ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক নিম্নমুখী ভাটাতে
গৌতম দাস
২৪ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০৬ সোমবার
Capitol Hill’s Advocacy on US-India Ties: Devolution of Three Decades Of Progress
ঘটনা এখানে দু’টা কিন্তু কারণ একই। বাংলাদেশ মার্কিন অবরোধের পাল্লায় পড়েছে। আর ওদিকে ভারত-মার্কিন সম্পর্ক দূর থেকে দূর-অস্তে চলে যাচ্ছে। সেই সুত্রে, কোন ভারত-ঘনিষ্ট ও নির্ভরশীল কোন ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্র্ককের সুযোগ ও সম্ভাবনাঢ় বাস্তবতা ক্রমশ মিলিয়ে যাচ্ছে। এখন বাংলাদেশে মার্কিন অবরোধ না হয় দেখা-বুঝা যাচ্ছে। কিন্তু তা বলে ভারত-মার্কিন সম্পর্ক ভাটায় চলে যাবে কেন?
যদিও এটা ঠিক, প্রথমটার জন্য দ্বিতীয়টা ঘটছে ব্যাপারটা ঠিক এমন নয়। তবে, সম্পর্কিত। কিভাবে? যেমন গত ১০ ডিসেম্বরের মার্কিন অবরোধ আরোপের যে ঘোষণা সেটা কেবল বাংলাদেশের উপর না আরো অনেক দেশসহ সবার বেলাতেই সাধারণভাবে বলা হয়েছিল এই মার্কিন অবরোধের মূল কারণ – “মানবাধিকার লঙ্ঘন”। আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেনের ভাষায়, আমেরিকার পররাষ্ট্রনীতি আর মানবাধিকার জড়াজড়ি করে থাকা শুরু হয়েছে… [to infuse human rights into its foreign policy,] । আর তা থেকেই, হ্যাঁ সেখান থেকেই বাংলাদেশে অবরোধ আরোপ আর ভারত-মার্কিন সম্পর্ক ঝুলে পড়া – এ’দুই ঘটনার পেছনের কারণ একটাই আর তা হল – (আমেরিকার ভাষ্যমতে) মানবাধিকার লঙ্ঘন। যেটা বাংলাদেশের বেলায় র্যাব এই প্রতিষ্ঠানের তৎপরতা বিষয়টা মুখ্য, আমেরিকা সেটাই বলছে। আর ভারতের বেলায় মুখ্যত কাশ্মিরের স্বাধীনতা-স্বায়ত্তশাসন কেড়ে নেয়া, ৩৭০ ধারা বাতিলসহ জবরদস্তি কাশ্মির ভারতের মূল ভূখণ্ড বলে জুড়ে নেয়া, এই মানবাধিকার লঙ্ঘন। ঘটনা দু’টার ‘মিলের জায়গা’ এখানেই।
ভারতে নিজস্ব ব্যবসায়ীদের অর্থে পরিচালিত একমাত্র থিংকট্যাংক ওআরএফ [ORF] বা অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন। এই ওআরএফ-এর এক নিজস্ব রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছিল গত বছর বাইডেনের শপথ গ্রহণের পরে ২৩ এপ্রিল ২০২১। ওই রিপোর্টের শিরোনাম : হিউমান রাইটস ও মার্কিন ফরেন পলিসি : ভারত ও চীনের ওপর এর প্রভাব-প্রতিক্রিয়া [Human Rights and US Foreign Policy: Implications for India and China]। যার প্রথম অংশে চীনের বিরুদ্ধে উইঘুরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে যতকিছু অবরোধ দেয়া হয়েছে এর তালিকা দিয়ে ভারতের জন্য তা উপভোগের, এমন ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। কিন্তু রিপোর্টের দ্বিতীয় অংশ ছিল ভারত প্রসঙ্গেঃ বলাই বাহুল্য তা ভারতের জন্য ছিল খুবই হতাশার। এমনকি সেটা প্রকাশিত হয়ে পড়েছিল উপ-শিরোনামেই। সেটা এমন : ভারত-আমেরিকা সম্পর্কের (বিরুদ্ধে) ক্যাপিটাল হিল-এর অ্যাডভোকেসিঃ পরিণতিতে গত তিন দশকের সম্পর্ক অগ্রগতির উল্টা-ভ্রমণ [Capitol Hill’s Advocacy on US-India Ties: Devolution of Three Decades Of Progress]।
