ইউক্রেন-যুদ্ধকে ‘নয়া পর্যায়ে’ ঠেলে দিলেন !
বাইডেন দুনিয়ার সবার জন্য ক্ষতিকারক ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠছেন!
গৌতম দাস
০৯ মে ২০২২, ০০:০৭ সোমবার
Biden seeks $33 billion war chest to support Ukraine
ইউক্রেনের যুদ্ধ তৃতীয় মাসে পড়েছে, আর এরই মধ্যে এই যুদ্ধ এক নব ও বৃহৎ পর্যায়ে প্রবেশের মুখে মানে, এই যুদ্ধ বাইডেন এখন আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বা কমপক্ষে আরো ছয় মাস গড়িয়ে নিতে যাচ্ছেন, তা বুঝা যাচ্ছে। অন্তত বাইডেনের নয়া পরিকল্পনা এটাই। এর সবচেয়ে বড় প্রমাণ-ইঙ্গিত ফুটে উঠেছে দুটা মিডিয়া রিপোর্টে। মূলত গত এপ্রিলের শুরু থেকেই এই নয়া পরিকল্পনার উদ্ভব যার প্রকাশ এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে। তবে দুটো মিডিয়া রিপোর্টের শেষেরটা নিয়েই আগে কথা বলা যাক।
আমেরিকান অভ্যন্তরীণ এক নিউজ নেটওয়ার্ক সিএনবিসি [CNBC] ২৮ এপ্রিল জানাচ্ছে, আমেরিকান কংগ্রেসের কাছে বাইডেন ইউক্রেনে সামরিক (অস্ত্র ইত্যাদি) ও মানবিক সাহায্যের জন্য মোট আরো ৩৩ বিলিয়ন ডলার পেতে অনুমোদন চেয়েছেন [Biden to ask Congress for $33 billion to support Ukraine through September] অর্থাৎ এই রিপোর্টে এটাও পরিষ্কার করে লেখা যে, এই অর্থ দিয়ে তিনি চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলতে চান! আর এর মাত্র তিন বিলিয়ন খরচ হতে পারে মানবিক সাহায্য খাতে। কিন্তু মোট অনুমোদিত অর্থের প্রায় দু-তৃতীয়াংশই মানে, প্রায় ২১ বিলিয়নই আমেরিকা খরচ করবে ইউক্রেনকে সামরিক অস্ত্র সাহায্য জোগাতে। এ ছাড়া আরো প্রায় সাড়ে আট বিলিয়ন ডলার বাইডেন খরচ করবেন ইউক্রেনের ভাঙা অর্থনীতিকে টেনে তুলতে।
অন্য দিকে এবার আসি মিডিয়া রিপোর্টের প্রথমটায়। এই ইঙ্গিত-প্রমাণটা হল, গত মাসে ২৪ এপ্রিল বাইডেনের দুই মন্ত্রী- প্রতিরক্ষামন্ত্রী (আসলে তারা উপদেষ্টা আমাদের মন্ত্রীর সমতুল্য) লয়েড অস্টিন [Lloyd Austin ] আর পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন [Antony Blinken]- এরা দু’জন ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে হাজির হয়ে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির সাথে সাক্ষাৎ ও বৈঠক করেছেন। আর তাঁদের কিয়েভে হাজির হওয়াটাও গল্প-উপন্যাসের মত বেশ থ্রিলিং। তুরস্কের মধ্যস্থতার উদ্যোগে রাশিয়া ইউক্রেনের সাথে গত মার্চের শেষ সপ্তাহে দ্বিতীয় ডায়ালগে বসার সময়ে তারা রুশ সৈন্য সমাবেশ কিয়েভ অভিমুখ থেকে ডনবাস অঞ্চলে সরিয়ে নিয়েছিল। আর এই সুযোগে দিনে পোল্যান্ডে আশ্রয় নেয়া কূটনীতিকরা দিনে কিয়েভ এসে দিনেই ফেরত যাওয়া এভাবে কিয়েভে হাজির হওয়া শুরু করেছিলেন। আর এরই উসিলায় লয়েড অস্টিন আর অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন প্রথমে পাশের দেশ পোল্যান্ডে (পোল্যান্ড ন্যাটো মেম্বার ও এই যুদ্ধে রাশিয়ার বিরুদ্ধে) সফরে আসেন। আর সেখান থেকে নীরবে অজ্ঞাত সফরে বের হয়ে, ট্রেনে করে কিয়েভে পৌঁছে জেলেনস্কির সাথে দেখা করেন। তবে কিয়েভে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে তার কিছুটা আমরা বুঝতে পারি এনিয়ে প্রকাশিত ২৫ এপ্রিলের রয়টার্সের রিপোর্ট থেকে যার শিরোনাম ‘ইউক্রেন সফরঃ ব্লিঙ্কেন ও অস্টিন আমেরিকান কূটনীতিকদের কিয়েভে ফিরে আসার আর সামরিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতি [On Ukraine visit, Blinken, Austin pledge return of U.S. diplomats, more security aid]’। যদিও ওই রিপোর্টে