মিডটার্মঃ ইউক্রেন নিয়ে বাইডেনের পশ্চিমা-অপসারণ কী শুরু
গৌতম দাস
০৯ নভেম্বর ২০২২ মধ্যরাত ০১ঃ০০
Russia news: Rattled Putin warns US ‘entering Ukraine
মঙ্গলবার, আট নভেম্বর ২০২২। আমেরিকার ৮ নভেম্বর শুরু হবে আজ আমাদের মধ্যরাত থেকে। এরপরেই আমেরিকায় শুরু হবে তাদের মধ্যবর্তি নির্বাচন মানে, মিডটার্ম ইলেকশনের ভোটাভুটি। যদিও মিডটার্ম বলতে তা প্রেসিডেন্ট বাইডেনের চারবছরের মেয়াদের এতে প্রথম দুবছর বা মধ্যমেয়াদ[midterm] তিনি পার করলেন, এটাই বুঝায়। এই অর্থে তাই মিড [mid] বা মধ্য। কিন্তু এদিন যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে সেটা হল আসলে ৪৩৫ আসনের কংগ্রেস (আমেরিকান সংসদ) এর সব আসনেরই নির্বাচন। শুধু তাই না এটা একই সাথে আমেরিকান সিনেট বা উচ্চকক্ষেরও নির্বাচনও বটে। তবে সেখানে মোট ১০০ আসনের সিনেটের কেবল এক-তৃতীয়াংশ আসনে নির্বাচন হবে; মোটা দাগের হিসাবে এবার মাত্র ৩৫ আসনে নির্বাচন হবে।
এখন এই ভোটের ফলাফল কেমন হতে পারেঃ
ফলাফল নিয়ে আগাম-অনুমানি পোল-সার্ভে, তা বহু আগে থেকেই অনেকগুলোই পরিচালিত হয়ে আসছে। সেই নির্বাচনি সার্ভে থেকে প্রকাশিত অনুমিত-ফলাফল বলছে বাইডেনের ডেমোক্রাট দল গোহারা হেরে যাবে। অর্থাৎ কংগ্রেস ও সিনেট দুই কক্ষেই বাইডেন সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাবে। আর এমন পরিণতি, তা মূলত বাইডেনের অর্থনৈতিক পারফরমেন্সের কারণে; অন্যভাবে বললে আমেরিকান মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তের জীবনমান বা লিভিং স্টান্ডার্ডকে বাইডেন নিচে থেকে আরো নিচে নিয়ে ফেলেছেন সেকারণে। তবে এটা ছাড়াও দ্বিতীয় কারণ আছে যে, আমেরিকান ডলারের মান বা উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে ফেডারল রিজার্ভের চেয়ারম্যান, তাঁর একশনে সুদের হার টানা ছয়বার লাগাতর বাড়িয়েও এতে লাগাম টানা যায় নাই। বরং সবমিলিয়ে আগামি বছর (২০২৩) একটা গ্লোবাল অর্থনৈতিক মন্দা [recession] একেবারেই আসন্ন – ওয়ার্ডব্যাংক এনিয়ে ইতোমধ্যেই ব্যাপক সরব! ওদিকে আগে ট্রাম্পের শেষ আমলে তাঁর খামোখা জাতিবাদি জিদের বশে আরোপিত চীনা পণ্যের উপর যে বাড়তি শুল্ক (২৫% – ৬৬%) আরোপ করা হয়েছিল বাইডেনও সেটা পলিসিই চালু রেখেছিলেন। আর এরই কার্যকর ধাক্কার ফল আসতে শুরু করেছিল বাইডেনের ক্ষমতার প্রথম ছয়মাস থেকেই লাগাতরভাবে।
হাউজহোল্ড এপ্লায়েন্স [household appliance] – একথার মানে, আমেরিকান মধ্যবিত্তের সাধ্যের মধ্যে কেনা যায় এমন – ফ্রিজ, এসি, ওয়াশিং মেশিন, কুকার-ওভান বা মাইক্রোওভান ধরণের পণ্য। যেগুলো, মূলত চীন থেকে আমেরিকায় আমদানিকৃত পণ্য হয়ে থাকে। আর এসবের উপরেই ট্রাম্প আমলে মূলত এই বাড়তি শুল্ক লাগু করা হয়েছিল। আর তা থেকে বাইডেন প্রশাসনের ততপরতা শুরু হতেই বিমুখ হয়ে যায় আমেরিকান সব-ধরণের মধ্যবিত্ত। অথচ ভোটের বাজারে যারা ভোট দিতে আসেন তাদের এক বড় অংশই মানে ‘কার্যকর’ ভোটার হল এই মধ্যবিত্তই। কারণ অনেকবছর থেকেই আমেরিকান নির্বাচনি ট্রেন্ড হল, অন্যশ্রেণী থেকে ভোট দিতে আসা লোকের সংখ্যা আরো অনেক কম হয়ে থাকে।
