ফাঁপা পরাশক্তির ভানভনিতায় সুখ
গৌতম দাস
১৪ জুন ২০২১, ০০:০৬ সোমবার
ক পাঁড় হিন্দুত্ববাদী সুব্রামনিয়াম স্বামী ২০২০ সালের মধ্যে ভারত পরাশক্তি হবে, বলেছিলেন ২০১২ সালে।
ভারতের সবার আগে দরকার সম্ভবত চিকিতসা। সেটা না হলেও সবার আগে তার জানা দরকার পরাশক্তি মানে আসলে কী! নুন্যতম কী হলে তা পরাশক্তি হবার লক্ষণ। পরাশক্তি মানে কী এনিয়ে একটা সার্ভের প্রশ্ন হলে দেখা যাবে তাতে ভারতের সন্দেহবাদিরা ছাড়া হয়ত সবাই বলবে “সামরিক শক্তি”। পরাশক্তি হবার পুর্বশর্ত হচ্ছে অর্থনীতিতে লিডার হওয়া। অর্থনীতি, অর্থনীতি এবং অর্থনীতিতে গ্লোবাল লিডার। আর আরেকটা কথা – এটাও ভাল করে মনে রাখা যে কোন পড়ন্ত পরাশক্তি ভারতের পিঠে হাত রাখলে তা থেকে ভারতের পরাশক্তি হয়ে যাবার কোন সম্ভাবনা নাই! কারণ এটা পরাশক্তি হবার কোন পথই নয়।
হেরে গেলেও হার স্বীকার করা যাবে না। পারলে মানুষের ক্ষতি করে বেড়াতে হবে। সেটাও না পারলে ঈর্ষা করতে হবে। গত কয়েক বছর ধরে, মানে মোটামুটি ২০০৫ সালের পর থেকে ভারতকে চীনের সাথে তুলনা করতেই হবে, তুলনীয় বলে দাবি করতে হবেই। আমেরিকা ভারতের পিঠে হাত রাখাতে সেই থেকে ভারত ফাঁপা হলেও পরাশক্তি হয়ে যাওয়ার ভান করা শুরু করেছিল। সুব্রামনিয়াম স্বামী বিখ্যাত হার্ভার্ড এর পিএইচডি। তিনিওও ২০১২ সালে বলেছিলেন মানে দেখেছিলেন এয় ২০২০ সালের মধ্যে ভারত পরাশক্তি হয়ে যাচ্ছে। আর সেটাই এখন ঠেকেছে হাসপাতাল নাই, বেড নাই, অক্সিজেন নাই আর কোভিড লাশের সতকার নাই, নদীতে ভেসে বেড়াচ্ছে হাজার মাইল……। বীভৎস এক চিত্র!
তবু একটা জিনিষের বিরতি নাই। তা হল, ভারতকে পরাশক্তির ভানভনিতা করে যেতেই হবে। সর্বশেষ নরেন্দ্র মোদির আমলে এসে কোভিডের সেকেন্ড ওয়েভে এসে এবার এক বিরাট ধাক্কা খেয়েছে। কারণ বীভৎস বাস্তবতা লুকানোর যোগ্য না। কিন্তু তবু কেউ কেউ চাপাবাজি চালানোর সুখানুভবে তা বন্ধ করতে রাজি হতে চাচ্ছে না; এমনকি উদাম হয়ে গেলেও না। এর মূল কারণ আমেরিকা। তারও খায়েশ, সে ভারতকে ব্যবহার করেই, একে আরো অথর্ব করে দিয়ে হলেও এশিয়ায় চীনকে ঠেকিয়ে নিজের অবস্থান ধরে রাখতে পারবেই, জিদ ধরেছে।
আমেরিকারও নিজের স্টাডি রিপোর্ট যাই বলুক, তারও প্রায় একই সমস্যা। ভারত সম্পর্কে আমেরিকার আচরণ ফাঁপা ভানভনিতার হোক তবু সেটাই পছন্দ। আমেরিকার স্টাডি রিপোর্ট বলছে, সে চীনের কাছে গ্লোবাল অর্থনীতিতে ক্রমে হেরে যাচ্ছে। চীন তাকে ছাড়িয়ে যাবেই। মানে মামলাটা হলো গ্লোবাল অর্থনীতিতে নেতা থাকা আর হেরে সরে যাওয়া- এ দুইয়ের। অন্য ভাষায় বললে, এখন গ্লোবাল অর্থনীতিতে নেতৃত্বে পালাবদলের কাল যেখানে পালাবদলের স্টেজে দেখা যাবে আমেরিকা সিন-আউট হয়ে যাচ্ছে আর চীন ক্রমে আসরে জেঁকে বসছে। এসব কথা আমেরিকার গ্লোবাল ট্রেন্ড রিপোর্টের। বাইরের কারো লেখার উদ্ধৃতি এটা নয়; যেখানে বলা হয়েছে এত দিন গ্লোবাল বিনিয়োগ পুঁজি পশ্চিমেই বসে থেকেছে