ভারতীয় আধিপত্যের মধ্যে তা চীনের আদফহিপত্যের চেয়ে বেটার অনুমানে আমাদের রাখতে চায়, এটাই আমেরিকার ইচ্ছা ও স্বার্থ মনে করে – সেই ভারতের বিরুদ্ধেই আবার আলী রিয়াজ অভিযোগ তুলে কেন? এমনকি আমেরিকা নিজের স্বার্থ মনে করে বাংলাদেশে সন্ত্রাস দমনের নামে এই হাসিনা সরকার যাকে এখন কর্তৃত্ববাদী সরকার মনে হচ্ছে তাকে তারা এনেছিল কেন?
৫। চীন ও ভারতের মধ্যে একটা ‘ব্যালান্সিং গেম’ বা ভারসাম্য নীতি বজায় রেখেছে। কিন্তু এটা…… কঠিন ও ঝুঁকিপূর্ণ, কারণ …ব্যর্থতা … শত্রুতা তৈরি করতে পারে।
এশিয়ায় বিশেষত দক্ষিণ এশিয়ায় আলী রিয়াজ স্বীকার করছেন আমেরিকাই ভারতের পিঠে হাত রাখার উসিলায় চীন-ভারতকে মুখোমুখি করে দিয়েছে। একথার মানে দাড়ায় তাহলে দক্ষিণ এশিয়ায় এখন আমাদের জন্য ‘ব্যালান্সিং গেম’ খেলা ছাড়া উপায় কী রেখেছে আমেরিকা? রিয়াজ বলছেন এটা নাকি ঝুঁকিপুর্ণ। কেন? কী হবে, যুদ্ধ লেগে যাবে? আমরা যুদ্ধ করলে তবেই না যুদ্ধ লাগবে! যুদ্ধ ছাড়াও দুনিয়া অনেক কিছু ঘটতে পারে। লাদাখে দেখেন নাই উগ্র জাতিবাদি মোদীও চীনের কাছে ভুখন্ড ছেড়ে দিয়ে চলে আসে নাই? ভারত কী যুদ্ধ করেছে? এর সোজা কথা যুদ্ধই একমাত্র অপশন নয়, অনেক অপশন আছে। ভারতের পাশে আমরা তো আছিই তাতে কী আমরা কেবল যুদ্ধ লাগাচ্ছি আর হেরে যাচ্ছে? বরং আমেরিকা যে বাংলাদেশকে বেঁচে দিয়েছিল তার জন্য তো আরো অনেক অপশন আছে। সরাসরি বললে, হাসিনা নিজেকে ক্ষমতায় রাখতে ভারত-চীনের ভারসাম্য যেভাবে টানবেন তাতে তিনি টিকে যেতে পারলে সেটা হাসিনা বাংলাদেশ হবে। আর যদি নিজের স্থানীয় বিরোধীদের কাছে হেরে যা্ন তো গেল, সেটা আরেক কম্বিনেশন ও পরিণতিই হবে। কিন্তু ভারত-চীনের সাথে বাংলাদেশের যুদ্ধ লেগে যাবে এটা কারও জন্যই কোন অপশন বা বাস্তবতা তা সত্যি না। ফলে এখনও তা হতে পারে নাই।
৬। ……”যুক্তরাষ্ট্রে জো বাইডেন প্রশাসনের বাংলাদেশ বিষয়ে ভারতকেন্দ্রিক নীতির পরিবর্তন হবে কি না, সেটা এখনো স্পষ্ট নয়। কিন্তু এ অঞ্চলে চীনের প্রভাব কমাতে শুধু ভারতের ওপর নির্ভরতা বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের গ্রহণযোগ্যতার জন্য ইতিবাচক নয়। তার বদলে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র দুই দেশেরই উচিত নিজেদের স্বার্থ ও বোঝাপড়ার ভিত্তিতে অগ্রসর হওয়া।”……
এটাই আলী রিয়াজ আপনি বেচাবিক্রি করতে এসেছেন। কিন্তু আপনি ভাল ফেরিওয়ালা নন বলেই দেখতে পাচ্ছি। যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়ে আসেন নাই। আপনার বয়ান ঢিলা। গাথুনি ভাল না। উপরের পাঁচটা পয়েন্টেই দেখেন ঝুরঝুরা ঢলে পড়েছে। কথা শুরুর আগে একটা কথা। আমরা দেখেছি, হাসিনা খারাপ হোক বা ভাল তিনি আমেরিকাকে একেবারেই বিশ্বাস করে না। তাই সবচেয়ে লোভনীয় ডিল তাঁকে অফার করলেও তিনি সেটা নিবেন বলা মুসকিল। এসব ক্ষেত্রে আস্থাহীনতা বিশাল নেতি-ফ্যাক্টর। অতুএব এই ফ্যাক্টরের কী করবেন? ভেবেছেন মনে হয় নাই।
এবার আসি প্রসঙ্গে। আপনি এর আগে লিখেছেন মানে বলতে চেয়েছেন আমরা “বঙ্গোপসাগরকে সঠিকভাবে ব্যবহার” করছি না। এটার আবার মানে কী?