ইন্ডিপেন্ডেন্ট বা স্বাধীন প্রভাবমুক্ত এনালিস্টদের অনুমান বাইডেনের ডেমোক্রাট দল এবার রেকর্ড তৈরি করে হারবে। তাই সিনেট বা কংগ্রেস এদুই কক্ষের কোথাও তার সংখ্যাগরিষ্ঠতা বজায় থাকবে না। যার সোজা ফলাফল হবে বাইডেন অবশ্যই তার মেয়াদের বাকি দুবছরই বিনাবাধায় প্রেসিডেন্ট থেকে যাবেন; কোন প্রভাব পড়বে না। এমনকি আগের মতই প্রেসিডেন্টে হিসাবে তাঁর নির্বাহি ক্ষমতাবলে যেকোন আইনও জারি করে যেতে পারবেন। কিন্তু যেখানে বিলে অংশত বা পুরাটাই অর্থবিল থাকবে মানে যেসব আইনের মধ্যে কোন অর্থবরাদ্দ সংক্রান্ত অংশ আছে সেসব ক্ষেত্রে আইন পাস করতে চাইলে তা আগে ঐ অংশের জন্য সিনেট এবং কংগ্রেস এদুই জায়গা থেকেই তা পাস করিয়ে নিতে হবে। অর্থাৎ সেগুলো আর পাস হতে হলে এখন রিপাবলিকানদের ইচ্ছা মুখাপেক্ষি হতে হবে বাইডেনকে। ফলে পাস না হবার সম্ভাবনা বাড়বে। যেমন চাইলেই ইউক্রেন যুদ্ধে প্রেসিডেন্ট জেলেনেস্কিকে (তার সীমাহীন আকাঙ্খা মিটাতে) দেয়া বাইডেনের অর্থবরাদ্দ এবার রুদ্ধ হয়ে পড়ার সম্ভাবনাই বেশি।
অর্থাৎ অন্যদিক থেকে বললে, এতে ইউক্রেন যুদ্ধ এবার বন্ধ হবার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হচ্ছে। অর্থাৎ ইউক্রেনে অর্থ ঢেলে বাইডেনের এই যুদ্ধ চাঙ্গা রাখার যুগের এবার একটা পরিসমাপ্তি ঘটতে পারে। এভাবে সবদিক থেকেই সব ফ্যাক্টরগুলো এই অভিমুখেই সচল হচ্ছে। যদিও এমনিতেই একদিকে যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনের নিজস্ব অর্থনীতিক ততপরতা স্থবির অবস্থায় ফলে সেজন্য ঘাটতির মুখ্য অর্থ সরবরাহগুলো করতে হচ্ছে বাইডেনকে; অন্যদিকে যুদ্ধের ব্যয়বহণ ও বিশেষ বিশেষ অস্ত্র সরবরাহ – সেটাও বাইডেনকেই করতে হচ্ছে। কিন্তু তবু তাতে প্রেসিডেন্ট জেলেন্সকির মুখের হা বন্ধ বা চাহিদা কম হচ্ছে না, উলটে তিনি প্রকাশ্যে বাইডেনের উপর সমালোচনা ঝাড়ছেন । তাই এনিয়ে প্রায় প্রকাশ্যে এসে পড়া বাইডেনের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়াও আমরা ইতোমধ্যে দেখেছি।
কেন বাইডেনের কাছে মিডটার্ম বা ৮ নভেম্বর গুরুত্বপুর্ণঃ
প্রেসিডেন্ট বুশের শেষ জমানায় এবং ওবামা জমানা (২০০৯-২০১৬) থেকেই আমেরিকার কাছে এটা পরিস্কার হয়ে যে দুনিয়ায় পালাবদল আসন্ন; অর্থাৎ গ্লোবাল নেতৃত্ব ক্রমশ আমেরিকার হাত ছাড়া হয়ে চীনের হাতে যেতে নিয়েছে। ওবামার যুগে এনিয়ে তাঁর প্রশাসনিক প্রতিক্রিয়াগুলোকে বলা যায় অনেকটা “বড়-ভাইয়ের চাঁদা তোলার” মত। ওবামা বারবার চীনের কাছে দাবি করে নানান ব্যবসায়িক সুবিধা বা ছাড় আদায় করে গেছিলেন। চীনও তা দিয়ে গেছিল, কো সংঘাত তখনই মুখোমুখি না করে এড়াতে পারলে নিজের জন্য ভাল হবে বিবেচনা থেকে। আর এদিকে, এশিয়ান পিভোট [Pivot to Asia] বলে হাল্কা চুলকানির মত একটা কিছু চীনবিরোধীদের জোট খাড়া করতে যা কল্পনা করেছিলেন তা বাস্তবে কোন পা ফেলতেই পারে নাই। পরে ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুগ শুরু হয়। তিনিও প্রথম বছরটা (২০১৭) ওবামার চাঁদা তোলার মতই ‘হপ্তা’ আদায়ের পথেই গিয়েছিলেন। কিন্তু ২০১৮ সাল থেকে সরাসরি চীনবিরোধী তবে তা আসলে এক আমেরিকান জাতিবাদি-অর্থনীতি কায়েম করতে এক পরিকল্পনা করেছেন মনে করে আদতে একটা ফ্যান্টাসি করেছিলেন। সেটারই এক পরিণতি ছিল যে আমেরিকায় চীনাপণ্যের উপর শাস্তিমূলক আমদানি শুল্ক বসানো। যেটা কার্যত লাগু হয়েছিল, সরকার-প্রশাসনের উপর নয়; বরং নাগরিক মধ্যবিত্ত অংশকেই ঐ বাড়তি শুল্ক যোগাতে হয়েছিল। যেটার প্রতিক্রিয়া পরিণতি এখন বাইডেন দেখবে।
তবু এতে মূল সংকটটা এখানে নয়। বিশ্বব্যাংকের মধ্যদিয়ে সুনির্দিষ্ট করে ১৯৮০ সাল থেকেই এক “গ্লোবালাইজেশন” – মানে এক পরিকল্পিত গ্লোবাল প্রডাকশন ও সাথে, এক্সচেঞ্জ [exchange] এরই গ্লোবাল বাজার বিনিময় ব্যবস্থা শুরু বা চালু করা হয়েছিল। কিন্তু সবচেয়ে বড় দুর্ভাগ্য হল, “গ্লোবালাইজেশন” শব্দটা অনেকে অনেক অর্থে ব্যবহার করে থাকে, আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের অর্থটার বাইরেও। সেটা সমস্যা হত না; কিন্তু তাদের সেই “গ্লোবালাইজেশন” ধারণাটা নেগেটিভ। তবে ১৯৮০ সালের পর থেকে খুবই দ্রুত গ্লোবাল প্রডাকশন, এক্সচেঞ্জ বাজার ব্যবস্থা খাড়া হতে শুরু করেছিল। বাংলাদেশে এর প্রকাশটা কী ছিল এভাবে প্রশ্নের উত্তরে বলা যায় আমাদের গার্মেন্টস (RMG) কারখানার দ্রুত বিস্তার লাভঃ “মাল্টিফাইবার এগ্রিমেন্ট” ইত্যাদিতে এটাই ছিল সেই গ্লোবাল ফেনোমেনার লোকাল প্রকাশ। তবে মূলত আমাদের সমাজের কোন অংশই পলিটিক্যালি এর তাতপর্য আমরা বুঝি নাই; আমাদের সমাজের যারা অর্থনীতি-রাজনীতি বুঝার দিক থেকে ওস্তাদ-হাফেজ বলে নিজেদের ইমেজ তৈরি করেছে সেই প্রগতিবাদি বামপন্থিরাও আসলে কিছুই বুঝে নাই। তাই ছিল তাদের চোখবন্ধ বিরোধিতা – নিপাত যাক!! তবু তাদের অবস্থান ছিল “গ্লোবালাইজেশন” এক নেতিবাচক ফেনোমেনা; তাতে “গ্লোবালাইজেশন” জিনিষটাই মূলত কী তারা না বুঝলেও; তবে তাদের মত করে যেটুক আধাখেচড়া বুঝা তা ছিল খুবই নেগেটিভ। সম্ভবত এটাই কারণ কেন এখনও সমাজে “গ্লোবালাইজেশন” এর বুঝ বলতে নেগেটিভ কিছু বুঝা হয়। যেটা কার্যত কিছুই না বুঝে ফেলে রেখে দেয়া।তবে একটা সিরিয়াস কারণ হল কমিউনিস্টরা যারা অর্থনীতি খুবই ভাল বুঝেন বলে মনে করেন, ক্যাপিটালিজমের সারপ্লাস ভ্যালু (surplus value) চুরি হয়ে যাওয়া যেহেতু তারা বুঝেন বলে মনে করেন; যেটা তাদের শোষণ তত্বের ভিত্তি। ফলে তাদের ধারণা তারা অর্থনীতির বুঝ তাদের একচেটিয়া ও সবচেয়ে ভাল বুঝের লোক তারা। কিন্তু দুঃখের কথা হল, কার্যত ও প্রকৃত অর্থে (in reality) তারা আসলে এক জাতিবাদি-অর্থনীতির বুঝের অনুসারি। যার