আর সেই পশ্চিমে বিনিয়োগে বসে থেকেই বাকি সারা দুনিয়ার ওপর আমেরিকা নেতৃত্ব ও মাতব্বরি করে এসেছে। কিন্তু এখন সেই চিরপরিচিত ট্রেন্ডে বদল ঘটছে। আর তাতে সারভাইভাল বা টিকে থাকার প্রশ্নে আমেরিকার ওয়াল স্ট্রিট মানে দুনিয়াতে বিপুল সক্ষমতার বিনিয়োগ কোম্পানিগুলোর আড়ত যেখানে তারাই এখন চীনভক্ত। চীনের উত্থানে তাদের উত্থান ও সারভাইবাল মনে করে যারা, তারাও আপনি বাচলে বাপের নাম। তাই তার চোখে এখন চীনকে শক্ত হাত ও সক্ষম বলে উঠে আসছে – ব্যাপারটাতেই তাদের মূল আকর্ষণ। তাই পুঁজি এখন আমেরিকার হাত ছেড়ে চীনের হাত ধরতে ছুটছে। আর এতেই সারা পশ্চিমের পুঁজি একেবারে ঢলে পড়ে এশিয়া-মুখে ছুটে চলেছে [An historic transfer of relative wealth and economic power from West to East]। তাতে যে পশ্চিমে যুক্তরাষ্ট্র এত দিন বড় হয়েছে, কোল পেয়েছে তার প্রতি ওয়াল স্ট্রিটের কোনো মহব্বত নেই। কারণ সারভাইভাল! সে এতে মরবে না বাঁচবে- কারণ ‘আপনি বাঁচলে বাপের নাম’- এই সম্পর্কে আছে সে।
আরো মারাত্মক কথা হল, গ্লোবাল পুঁজির এভাবে পশ্চিম ছেড়ে পুবে-এশিয়ায় ছুটে চলা এটা সাময়িক নয়, একেবারে স্থায়ী। মানে, এটা আর নিকট ভবিষ্যতে কখনো উল্টামুখী বা ফিরে পশ্চিমমুখী হবে না। কিন্তু তবু আমেরিকার তা শোনার বা কান দেয়ার অবস্থাতেও নাই। সম্প্রতি বাইডেন সে দেশে ক্ষমতায় এসে ইউরোপকেও মিথ্যা আশায় রাজি করিয়েছেন তিনি। যদিও ইইউ-ও এতদিন চীনের সাথে আগেভাগে সম্পর্ক করতে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিল। তবু এখন সেসব ফেলে বাইডেনের আশ্বাসে ফিরে তারা এখন বাইডেনের পেছনে।
এর কারণ সম্ভবত আমেরিকার সাথে ইউরোপের সিভিলাইজেশন ও কালচারাল অর্থে নিকট আত্মীয়ের সহমর্মিতাবোধ। মাত্র পাঁচশ বছরের মধ্যে যে পশ্চিম এতদিন এশিয়াকে তার গোলাম বানিয়ে রেখেছিল আজ পশ্চিমকে সেই এশিয়ার অধীনে চীনের নেতৃত্বে চলে যেতে হবে, এটা কোনও পশ্চিমা-মনের পক্ষে গ্রহণ করা সহজ নয়। সাদা শ্রেষ্ঠত্ববাদ এভাবে হেরে যাবে, গুটিয়ে যাবে, এশিয়ার পেছনে তাদের হাঁটতে হবে এটা তাদের কাছে সম্ভবত অকল্পনীয়।
অথচ সোজা ভাষায় বললে, ব্যাপারটা পুঁজির সারপ্লাস একুমুলেশন [surplus accumulation] বা উদ্বৃত্ত পুঁজির পুঞ্জীভবনের অবজেকটিভ ঘটনা। এটা একেক কালপর্বে যেখানে যে ভুগোলে যত দ্রুত ঘনীভূত হবে, সে-ই ভুগোলের রাষ্ট্রই সে কালপর্বে গ্লোবাল নেতা হবে। কারণ ব্যাপক অর্থনৈতিক তৎপরতা ঘটার সবচেয়ে ফেভারেবল পরিস্থিতি পেলে সে সেখানেই পেকে বেড়ে উঠবে যাকে এরপর কেউ ঠেকাতে পারবে না, রোধ করতে পারবে না। সেই ভুগোলটাই এখন বর্তমান কালপর্বে হল ‘চীনের নেতৃত্বে এশিয়া’।