সামরিক সাহায্যের কথা যতটুকু ছিল তার সবগুলোই খুবই কম, কয়েক মিলিয়ন ডলারের মাত্র। আর আমেরিকান কূটনীতিকদের কিয়েভে ফিরে আসা বলতে বুঝানো হয়েছে যে গত তিন বছর ধরে কিয়েভে আমেরিকান রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দেয়া ছিল না আর অন্যান্য আমেরিকান কূটনীতিকদের যুদ্ধেশুরুর ১৫ দিন আগে পাশের পোল্যান্ডে চলে যেতে নির্দেশ দিয়েছিল স্টেট ডিপার্টমেন্ট। তাই এখন এই ইস্যুতে নতুন রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দেয়া ও কূটনীতিকদের ইউক্রেনে ফিরে আসার বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। আর সেকথাই ও’দুই সফররত মন্ত্রী বলছিলেন।
আসলে বাইডেনের এই ‘নয়া পর্যায়ের’ ইউক্রেন যুদ্ধ-পরিকল্পনা অনেক বড় আর গভীরের। সিএনবিসির ঐ রিপোর্টে স্পষ্ট করেই লিখছে, ‘আমেরিকান সামরিক নেতারা বলছেন, ইউক্রেনে আমেরিকান স্ট্র্যাটেজিক লক্ষ্য দুটো। প্রথমটি হলো, ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীকে অস্ত্র সরবরাহ করে সজ্জিত করা যাতে তারা ইউক্রেন থেকে রাশিয়ান সেনাদের পুরো বের করে দিয়ে সরাসরি বিজয় আনতে পারে। আর আমেরিকার দ্বিতীয় লক্ষ্য হলো, রাশিয়ার সমগ্র সামরিক সক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়া আর সাথে বাণিজ্যে ও অর্থনীতিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ওর অর্থনীতিকেও একেবারে ধসিয়ে দেয়া।’
“U.S. military leaders say their strategic objectives in Ukraine are now two-fold. The first is to arm Ukrainian forces so that they can secure an outright victory in the war by expelling Russia from Ukraine entirely. The second is to weaken Russia’s entire power structure over the long-term by tying up its troops in a war of attrition while crippling its economy with sanctions and trade embargoes.”
তবু আরো সহজে তা বুঝার আরেক উপায় হল অস্টিন ও ব্লিঙ্কেন – বিশেষত অস্টিনের এই পর্যায়ের এপ্রিল মাসের সব সফরগুলোকে যদি এক সাথে মিলিয়ে দেখি। আমরা শুরু করতে পারি ৮ এপ্রিল অস্টিনের অফিস পেন্টাগনের থেকে প্রকাশিত এক প্রেস বিবৃতি থেকে। ওখানে বলা হয়েছে, অস্টিন ১০ এপ্রিল থেকে ইসরাইল, জার্মানি, বেলজিয়ামে ন্যাটোর হেড কোয়ার্টার এবং যুক্তরাজ্য সফরে বের হচ্ছেন। কিন্তু এগুলো ছিল সবই কেবল ২২ এপ্রিল পর্যন্ত সফর তালিকা যার মধ্যে জার্মানি, বেলজিয়ামে ন্যাটোর হেড কোয়ার্টার ও যুক্তরাজ্য সফর সবই শেষ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু জার্মানি, বেলজিয়ামে ন্যাটোর হেড কোয়ার্টার – এগুলো ছিল আসলে প্রথমবারের মত সফর! আর এরপর? এরপর শুরু হয়েছিল নয়া পর্যায়। তারা দু’জন এবার ২৩ এপ্রিল থেকে সফর শুরু করেছিলেন যেখানে ২৩ এপ্রিল তারা এই নয়া সফরে পোল্যান্ড পৌঁছে গেছিলেন। আর সেখান থেকেই পরদিন কিন্তু ট্রেনে অজ্ঞাতযাত্রা হিসাবে ইউক্রেনের কিয়েভে চলে গেছিলেন, যার কথা উপরে বলেছি।
এর পরই শুরু হয়েছিল আসল সফর। ইউক্রেন সফর শেষে অষ্টিন এবার একা ২৬ এপ্রিল থেকে দ্বিতীয়বার জার্মানি, বেলজিয়ামে ন্যাটোর হেড কোয়ার্টার সফর শুরু করেছিলেন। আর অস্টিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই সফর ও উপস্থিতি ছিল মুখ্যত ২৬ এপ্রিল ন্যাটো-ইইউ [NATO-EU Talk] বৈঠকে। সেটা ছিল ৪০ দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের উপস্থিতিতে ইউক্রেন ইস্যুতে এক সভা। আসলে এটাই ছিল রাশিয়ার বিরুদ্ধে বাইডেনের সর্বাত্মক যুদ্ধের ডাক- এরই সভা!