মৌলিক বৈশিষ্ট হল নিজ রাষ্ট্রসীমার বাইরে কোন পণ্য-বিনিময় বাণিজ্য একতা ব্যবস্থা থাকা তাদের অনুমানে সবচেয়ে অপ্রয়োজনীয় বিষয়। কারণ, নিজ কামাবো, নিজেই সবকিছু উতপাদন করব আর নিজেই খাবো বা ভোক্তা হব – তাই নিজ মুদ্রায় যতদুর বিনিময় বাণিজ্য হয় এর বাইরে যেমন কোন আন্তঃরাষ্ট্রীয় বাণিজ্যের আর দরকার কী? এই হল তাদের কোর ভাবনা! অর্থাৎ এরা মনে করে কার্ল মার্কসও যেন এক্সচেঞ্জ (exchange) প্রসঙ্গটা নিয়ে যত কথা খরচ করেছেন তা যেন কেবল একটা রাষ্ট্রের ভিতরের ব্যাপার। যেটা যেন আন্তঃরাষ্ট্রীয় কোন পণ্য বিনিময় নয়। যদিও মার্কস শুধু পণ্য বিনিময় নয়, বিনিময় বলতে তিনি মানুষে মানুষের সবকিছুর বিনিময় বুঝাতে যে এক্সচেঞ্জ বিষয়টা নিয়ে এত পাতা খরচ করেছেন এই অর্থে যেন মার্কসের এক্সচেঞ্জ ধারণা যেন এটা একটা রাষ্ট্র বা জাতিসীমায় কাজ করে এমন একটা ধারণা!! তাই কী? আসলে ব্যবহারিক কমিউনিজমে সবচেয়ে অগুরুত্বপুর্ণ ধারনা হয়ে আছে এই “এক্সচেঞ্জ” ধারনা। আর জাতিবাদি-অর্থনীতির বুঝে মাত্রই সেই জায়গা যেখানে “এক্সচেঞ্জ” ধারণাটার প্রায় গুরুত্ব নাই বললেই চলে।
সম্ভবত একারণেই আইএমএফ-বিশ্বব্যাংক প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক গ্লোবাল বানিজ্য ব্যবস্থা যেটা দাঁড়িয়ে আছে তা কমিউনিস্টদের চোখে “নিপাত যাক” প্রতিষ্ঠান। আসলে না জানার সুবিধা অনেক!!! কোন প্রতিষ্ঠান সীমাবদ্ধতা বা কারও দিকে কান্নি মেরে থাকাটা আপনার চোখে বা বুঝে পরিস্কার থাকার মানেই এমন নয় যে আপনি ঐ প্রতিষ্ঠান নিপাত যাক বলতে পারেন। অথবা এমন বলাটা আপনার স্বার্থের পক্ষে যাবেই!!
কাজেই গ্লোবালাইজেশন মানে গ্লোবালি পণ্যসহ সবকিছুর বিনিময়-বাণিজ্যের কল্পনা – সেটা মূলত স্তালিনসহ সব ব্যবহারিক কমিউনিস্ট চিন্তায় একেবারেই অনুপস্থিত; এবং বলাই বাহুল্য এটাই স্বাভাবিক। এই কারণেই সম্ভবত গ্লোবাইলাইজেশন সম্পর্কে তাদের বুঝ নেতিবাচক ও অস্পষ্ট। অথচ দুনিয়া এখন শেয়ার্ড ভ্যালু এডেড (shared value added) প্রডাক্ট এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট সব দেশ তো বটেই সকলের তা ভোক্তা ও ব্যবহারকারি হবেন উতপাদন এমনই গ্লোবাল ফেনোমেনা হয়ে উঠছে। চীনের নেতৃত্বে RCEP (Regional Comprehensive Economic Partnership, RCEP) যা মূলত আশিয়ান ও চীনের উদ্যোগে তেমনই এক নয়া জোট। সবচেয়ে লক্ষ্যণীয় ফেনোমেনা হল, এই জোটে অষ্ট্রেলিয়া ও জাপানও এর অংশীদার পার্টনার হয়ে ঢুকে গেছে। অথচ এরা তো আমেরিকান ইন্দো-প্যাসেফিক বা কোয়াডের (QUAD) সদস্য। যাই হোক, আমাদের মূল প্রসঙ্গে মনোযোগী হই।
তাই এসব আসলেই বিস্ময়কর যে কেবল রাষ্ট্রসীমার মধ্যে কার্যকর থাকা কোন অর্থনৈতিক ধারণা-চিন্তা এমন চিন্তা কী একটা আন্তঃরাষ্ট্রীয় বাণিজ্য বা গ্লোবালি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য-বিনিময় ব্যবস্থাকে কী ব্যাখ্যা করতে পারে? কিভাবে?