‘ক্যাপিটল হিল’ বলতে আমেরিকান কংগ্রেস বা সংসদ বিল্ডিং কমপ্লেক্স বুঝানো হয় যেখানে কংগ্রেস সদস্যরা আইন প্রণয়নের জন্য বসেন বা মিলিত হয়ে থাকেন। যেখানে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট বার্ষিক “স্টেট অব দা ইউনিয়নের” ভাষণও দিয়ে থাকেন। আর সেখানেই ট্রাম্প আমলের শেষের সময় থেকেই ভারতের মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রসঙ্গে একের পর এক প্রস্তাব পাস হয়েছে। তা কখনো ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান দু’দলই (বাই-পার্টিজান) মিলে, আবার কখনো একা ডেমোক্র্যাট সদস্যদের উদ্যোগে। ওআরএফ-এর ওই রিপোর্ট, পাস হওয়া ওমন সব প্রস্তাবের তালিকা দিয়েছে। এনিয়ে বিস্তারে যেতে আগ্রহিরা দেখতে পারেন – Table 2: Comparison of tabled resolutions on India’s abrogation of Article 370 in Kashmir]। আর সেখান থেকেই এই রিপোর্টটা অনুসিদ্ধান্ত টেনেছে যে, বিগত ৩০ বছর ধরে ভারত-আমেরিকার সম্পর্কের যে ধারাবাহিক অগ্রগতি, তা এখন মানবাধিকার লঙ্ঘনের এসব প্রস্তাবের ভেতর দিয়ে উল্টা নিম্নগতি বা ভাটার পথে হাঁটা দিয়েছে। যদিও রিপোর্টটা শুরুতে আমেরিকা এতদিন ভারতকে কত কী খাতির করেছে ও গুরুত্ব দিয়েছে এ নিয়ে অজস্র প্রশংসা ও ভারতের সুখ স্মৃতির বর্ণনা দিয়েছে। এমনকি এটাও লিখেছে যে, আমেরিকার ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল ও তৎপরতা বলে যা কিছু আমেরিকা করেছে তা ভারতের স্বার্থকে গুরুত্ব দিয়ে ও ফোকাসে রেখেই করা হয়েছিল। আর তা থেকেই তা আসলে এখন কত তীব্রভাবে ভেঙে গেছে, তিন দশের ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক অগ্রগতি এখন কতটা উল্টা-ভ্রমণ করছে বলে তা হতাশার, কত গভীর বেদনা-বিধুর তা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ওই রিপোর্টে।
কিন্তু পাক্কা তিন দশক বা ৩০ বছর কেন?
দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানের কোনো ঘটনার অনেক স্মৃতি বা পুরানা গুরুত্বপূর্ণ দিক-পটভূমি হারিয়ে যাওয়া অস্বাভাবিক নয়; কাশ্মির ইস্যু যেখানে প্রায় পঁচাত্তর বছরের পুরানা ঘটনা। এদিকে ভারতের মিথ্যা প্রপাগান্ডায় অনেকের আজ মনে হতে পারে শুরু থেকেই (১৯৪৭-৪৮) কাশ্মিরিরা বোধহয় ‘সশস্ত্র’ প্রতিবাদ করা “জঙ্গি-টেরর” , ফলে তারা খারাপ লোক! অথচ এই প্রপাগান্ডা ভিত্তিহীন, একেবারে ফ্যাক্টস লুকানো বা উল্টেদেয়া কথা। অথচ মূল ঘটনা গত ১৯৮৭ সালের কাশ্মির রাজ্য নির্বাচনে পরিকল্পিত ব্যাপক কারচুপি। ঐ নির্বাচনে রাজীব গান্ধী-ফারুক আব্দুল্লাহ (মানে তখনকার কংগ্রেসের প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী ও কাশ্মির ন্যাশনাল কংগ্রেসের ফারুক আবদুল্লাহর দলকে জিতানোর) এদের যৌথ ও ব্যাপক কারচুপি করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ থেকেই কেবল সাধারণ কাশ্মিরিদের সশস্ত্র আন্দোলনের শুরু হয়েছিল। কিন্তু তাদের এই কারচুপির পক্ষে গোপন ভাষ্যে সাফাই কী ছিল?