বাইডেনের এই নয়া পরিকল্পনার চাপ সংশ্লিষ্ট ওই ৪০ দেশে কত প্রচণ্ড হতে পারে তা এখান থেকে সহজেই অনুমেয়।
খুব সম্ভবত সে কারণেই নতুন করে ইইউর দেশগুলো যেন কোনোভাবেই রাশিয়ার তেল-গ্যাস না কিনতে পারে এজন্য কমিটমেন্ট দেয়ার প্রসঙ্গ এর পরই আবার উঠে আসে; যদিও ওই যুদ্ধের ডাকের বৈঠকের এক সপ্তাহ পরই এই প্রতিশ্রুতি চাওয়া নিয়ে ইইউ দ্বিধাবিভক্ত হয়ে আছে। এই প্রসঙ্গে আরো আলাপের আগে গত ২৬ এপ্রিল অস্টিনের উপস্থিতিতে ৪০ দেশের ন্যাটো-ইইউ বৈঠক নিয়ে আরো কিছু কথা বলে নেয়া যাক।
যুদ্ধের ডাকের বৈঠকের নিউজের প্রায় সব রিপোর্টের হেড লাইন করা হয়েছে যার ভাষ্য এভাবে যে, “ইউক্রেন বিশ্বাস করে, সে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জিততে পারবে”। যেমন- ইইউ জুড়ে উপস্থিত থাকা মিডিয়া ‘পলিটিকো [POLITICO]’ এর শিরোনাম হল – “অস্টিন : আমেরিকা বিশ্বাস করে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেন ‘যুদ্ধে জিততে পারে” [Austin: U.S. believes Ukraine ‘can win’ war against Russia]।” আবার ‘ইউরোনিউজ [EURONEWS]’ এর হেডলাইন হল, “সবাই বিশ্বাস করে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেন যুদ্ধে জিততে পারে’ বলেছেন আমেরিকান প্রতিরক্ষামন্ত্রী ন্যাটো-ইইউ বৈঠকে” [‘Everyone believes Ukraine can win the war,’ says US defence secretary at NATO-EU talks ]। অর্থাৎ “সবাই বিশ্বাস করে” অথবা “আমেরিকা বিশ্বাস করে” এই দুটো ভাষ্যই অস্টিন ওই বৈঠকে উচ্চারণ করেছেন। কিন্তু কেন তিনি এই ‘বিশ্বাসের’ ওপর জোর দিলেন? এটাই মুখ্য!
কারণ রাশিয়া যে, আমেরিকার সাথে টক্কর দেয়া পরাশক্তি ছিল বা আছে আর ইউক্রেন যে ১৯৯১ সালে ভেঙ্গে যাওয়া সোভিয়েত ইউনিয়নের ১৫টা খণ্ডের এখন একটা খণ্ড-দেশ; আর সেই দেশ ইউক্রেন এখন রাশিয়াকে যুদ্ধে হারিয়ে দিবে – কথাটা না হাসির বিষয় হয়ে যায় তা আগাম ভেবেই মনে হচ্ছে, এখানে বিশ্বাসের উপর জোর দেয়া হয়েছে। তবে মুখ্য বিষয়টা এখান থেকেই অনুমেয় যে, ইউক্রেনের রাশিয়াকে যুদ্ধে হারাতে গেলে আমেরিকা ও ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ করে প্রায় ঢেকে ফেলতে হবে – এমন অবস্থায় যেতে হবে যা আদৌ কতটা সম্ভব সেই প্রশ্ন তো আছেই!
