আজ সেই ৫ মে, আবার ফিরে এসেছে!


আজ সেই ৫ মে, আবার ফিরে এসেছে!
গৌতম দাস

০৫ মে ২০২৩
https://wp.me/p1sCvy-4pZ

 

 

 

সেই ৫ মে, আবার ফিরে এসেছে! আজ ৫ এর ২০১৩ এর দশম বার্ষিকী!
অনেকে যেটাকে শাহবাগ বনাম শাপলা, অথবা শাহবাগের বিরুদ্ধে শাপলার সমাবেশ বলে।
জমিদার হিন্দুর জমিদারি বন্দোবস্ত ব্যবস্থা ১৯৫১ সালে উচ্ছেদ হয়ে গেলে একারণে, জমিদার হিন্দুর রাজনৈতিক ক্ষমতা নিঃশেষ হয়ে গেলেও এর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক [Cultural] প্রভাব থেকেই যায়।
সেই কালচারাল প্রভাব – যা মূলত ইসলামবিদ্বেষ আর মুসলমান ঘৃণা চর্চার এক ভরপুর আধার – প্রগতিশীলতার নামে গড়ে উঠা শাহবাগের ততপরতার বিরুদ্ধে প্রথম সফল প্রতিরোধের দিন!

বৃটিশ আমলে জমিদারি হিন্দুর উত্থান ও আধিপত্য, ১৭৯৩ সালের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত এর জমিদারি আইনের পরে মোটামুটি ১৮০০ সাল থেকে ক্রমাগত রাজত্ব করতে উঠে চলেছিল। এর বিরুদ্ধেই প্রথম সবল ধাক্কা ও আমাদের বিজয় হল ১৯৪৭ সালের আগষ্টে্র ভারতভাগ নামে যা পরিচিত যার অপর নাম পাকিস্তান কায়েমে সফল হওয়া।  পাকিস্তান কায়েমের অনেক অর্থ তাতপর্য ব্যাখ্যা করা হয়েছে। নেতি ব্যাখ্যাও আছে দেখা যায়। তবে আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় অর্থ তাতপর্য হল, পাকিস্তান কায়েম হয়েছিল – মানে কোন আপোষ হয় নাই বলেই দেশ ভাগ হয়ে গেছিল। আর তা হয়েছিল বলেই এরপরে সহজেই জমিদারিব্যবস্থা উচ্ছেদ সম্ভব হয়েছিল।
এই ধারাবাহিকতায় ১৬ মে ১৯৫১ সালে আইনগতভাবে জমিদারি আইন উচ্ছেদ করে দেয়া হয়েছিল। আইনি ভাষায় যা “পূর্ববঙ্গ জমিদারি অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন, ১৯৫০” নামে পরিচিত দেখুন বাংলাপিডিয়াতে । আইনটা ইংরাজিতে দেখতে এখানে East Bengal State Acquisition and Tenancy Act 1950 ক্লিক করেন।  পাকিস্তান কায়েমের ফলে এভাবে সবচেয়ে বড় অর্জন হল পুর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক সংসদে বসে এই জমিদারি উচ্ছেদ আইন পাস করতে সক্ষম হওয়া। তাতে কমিউনিস্টেরা যতই জোরগলায় মিথ্যা-ব্যাখ্যায় বলুক না কেন যে ধর্মের ভিত্তিতে রাষ্ট্র কায়েম করেই নাকি পাকিস্তান কায়েম হয়েছিল।
অথচ তারা স্বীকার করতে চায় না যে এই একই পাপ করার রাস্তা তো কংগ্রেসই আমাদের দেখিয়েছিল; যেটা কমিউনিস্টেরা চেপে যায়।  কংগ্রেস কী আমাদেরও আগে একই কাজ করে নাই?  আর আমাদেরও একই পথে যেতে বাধ্য করে নাই? তাঁরাই কী ১৮৮৫ সালে ধর্মের ভিত্তিতেই এক হিন্দু-জাতিরাষ্ট্রের ভারত কায়েম করতে – “কংগ্রেস” [যার ফর্মাল নাম “ইন্ডিয়ান জাতীয় কংগ্রেস”] নামে দলের জন্ম দেয় নাই!  আর আমাদেরকে সেই উপেক্ষা থেকেই কী ১৯০৬ সালে মুসলিম লীগের জন্ম হয় নাই!!! তবে পাকিস্তান কায়েমে যতটুকু যা আমাদের ভুল [যেমন ধর্ম, ভাষা বা যেকোন ভিত্তিক জাতিরাষ্ট্রের ভুল] ছিল তাতে কংগ্রেসের ভারত কায়েমেও ততধিক ভূল। আর সেক্ষেত্রে মোদির হিন্দুত্ববাদের বিজেপির ভারত? তাকে কী বলবেন? এক্ষেত্রে প্রগতিবাদীরা বাকশুণ্য, কেন?  এটাকেই তো নিরেট ইসলামবিদ্বেষ আর দগদগে মুসলমান ঘৃণা বলছি!  জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল গতবছর অক্টোবরে আন্তোনিও গুতেরেজ ভারতে  এসে কঠোর ভাষায় প্রকাশ্যে ভারতের মুসলমান-ঘৃণা চর্চার বিরুদ্ধে সমালোচনা আর সাবধান করে গেলেন। প্রতিক্রিয়ায় ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বিরাট বিরাট প্রতিশ্রুতি শুনিয়েছিল নিজেই এক মামলা ডেকে নিয়ে। অথচ এখন বিকার নাই।  কিন্তু এখন কোথায় সেই প্রতিশ্রুতি? দ্যা কেরালা স্টোরি নামে বিদ্বেষমূলক ও মনগড়া কাহিনীতে গড়া সিনেমা রিলিজের বিরুদ্ধে বাধা দিতে সুপ্রিম কোর্ট ও কেরালা হাইকোর্ট নিঃশ্চুপ। তারা এখন সিনেমা বানানোর খরচ  যেন ঠিক মত উঠে আসে তোলা হয় তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।  কোর্ট আসলে বলছে সিনেমার বাজার ঠিক করবে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হবে কিনা। ‘Market will decide’ — SC, Madras HC refuse to stay release of ‘The Kerala Story’ অথবা বলতে চাইছে,  নির্বাচনের আগে মুসলমানবিরোধী হিংসা বিদ্বেষ এর ঝড় তুললে কোনই অসুবিধা নাই!