তাদের খোড়াযুক্তি আর কানে-কানে প্রচার করা সাফাইটা ছিল যেহেতু ঐবছর মুফতি মোহম্মদ সাঈদের নেতৃত্বে কিছু ইসলামি দলের একটা জোট নির্বাচনে অংশ নিয়েছে এবং তারা পপুলার ও জিতে যাবার প্রবল সম্ভাবনা; অতএব এদেরকে যেকোন উপায়ে ঠেকানো জায়েজ। এককথায় বললে রাজীব-আব্দুল্লাহর অন্যায় জোট কাশ্মিরে আইনি রাজনীতি, প্রকাশ্য ও কনষ্টিটিউশনাল রাজনীতি আর থাকবে কিনা সে পরোয়া করলেন না। এনিয়ে আরেকটু বিস্তারিত লেখা এখানে আগ্রহিরা পড়তে পারেন। তারা আইনি রাজনীতিক ব্যবস্থায় কবর দিয়ে হলেও কারচুপি করে মুফতি সাঈদের জোটকে পরাজিত দেখানোর জিদে ডুবে গেলেন। আর তা থেকেই আর নির্বাচন নয়, সশস্ত্রভাবে আন্দোলন ও প্রতিবাদ জড়ো করতে হবে – এই রাজনৈতিক ধারা কাশ্মিরে মূল ফোকাস হয়ে উঠেছিল। আর তাতে এর বিপরীতে আস্তে আস্তে বিজেপি নেতা অটলবিহারী বাজপেয়ির উত্থান ঘটেছিল। কাশ্মিরের রাজনীতির এই সশস্ত্র প্রকাশের কারণ হিসেবে তিনিই প্রথম মিথ্যা বয়ান চালু করলেন। তিনি দাবি করতে থাকলেন, ভারতের নিকৃষ্ট কারচুপির তৎপরতা নয় বরং উল্টা ‘সীমা পার কি আতঙ্কবাদ’ এই ভাষ্য নিয়ে আসেন। অর্থাৎ পাকিস্তানই এর জন্য ‘দায়ী’। তারা সীমান্তের ওপার থেকে অস্ত্র ও জঙ্গি-টেরর ভারতের কাশ্মিরে পাঠানোর মাধ্যমেই ভাররের কাশ্মিরকে অশান্ত করা হয়েছে। এই মিথ্যা বয়ান তিনি শুরু করেছিলেন। আর আমেরিকা প্রথমে প্রচ্ছন্নভাবে পরে ২০০১ সালের পর থেকে খোলাখুলি ওয়ার অন টেররের নামে এর ভিত্তিতে ভারতের সাথে তথাকথিত জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বয়ানে গ্লোবাল জোট বেঁধে ছিল।
সেই ১৯৮৭ সালের পর থেকে হিসাব করলে, গত তিন দশকের ভারত-আমেরিকা সেই সম্পর্কেরই এখনকার ভাটা বা নিম্নগতির শোক আর হতাশা নিয়েই ওআরএফ-এর এই রিপোর্ট। মজার কথা হল – এই বাজপেয়িকেই তিনি নাকি এক ‘বিরাট নরম মনের মানুষ যিনি কাব্য এবং সাহিত্যচর্চাও করেন’ বলে ভারতের অনেকে প্রচার করে থাকেন। তার কবিতা নিয়ে গান রচনাও করা হয়েছে, এভাবে তার ইমেজ নির্মাণের চেষ্টাও আমরা দেখেছি। অথচ তিনি হলেন প্রথম হিন্দুত্ববাদী যিনি সেই থেকে কাশ্মিরকে অশান্ত করা ও হত্যাকাণ্ডকে সাফাই যোগানদার প্রধান নায়ক! ভারত যখন কাশ্মিরে ব্যাপক কারচুপি, এই বিরাট অনৈতিক কাজ করে আত্ম-অপরাধবোধে হতাশায় ভুগছিল তখন এই বাজপেয়িই অসৎভাবে উল্টা পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারতীয়-মনকে আত্ম-অপরাধবোধ থেকে বের করে নিয়েছিলেন।
বাজপেয়ি ২০০৪ সাল মে পর্যন্ত ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। আর ওদিকে আমেরিকাও ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক-বন্ধনের যাত্রা শুরু করেছিল এই বাজপেয়ির হাত ধরে এবং ওই একই মারাত্মক অসৎতার ওপর দাঁড়িয়ে; ব্যাপারটাকে আতঙ্কবাদ বা টেররিজমের বিরুদ্ধে তাদের ঐক্য হিসাবে দেখিয়ে। তাই ত্রিশ বছরের রেফারেন্সটা খুব হালকা কোনো দিন গণনা নয়। তবে ভারত-আমেরিকার ত্রিশ বছরের সম্পর্ক যে এবার ঢলে পড়ছে এর গুরুত্ব বাংলাদেশে ততটা টের পাওয়া না গেলেও গত বছর বাইডেনের আগমন বা শপথের সময় থেকেই তাই ভারত এ সম্পর্কে পরিষ্কার ছিল। বাইডেনের লক্ষ্য ছিল, তিনি মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা তুলে এর আড়ালে মূলত চীনকে বেকায়দায় ফেলবেন আর এভাবেই চীনের সাথে লড়বেন, এই ছিল পরিকল্পনা। আর এই সূত্রে ভারতকেও বধ করার ইচ্ছা জেগে ওঠে। কারণ এটা আমেরিকার সব দল ও প্রশাসনের কাছেই পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছিল যে, ভারতকে খাতির করে যা লুটবার তা শেষ হয়েছে। এবার এশিয়ায় আগে বাড়তে গেলে আমেরিকাকে আর মেঘের আড়ালে থাকা নয়, সরাসরি নিজে মঞ্চে হাজির হতে হবে। আর মূলত এ কারণেই ভারত-আমেরিকা সম্পর্ককে এবার আসলে ঢেলে সাজানো, নতুন রূপ দেয়ার ইচ্ছা বাইডেনের বা ভারতের ভাষায় ‘অধোগতিতে বা ভাটায়’ প্রবেশ করা। আর এখান থেকে আমেরিকার দীর্ঘদিনের সুপ্ত ইচ্ছা বঙ্গোপসাগরে সপ্তম নৌবহর মোতায়েন – ভারত যেটার ঘোরতর বিরোধী; যেটাকে সে তার কুঁড়েঘরের পাশে আমেরিকার সাততলা বানিয়ে সেখান থেকে ভারতের বেডরুমের দিকে নজরদারি হিসাবে দেখে থাকে – সেই সুপ্ত ইচ্ছা এবার ভারতকে উপেক্ষা করে তা বাস্তবায়নের ফেভারেবল বা উপযুক্ত সময় হিসাবে দেখছে।
অর্থাৎ বাইডেনের শপথের পর থেকেই ভারত জানত, ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক ভাটায় প্রবেশ করে গেছে। তাই তাদের সুখের দিন, ভারতের নিজেকে ভুয়া হলেও ‘পরাশক্তি’ ভাব ধরার দিন, সেটাও এবার শেষ। এমনকি গত ৯-১০ ডিসেম্বর ২০২১ বাইডেন মানবাধিকার সম্মেলন বা ডেমোক্র্যাসি সামিট আয়োজনের দু’মাস আগে থেকেই ভারতও তৈরি হচ্ছিল। কারণ সেপ্টেম্বর-অক্টোবর বা এক মাসেরও আগে থেকে ঐ সামিটের দাওয়াতি কার্ড বিলানো শুরু হয়েছিল এবং মোদিও ওই সামিটে আমন্ত্রিত হন। তবু ভারত-আমেরিকা সম্পর্কের যে তাল কেটে গেছে এর সবচেয়ে ভাল প্রকাশ হল প্রথমতঃ, আমরা এখন খুজলে দেখব মোদি ওই আমেরিকান সামিটে অংশ নিয়েছিলেন কিনা আমরা বেশির ভাগ মানুষ তখন তা খেয়াল করিনি। যার মূল কারণ হল, মোদির যোগদান তার নিজে দেশেই হাইলাইট পায়নি বা দেয়া হয়নি। ফলে বিদেশ মিডিয়াতেও তাই ঘটেছিল। অথচ ফ্যাক্টস হল মোদি ওই ডেমোক্র্যাসি সামিটে যোগ দিয়ে অনলাইনে বক্তব্য রেখেছিলেন। তবে ওটা মানবাধিকার সামিট হয়ে দাঁড়িয়েছিল মোদি যেখানে এক অনুচ্চারিত আসামি হয়ে ছিলেন!
এসব অস্বস্তিকর সময় ও সভা মোদিকে মুখোমুখি হতে হবে; এ তো জানা কথাই ছিল। তাই এসব কিছুটা হাল্কা করতে ওর চার দিন আগে ৬ ডিসেম্বর ২০২১ মোদি রাশিয়ার পুতিনের (মাত্র পাঁচ ঘণ্টার) এক ভারত সফর আয়োজন করেছিলেন। ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয় তাদের কোনো তৎপরতাকে যা মানে দিতে চায় সেই ফরমায়েশ মাফিক রিপোর্টটা পাওয়া যায় দ্য-প্রিন্টের জ্যোতি মালহোত্রার লেখায়। কিন্তু যেখানে আবার রেগুলার বিদেশ মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিং, এটা পাওয়া যাবে ওই একই দ্যা প্রিন্টের নয়নিমা বসুর লেখায়। নয়নিমারা হল ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয় বিটের সেসব সাংবাদিক যাদেরকে মন্ত্রণালয় বিশ্বাস করিয়েছে যে “ভারত একটা পরাশক্তি” হয়ে গেছে। আর তারা কোন সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকুক বা না তারা এটা বিশ্বাস করা সাংবাদিক। তেমনই আরেকজন হল, দ্যা-হিন্দুর সুহাসিনী হায়দার। সে যাই হোক, গত ৬ ডিসেম্বর মালহোত্রা লিখলেন, পুতিনের সফর নাকি এক ‘ডিফাইনিং মোমেন্ট’। কিন্তু ঠিক কী কী ডিফাইন করে বা নয়া মানে দাঁড় করানোর মুহূর্ত ছিল সেটা – তা আজো কেউ বলল না বা জানে না। এর মূল কারণ, ভারতের সব মিডিয়া এমনকি ইন্ডিয়ান বিবিসিও এর মানে দেয়ার চেষ্টা করেছে যে, তারা চীনের নাম উল্লেখ করে “চীনকে মেসেজ দিচ্ছে_ বলে জানিয়েছে। অথচ ঘটনা তো এখানে ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক ভাটায় পড়েছে, খতম হয়ে যাচ্ছে – সেটা! তাহলে চীন এলো কোথা থেকে ও কেন?