তার মানে আমরা এখন অন্তত ৪০টা দেশ সংশ্লিষ্ট হয়ে থাকবে – এমন এক “যুদ্ধ” প্রসঙ্গে কথা বলছি। এমন যুদ্ধের কথা শুনলেও এদিকে অনেকে ভাবতে পারেন, আমার দেশ তো এই যুদ্ধের কেউ নয়, ফলে আমরা দূরে বসে খেলা দেখার মত যুদ্ধ উপভোগ করব। কিন্তু না; এই অনুমান দুনিয়ার সব দেশের বেলাতেই মিথ্যা হয়ে যাবে। মূল কারণ আমাদের বড় যুদ্ধের সবচেয়ে কমন ধারণা বলতে আমাদের মনে আসবে (১৯৩৯-৪৫) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ হয়ত। তাও আবার বয়স্ক লোকদেরই এনিয়ে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা আছে। সমস্যা হল, সে সময়কালের জমানায় গ্লোবাল বাণিজ্য বলতে কোনো কিছুর অস্তিত্ব ছিল না বললেই চলে; যেটা এখন উল্টা। মানে এখন সব দেশই আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের সদস্য হয়ে এক গ্লোবাল বাণিজ্যে পরস্পরের অর্থনীতি সরাসরি, সবার সাথে সবার অর্থনীতিই সংযুক্ত হয়ে গেছে। তাই এযুগে কোন ঘটনাই আর লোকাল বা এমনকি আঞ্চলিক বলে আর কিছু অবশিষ্ট নাই। ফলে এক দেশে কোনো পণ্যের অভাব হলে দুনিয়াতে ওই পণ্যের প্রধান উৎস দেশগুলোতে প্রথমে আর পরে দুনিয়ার সব দেশেই এর প্রভাব ছড়িয়ে পরতে দেখা যায়। তাই পুরনো কোনো যুদ্ধের অভিজ্ঞতা দিয়েই এবারের যুদ্ধের ব্যাপ্তি বোঝা যাবে না। যেমন, কেবল তিনটি পণ্যকে যদি আলোচনায় আনি – জ্বালানি তেল, ভোজ্যতেল আর গম – যা উৎপাদনের একালে বড় উৎস হল রাশিয়া ও ইউক্রেন (কেবল গম আর ভোজ্যতেলের বেলায়) উভয়েই। এ তিনটি পণ্যের মূল্যে গ্লোবালি ইতোমধ্যে আগুন লেগেছে; এরই মধ্যে যার মূল্য দ্বিগুণ বা এরও বেশি হওয়ার পথে। ফলে যারা চাল না, গম তাদের প্রধান খাদ্য যেমন পাকিস্তান বা ভারতের উত্তর অংশ, এরা বিশাল সমস্যায় পড়তে যাচ্ছে। শুধু খাদ্যের দ্বিগুণ মুল্যবৃদ্ধির কারণেই দুনিয়াব্যাপী এক বিপর্যয় আমাদের সকলের দিকে নব পর্যায়ে যুদ্ধ শুরু হবার আগেই ধেয়ে আসতে শুরু করেছে। এথেকে আন্দাজ করা যেতে পারে গ্লোবাল অর্থনীতির হাল কী হবে অথবা কী পরিমাণ লোক অনাহারে বা খাদ্য কিনতে না পেরে মারা যাবে।
এখন বাইডেন কি এসব সম্ভাব্য গ্লোবাল মানবিক বিপর্যয়ের ঘটনাগুলোকে আমল করেছেন? সম্ভাব্য জবাব হল, তিনি এসব আমল করলে এই নয়া যুদ্ধের পক্ষে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন না। আর সবচেয়ে বড় কথা – তারা সারা পশ্চিমের সবাই এখন ইউক্রেনের ঘাড়ে চড়ে নিজেদের স্বার্থের যুদ্ধটা সেরে ফেলতে চাইছেন! কিন্তু সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, এই যুদ্ধে কি কোন একটা পক্ষ নিজেকে বিজয়ী বলে দাবি করতে পারবে? সবচেয়ে বড় কথা – বাইডেন কী মাত্র “৩৩ বিলিয়ন ডলারের’ মধ্যে এই নয়া যুদ্ধ শেষ করতে পারবেন? এটা কি আদৌও পারা সম্ভব? আমেরিকা পরাশক্তির ইজ্জত হারিয়ে সদ্য – বহু কষ্টে ২০ বছরের আফগানিস্তান যুদ্ধ যেখানে প্রতিদিন গড়ে ৩০০ মিলিয়ন ডলার করে খরচ হত মানে, সেই অর্থ সব ড্রেনেজ হত – কোনমতে ইজ্জত ভুলে হলেও তা শেষ করতে পেরেছিল, সেটা কি এই বাইডেনের হাতেই ঘটে নাই? সেই বাইডেন কী করে আবার এবার ইউক্রেনের কাঁধে সওয়ার হয়ে যুদ্ধে নামতে সবাইকে উত্তেজিত করতে নামেন কী করে!!!! এটা আক্ষরিক অর্থেই ‘ট্রিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন’ বটে!