নিজেকে কমিউনিস্ট বলে দাবি করতে এদের ভাল লাগে মানে, যেটা লতিফ সিদ্দিকীর ভাষায় “কমিউনিস্ট মাড়ানি” তা এদের হতে খুব ভাল লাগে; অথচ জমিদার শ্রেণীকে উচ্ছেদের বিরোধীতা করা এরা কোন কমিউনিস্ট???  বাংলাদেশে এরাই বা এটাই প্রগতিশীলতা!!! এনিয়ে আমার আগের দুপর্বে লেখা আগ্রহিরা পড়তে পারেন।

 নুন্যতম অর্থনীতি জ্ঞান থাকলে এরা বুঝত জমিদারি মালিকানা ব্যবস্থার উচ্ছেদ ছাড়া কোন দেশের অর্থনীতি গড়া, ভিত্তি স্থাপন সম্ভব নয়।  এবং সেটা অবশ্যই ক্যাপিটালিজমের প্রথম পদক্ষেপ। তাতে এই ক্যাপিটালিজম বলতে যেকোন ধরণের ক্যাপিটালিজমই হোক না কেন! তাতে কমিউনিস্টদের পছন্দের রাষ্ট্রীয় ক্যাপিটালিজম [State Capitalism; যেটাকে তারা সমাজতন্ত্র নামে ডাকে] সেটা হোক অথবা মালিকানা ভিত্তিক স্বাভাবিক ক্যাপিটালিজম – যেটাই বুঝেন না কেন – বটম লাইন হল, যে পথেই যান  জমিদারি মালিকানা ব্যবস্থার উচ্ছেদ আপনাকে করতেই হবে এটাই হল কলোনিমুক্ত স্বাধীন দেশে নিজ অর্থনীতি সাজানোর প্রথম পদক্ষেপ। সমাজের সবাইকে কাজের সংস্থান দিবার মত একটা অর্থনীতি চাইলে আপনাকে  জমিদারি মালিকানা ব্যবস্থার উচ্ছেদ থেকে শুরু করতে হবে। অথচ জমিদার হিন্দুর স্বার্থ হল ঠিক এরই বিরুদ্ধে; তারা এর ঘোরতর বিরোধী। আর এই জমিদার হিন্দুর কায়েমিস্বার্থ ও আধিপত্যের সমাজ ও চিন্তাকেই প্রগতিশীলতা বলে এক কমিউনিস্ট রাজনীতি বাংলায় যাত্রা শুরু করেছিল। কেন জমিদারি উচ্ছেদ বাংলাদেশের  অর্থনীতির মৌলিক ভিত্তি গড়ার জন্য জরুরি ছিল তা জানতে প্রিয়া সাহা ইস্যুতে আমার পুরানা দুপর্বে লেখা এখানে  দেখতে পারেন। এতে বুঝা যাবে কেন কোন কৃষি সংস্কার মানে জমিদার মালিকানা  এই মালিকানার ধরণ উচ্ছেদ না করলে কোন শিল্পায়ন গড়ে উঠবে না। সকলকে কাজ দিবার মত অর্থনীতি হবে না।