আসলে বাইডেনের আমেরিকার সাথে ভারতের বিশেষ খায়-খাতির আর ভারতই হল ‘ইন্দো-প্যাসিফিকের ফোকাস” বা সব কিছু ইত্যাদি বলে বা কোয়াডের সদস্য বলে যে হামবড়া ভ্যানিটি আগে দেখাত সেটার একেবারে সমাপ্তি ঘোষণা না হইয়ে গেলেও সব ঢিলেঢালা হয়ে যাচ্ছে; এটা আর লুকানো থাকছে না। আর সেই কথা টের পেয়ে যেন এখনভারতের পাশে আমেরিকা আর নাই – ফলে এই ভারত আবার কোনো চীনা হামলার শিকার না হয়ে যায় – মূলত এই ভুয়া অনুমানের ওপর দাঁড়িয়েই পুতিনের সফর এটাকে ভারতের ‘চীনকে দেয়া মেসেজ’ হিসেবে দেখতে বলছে ভারতের মিডিয়া। মালহোত্রার লেখার শিরোনাম খেয়াল করেন, [Putin’s visit is a defining moment for India-Russia ties. It’s a telling message to China]।
এরপরেও এখন অনেকের মাথায় প্রশ্ন আসতে পারে, বুঝা যাচ্ছে ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক এখন ভাটায় চলে গেছে। তার মানে কি এটা আবার আগামীতে কখনো জোয়ারে উঠতে পারে?
অথবা একই প্রশ্নকে অন্য দিক থেকে হাজির করলে – যেমনঃ ভারতের কাশ্মিরের মানবাধিকার লঙ্ঘন অথবা একালের প্রায় সারা ভারতের মুসলমানদের নির্মূল করো অথবা এথনিক ক্লিনজিং করো ইত্যাদিতে আরো ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে পড়ে ভারত আমেরিকার হাতে অভিযুক্ত হয়ে যাবার ভয়েই কি ভারতের দিক থেকে ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেয়া? এটাই কি একমাত্র কারণ?
এর জবাব হলো – না, এর অন্য আরেক বিশাল কারণ আছে। সেটা হল, আগামী ২০২৪ সালের নির্বাচন!
আগামী ২০২৪ সালে নির্বাচনে বিজেপি বা ওর হিন্দুত্ববাদই নির্মূল হয়ে যেতে পারে :
একালের ভারতে বিজেপি-আরএসএস বা মোদি একেবারে চ্যালেঞ্জ হয়ে যাওয়া মানে হিন্দুত্ববাদ প্রথমবারের মত উৎখাত হয়ে যাবার মত অবস্থায় পড়েছিল গত বছর। গত মধ্য মার্চে ভারতে নেমে এসেছিল করোনাভাইরাস আক্রমণের সেকেন্ড ওয়েভ বা দ্বিতীয় আক্রমণের ঝড়! সারা ভারত তাতে তছনছ হয়ে গিয়েছিল। অক্সিজেন, বেড আর সৎকার, এসব পাওয়ার পুরাপুরি অনিশ্চয়তা – এটাই হয়ে উঠেছিল ভারতের মুখ্য পরিচয়। আর মোদি যার প্রতীকী এবং এক অসহায় প্রধানমন্ত্রী রূপ। সৌদি আরব অক্সিজেন ভরা ট্যাংকার পাঠিয়েছে কার্গো প্লেনে করে কিন্তু তা দেখাতে গিয়েও মোদির ইজ্জত যায় অবস্থা! যেন মুসলমান সৌদি আরব তো নিচা; তার সাহায্য মোদি নিয়েছে এটা কেমন দেখায়? আর তা দেখেই দ্যা-হিন্দুর সুহাসিনী হায়দার প্রথম নিশ্চিত হয়েছিলেন যে ভারত আসলে নিশ্চয় কোন পরাশক্তি নয়!!! নইলে সৌদি সাহায্য নিবে কেন???