গ্লোবালাইজেশন ও ডোনাল্ড ট্রাম্পঃ
আশির দশকে গ্লোবালাইজেশন চালু হয়েছিল মূলত আমেরিকান উদ্যোগে। অথচ সেই আমেরিকার এক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পই এবার ২০১৮ সালে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি আমেরিকাকে ফিরে এক জাতিবাদি-অর্থনীতিতে নিয়ে যাবেন। বলা যায় তার মূল উদ্দেশ্য চীনের হাতে গ্লোবাল নেতৃত্বে হারানোর বদলে যেন – তাইলে যুদ্ধেই যাব না যেন এমন এক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে চীনের কাছে হার এড়ানোর এই ফ্যান্টাসি – এক জাতিবাদি-অর্থনীতির দিকে চলে যাবার হুঙ্কার এটা কেবল আমরা ট্রাম্পের বেলায়ই দেখিনি। প্রেসিডেন্ট বাইডেন এর মধ্যে তা আছে, কিন্তু অন্যভাবে। যেমন ট্রাম্প শুধু অর্থনৈতিক অর্থেই জাতিবাদি হতে যান তাই নন। তিনি রাজনৈতিক অর্থেই জাতিবাদি হতে চান। এটাই হোয়াইট সুপ্রিমিস্ট [white Supremist] (সাদাবাদি, ককেশীয় উগ্র জাতিবাদি আরেক হিটলারিজম) মুভমেন্ট। বাইডেন প্রেসিডেন্টের শপথ নিয়েছিলেন ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি। এর আগেই আমেরিকান প্রথা্তমোতাবেক – জয়েন্ট কংগ্রেস (সিনেট ও কংগ্রেসের একসাথে) জয়েন্ট সেশন সম্মেলন হয় ৬ জানুয়ারি ২০২১। আর এদিনই ঐ “মুভমেন্টের” সমথর্কেরা মিছিল করে গিয়ে বাইডেনের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের পক্ষে সংহতি জানিয়ে ঐ কংগ্রেস হলই সারাটা দখল করে বসেছিলেন, আমরা দেখেছিলেচিলাম মিডিয়ায়। সাদাবাদিদের মূল কথা হল, বাদামি ও কালোচামড়ার লোকেরাই তাদের সব দুঃখের কারণ। এভাবে চামড়ার কথা তোলা মানে, আরেক এথনিক জনগোষ্ঠিকে ঘৃণা করা; ঘৃণা ছড়ানো নিচা দেখানো আর নিজেদের শ্রেষ্ঠ ভাবা ইত্যাদি এসবই হিটলারিজম – এথনিক ঘৃণা ছড়ানো চরমতম ক্ষতিকর এক জাতবাদ। তাদের ভাষ্য হল, বাদামি ও কালোচামড়ার লোকেরাই পশ্চিমাদেশে ছড়িয়ে পড়ে সাদাদের কাজ চাকরি ছোট ব্যবসারইত্যাদির সব সুযোগ সুবিধা সব খেয়ে ফেলছে। এই বয়ান ভিত্তিহীন যদিও। কারণ সাদারা আমাদের কলোনি দখল ও লুটেরা শাসন করেছিল। অনেক পরে সেই সুত্রেই কেবল সস্তা শ্রমিকের লোভে ব্যবসা ভাল চলার সময় সাদারা বাদামি ও কালোচামড়ার লোকেদের তাদের দেশে নিয়ে গিয়েছিল। কাজেই এখন তাদের অর্থনীতি খারাপ বলে, তাই বাদামি ও কালোচামড়ার লোকেরাই সাদাদের দেশ থেকে বের করে দিতে হবে এটা কোন সাফাই হল না!! হতে পারে না।। অর্থাৎ চীনের সাথে প্রতিযোগিতায় আজ ক্রমশ আমেরিকার অর্থনীতিতে সারপ্লাস সঞ্চয় (যা ফিরে পন্য-পুজির বিনিয়োগ ক্ষমতা হয়ে এতদিন হাজির হয়ে আসছিল ) আগের তুলনায় তা দ্রুত কমে যাচ্ছে। এই খারাপ সময়ে বহু পেশা বা কাজকে ঢেলে সাজানোর দরকার পড়ছে; এটাই এসব শ্রেণীর জন্য চীনবিরোধী হয়ে উঠা। আর আজ ব্যাপারটাকে তাদের নেতারা দেখে যে, গত প্রায় ছয়শ বছর ধরে এই সাদা ককেশীরাই দুনিয়াকে কলোনি দখল ও শেষে আমেরিকান নেতৃত্বে শাসন ও শাসক হয়ে থেকেছে। কিন্তু আজ আর সেটা আর বজায় রাখতে পারছে না। কারণ, আজকের চীনা উত্থানের প্রথম অর্থ- তাতপর্য হল সেই সাদা সাম্রাজ্যের পতন। এজন্যই তারা হোয়াইট সুপ্রিমিস্ট মুভমেন্ট শুরু করেছিল ট্রাম্প-কে মাথায় উপরে উঠিয়ে রেখে যদিও সেটা ট্রাম্পের অধীনেই এক এলায়েন্স গড়ে নিয়ে।