মানে আসলে আমরা জানি। যদিও আপনি মোচরামুচরি করছেন খুলে বলতে চান নাই বা পারেন নাই। আপনি বলতে চাইছেন, ১। বাংলাদেশ যেন এইবার নিজ সমুদ্রসীমায় আমেরিকান সপ্তন নৌবহরকে স্থায়ীভাবে নোঙর ফেলে বসতে চুক্তি করেন। ২। এর সোজা মানে আমাদের সাথে ভারতের যুদ্ধ ঠিক না তবে আমেরিকাকেই এবার ভারতের সাথে সামরিকস্বার্থের মোকাবিলায় যেতে হবে। কারণ, ভারত এটা জানামাত্র চরম অবস্থানে চলে যাবে। এটা তার জানকবজ মনে করে, তাই।
এটাই আপনি বঙ্গোপসাগরকে সঠিকভাবে ব্যবহার হাব ইত্যাদি বলে বুঝাতে চেয়েছেন! সমস্যা হল, এটাই যদি আমেরিকার কোর স্বার্থ তাহলে এশিয়ায় এতদিন ১৪ বছর ধরে এশিয়ায় “ভারতীয় আধিপত্য নিশ্চিত” করলেন কেন? কোন সুখে? কী হাসিল করতে? আর কীইবা পেলেন? এগুলো তো ছেলেখেলা না। অথচ এগুলো তো পরামর্শকদের ছেলেখেলা করে ফেলেছেন। কারণ, এসব ভুল পরামর্শের দায় কাউকে নিতে হবে না!
এতে সবচেয়ে বড় কথা, বিশেষ করে একবার যখন ভারতের কাছে প্রকাশ পাবে আমেরিকার এই মনবাসনা । পুরা পরিস্থতি হয়ে যাবে আপসাইড ডাউন। ভারত চিরদিনের জন্য (ব্যাক-ফোর্থ না) চরম আমেরিকাবিরোধী হয়ে যাবেই। আবার আমেরিকার এই স্টেশন করার খায়েস, এতে চীন তো এজন্য আরো বড় বিরোধ সংঘাতে যেতে দাঁড়িয়ে যাবে। অতএব পোলারাইজেশন বদলে যাবে। চীন-ভারতের আমেরিকাবিরোধী হাত মিলানোর সব সম্ভাবনা রেডি হতে থাকবে। মনে রাখতে হবে ভারত এখনও দুই নৌকায়, সে কোয়াডেও আছে আবার চীন-রাশিয়ার BRICS বা SCO জোট – সেখানেও আছে। আবার ভারতের ভিতরেই এনিয়ে সুপ্ত বিতর্ক আছে, থিঙ্কট্যাঙ্কও মজুদ আছে। আরেক ধারাও প্রস্তুত রেডি আছে। এর মূল কারণ, ভারতের ন্যাচারাল ডেসটিনেশন চীনের সাথে সদ্ভাব!
তবু এসব কল্পনায় আর গেলাম না। এরচেয়ে বিষয়াশয়, বস্তুগত খাওয়াপড়া ব্যবসাবাণিজ্য আর পুঁজির কারবারের দিকে আসি। প্রথম আর শেষ কথা আমেরিকার কাছে সারপ্লাস বা উদ্বৃত্ত সম্পদ আর নাই। বিগত যৌবনা তাই জেনারেট হচ্ছে না। অথচ এক বিপুল সারপ্লাস এটাই আসলে কোন রাষ্ট্রের গ্লোবাল অর্থনৈতিক নেতা হয়ে উঠার প্রথম শর্ত, তাই প্রথম মুরোদ। যেটা থাকলে এরপরেই কেবল রাজনৈতিক প্রস্তুতি ও জ্ঞানবুদ্ধি থাকলে এরপর গ্লোবাল রাজনৈতিক নেতাও হওয়া সম্ভব। আর ঐ অর্থনৈতিক মুরোদ থেকেই আসে