জীবিত মানুষ আর মৃত-লাশের গভীর সম্পর্কঃ
মানুষ মারা যাবার পরে একটু সম্মানজনক সৎকারও যদি নাই জোটে তাহলে আর বেঁচে থাকতে আমি হিন্দু কি না, আমার হিন্দুত্ব শ্রেষ্ঠ কি না এসব গল্পে কাম কি? এসব কোনো কাজে লাগবে? এর কি কোনো জবাব আছে? আসলে এসব প্রশ্ন ছেয়ে ফেলেছিল সে সময়ের মোদির হিন্দুত্বের ভারতে! মূল কারণ, মানুষ মূলত যেকোন মৃতব্যক্তির লাশের মধ্যে নিজেকে দেখে, দেখতে পায়, সে মরলেও তাকে কোনো অশ্রদ্ধা অসম্মান করা হবে কিনা – ব্রিজের উপর থেকে তাঁর লাশও নদীতে ফেলে দেয়া হবে কি না! বা নদীর ধারের বালিতে লাশ ফেলে পালিয়ে আসবে কি না কিংবা, নদীর পাড়ে কোনোমতে বালিচাপা দিয়ে পালাবে কি না; অথবা যা পরে ভাসেতে ভাসতে গঙ্গা নদী ধরে আরেক রাজ্যে পঁচা-গলা লাশ হিসাবে উঠবে কীনা …… ইত্যাদি। সারা ভারতের মানুষ এসব দেখে মানে নিজের সম্ভাব্য পরিণতি দেখে আঁতকে উঠেছিল!!! ভারতের মানুষেরা নিজের এই পরিণতি এই অপমান অশ্রদ্ধা দেখে ফেলেছিল। এসব কাণ্ড যেকোনো মানুষের জন্য নিজের বেলায়ও ঘটতে পারে, এই অনুমান- আর এই অনুমান নিয়েও এর পরে বেঁচে থাকা অর্থহীন! আর এসব ব্যর্থতার প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন মোদি! এটা একা কোনো ভারতীয় মানুষ নয়। সারা ভারতের মানুষের কাছে প্রশ্ন দেখা দিয়েছিল এই জীবন, তাদের এই বেঁচে থাকা কী দরকার; এটা অর্থহীন, উদ্দেশ্যহীন? হিন্দুত্বের মোদি ভারতের প্রতিটা মানুষকে এমন অভিজ্ঞতা ও অনুভব এনে দিয়েছিলেন!
মোদি এসব জানতেন যে তার সম্পর্কে মানুষের গভীর মনে অন্তঃস্থলে তিনি কী পরিচয়ে আছেন?? তিনি প্রচন্ড ভীত হয়ে পড়েন!
সেই ঘটনাকাল ছিল মোদির দ্বিতীয় টার্মের মাত্র দ্বিতীয় বছর শেষে (২০১৯ সালের মে মাস থেকে তিনি সেকেন্ড টার্মের প্রধানমন্ত্রী)। তবু মোদি বুঝে যান, আশঙ্কিত হন যে, তার হিন্দুত্ববাদের আয়ু এবার এসব হতাশ মানুষের হাতে শেষ হয়ে যেতে পারে। তাই তখন থেকে মোদি বিজেপি-আরএসএস এদের সবার একমাত্র ধ্যানজ্ঞান হয়ে দাঁড়ায় – ২০২৪ সালের নির্বাচনে হবু বিপর্যয় অর্থাৎ হিন্দুত্ববাদের সম্ভাব্য নির্মূল হয়ে যাওয়া- এটা যেকোনো উপায়ে ঠেকানোই তাদের বাকি তিন বছরের একমাত্র কাজ!
কিন্তু তাতে কী? ঘুরেফিরে সব কথার শেষে যেখানে এসে ঠেকে সেই একই কথা। মুসলমান কোপাতে হবে, ইসলামবিদ্বেষ – এটাই একমাত্র ভরসা। হিন্দুত্ববাদের দিকে ভোটার ফিরানোর একমাত্র উপায়। এ কারণেই ব্যাপারটা এখন দাঁড়িয়েছে এমন যে, বাইডেন যতই মোদিকে মানবাধিকার লঙ্ঘনে অবরোধের ভয় দেখান না কেন মোদিকে আরো বেশি করে এখন মুসলমান কোপাতেই হবে – তা কাশ্মিরে বা সারা ভারতে। এটাই তার রাজনৈতিক আয়ু লুপ্ত হওয়া ঠেকানোর একমাত্র উপায় যার সোজা মানে আগামী ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাইডেনের সাথে মোদি ভারতের সম্পর্ক আর ভাল হওয়ার কোন সম্ভাবনা নাই বরং আরো সঙ্ঘাতেরই সম্পর্ক হবে। অন্তত ২০২৪ সালের মে পর্যন্ত!