মজার কথাটা হল, বাইডেনও আসলে হোয়াইট সুপ্রিমিস্ট মুভমেন্ট – এর মধ্যেই সমাধান দেখেন। যদিও ট্রাম্পের থেকে তার অনেক জায়গায় তফাত আছে। যেমন ট্রাম্প জাতিবাদি-অর্থনীতির দিকে এক অলীক চিন্তা নিয়ে এক ফ্যান্টাসি করতে চান। কিন্তু এখানে বাইডেনের চিন্তাটা হল, চীনের উত্থান ঠেকাতে সারা ইউরোপকে সাথে জোট গড়ে নিয়ে উঠে দাঁড়ানো। সেখানে ঐ ঐক্যবদ্ধতা হতে হবে আসলে সাদাবাদের ভিত্তিতে; ছয়শ বছর ধরে চলে আসা দুনিয়াকে যে সাদা ককেশীরাই এতদিন শাসন করে আসছে, ফলে তাকে এখন হারতে না দেয়া। দরকার হলে চীন-রাশিয়াকে একঘরে করে নিজেদের এক আলাদা জগত নির্মাণ করতেও তারা রাজি; এবং তা গ্লোবাল অর্থনীতির একটা ভগ্নাংশ হলেও সাদাদের নেতৃত্বে বাকি যারা আসে কেবল তাদের নিয়ে এক ভগ্ন-গ্লোবাল অর্থনীতি করে টিকে থাকার চেষ্টা করতে হবে। মূলত ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই এটাই বাইডেনের মূল পরিকল্পনা।
এই লক্ষ্যে তার হাতিয়ার রাষ্ট্র বা বলি হয়ে যাওয়ার মত রাষ্ট্রটাই হল ইউক্রেন। শুরুটা হবে ইউক্রেনের ঘাড়ে বন্ধুক রেখে রাশিয়াকে একঘরে করার উদ্যোগ নিয়ে। আর এতে চীন রাশিয়ার সমর্থনে এসে দাড়ালেই বাইডেন নিজ পরিকল্পনা মাফিক আগিয়ে যেতে পারবেন; এই ছিল অনুমান। কিন্তু হায়, বাইডেনের শাসনের আরো দুবছর বাকি থাকতেই, প্রথম দুবছরের মধ্যেই বাইডেন এখন হার স্বীকার করে পিছু হতে যেন উদ্যত তা দেখা যাচ্ছে। আলামত হল, বাইডেন পিছু হটতে একেবারে রেডি হচ্ছেন।
ইতোমধ্যেই জর্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শুলৎজ [Olaf Scholz] এর চীনা সফর ছিল এর বড় ইঙ্গিত। তিনি এমাসেই ৪ নভেম্বর গত শুক্রবার চীনে গেছিলেন আর তার দাবি তিনি জি৭ ব্লক রাষ্ট্রগুলোর প্রতিনিধিত্ব করতে এসেছেন। জি৭ (G7 Group) যা আসলে এক পশ্চিমা এককালের ধনীরাষ্ট্র জোট যা জাপানকে সাথে নিয়ে থাকলেও কার্যত তা এখন সাদা ককেশীয় জোট হয়ে গেছে। চ্যান্সেলরের সার-প্রস্তাব হল ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করা। আর সেকাজে তিনি চান চীন একটু রাশিয়া থেকে দুরত্ব- নিরেপেক্ষতা তৈরি করুক যাতে জি৭ – চীনের মাধ্যমে (পাগলা ও ক্ষিপ্ত পুতিনকে ঠান্ডা করতে) একসাথে কাজ করতে পারে। যদিও রয়টার্স লিখেছে, প্রেসিডেন্ট শি যদিও তাদের দুজনের সাক্ষাতে প্রতিউত্তরে – রাশিয়ার কোন সমালোচনা করেন নাই; অথবা রাশিয়ান সেনা প্রত্যাহার নিয়েও কোন মন্তব্য করেন নাই [……though he refrained from criticising Russia or calling on Moscow to withdraw its troops.]। তার মানে শুলৎজ এর এটা ছিল মিডিয়া প্রপাগান্ডা নিবার জন্য কাভারেজ।