সামরিক মুরোদও। তাই আমেরিকা এখনও চীনের চেয়ে ছয়গুণ সামরিক সক্ষমতার হলেও এই সক্ষমতার সবকিছুই তাসের ঘরের মত ভেঙ্গে যাবে। কারণ, এর খরচ যোগাতে অযোগ্য হবে আমেরিকান অর্থনীতি। ঠিক যেমন পুরানা সোভিয়েন ইউনিয়নের হয়েছিল। একটাই কারণ, অর্থনৈতিক সামর্থ, উদ্বৃত্ত সম্পদ আর নাই। পুঁজির একুমুলেশন হচ্ছে না। আর এটা মানুষের ইচ্ছার বা সাবজেকটিভ ইচ্ছার উর্ধে অবজেকটিভ ঘটনা।
আমেরিকা নিজস্ব সরকারি স্টাডি যা চীনের উত্থান নিয়ে গবেষণা করে ২০৩৫ সাল পর্যন্ত ডিটেলে দুনিয়া অর্থনৈতিকভাবে তখন কী হতে যাচ্ছে তার স্টাডি রিপোর্ট বেরিয়েছিল সেই ২০১৮ সালেই; সেখানেও কোথাও এনিয়ে আমেরিকার সরকারের মানে সাবজেকটিভ-ভাবে কোন নীতি নিয়ে চীনের গ্লোবাল নেতা হওয়া ঠেকানো যাবে সে হদিস দেয় নাই। কারণ এটা অবাস্তব। মানে পরোক্ষে স্বীকার যে এটা অবজেকটিভ ঘটনা। আবার হাতের কাছে দেখেন এমাসেরই কোয়াড মিটিং যা মূলত ছিল আমেরিকার জন্য ভ্যাকসিন সংগ্রহ। বাইডেন কেন জাপানের সুগাকে বগলদাবা করে মিটিংয়ে গেছিলেন? কারণ ভারতকে ভ্যাকসিনের জন্য বিনিয়োগ দিতে হবে যেটা জাপান ব্যবস্থা করবে, এক বিলিয়ন ডোজের মত ভ্যাকসিনের। অথচ সেই আমেরিকা আজ কোথায়? এসব অবকাঠামো বিনিয়োগের রাজা ছিল যে আমেরিকা, এক তুরিতে এসব বিনিয়োগ দিতে সক্ষম ছিল। সবার আগে এমন দানধ্যান নিজেকে অফার করত যে আমেরিকা!
হাসিনাকে বুদ্ধিসুদ্ধি নাই এক মফস্বলের নেতা মনে হতে পারে। কিন্তু হাসিনাও তো ব্যবহারিক বুদ্ধিতে এটাই বুঝেছেন যে আমেরিকার সেই অর্থনৈতিক মুরোদ নাই। হাসিনা আসলে বলতে চেয়েছিলেন তাঁর কাছে মানে তাঁর ক্ষমতায় থাকার নিজস্বার্থের চোখে চীনই ভাল। তাঁর এই মতের মোটাভাষায় ভাষ্যটা হল, “আমরা যুদ্ধ বা অস্ত্র চাই না। আমরা অবকাঠামো বিনিয়োগ চাই”। তাই স্টেফান বিগানকে মোমেন একথাই বলেছিলেন। বুঝে বা নাই-বুঝে যাই হাসিনা বলে থাকেন না কেন, তিনি তো আমেরিকার ভ্যানিটির এক দুর্বল জায়গাতেই তো আঘাত করেছেন!
তবে বিষয়টা অবশ্য আঘাত করা বা, না-করার না। আমেরিকার সেভেন্থ ফ্লিট যদি বঙ্গোপসাগরে বসায়েও দেয় তবে তার একাজে যারা সমর্থক রাষ্ট্র হবে এদের বিনিয়োগ-বাণিজ্য চাহিদা আমেরিকা কীভাবে মিটাবে? অর্থনীতি কীভাবে চলবে? যুদ্ধ তো খাওয়ার জিনিষ না!