এভাবেই কি একইভাবে এককালে ইউরোপের বিপরীতে আমেরিকার হাতে প্রবলভাবে সারপ্লাস একুমুলেশন ঘটায়নি! আর তার ফলেই কি আমেরিকা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে ইউরোপেরও নেতা এবং গ্লোবাল নেতা হয়ে হাজির হয়ে ছিল না! এত কিছু পরিষ্কার জানা সত্ত্বেও আমেরিকার এক মরিয়া জিদ যে, সে ভারতের পিঠে হাত রেখে ছলনায় বলবে, এবার এশিয়ায় ভারত চীনের সমতুল্য? এটা অবাস্তব এবং কোনো ডাটা যা বলে না এমনই অসত্য। কিন্তু এই মিছাকথা সে ভারতকেও বিশ্বাস করিয়েছে।
এতে আমেরিকা যে গোড়ার মিথ্যা কথাটা তোতাপাখির মনে ঢুকিয়েছে আর তারাও গ্রাজুয়েশন বা পিএইচডির স্কলারশীপের লোভে তোতাপাখি হয়েছে এদেরকে দিয়েই আমেরিকা ভারতকে মিছাকথাগুলো বিশ্বাস করিয়েছে। এরই একটা হল, যেমন- ভারতের (১৩৭ কোটি ২০১৯ সালের) জনসংখ্যা চীনের (১৪৩ কোটি) প্রায় কাছাকাছি হতেই পারে। এর মানে তো আপনাতেই ভারতে চীনের মত ও লেবেলে অর্থনীতিতে সারপ্লাস একুমুলেশন ঘটে যাবার দেশ হয়ে যাবে না অথবা গেছে এমন দাবি করা যাবে না। তা সত্যও নয়। কিন্তু ভারত তা বিশ্বাস করে এতদিন গিলে বসেছিল। বস্তুত বড় জনসংখ্যার দেশ হলেই হবে না।
যেমন এর পালটা সত্যও আছে তা হল – আমেরিকার দেশ বড় কিন্তু জনসংখ্যা এখনই মাত্র ৩৩ কোটি, আর সেকালে (১৮৮০ এর দশকে) আমেরিকা প্রথম যখন শীর্ষ সারপ্লাস একুমুলেশনের দেশ হয়েছিল তখন ওর জনসংখ্যা ছিল মাত্র ৫ কোটি ( 50,189,209, in 1880)। এর সোজা অর্থ হল, বড় পপুলেশন হলে শীর্ষ সারপ্লাস একুমুলেশনের দেশ হতে কিছু সুবিধা পাওয়া যায় সত্য। কিন্তু বড় পপুলেশন না হলে তা হবেই না ব্যাপারটা তাও সত্যি না।
মুল কথা হল এর আবার ভোক্তাবাজারটা কত বড়। আর তাতে উপযুক্ত নীতি-পলিসির কারণে এক ভাইব্রেন্ট অর্থনীতি হিসাবে তা হাজির হচ্ছে করা যাচ্ছে কী না – এটাই মূল চাবিকাঠি ও মূল চালিকাশক্তি। চীন এটা অর্জন করতে টানা চল্লিশ বছর ব্যায় করেছিল। যেটা বেশিরভাগ মানুষই খেয়াল করে নাই। কমিউনিস্ট চিন্তার একপেশে দৃষ্টিভঙ্গির অত্যাচারে হাতেগোনা বাদে সবাই ব্যস্ত ছিল ১৯৭০ এর দশকের “চীন তখনও সমাজতন্ত্রী” কিনা এই ভুয়া ও বেকুবি তর্কে। মাও মারা যান ১৯৭৬ সালে। এর আগে পর্যন্ত মাও নিজে ওসব তর্কে ইন্টারেস্টেড কেউ নন। দেং জিয়াও পিং সহ তার লক্ষ্য তখন – কমিউনিসট পার্টির নেতৃত্বে চিনে একটা ক্যাপিটালিজম সম্পন্ন হতে পারছে কীনা। এটা তার একমাত্র ফোকাস যা থেকে আজকের চীনের উত্থান।
মাওয়ের চীন সেসময় চীনকে শীর্ষ সারপ্লাস একুমুলেশনের দেশ হিসাবে গড়ে তুলেছিল দুই পর্বে (১৯৭০-৯০ প্রস্তুতিপর্ব আর পরে ১৯৯০-২০১০ একশনপর্ব ) এভাবে তা অতিক্রম করেছিল।
দুর্ভাগ্য হল ভারতের কেউ, কোন একাদেমিশিয়ান অন্তত এদিকটা ও এদিক থেকে ব্যাপারটা কখনও স্টাডি করেছেন জানা যায় না। চীনের এদিকটা স্টাডি করতে পারলে তবেই না এটা এরপরে ভারতের উপর প্রয়োগের প্রশ্ন আসে! এব্যাপারে সবচেয়ে নেতিবাচক ফ্যাক্টস হল, ১৯৯০ সালের ভারতে ইকোনমিক ক্রাইসিস দেখা না দিলে ভারত হয়ত নেহেরুয়ান সমাজতন্ত্রী হয়েই থাকার চেষ্টা করত। ১৯৯০ সালের ক্রাইসিস মানে ভারত যখন প্রথম বড় “ব্যালেন্স অব পেমেন্টের” ঘাটতিতে