কিছু দেশি-বিদেশি নিউজ নিয়ে মন্তব্য-প্রতিক্রিয়া
গৌতম দাস
২৬ অক্টোবর ২০২২
https://wp.me/p1sCvy-4gR
. প্রয়োজনে দিনের বেলা বিদ্যুৎ ব্যবহার বন্ধ রাখব: তৌফিক-ই-ইলাহী
১। তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেছেন, ‘…কেনার পয়সা নাই তো। কী দামে বিক্রি করব সেটা পরের বিষয়।’ – ডেইলি স্টার
আর ওদিকে একই প্রসঙ্গে অন্যান্যদের মত বণিক বার্তার প্রায় কাছাকাছি শিরোনাম হলঃ
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিয়ে ব্যবসায়ীরা শঙ্কিত, রিজার্ভ নিয়ে শঙ্কা, দিনে বিদ্যুৎ কম ব্যবহারের পরামর্শ জ্বালানি উপদেষ্টার –
এই ছিল শিল্প মালিকদের সাথে জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীর সাথে এক ডায়লগ-সভার ফলাফল। ঘটনা সারসংক্ষেপে হল, দেশের ডলার বা রিজার্ভ সংকটে মানে জ্বালানি সংকটে কারখানা চালানোর জন্য শিল্প মালিকেরা গ্যাস সরবরাহ চান। তারা এজন্য মুল্য বেশি হলেও বেশি মুল্যে দিয়ে হলেও গ্যাস চান। জবাবে, উপদেষ্টা বললেন আমার রিজার্ভে ডলার নাই (“কেনার পয়সা নাই ……”।)
কথাগুলো কেবল শিল্পমালিকদের মুখ দিয়ে এলেও এটা আসলে ধনী-গরীব নির্বিশেষে সব ধরণের ভোক্তা -সহ সাথে ছোট-বড় সবধরণের উতপাদনে উতপাদকেরও কথা। মূল কারণ, একালের মানুষের জীবন শতভাগ জ্বালানি-নির্ভর; মাটির নিচের তেল, গ্যাস বা কয়লা ইত্যাদি কোন না কোন ধরণের। ফলে জ্বালানি নাই মানে জীবন স্থবির শুধু নয়; জীবন অচল যা প্রায় না থাকার সমান!
অতএব একালের সরকার ও পাবলিকঃ
দুনিয়ার সবদেশেই সরকার, তা যে আদর্শেরই হোক – সরকার ও পাবলিকের সম্পর্ক হল – পাবলিক মুরোদ-ওয়ালা সরকার দেখতে চাই। মুরোদ নাই অথবা কম মুরোদের কোন সরকার মাত্রই তারা পাবলিকের কেউ না। একবাক্যে পাবলিক এমন কোন কিছুই শুনতে চায় না; আমলই করতে চায় না। সকলেরই তা অপছন্দ, অ-অনুমোদিত। ব্যাপারটা অনেকটা যেন আপনি ক্রেতা এক বাজারে গিয়েছেন ঠিকই কিন্তু যা কিনতে রাজি না, নানা কারণে অপছন্দ এমন সবপণ্যের ক্ষেত্রে বাজারে তাখুব ভাল করে সাজানো থাকলেও আপনি যেমন সেপথে হাটেন না, সময় নষ্ট করেন না – এটা অনেকটা সেরকম! তখন এসবই আজাইরা মনে হয়!
কারণ, কার্যত সরকারের মুরোদ নাই বলেই তো জ্বালানি নাই, আনতে পারে নাই। যেকোন অজুহাতে বাস্তবতা হল, সরকার জ্বালানি আনতে বা ব্যবস্থা করতে পারে নাই! এটা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য এবং বিদায়যোগ্য হবে। তাতে সরকার যে দলেরই হোক!
এমনকি আওয়ামি কর্মি-সমর্থকদের কাছেও এমন সরকার বা জ্বালানি উপদেষ্টা অগ্রহণযোগ্য হবেন। কাজেই দল নির্বিশেষে বাংলাদেশের সার রাজনৈতিক অবস্থান ও বক্তব্য এটাই। জ্বালানি প্রসঙ্গে দেশের সকলেই একমাত্র এক মুরোদ-ওয়ালা সরকার-ই দেখতে চায়ই চায়! এটা এমনই বিরক্তির যে মুরোদহীন সরকার এতে ক্ষমতাচ্যুত হল কিনা, হবে কিনা তা কেউ ফিরেও তাকাবে না…!
তাই এই বাস্তবতায় মানে ডলার সংকটকেই কেন্দ্র করেই এখন রাজনীতি আবর্তিত হবে।
২। চীনে ক্ষমতাসীন পার্টি কংগ্রেস সম্পন্ন হয়ে গেল। সবচেয়ে বড় কথা বর্তমান প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এই কংগ্রেসে ক্ষমতার লড়াই শেষে নিজেকে বিজয়ী করে আনতে সক্ষম হলেন। এখন আগামি মার্চে তিনি সহজেই তৃতীয়বারের (প্রতিটা পাঁচবছরের টার্ম) জন্য প্রেসিডেন্টের শপথ নিবেন।
পুরব-পশ্চিম দেশ অথবা রাজনৈতিক আদর্শ নির্বিশেষে সবদলেই ক্ষমতার লড়াই একটা বাস্তবতা, তা সে যে নামেই করা হোক। তবে বটম লাইন হল, তা জনসমক্ষে বা নোংরা লড়াই ভাবে না করা এবং তা যতটা সম্ভব জনসম্পৃক্তির মধ্যে, আইনি কাঠামোর মধ্যে ঘটানোটাই কাম্য।
সারকথায় চীনের এই সম্মেলন নুন্যতম এসব কামনা বা আকাঙ্খাকে সন্তুষ্ট করতে পারে নাই। আগামিতে গ্লোবাল নেতা হতে চীন যদি সুযোগ পায় তবে সেক্ষেত্রে চীনের বিরুদ্ধে যাবে এমন এক নম্বর রেফেরেন্স পয়েন্ট হবে এটা।