এই পরিপ্রেক্ষিতে অনেকে বলছেন, আমেরিকান প্রেসিডেন্ট নিজ ব্যক্তি ইমেজ বাঁচাতে অথবা দলের ইমেজ বাঁচাতে বহুবার নিজ দেশকে যুদ্ধে নিয়ে গেছেন এমন রেকর্ড আছে। এমনকি বাইডেনের মত ডেমোক্রাট, কথিত “লিবারেল ভদ্রলোক ইমেজের” ক্লিনটনেরও মনিকা লিউনেস্কি কেলেঙ্কারি মামলা থেকে মনোযোগ সরাতে ইরাকের সাদ্দামের উপর বিমান হামলা – বোমা মেরেছিলেন তিনি। তাহলে এখন বাইডেনও কি আগামি নভেম্বর মিড-টার্ম নির্বাচন যেটাতে তার দল প্রেসিডেন্টের পারফরমেন্সের জন্য শোচনীয়ভাবে হারবে বলেই সার্ভে রিপোর্ট এরই মধ্যে প্রকাশিত, সেই নির্বাচনে বিজ খারাপ ইমেজ কমাতে বা ঢাকতে মানে প্রভাব ফেলতেই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যুদ্ধের খরচ জোগাড় করতে গেছেন?? মানে ঐ অর্থ খরচ করতে তা আগামী নভেম্বর কেন, আরো অনেক নভেম্বর পেরিয়ে যেতে পারে – ঘটনা কি এভাবে আমেরিকার হাতছুট হয়ে যাওয়ার দিকে আরেকবার যাচ্ছে?
আমরা যদি একটু পিছন ফিরে দেখিঃ
আমরা যদি একটু পিছন ফিরে দেখি, বাইডেনের এ’যুদ্ধকে নয়া পর্যায়ে নেয়ার পরিকল্পনা বোঝা যাচ্ছে এপ্রিলের শুরু থেকেই। অথচ তুরস্কের উদ্যোগে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তির লক্ষ্যে ডায়লগ অনেক দূর এগিয়ে গেছিল। দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের ডায়লগ ঘটে যাওয়া মানে এই যুদ্ধ একটা সমাপ্তির কাছাকাছি চলে যাওয়া এমন আশা দু’পক্ষের মধ্যেই তৈরি হয়েছিল। যেমন প্রথম আলোর এক অনুবাদ রিপোর্টে যা ৩০ মার্চ প্রকাশিত, এর শিরোনাম ছিল, “ইস্তাম্বুল সংলাপ কি ইউক্রেন যুদ্ধের ‘টার্নিং পয়েন্ট’।” মানে বলতে চেয়েছে এই যুদ্ধ কী সমাপ্তির দিকে চলে যাচ্ছে!! আবার ২৯ মে বিবিসির রিপোর্ট থেকে নেয়া অনুবাদ রিপোর্টের শিরোনাম, “ইউক্রেনের যে প্রস্তাবে নমনীয় হলো রাশিয়া”। ভিতরের একটা বাক্য ছিল এরকমঃ এক মাসের বেশি সময় ধরা চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের দিকে এটাই সবচেয়ে বড় অগ্রগতি। মস্কোর এই নমনীয় অবস্থানের পেছনে রয়েছে ইউক্রেনের প্রস্তাব”। অর্থাৎ যুদ্ধ যে সমাপ্তির দিকে তা এখানে একেবারে স্পষ্ট। এমনকি ৫ এপ্রিল রুশ বার্তা সংস্থা তাসের খবর অনুবাদ করে প্রথম আলো লিখছে, “লিখিত সমঝোতা হলেই পুতিন-জেলেনস্কি আলোচনা সম্ভবঃ পেসকভ”।
অথচ বাইডেন প্রায় সমাপ্তি ও আপোষের দিকে চলে যাওয়া ইউক্রেন যুদ্ধকে ঐ ৫ এপ্রিলের মধ্যেই নব পর্যায়ের আরেক বৃহৎ পরিসরে ৪০টা দেশের যুদ্ধের হিসাবে ঠেলে দিলেন। সোজা কথায় যা আগে কখনও করেন নাই এবার তাই করলেন – তাঁর পরিকল্পনা এবার একেবারে এর উল্টো। তিনি এপ্রিলের শুরু থেকে নয়া উদ্যোগে যুদ্ধের পরিকল্পনা করেছেন। তাই ১০ এপ্রিল থেকেই সেই বার্তা নিয়ে অস্টিন ও ব্লিঙ্কেন ইউরোপ যুদ্ধের ডঙ্কা বাজিয়ে নেমে পড়েছেন! আর ২৬ এপ্রিলের মধ্যে ৪০ দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের সবাইকে ন্যাটো-ইইউ বৈঠকে শামিল করে ফেলেছেন। চাপের মুখে ইউরোপ রাজিও হয়েছে।
কিছু কথা মনে করিয়ে দেইঃ