পড়েছিল। “ব্যালেন্স অব পেমেন্টে” মানে রাষ্ট্রের বৈদেশিক মুদ্রার একাউন্টে আয়-ব্যায়ে বৈষম্য মান্ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করার যোগ্যতা হারিয়েছে বলে ব্যায় বেশি হয়েছে দেখাচ্ছে। আর এমন অবস্থা মানেই এই ঘাটতি পূরণ করে দিতে পারে একমাত্র আইএমএফ কিন্তু শর্ত থাকে যে বহু নীতি-পলিসিগত সংস্কার মানতে বাধ্য থাকতে হবে। যেসব পর্ব বাংলাদেশ পেরিয়ে এসেছে সেই ১৯৭০ এর শেষ দশকে আর ১৯৮২ সালের সংস্কারে।
আমাদের জন্য এখন মূলকথাটা হল, শীর্ষ সারপ্লাস একুমুলেশনের দেশ হিসাবে ভারতকে সাজানো যে বকেয়া কাজ, যে মূল চাবিকাঠি সেটা আজও ভারতে কারও কানে ঢুকেছে এমন হগ্ন দেখা যায় নাই। এটা সবার আগে ঘটাতে পারলে তবেই চীনের লেভেলে সারপ্লাস একুমুলেশনের কথা ভাবা বা দাবি করার বাস্তবতা ভারতের জন্য তৈরি হতে পারে। কিন্তু এর আগেই সারা ভারত জুড়ে কেবল আমেরিকার প্ররোচনায় চীনের সাথে ভারতের সমতুল্য ভেবে তুলনীয় ধরে নিয়ে কথা বলার ছড়াছডি। যেন অর্থনীতিতে এটা করে দেখানোর মামলা নয়, বিরাট করে দেশপ্রেমের ভাব তুলতে পারলেই একাজ হয়ে যাবে। অথচ শীর্ষ সারপ্লাস একুমুলেশনের দেশ না হলেও কাছাকাছি কিছু যেটা ঠিকমত একবার চালু হলে- পরে একমাত্র তারপরেই সব কিছুই ঠিক চলতে পারে।
একমাত্র এরপরেই, একপর্যায়ে এই উদ্বৃত্তের কিছু অংশ নিজ সেনাবাহিনীতে ব্যবহার বা অন্য দেশে বিপুল বিনিয়োগে খরচ (ফলে অন্য দেশের ওপর প্রভাব প্রতিপত্তি হাতে আসা) করার সামর্থ্য আসবে। এভাবে কমপক্ষে ২০ বছর চলতে পারলে সেই দেশ পরাশক্তির মর্যাদা পাওয়ার পূর্বাবস্থায় পৌঁছাতে পারে। অথচ ভারতের ভাইব্রেন্ট অর্থনীতি, ডাবল প্রবৃদ্ধি, চীনের ন্যায় সারপ্লাস একুমুলেশন- ইত্যাদি কোনো কিছুরই খবর নেই। বুঝাবুঝিটাই নাই। অথচ ভারতকে অনবরত চীনের সাথে তুলনা করতে উসকানি দিয়ে চলেছে আমেরিকা। যেন সোনালি চাবুক হলেই জীর্ণ-শীর্ণ ঘোড়াও সবল হয়ে উঠবে।
মোদীর গত সাত বছরে এই মিথ্যা ভ্যানিটিটাই ভারতের সাংবাদিকসহ ইন্টেলেকচুয়ালদের এমন বিশ্বাস করিয়েছেন যে, সেটা একটা মানসিক অসুখে পরিণত করেছে। এতে কেবল মোদীর যা অর্জন তা হল সবচেয়ে মডার্ন-নারী-সাংবাদিক ও ফরেনডেস্ক এডিটরও এখন মোদীর হিন্দুত্ববাদের বিরুদ্ধে নিজের চরম অগ্রহণযোগ্যতাটা প্রকাশ করতে ভুলে গিয়েছেন। কারণ তিনি বিশ্বাস করেছেন ভারত নাকি একেবারে পরাশক্তি হয়ে গেছে। কাজেই এই ভারত হিন্দুত্ববাদের হলেও অসুবিধা কী! কারণ সকাল-বিকেল তাকে দেখানো হত আর সে দেখত ভারত এখন আমেরিকার সাথে ছাড়া ওঠাবসা করে না। এটা দেখে সে বিগলিত হত। কিন্তু ফাঁপা ভেতরটা কোভিডের সেকেন্ড ওয়েভের ঝড়ে তছনছ ও উদোম হয়ে যায়। বাস্তবের ভারতে বেড বা অক্সিজেন নেই, হাসপাতাল বা চিকিৎসা নেই। প্রতিদিন চার হাজার করে রোগী মরছে। মৃতের সৎকারের খবর নেই, নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয়েছে। এই হল বাস্তবের ভারত!