এখানে এনিয়ে এক এক করে দুইটা রয়টার্সের নিউজ আগ্রহিরা দেখে নিতে পারেন। একই সাথে এনিয়ে বাইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন এর ঘোষণা নিয়ে রয়টার্সের রিপোর্টও সাথে পাবেন। তিনি বলছেন যার খবরের শিরোনামঃ “জি৭ এখন পরিস্কার যে চীনের সাথে তাদের সমন্বয়-সমঝোতা করতে হবে এটা বুঝে গেছে” [Blinken says G7 is clear-eyed about need to align on China।
মজার কথা হল এই বক্তব্য বাইডেন প্রশাসনের আগের দেয়া চীনকে একঘরে করার বক্তব্যের বিপরীত। শুধু তাই না ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের জন্য ইতোমধ্যে আমেরিকা ইউক্রেন সরকারকে পরামর্শমূলক বার্তা পাঠিয়েছে। এনিয়ে ওয়াশিংটন পোস্টের রিপোর্ট এর শিরোনাম আমেরিকা ইউক্রেনের কানে কানে বলেছে সে যে রাশিয়ার সাথে আপোষ করতে চায় এমন ইঙ্গিত প্রদর্শন করে চলতে [U.S. privately asks Ukraine to show it’s open to negotiate with Russia]।
ইউক্রেন যুদ্ধে সবচেয়ে করুণ অবস্থান নেয়া মিডিয়া হল আজ-জাজিরা। আল-জাজিরা ২০০৫ সালে জন্মের সময় থেকে আমি ব্যক্তিগতভাবে একে ফলো করি। এটা অকল্পনীয় যে সে এই যুদ্ধে এক আমেরিকান পাপেট মিডিয়া হয়ে যাবে। যেমন রয়টার্স সেও তো এক পশ্চিমের সংবাদ সংস্থাই, তাই না। অথচ নিরপেক্ষ এবং জার্নালিজম বলতে যা হওয়া উচিত সেটাই রয়টার্স হয়ে থেকেছে। কিন্তু আলজাজিরার অবস্থা খুবই দুঃখজনক ও করুণ। সেই আলজাজিরা এবার ইউক্রেন যুদ্ধকে রিপোর্ট করতে গিয়ে যেন ত্যার কাজ হল আমেরিকা বা পশ্চিমের করার ঠিকা পেয়েছে। যেন আল-জাজিরা এক ঠিকাদারের নাই যে আর “জার্নালিজম” করে না। অথচ এই প্রথম তারা পশ্চিম থেকে দুরত্ব তৈরি করতে চাইছে। তাদের রিপোর্ট এর শিরোনামঃ ইউরোপের মুদ্রাস্ফীতি এতই চড়া যে সম্ভবত এবার তারা ইউক্রেনের সঙ্গে কাপাকাপি শুরু করবে As inflation rises, could European support for Ukraine wobble? আর সাথে ভিতরের খবরে লিখছে, এসব কিছুই আগামি শীতে ফকফকা পরিস্কার এক পরীক্ষা হয়ে যাবে!
কেন আগামি শীতে কীঃ
আপাতত বাইডেনের সব পরিকল্পনা ফেল হয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে যেতে নিয়েছে। সেটা যে কারণে তা হল সারা ইউরোপই আসলে জ্বালানির প্রশ্নে মারাত্মকভাবে রাশিয়ান তেল-গ্যাসের উপর নির্ভরশীল। বলা যায় ইউরোপ আসলে কার্যত রাশিয়ান জ্বালানির নির্ভর এক অর্থব্যবস্থা। এমন সবচেয়ে প্রভাবশালী ও কঠিন সত্যিটাই আসলে বাইডেন এতদিন অস্বীকার করেছেন, তারমত করে নেয়া সাদা শ্রষ্ঠত্ববাদি কেন্দ্রিক এক পরিকল্পনায়। তিনি ভেবেছিলেন আমেরিকার ইউরোপের সাথে সাদা ককেশীয় ঐক্য আর সমস্বার্থ দিয়েই তিনি ইউরোপের জ্বালানির নির্ভরতা-সহ সব বাধা পার হয়ে যেতে পারবেন। অথচ এটা ছিল চরমতম আবেগী কথা। হয়ত আবেগী বলেই তা ককেশীয় জাতিবাদি সুরসুরিতে তারা জেগে উঠতে চাইছে সেটা জ্ঞাত থাকা ইউরোপকেও বাইডেনের মিথ্যা পরিকল্পনার পক্ষে থাকতে আগ্রহি করেও তুলেছিল। আর এই অবাস্তব দগদ্গে জাতিগত-আবেগেই পশ্চিমের মৃত্য ও পতনের কারণ হবে সম্ভবত!