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু করেছিল। এর একদিন পরে জেলেনেস্কির হতাশা যে তারা একাই রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়তেছেন পাশে আমেরিকাসহ ইউরোপের কোন দেশ নাই। অর্থাৎ তিনি প্রতারিত হয়েছেন তাই বলতে চেয়েছিলেন। এর পরোক্ষ জবাবে বাইডেন বলেছিলেন আমেরিকা রাশিয়া বিরুদ্ধে ইউক্রেন বা অন্য কোন দেশের মাটিতে যুদ্ধে লড়বে না। কারণ তার যুদ্ধের অস্ত্র ছিল আসলে রাশিয়ার উপর অবরোধ আরোপ আর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রাশিয়ার বিরুদ্ধে তুলে বিনা-অস্ত্রের যুদ্ধে লিপ্ত হওয়া। একই যুক্তিতে এপর্যন্ত তিনি ন্যাটোর মাধ্যমে ইয়ক্রেনে কোন অস্ত্র সরবরাহ করেন নাই। যেটা সম্প্রতিকালে শুরু হয়েছে।
তাহলে এখন ইউক্রেনে বা ন্যাটো সদস্য পোল্যান্ডের মাধ্যমে ইউক্রেনকে অস্ত্র করতে চলে তিনি আগের সব প্রতিশ্রুতি ভেঙ্গে ফেললেন!!! আর তাতে এবারের সকল ততপরতাড় জন্য দায় তিনি নিজের মাথায় নিতেও বেপরোয়া হয়ে গেছেন। একারণের বলছি বাইডেন নিজ সংকীর্ণ স্বার্থে নিজ প্রতিশ্রুতি থেকে সরে গেলেন। সারা দুনিয়াকে একটা অনন্ত যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিলেন!! আর ভাবছেন ৩৩ বিলিয়ন ডলারে তিনি ইউক্রেন-কে দিয়ে রাশিয়া জয় করাবেনই……। এই বাইডেন এখন সারা দুনিয়ার জন্য বিপদজনক ও দায়ীত্বজ্ঞানহীন হওয়ার পথে চলে গেছেন। তাই বাইডেন দুনিয়ার সবার জন্য ক্ষতিকারক হয়ে উঠতে চলেছেন!!
‘কিন্তু’ বিরাট বিরাট সব কিন্তুঃ
২৬ এপ্রিলের ন্যাটো-ইইউ এর ৪০ দেশের সভায় রাশিয়া থেকে তেল-গ্যাস আমদানি একেবারে বন্ধ অথবা ইইউ দেশের নিজ জ্বালানির সমস্যা নিয়ে কোনো আলোচনাই তোলা হয়নি। কিন্তু এরপর থেকে কানাঘুষা অথবা “চরম বিদ্রোহী” বা অসহ্য মনে করা দেশগুলো প্রকাশ্যে রাশিয়ান তেল-গ্যাস আমদানি বন্ধ করতে পারবে না বলে প্রেসকে জানিয়ে দেয়। যেমন ইতালি, হাঙ্গেরি বা অস্ট্রিয়া এসব দেশের এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। আর জার্মানি যে সবচেয়ে বেশি রাশিয়ান তেল-গ্যাস আমদানিতে নির্ভরশীল (প্রায় ৪২ শতাংশ); যদি সে আজ এক কথা বললে পরের দিনই নিশ্চিত থাকা যায়, সে একটা উল্টো কথা বলবে। হয়তো বলে ফেলল, আমদানি বন্ধসহ অনেক কিছু করবে, কিন্তু পরের দিন বলবে ‘যদি সব দেশ রাজি থাকে তবেঅই জর্মানি সেটা করবে। আমরা যদি এসব স্ববিরোধী রিপোর্টের একটা সারাংশ করি তবে দেখব ৩ মে এর দুটো রিপোর্টই যথেষ্ট – পরিস্থিতি সম্পর্কে পুরোপুরি আঁচ করার জন্য। যেমন ৩মে এর বিবিসির রিপোর্ট লিখেছে, ইইউর মধ্যে এই প্রশ্নে বিভক্তি দেখা দিয়েছে [EU divided over how to step away from Russian energy]। ইংরেজি শিরোনামের অনুবাদ, ‘রাশিয়ান জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা কাটিয়ে সরে আসা হবে কবে এই প্রশ্নে ইইউ দ্বিধাবিভক্ত।’ সার কথায় এর জবাবে একদল বলছে, ২০২৭ সালের পর থেকে। প্রো-আমেরিকান অন্য গ্রুপ বলছে, চলতি বছর শেষ থেকে। আবার জার্মানি বলছে এখনই তো একেবারেই সম্ভব না। এদিকে প্রথম আলোরও ঐদিনের বাংলা শিরোনাম – “রাশিয়ার তেল আমদানি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে বিভক্তি”।
কিন্তু একই দিন মানে ৩ মে এর নিউ ইয়র্ক টাইমস একেবারে সরাসরি ভাণ্ড ফুটা করে দিয়েছে। প্রশ্নবোধক চিহ্ন লাগিয়ে এর শিরোনাম – ‘ইউরোপ কি রাশিয়ান তেল আমদানি প্রায় বন্ধ করে দেয়ার পথেঃ এরপরে কী?’ [Europe Is About to Ban Russian Oil: What’s Next?]। আসলে ভেতরে খবর এর একেবারে উল্টা; অর্থাৎ কোন প্রশ্ন নয়, একেবারে জবাব!!! কী সেটা?