অসহায় মোদী এতে উপায়ন্ত না দেখে শেষে ক্ষুদ্র ভুটান বা চিরশত্রু মনে করা সেই চীনসহ ২০টা দেশের কাছে ত্রাণসাহায্য চেয়ে হাত বাড়িয়েছেন। আর এতেই কথিত ইন্টেলেকচুয়ালদের কিছু চোখ খুলেছে যে তাঁর ভারত যদি পরাশক্তি হয় তো সে কেন ত্রাণ চাইবে? এতে সব ভেঙে উদোম হয়ে গেছে যে ভারত কোন পরাশক্তির ধারেকাছেরও কেউ নয়। যদিও এত কিছু বুঝার পরও কারো কারো আমেরিকার মিথ্যা প্রলোভনে থাকতে চাওয়া বন্ধ হয়নি। এরা কিছু তোতাপাখি যারা আমেরিকান অনুদান-স্কলারশিপ দিয়ে ডিগ্রি দিয়ে এভাবে শেষে তোতাপাখি বানানো হয়েছে।
Hudson Institute হাডসন ইনস্টিটিউটঃ
ওয়াশিংটনের এক থিংকট্যাংক ও রিসার্চ সেন্টার হল ‘হাডসন ইনস্টিটিউট’। তার এক পাকিস্তানি ও এক ভারতীয় ফেলো যৌথভাবে ভারতের বা গ্লোবাল মিডিয়ায় লেখা নিয়ে হাজির হচ্ছেন ইদানিং। তেমনই এক লেখার প্রসঙ্গ ছিল সাউথ-ইস্ট এশিয়ান জোট, সার্ক [SAARC]। বলা ভাল সম্ভবত সার্ককে উদাহরণ হিসাবে ব্যবহার করতে গেছিলেন। কিন্তু নের জানাশুনার অভাবে কিছু ধরা খেয়ে গেছেন। লেখাটা ভারতের চোখে দেখে লেখা মনে হয়েছে। ওর লিড লেখক ভারতীয় অপর্ণা পান্ডে [APARNA PANDE] আর তাতে শিরোনাম হল, ‘কোভিড বলছে ভারত যদি সার্কের দায়িত্ব নিতে ব্যর্থ হয় তবে চীন নিয়ে নিবে” [Covid shows if India can’t take care of SAARC, China will]।’
এরপর ওই লেখা শুরুর বাক্যটাও বলছে, ‘কোভিড মহামারী কেবল মানব দুর্দশা বা অর্থনৈতিক বিপর্যয়ই আনে না এর খারাপ স্ট্র্যাটেজিক পরিণতিও আছে। এটা দেখিয়ে দিয়েছে সাউথ এশিয়াকে নেতৃত্ব দিতে ভারত কোন সীমায় আটকে আছে! আর সেই সাথে ভারতের প্রতিবেশীদের কাছে ভারতকে নিচু দেখিয়ে চীনের ভূমিকা কত উঁচুতে”।
In addition to causing a humanitarian and economic disaster, the Covid-19 pandemic has also had strategic consequences. It has demonstrated the limits of India’s ability to lead South Asia and raised China’s standing at India’s expense among some of its neighbors.
এভাবে চীনের সাথে খামোখা ভারতের তুলনা করা হয়েছে এ লেখায়। এক কথায় বললে এটা সেই পুরান কথা, খামোখা চীনের পর্যায়ে তুলে ভারতের বন্দনা আর কোভিডে ভারতের ইজ্জত লুটানোতে সহানুভূতি জোগাড় করার চেষ্টা। যেমন- যে কুকুরের গায়ের চামড়া উঠে গেছে তার নাম বাঘা রাখলেও কোন ইমেজ ফিরে না। তবু অনেক মানুষ সেটাই করে যাবেন। যেন ভারতের হাতে চীনের কাছাকাছি সারপ্লাস একুমুলেশন বা উদ্বৃত্ত সম্পদ আছে, যা ভারত চাইলেই প্রতিবেশী দেশে বিনিয়োগ করতে সক্ষম। ফলে ‘কোভিডের কারণে প্রতিবেশীদের ওপর ভারতের স্ট্র্যাটেজিক প্রভাব খাটো হয়ে যাচ্ছে। না হলে চীনকে একেবারে দেখিয়ে দিত” এমন ভাব।
তাই ওই লেখার শিরোনামে কনক্লুশনে বলছে, “অতএব কোভিডই দেখাচ্ছে যে, এ অবস্থায় ভারত সার্ককে নেতৃত্ব দিতে ব্যর্থ হওয়ার সুযোগটা এবার চীন নিয়ে নেবে”। এগুলো আসলেই নায়িকাদের ফুটানি বা ভ্যানিটির মত কথা যেন! স্টার-ইমেজ ছাড়া নায়িকাদের সিনেমা চলে না, আমরা বুঝি। কিন্তু আমেরিকা আর কত দিন ভারতের পিঠে হাত রেখে এমন মিথ্যা প্রলোভন দিয়ে যাবে?