আগেই বলেছি এসবের মূল মুরোদ – বিপুল “একুমুলেশন অব ক্যাপিটাল”, সঞ্চিত সারপ্লাস। এটা হাসিল হলে এরপরে বাকি সবকিছু। কাজেই এই ফেজে যে শক্তিই আপাত সুবিধা পাচ্ছি মনে করে আমেরিকার সাথে গাটছাড়া বাধবে, নিজের ভাগ্য গড়বে বলে স্বপ্ন দেখবে সেই মারা যাবে।
কাজেই আলী রিয়াজ আপনি কী বেচতে আসছেন? বিপুল সারপ্লাসহীন ফলে বিনিয়োগ সক্ষমতাহীন কিন্তু সামরিক দানব এক আমেরিকা? এটা কারও কাজে লাগবে না। উলটে না খেয়ে মরবে। ওর সামরিক খরচ যোগাতে গিয়ে আস্তে আস্তে ক্রমশ এখন সে নিজেই নিঃস্ব হতে থাকবে। যেভাবে আফগানিস্তান ফেলে পালিয়ে আসতে হয়েছিল। নিজ রাষ্ট্রের অর্থনীতিগত দিক মানে এটাই গ্লোবাল ক্যাপিটালিজম এর অংশ ও বিষয়, সামরিক শক্তি অর্থনীতিক শক্তির কোন বিকল্প নয়। ফলে কিছুই না।
আলী রিয়াজ তাদের আর্টিকেলের নামে একটা শব্দ রেখেছেন “ভূরাজনীতি”। এটাই সে চিহ্ন। গ্লোবাল ক্যাপিটালিজম ও এর ভুমিকা বুঝাবুঝি বাদ দিয়ে বা এর গুরুত্ব আমল করা ছাড়া “আন্তর্জাতিক সম্পর্ক” যাদের স্টাডি ও চর্চার বিষয় হয়ে যায় “ভুরাজনীতি” তাদের শব্দ। কথিত “ভুরাজনীতি” শব্দটা গ্লোবাল ক্যাপিটালিজম ধারণাটা কাভার করে না। “ভুরাজনীতি” এটা পুরানা ধারণা অর্থনীতি বা ক্যাপিটালিজম নিজেই যখন গ্লোবাল হয়ে উঠে নাই। এর আবার মূল কারণ গ্লোবাল বাণিজ্য বলেও যখন কিছু ছিল না। কোন রাষ্ট্রের বিপুল সারপ্লাস সঞ্চয়ের ফলে তৈরি অর্থনৈতিক মুরোদ থাকা এটাই গ্লোবাল নেতাগিরির ভুমিকায় হাজির হবার পুর্বশর্ত। মূলত অর্থনৈতিক মুরোদ নাই বলেই সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে আজ অস্তিত্বহীন, ১৬ টুকরা। ফলে কোনমতে এখন কেবল গোয়েন্দাগিরির স্ট্রাকচার দিয়ে পুতিন করে খাওয়ার চেষ্টা করছে।
আসলে আমেরিকার পরিকল্পনাকারীরাই এখন আমেরিকার বড় বিপথগামি শক্তি। আমেরিকা আর নেতা নয় এটা যারা মানতে বা বিশ্বাস করতে চাচ্ছে না। এরই আরেক ফেনোমেনা বা বহিপ্রকাশ হল হোয়াইট সুপ্রিমিস্ট। সম্ভবত তারাই আমেরিকাকে বাকি যা আছে এর সবটা ভেঙ্গে ফেলবে, অন্য কারো কোন ক্ষতি করার আগেই।
আলী রিয়াজ লিখেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে জো বাইডেন প্রশাসনের বাংলাদেশ বিষয়ে ভারতকেন্দ্রিক নীতির পরিবর্তন হবে কি না, সেটা এখনো স্পষ্ট নয়”। হা সেটা শুধু এখনই নয় আগামিতেই তা থেকে যাবার সম্ভাবনা বাড়ছে। খাসোগী হত্যার অনুসন্ধানি রিপোর্ট তো বাইডেন প্রকাশ করতে পারেন নাই। মিসরের সিসিকে ঠিকই অস্ত্র বিক্রিতে সায় দিয়েছেন। রাশিয়ান এস-৪০০ কিনার প্রসঙ্গ শেষ হলে তুরস্ক বা ভারতকে তিনি কী করবেন? অবরোধ দিতে পারবেন? কাজেই বাইডেনের উপর আস্থা রাখা কঠিন হতে যাচ্ছে!
শেষকথাটা হল, কেন আমেরিকা বাংলাদেশকে ভারতীয় আধিপত্যের অধীনে ফেলে দিয়ে গিয়েছিল? কেন সেই আমেরিকাকে আমরা আবার আস্থা রাখব? এর সদুত্তর ফয়সালা না পেলে বাংলাদেশের মানুষের নুন্যতম মন বা আস্থা ও বিশ্বাস পাওয়া কঠিন হবে। আবার আমাদেরকে এই বিপদে ফেলে এথেকে আমেরিকার কী অর্জন হয়েছে, তাও সে বলতে পারবে না।
অথচ আলী রিয়াজ ধরে নিয়েছেন “এ অঞ্চলে চীনের প্রভাব কমাতে হবে, কেন? এতে বাংলাদেশের কী লাভ? আবার আমেরিকাও কী এথেকে কোন লাভ তুলবার মুরোদ রাখে? উপরে আমরা দেখলাম, না সে মুরোদও নাই, সে বাস্তবতা নাই।
তাই সেজন্যই বলেছি আলী রিয়াজ সরি, আপনি তো বেচবার মত কোন পণ্য নিয়ে আসেন নাই। আপনার কাছে তো কোন পণ্যই নাই। বঙ্গোপসাগরে আমেরিকান অধিষ্ঠান – এটা কোন পণ্যই নয়। তাই, আপনি পরে আসেন। বয়ানের গাথুনি, নির্মাণ ঠিক করে পারলে পরে এসেন!
লেখক : রাজনৈতিক বিশ্লেষক
goutamdas1958@hotmail.com