এক্সপার্টদের জবানে নিউ ইয়র্ক টাইমস লিখছে- ১. এক্সপার্টরা বলেছেন রাশিয়ার সাথে ইউরোপের জ্বালানি সম্পর্ক একেবারে ছিন্ন করা সম্ভব। ২. কিন্তু এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে সময় প্রয়োজন; এ ছাড়া এ উদ্যোগ নিতে গেলে সরবরাহের অভাব ও বাড়তি মূল্যের ঝুঁকি দেখা দিতে পারে। ৩. আর তাতে আমরা এমন একটি অবস্থার মুখোমুখি হতে পারি যে, যেখানে ভোক্তারা এরই মধ্যে বিশ্বজুড়ে মুদ্রাস্ফীতির সাথে লড়ছে সেই তাদেরই আমরা নয়া বাড়তি বোঝার শাস্তির মধ্যেই ফেলে দিতে পারি। আর এতে শেষ ফলাফল হবে, মানুষ করোনার দুনিয়াব্যাপী ছড়িয়ে পড়া অর্থনীতির সঙ্কোচন থেকে উত্তরণের যে লড়াই চালাচ্ছিল, তা শেষে লাইনচ্যুত হয়ে সব মাথায় ভেঙে পড়তে পারে।’
“Analysts say it will be possible to sever Europe’s oil ties to Russia, but the effort will take time and may lead to shortages and higher prices for gasoline, diesel, jet fuel and other products — a situation that could penalize consumers already struggling with inflation and, ultimately, derail the economic recovery from the pandemic.”
আর এই তিন পয়েন্টের সারাংশ কথাটা হল, আমরা বাইডেনের বাঁশির পেছনে হেঁটে একটা সম্মিলিত ধ্বংসের পথে যাচ্ছি!!! কেন?
কেন ইইউ বাইডেনের আঁচল ধরে হাটছেঃ
সবশেষে একটা অনুমিত ধারণার কথা বলে বিদায় নিব। নতুন করে ইউক্রেন যুদ্ধে হাওয়া দেয়া, অস্ত্র পাঠানোর ঘটনায় বাইডেনের স্বার্থ না হয় উপরে ব্যাখ্যা করলাম কিন্তু ইউরোপ মানে সারা ইইউ কেন বাইডেনের পিছনে??? ইইউ-এর নেতা দেশগুলোই বলছে রাশিয়ান তেল-গ্যাস ছাড়া এখনই তারা চলতে পারবে না, অন্তত ২০২৭ সাল পর্যন্ত এমন থাকতেই হবে এই কথা তারা নিজেরাই বলছে। তাহলে আমেরিকান প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অষ্টিন যখন ২৬ এপ্রিল, ৪০ রাষ্ট্রের ন্যাটো-ইইউ বৈঠকে বসেন তখন সেখানে ইইউ চুপ করে থাকল কেন??? অথচ আবার মিটিং শেষে বাইরে এসে এবার আবার তারা সোচ্চার তারা রাশিয়ান তেল-গ্যাস ছাড়া এখনই চলতে পারবে না – বলা হচ্ছে এনিয়ে তারা বিভক্ত?? কেন এমন??
এরই সম্ভাব্য ব্যাখ্যা একটাই দেখতে পাই, সেকথাটাই বলব এখন!