অবস্থা এখন এমন যে ইমরান খানের পাকিস্তান এই প্রথম এক নিজ ‘জাতীয় নিরাপত্তা পলিসি” [NSP] প্রণয়ন করেছে। যেটা আগের মত গতানুগতিক কেবল ভারতবিরোধিতার উপর দাঁড়ানো নয়। আর কেবল সরাসরি সরাসরি সামরিক নয় বরং সামগ্রিক। এটা নিয়ে ভারতের মিডিয়াও পাকিস্তানের সহবস্থানের মনোভাবে লেখা এই নীতির প্রশংসা করেছে। এছাড়া প্রফেসর আয়েশা সিদ্দিকা যিনি পাকিস্তান অরিজিন লন্ডন SOAS এর শিক্ষক কিন্তু যিনি তার সেনা-ঘৃণা ম্যানিয়াকের জন্য কুখ্যাত, তিনিও অংশত এই পলিসিকে খারাপ বলতে পারেন নাই। পরোক্ষে প্রসংসা করেছেন বলা যায়। কিন্তু এত কিছুর পরেও মোদি বা তার সরকার এর সুযোগে ইমরানের সঙ্গে সম্পর্ক ভাল করার দিকে আগাবেন সেই সুযোগ মোদির নাই। কারণ ইমরান কেন যেকোন পাকিস্তানই তার কাছে এখন একমাত্র একটাই প্রয়োজনীয় – পাকিস্তান কোপানো মানে মুসলমান কোপানো আর তাতে ততই হিন্দুভোট নিজ বাক্সে — এই চিন্তার বাইরে যাবার অবস্থায় নাই মোদি। বরং ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে আরেকবার ফেক একটা ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হচ্ছে এই রচনা আর মোদি তাতে বিজয়ী এটা দেখানো যায় কী করে এটাই মোদির লক্ষ্য আর তিনি তা খুজছেন!!
এই একই সুত্রে, কাজেই বাংলাদেশেও সরকারের সাথে ভারতপ্রীতির সম্পর্ক ঠিক যেমন আমরা আগে ২০১২ সালের পরে দেখেছিলাম, তেমন আর হওয়ার সম্ভাবনাময় নয়। অর্থাৎ মার্কিন অবরোধ হয়েছে বলে, হাসিনার ভারতপ্রীতির সম্পর্ক আগের মতই পুনরায় উত্থিত হচ্ছে না। মূল কারণ, এখনকার ভারত নিজেই বাইডেন প্রশাসনের চোখে মানবাধিকার লঙ্ঘনের আসামি বলে দূরে দূরে থাকছে। অর্থাৎ আগে ভারত-আমেরিকার স্ট্রাটেজিক বন্ধুত্ব জোরদার ছিল বলেই হাসিনা সরাসরি আমেরিকাকে এড়িয়ে ভারতের মাধ্যমে আমেরিকান চাহিদা পূরণের চেষ্টা করতে পারত। আর এতে ভারত সরকার এবং এমনকি ‘র’-এর বহু অন্যায় আবদার হাসিনাকে সহ্য করতে হত। সেসব পরিস্থিতি গত ১৬ ডিসেম্বরের পরে একেবারেই লক-আপ হয়ে গেছে। যা আর ফিরবে না। মূল কারণ, ভারত-আমেরিকান সম্পর্ক দূর অস্তে চলে গেছে। এটা কোনভাবেই আর আগের সময়কালে একেবারেই নাই। আর এটা যে নাই তা সবগুলো পক্ষের কাছেই উদাম। উপায়ন্ত না পেয়ে ওআরএফ-এর আরেক ফেলো, সাবেক হাইকমিশনার পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তীর লেখায় তার ছাপ পড়েছে। গত ১৬ ডিসেম্বর তিনি ওআরএফ-এর সাইটে যে লেখা দিয়েছেন তাতে চীনার পাকিস্তানকেই কোপানোর চেষ্টা করে গেছেন। সাথে যেমন বলেছেন, বাংলাদেশের সাথে ভারতের “অনন্য সম্পর্কটা” চীনের কারণে “উদ্বেগজনক প্রতিবন্ধকতা” হয়ে দাড়িয়েছে। ঐ লেখার লম্বা শিরোনামটা হলঃ “এক অনন্য সম্পর্কের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন: উদ্বেগজনক প্রতিবন্ধকতার মাঝেও ভারত এবং বাংলাদেশের উন্নয়নে অংশীদারিত্ব” – এর মূল অর্থ এটাই। আরো সোজা করে বললে পিনাক সবকিছুকে নামিয়ে এনেছেন ভারতের অস্ত্র কেনায় বাংলাদেশের আপত্তিতে।