হোমওয়ার্ক না থাকলে যা হয়ঃ
আসলে অসংখ্য ত্রুটিতে ভরা এই লেখা কারণ, আগে ‘হোমওয়ার্ক’ করে নেয়া হয়নি ঠিকমত।
প্রথমত, এই লেখকদ্বয়ের সার্ক সম্পর্কে ন্যূনতম কোনো ধারণা আছে মনে হয় না। যেমন- সাম্প্রতিকালে ভারতই ‘সার্কে পাকিস্তান আছে’ বলে সার্ককেই বাদ দিয়ে ভাগাড়ের মতো ফেলে রাখার চেষ্টা করেছে, সে খবর এদের কাছে নেই। এমনই ২০১৬ সালের শেষের এক খবর হল – বিডিনিউজ২৪ লিখেছিল, “সার্ক ভুলে বঙ্গোপসাগরভিত্তিক দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর আঞ্চলিক জোট ‘বিমসটেকের’ ওপর জোর দিতে বাংলাদেশকে পরামর্শ দিয়েছেন” সাবেক এক ভারতীয় কূটনীতিক ও ভারতের ওআরএফের [ORF] ফেলো পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী। অর্থাৎ বলতে চাইছেন, তাই ভারতের কাছে সার্ক আপন কোনো কিছু নয়।
অথচ আমরা লক্ষ্য করছি সেই সার্ককেই লেখাটা ভারতের জন্য উদাহরণ হিসেবে এনেছেন।
দ্বিতীয়ত, ফ্যাক্টস হল চীন সার্কের মেম্বার নয়। তাহলে “ভারত না পারলে চীন পারবে” এ কথা তোলা হচ্ছে কিভাবে? এই অহেতুক কথার মানে কী?
তৃতীয়ত, এই অঞ্চলে সার্ক সত্যিকারের ফাংশনাল কিছু হয়ে উঠেছে, এমন ভূমিকা কখনই নিতে পারেনি। মূলত ভারত-পাকিস্তান এর মধ্যে সবসময় দ্বিপক্ষীয় অসংখ্য ক্যাচালের ইস্যু থাকেই – যা এখানে সার্কের মধ্যে হাজির করাতে নিষেধ থাকলেও এরা পেছনের ক্যাচালের কারণে সার্কে এসেও সবকিছুতেই নিষ্ক্রিয় থাকতে চেয়েছে – আর এভাবে এটা সার্ককে কার্যকর হতে বাধা হয়ে কাজ করেছে। আবার এই বাধার কাজে ভারত-পাকিস্তান কারো ভূমিকাই কম ছিল তাও নয়। এসব সমস্যা সত্বেও পরেও সার্ক দেশগুলোর মধ্যে শুল্ক কমিয়ে পণ্য বিনিময় বাড়ানোর একটা চেষ্টা করা হয়েছিল যা কাজ করেনি। মূলত ভারতের পুরানা অভ্যাসের কারণে যে, একদিকে ভারত বলবে তারা শুল্ক তুলে নিয়েছে অথচ রফতানি করতে গিয়ে দেখা যাবে হয়ত এবার প্রায় সমান সমতুল্য কিছু নন-ট্যারিফ শুল্ক আরোপ করে রেখেছে ভারতই। এককথায় ভারতের সাথে কোন ধরণের বাণিজ্য সমঝোতা – গিভ এন্ড টেক – এটা অসম্ভব। কখনও এটা কাজ করে নাই। মূলত ভারতের উগ্র জাতিবাদী মোটাবুদ্ধির কারণে।
অনেকের মনে হতে পারে আমি ভারতের বিরুদ্ধে একটু বেশি কঠোর হচ্ছি। না তা হচ্ছি না, আমি নিশ্চিত। নিচের উদ্ধৃতিটা এখানে আলোচিত লেখার ভারতীয় লেখক অপর্ণা পান্ডে-এর এক সাক্ষাতকার থেকে উঠিয়ে আনা। যেটা তিনি ২০২০ আগষ্টে টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দিয়েছিলেন। এখানে আমরা দেখব তিনি ভারতের “বিগ পাওয়ার” বা পরাশক্তি হওয়া বলতে কী বুঝেন। যেখানে সবচেয়ে আপত্তিকর হল “এই ভারত প্রতিবেশির” উপর কী ‘hegemon’ আচরণ করবে সে বর্ণনা দেখে। তিনি আসলে পরাশক্তি বলতে কলোনিদখলদার শক্তি বুঝেছেন!
“To be considered a big power, you need to be the acknowledged hegemon in your own neighborhood [South Asia] and to be recognize as a global power by your peers. Finally, you need to be willing to exercise power to protect your interests.”