ইউক্রেনের যুদ্ধ আসলে এক হিসাবে গ্লোবাল নেতৃত্ব আসন্ন পালাবদলে চীন-আমেরিকার প্রতিদ্বন্দ্বিতারই প্রক্সি যুদ্ধ। গ্লোবাল নেতৃত্বে চীনা উত্থান এই অনিবার্য এবং অবজেকটিভ ঘটনাটাকে জবরদস্তিতে তবু বাইডেন যুদ্ধের ভয় দেখিয়ে ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টায় নেমেছে। এটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু যে ঘটনাটা পর্দার পিছনে সেদিকে একটু আলো ফেলি।
গত প্রায় পাঁচশ বছর এভাবে অথবা সেভাবে দুনিয়া শাসন-আধিপত্য করে আসছে সাদা ককেশিয়ান এথনিক জনগোষ্ঠি – এবং একারণে তাদের কালচারাল আধিপত্যও শাসন করছে আমাদের সভ্যতা শিখানো সরকার বদল সবই করছে। মূলত কলোনি দখল করে তারা টিকেছিল, এই সময়কালের বেশিরভাগ সময়টা। আজ তা চ্যালেঞ্জের মুখে। কারণ এই প্রথম এশিয়ার চীন গ্লোবাল ম্নেতা হবার পথে। যার সোজা অর্থ এই প্রথম এটা সাদা শ্রেষ্ঠত্বকে চ্যালেঞ্জ করেছে। আমাদের চেয়ে এই এথনিক সাদা গোষ্ঠি এদিকটা অনেক বেশি খেয়াল রেখেছে। এই সাদা শ্রেষ্ঠতত্ববাদ – যেটার রাজনৈতিক উপস্থিতির একালের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ডোনাল্ড ট্রাম্প; এটা যতটা না তার রিপাবলিক দল তার চেয়ে বেশি পৃষ্ঠপোষক তিনি নিজে। এরা তাই চীনা গ্লোবাল নেতৃত্বে আসায় আপত্তি নিয়ে সবচেয়ে সোচ্চার। আসলে সারা পশ্চিম জুড়ে চীনা উত্থান ইউরোপ-সহ সারা পশ্চিমা দেশ ও কালচারের মধ্যে একটা আতঙ্ক হিসাবে ছড়িয়ে গেছে, হাজির হয়েছে।
বাইডেন কী সেই চীনা ভয় আতঙ্ক মনে করিয়ে দিয়ে বার বার ইইউ-কে নিজের নেতৃত্বের অধীনে নিচ্ছে??
কিন্তু সারা পশ্চিম চাইলেও তো চীনা উত্থান ঠেকাতে সক্ষম হবে না। কারণ, – যা অবজেকটিভ যা ঘুর্ণিঝড় বা ভুমিকম্পের মত ঘটনা – তা ঠেকানো সাবজেকটিভ কাজ নয়; কর্তা মানুষের সেখানে কোন ভুমিকা থাকে না। মানুষ চাইলেই ঘুর্ণিঝড় বা ভুমিকম্প ঠেকায় দিতে পারে না। যেমন বৃটিশ কলোনি মাস্টারের সাম্রাজ্য আমেরিকান উত্থান ঠেকাতে পারে নাই, নিজেই ডুবে গেছে! আমেরিকাই গ্লোবাল নেতা হয়েছে ১৯৪৫ সাল থেকে। অবজেকটিভ ঘটনা যা ঘুর্ণিঝড় বা ভুমিকম্পের মত – এটা কোন দেশের সামরিক শ্রেষ্ঠত্বের ইস্যুও না। তাই কারও সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব দিয়ে তা ঠেকানোও যাবে না। এটা অবজেকটিভ সক্ষমতা অর্থাৎ, এক অর্থনৈতিক সক্ষমতার ইস্যু। ঠিক যে সক্ষমতার জোরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের নেতা হয়েছিল আমেরিকা!! প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট আর তাঁর পিছনে ছিল সেকালেই – সারা ওয়াল স্ট্রিট, এই অর্থনীতিক পাওয়ার সেন্টার!!!
লেখক : রাজনৈতিক বিশ্লেষক
goutamdas1958@hotmail.com
[এই লেখাটা দৈনিক “নয়াদিগন্ত” পত্রিকার ০৭ মে ২০২২ ওয়েবে আর পরদিন প্রিন্টে “বাইডেন দুনিয়ার সবার জন্য ক্ষতিকারক!“– এই শিরোনামে ছাপা হয়েছিল। ঐ ছাপা হওয়া লেখাগুলোকে আমার লেখার ‘ফার্স্ট ড্রাফট’ বলা যায়। আর আমার এই নিজস্ব সাইটের লেখাটাকে সেকেন্ড ভার্সান হিসাবে এবং থিতু ভাষ্য বলে পাঠক গণ্য করতে পারেন। আসলে পরবর্তিতে ‘ফার্স্ট ড্রাফট’ লেখাটাকেই এখানে আরও অনেক নতুন তথ্যসহ বহু আপডেট করা হয়েছে। ফলে সেটা নতুন করে সংযোজিত ও এডিটেড এক সম্পুর্ণ নতুন ভার্সান হিসাবে ও নতুন শিরোনামে এখানে আজ ছাপা হল। ]
বিল ক্লিন্টন মনিকাগেটে ধরা পড়ে আল সিফা ফার্মাসিউটিকাল, সুদানে মিসাইল মেরেছিল।
LikeLike