ঠিক যেমন ও যে কারণে ভারত কোন চীনা অস্ত্র কিনে না, কিনবেও না; সস্তা ও মাঙনা হলেও নিবে না – ঠিক একই কারণে বাংলাদেশ ভারতের অস্ত্রের গুনাগুণ নুন্যতম ভাল কোয়ালিটির হলেও অথবা তা বাংলাদেশকে মাঙনা দিলেও বাংলাদেশ নিবে না। এটা পানির মত সরল সত্য! এটা না বুঝার কিছু নাই। কিন্তু না বুঝার ভান ধরে পিনাক রঞ্জন এখন চীনের বিরুদ্ধে কামান দেগেছেন ঐ লেখায়। আবার এনিয়ে একটা মিথ্যা বা শব্দ বদল করে নেয়া ক্যাম্পেইনও করছে অনেকে। শিরোনাম লিখেছে, “চীনের ওপরে বাংলাদেশের অতি নির্ভরতা ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ককে জটিল করে তুলেছে: পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী! – এভাবে। যেটা করেছে ক্যাম্পেইন পত্রিকা আমাদের সময়। অথচ পিনাক রঞ্জনের মূল বক্তব্যে ছিল, “চিন থেকে আমদানি করা সামরিক সরঞ্জামের উপরে বাংলাদেশের অতি নির্ভরতা ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে জটিল করে তুলেছে”। মূল লেখা ওআরএফ-এর বাংলায় সাইট থেকে দেখতে পারেন এখানে। অর্থাৎ সাধারণভাবে সব ব্যাপারে বাংলাদেশে চীন-নির্ভরতা নাকি কেবল অস্ত্র কিনাতে এই নির্ভরতা – এই দুটাকে এক করে প্রপাগান্ডা করা হচ্ছে। পিনাক রঞ্জন এখানে কেবল “অস্ত্র কেনার” ক্ষেত্রের কথা তুলেছেন।
তবে ভারত-আমেরিকার সম্পর্ক ঢলে পড়া ভা ভাটায় চলে যাওয়া নিয়ে ইতোমধ্যেই এর ছাপ পড়া শুরু হয়েছে ভারতের থিংকট্যাংকের লেখা বা রিপোর্টে। আমেরিকা ভারত থেকে অনেক দূরের কেউ – এই অনুমানের ওপর দাঁড়িয়ে তারা লিখছে আর সাথে আমেরিকার এশিয়ায় উপস্থিতিতে কী কী খামতি সেখানে আছে এমন মৃদু সমালোচনাও সেখানে এখন দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। যেমনঃ “আমেরিকা কি অবশেষে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় সঠিক ভাবে পা ফেলছে?” – এটা ওআরএফ-এর আরেক ফেলোর লেখা, এখান এমন সুর দেখা যাবে। যা অনেকটা ডিভোর্স হয়ে যাওয়া বউ/স্বামী এর সাথে সামাজিকভাবে দেখা হয়ে গেলে যেমন হয়, সেরকম! আমেরিকান থিংকট্যাংক কলামিস্ট রাইটার কুগেলমানও ব্যাপারগুলো আমল করছেন, দেখা যাচ্ছে।
সব মিলিয়ে নতুন করে এক ‘গ্লোবাল পোলারাইজেশন’ সাজিয়ে উঠা আসন্ন হয়ে উঠছে মনে হচ্ছে!
আর ভারত-আমেরিকা সম্পর্কে ভাটা – এতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ও আরও হবে ভারতের। বাংলাদেশ তী ভারতেরই – যেন তার গ্রামের বাগানবাড়ি – এই অতি আহ্লাদ এখন শুকিয়ে যাওয়া শুরু হয়েছে। অনেকের অনুমান এটা শেষ হবে ২০০৬ সালের আগের ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের যায়গায় – “ব্যাক টু দ্যা প্যাভেলিয়ানে”!!
লেখক : রাজনৈতিক বিশ্লেষক
goutamdas1958@hotmail.com
[এই লেখাটা দৈনিক “নয়াদিগন্ত” পত্রিকার ২২ জানুয়ারি ২০২২ ওয়েবে আর পরদিন প্রিন্টে “ভারত-আমেরিকা সম্পর্কে ভাটা, কার কাজে লাগবে” – এই শিরোনামে ছাপা হয়েছিল। ঐ ছাপা হওয়া লেখাগুলোকে আমার লেখার ‘ফার্স্ট ড্রাফট’ বলা যায়। আর আমার এই নিজস্ব সাইটের লেখাটাকে সেকেন্ড ভার্সান হিসাবে এবং থিতু ভাষ্য বলে পাঠক গণ্য করতে পারেন। আসলে পরবর্তিতে ‘ফার্স্ট ড্রাফট’ লেখাটাকেই এখানে আরও অনেক নতুন তথ্যসহ বহু আপডেট করা হয়েছে। ফলে সেটা নতুন করে সংযোজিত ও এডিটেড এক সম্পুর্ণ নতুন ভার্সান হিসাবে ও নতুন শিরোনামে এখানে আজ ছাপা হল। ]