কঠোর ‘দেশপ্রেমী’ ‘উগ্র-জাতিবাদী’ ভারত কী করে বিদেশী পণ্য আমদানি করতে দিতে পারে? বরং এর বিনিময়ে বাংলাদেশের পুরা বাজারটা কব্জা করাই তাদের জন্য ‘দেশপ্রেম’; যার সোজা মানে হলো, ভারত কোনো ধরনের অর্থনৈতিক বা বাণিজ্যিক রাষ্ট্রজোটের সদস্য হওয়ারই তো যোগ্য নয়। আসলে বোকা উগ্র জাতিবাদ আর গ্লোবাল বাণিজ্য পরস্পর বিরোধী!
তবু আমরা দেখেছি ওই লেখায় লিড ভারতীয় লেখক অপর্ণা পান্ডে ভারতকে “লারজেস্ট কান্ট্রি ইন দ্য রিজিয়ন” খেতাব দিয়েছেন। আর পাকিস্তান তা মেনে নেয় নাই বলে দোষারোপ করেছেন। আবার সেকেন্ড ওয়েভে অক্সিজেনের অভাবে পড়লে ছোট দেশ ও সার্কের সদস্য ভুটান নিজের অক্সিজেন প্লান্ট থেকে প্রতিদিন ৫০ টন করে অক্সিজেন ভারতকে দিচ্ছে, এ কথাটা তিনি জ্বলুনির সাথে উল্লেখ করছেন; সেটাও এক ভারি তামাশা বটে! তাহলে তার চোখে ভারত ‘লারজেস্ট কান্ট্রি’- এটা কী অর্থে? লারজেস্ট কী জনসংখ্যায় নাকি উদ্বৃত্ত সম্পদে্র বিনিয়োগ সক্ষমতায়? নিশ্চয় জনসংখ্যাই বুঝেছেন ও বুঝিয়েছেন। কোনো দেশকে প্রভাবশালী হিসাবে ‘বড়’ বুঝায় তার কী থাকলে পরে? – এরা যেন তাই বোঝেন না। নইলে ভারত বড় কি না এখানে এই তর্ক তোলার অর্থ কী? ছোট্ট ভুটানের অক্সিজেন নিতে কষ্ট হচ্ছে- এটা তো দেখছি সংকীর্ণ পেটি মধ্যবিত্ত সুলভ ঈর্ষা!
তার আরো মারাত্মক এক বক্তব্য হলো, তিনি এবার স্বীকার করে বলছেন, সার্কের ভেতর ভারতকে ন্যাচারাল নেতা (রিজিয়নস ন্যাচারাল লিডার) বলে পাকিস্তান স্বীকৃতি না দিতে পারার কারণেই নাকি এই জোটের সমন্বয় হয়নি কখনো।
ভারতীয় এই নারী লেখিকার এই বক্তব্য খুবই ক্ষুদ্র মনের। তিনি আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক নিয়ে কথা কোন বলার যোগ্য তা মনে হচ্ছে না। এখানে ভারত ‘ন্যাচারাল লিডার’ মানে কী? আল্লাহ স্বয়ং দিয়েছেন? এ রকম?
আসলে বন্ধুদের ছোট গ্রুপের বেলাতেও যেটা দেখা যায়, অনেক গ্রুপে এমন বন্ধু একজন থাকে যে বন্ধুদের বিপদে এগিয়ে যায়, উদ্ধার করতে খরচ করে এবং খরচ করা অর্থ কী করে পরে ফেরত পাবে বা আদৌ ফেরত পাবে কি না তা না জেনেই সে এটা করে। এমন দায়িত্ব নেয়ার এই স্বভাব- এটাই গ্লোবাল নেতার স্বাভাবিক স্বভাব-বৈশিষ্ট হতে হয় এবং আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্কের বেলায় একেই ‘এম্পায়ার’ বা “সাম্রাজ্যের শাসকের ইতি গুণধারী” ব্যক্তিত্ব বলা হয়। কেউ গ্লোবাল নেতা হতে চাইলে তার এই গুণ থাকা জরুরি বা অনিবার্য। এর বাইরে ন্যাচারাল লিডার বা খামোখা লিডার বলে কিছু নেই। এছাড়া, আর কী হতে পারে? ভারত ‘ন্যাচারাল লিডার’ কথার মানে কি কলোনি-ব্রিটিশ কী ভারতের বাপ? নেহেরু যেমন নিজেকে কলোনি “ভাইসরয়” ভাবতেন!