তাহলে বাইডেনের পশ্চাদ অপসারণ, পুতিনকে রাজি করানো কী সম্ভব হবে?
তাতক্ষণিক জবাব হল, অবশ্যই না। পুতিন রাজি হবেন না। কিন্তু কতদিন ও কেন?
পুতিন মোটা দাগে বললে, জানুয়ারির ১৫ তারিখের আগে কিছুই থামাবেন না। কেন?
সাধারণত ইউরোপের ক্ষেত্র গড় হিসাবে বললে, ১৫ ডিসেম্বর-১৫ জানুয়ারিতে অঞ্চলের তাপমাত্রা চরমে উঠে, সেটা মাইনাস ৪০ ডিগ্রির দিকেও চলে যায়। কাজেই বলাই বাহুল্য জ্বালানিহীন ঘর গরম রাখার ব্যবস্থাহীন ঘরবাড়ি – এই ইউরোপের ইউরোপিয়ানেরা দেশ ছাড়বেন। বিশেষত কিয়েভবাসীরা [Kiev] তাদের দেশঘর ছেড়ে পাশের দেশে আশ্রয় নিতে ছুটবে। তখন পুতিন ইউরোপকে এক পরীক্ষায় ফেলে দিতে চান। এটা দেখাতে যে তারা কেউই আসলে ইউক্রেনকে পছন্দই করেন না। তাই এই শীতে তারা মাইগ্রেট করতে ইউরোপের পড়শি বাকি দেশে ঢুকতে চাইলেও পারবেন না। প্রথমত তারা মাইগ্রেসনের জন্য উপযুক্ত ভিসা অনুমতি অন্তত সীমিত করে দিবে। ইতোমধ্যেই যা শুরু হয়েছে। ওদিকে ইতোমধ্যেই কিয়েভ-কে বসবাসের অযোগ্য করে ফেলা হয়েছে। কারণ, রাশিয়ান বোমায় বিদ্যুৎ কেন্দ্র (৩০%) অচল হয়ে অন্ধকার হয়ে গেছে। ইউক্রেনের বাইরের ইউরোপ যে ইউক্রেনের সাথে নিজ সংকীর্ণ স্বার্থে অভিনয় করে গেছে – এই করুণ দৃশ্য সবার সামনে উন্মোচন করে না দিয়ে পুতিন যুদ্ধ থামাতে চান না। যদিও যুদ্ধ তিনি থামাবেন অবশ্যই তবে এর পরে।
ওদিকে জাপানসহ জি৭ গোষ্ঠি চীনের কাছে আবেদনে যে যুক্তি তুলে ধরেছে তা হল, গ্লোবাল মহামন্দা ধেয়ে আসছে। যেটা অনেক আগে থেকেই বিশ্বব্যাংকের ফোরকাস্ট যে ২০২৩ সাল মহামন্দার বছর হবে। বহু দেশেরই খাদ্য যোগাড়ের অবস্থাই থাকবে না। আর ইতোমধ্যে ৯% এর আশেপাশে উঠে যাওয়া মুদ্রাস্ফীতি সহসাই কমছে না। বরং আসন্ন মহামন্দাটাই হয়ত মুদ্রাস্ফীতি কমার একমাত্র উপায় হয়ে হাজির হবে!! কাজেই তা ঠেকাতে বা প্রভাব কমাতে, চীনসহ রাষ্ট্রগুলো একটা সম্মিলিত প্রচেষ্টা নিবার আবেদন করতে চাইছেন তারা।
কথা সত্য অবশ্যই। তবে আসলে এই উছিলাতেই বাইডেন তাঁর ব্যর্থতার দায় আড়াল ও হাল্কা করার সুযোগ নিতে চান। কারণ গত ছয় মাস ধরেই তো এটা সবার জানাই যাচ্ছিল যে এসব বিপদ দুনিয়াতে আসন্ন; তাহলে এখন এত দেরিতে একশন কেন? কারণ ৮ নভেম্বর মিডটার্ম! মিডটার্মের নির্বাচনে মানে এর ফলাফলে যেন বাইডেনের ব্যর্থতা যেন নয়া চাপ না হয়ে যায় – এই ছিল বাইডেনের সংকীর্ণ বিবেচনা। কাজেই আটই নভেম্বরের পর থেকে বাইডেন এখন পুরাপুরি রিভিউ এর মুডে মানে গত দুবছর যে সব পলিসির মুডে ছিলেন সেসবেরই পুনঃ মুল্যায়ন চলে যাবেন তিনি, বা ইতোমধ্যেই গেছেন। এসব কারণের ইউক্রেন যুদ্ধ এখন এতিম হয়ে পড়ার সম্ভাবনা প্রবল!
লেখক : রাজনৈতিক বিশ্লেষক
goutamdas1958@hotmail.com