তবে বড় জোর অপর্ণা পান্ডের এমন কথা এক ‘উগ্র দেশপ্রেম’ হতে পারে। যেটার আবেগী মূল্য কিছু থাকলেও সেটার অবস্থান কিন্তু কেবল তাঁর দেশের ভেতরেই থাকতে পারে। আর বাইরের লোকেরা শুনলে এটাকে গাধামি মনে করে বিরক্ত হবে।
আসল কথাটা হল, নেপাল বা ভুটান ল্যান্ডলকড দেশ বলে এ থেকে দুধ দোয়ানোর মতো করে এখনো নিয়মিত সুবিধা বের করে আসছে ভারত। যেমন- নেপাল বা ভুটান বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ বিক্রি করতে চাইলে আগে কোনো ভারতীয় কোম্পানিকে কমিশন বুঝিয়ে দিয়ে এরপর কেবল ওই ভারতীয় কোম্পানির মাধ্যমে তা বিক্রি করতে হবে। এর অর্থ হল, ‘সাম্রাজ্যের শাসকের ইতিগুণ’ জিনিসটা প্রসঙ্গে ভারতের বোঝাবুঝি একেবারেই শুণ্য। এটাকেই ‘স্মল’ চিন্তা বলে। এটা কোন উদারতাবাদ প্রাকটিস করা নয়। বরং বড় করে অন্যকে সুবিধা দেয়া যাতে বড় করে প্রতিদান সুবিধা ফেরত পাওয়া যায়। ভারত এটা বুঝবে না! উগ্র দেশপ্রেমিকতা আর স্বল্পবুদ্ধির জাতিবাদ এসব বুঝের বাইরে……।
না এটাকে ‘দাতা মহসীন’ হতেও বলা হচ্ছে না। একটা ‘ফেয়ার ডিল’, একটা ন্যায্য সম্পর্কের কথা বলা হচ্ছে; যেখানে এতে এম্পায়ারের কোনো ফাইন্যান্সিয়াল লস হলে সেটার দায় ভাগ করে নেয়া যেতে পারে। আর এতে এম্পায়ারের কোনো লস হলেও যেহেতু এতে তার স্বাভাবিক প্রভাব প্রতিপত্তি বাড়বে, এটাই তার পক্ষে নন-ফাইন্যান্সিয়াল রিটার্ন ফেরত পাওয়া হবে। আসলে কারো গ্লোবাল নেতার ভূমিকায় হাজির হওয়া এতই সহজ নয় বা একপক্ষীয় কোন সুখের নয়। এভাবে দেখতে চাইলে দেখার সুযোগ অবশ্যই আছে।
ঐ লেখায় শেষে খুবই দৃষ্টিকটু ও ঈর্ষাকাতর এক মন্তব্য করা হয়েছে। বলা হয়েছে, “কোভিডের এই এমারজেন্সির কালে নগদ অর্থ ঢালার ক্ষতিকর ক্ষমতার চীন (cash-flush malign power) তার প্রভাব বাড়িয়ে নেয়ার সুযোগ পেয়ে যাবে”-[ during an emergency, a cash-flush malign power like China gets an opportunity to expand its influence]।
ভারতের জন্য দিল্লি আসলেই দু-র-অ-স্ত। অন্তত ঈর্ষা দিয়ে এসবের কিছুই অর্জন করা যায় না! আমেরিকা ভারতের পিঠে হাত রেখেছে বলেই ভারত তার সব অক্ষমতার বন্ধ্যাত্ব ছাড়িয়ে সক্ষম হয়ে যাবে না। আমেরিকা তা করতেও পারে না, করবে না। কারণ ওদিকে আবার রাষ্ট্র মানেই নিজ একান্ত স্বার্থ এবং সেটাই সবার আগে মানে প্রায়োরিটি। আর সক্ষমতা? সেটা তো সবার নিজেরটা নিজেই অর্জন করে নেয়ার জিনিস! কাজেই……।
লেখক : রাজনৈতিক বিশ্লেষক
goutamdas1958@hotmail.com
[এই লেখাটা গত ১২ জুন ২০২১, দৈনিক নয়াদিগন্ত পত্রিকার ওয়েবে ও পরদিন প্রিন্টে “যখন ফাঁপা পরাশক্তির ভান করাতেই সুখ“ – এই শিরোনামে ছাপা হয়েছিল।
নয়াদিগন্তে ছাপা হওয়া লেখাগুলোকে আমার লেখার ‘ফার্স্ট ড্রাফট’ বলা যায়। আর আমার এই নিজস্ব সাইটের লেখাটাকে সেকেন্ড ভার্সান হিসাবে এবং থিতু ভাষ্য বলে পাঠক গণ্য করতে পারেন। পরবর্তিতে ‘ফার্স্ট ড্রাফট’ লেখাটাকেই এখানে আরও অনেক নতুন তথ্যসহ বহু আপডেট করা হয়েছে। ফলে সেটা নতুন করে সংযোজিত ও এডিটেড এক সম্পুর্ণ নতুন ভার্সান হিসাবে ও নতুন শিরোনামে এখানে আজ ছাপা হল। ]
NewZionists and Western Think Tank, both are keen to have Russia as an ally, even giving up Cremeia-UKrane, in the name of upholding the White Supremacy across the globe. They believe modern capitalism, medical, treatment, development, AI, Cyber, Atomic energy, all are derived from the West. Asia and East Waht contributed in those areas of the today’s globe?
LikeLike