অথচ কমিউনিস্টেরা নাকি মুখ্যত শ্রেণী সংগ্রামের রাজনীতি করেন বলে দাবি করেন। তাহলে জমিদার হিন্দুর জমিদারিব্যবস্থা রক্ষার কাজ কিভাবে কমিউনিস্টদের প্রগতিশীলতা হয়??? এই জমিদার হিন্দু একই সাথে তাল দিয়ে প্রজা-হিন্দুদেরও কালচারালি তাদের স্বার্থপক্ষ হতে বুঝিয়ে নিজ জমিদারি স্বার্থের পক্ষে সামিল করেছিল। এর ফলাফলে সাধারণ হিন্দু বা প্রজা-হিন্দু্রাও জমিদার হিন্দুর  (যা কার্যত জমিদারিব্যবস্থা রক্ষার) পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। জমিদারি মালিকানা নিয়ে মুসলমানদের বিরুদ্ধাচারণকে সাধারণ হিন্দু বা প্রজা-হিন্দু্রা হিন্দু-বিরোধিতা জ্ঞান করত।  এটা ছিল আসলে,  প্রজা-মুসলমানদের উপর প্রজা-হিন্দুদেরকে কালচারাল শ্রেষ্ঠত্ব দেয়া ও এই জাত-শ্রেষ্ঠত্বের ভাবনা মাথায় ঢুকানোতে প্রজা-হিন্দুরাও কালচারালি  জমিদার হিন্দুর  জমিদারিব্যবস্থা রক্ষার পক্ষে লাঠিয়াল হয়ে যায়। আগ্রহীরা আরো পড়ে দেখতে পারেন আমারই ২০১৬ সালে লেখা – হাজী শরীয়তুল্লাহ ও গণ-প্রতিরোধ। 

এরই পরিণতি হল, দেশভাগের পরে মূলত ১৯৫০ সালের পরে দেশত্যাগের কালে  প্রজা-হিন্দুরা পুর্ব-পাকিস্তানে (বাংলাদেশে) থেকে যেতে পারে নাই। সামাজিক এনিমিটি আগেই তৈরি হয়ে গেছিল। কারণ বহু আগেই তারা প্রজা-মুসলমানেদের থেকে নিজেদেরকে বিচ্ছিন্ন [alien] মানে এক সামাজিক বিচ্ছিন্নতা রচনা করে ফেলেছিল।   জমিদার হিন্দুর স্বার্থ আর সাধারণ হিন্দু বা প্রজা-হিন্দুর স্বার্থ যেনবা এক এই হুদাই ভাবনায় এমন ভিত্তির উপর দাঁড়ানো লাঠিয়াল-গিরিতে তারা দেখিয়ে ফেলেছিল তারা যেন জমিদার স্বার্থেরই লোক – এমন মনোভাব আগ থেকেই বলে ও ভেবে ফেলার জন্য বাংলাদেশে তারা থেকে যেতে পারে নাই।

সবচেয়ে বড় কথা জমিদারি উচ্ছেদ আইনে তো  কেবল প্রজা-মুসলমানদেরকেই  নয়াভাবে খাজনা দেয়া সাপেক্ষে জমির মালিক করে দেওয়া হয় নাই। বা ঐ আইনে কেবল মুসলমানেরাই সুবিধা পাবে, হিন্দুরা নয় একথা বলে তো লেখা নাই। সকল প্রজাই এই সুবিধা পেয়েছে বা পাবার যোগ্য ছিল। কাজেই হিন্দু-প্রজারাও একই সুযোগে  ‘নয়াভাবে খাজনা দেয়া সাপেক্ষে’ জমির মালিক হয়েছে। তবু কালচারালি তারা জমিদার হিন্দুর সাথে সংযুক্ত বা এটাচড [Cultural attachment] – এই বোধের কারণে এটা ক্রমশ তাদের জন্য দেশত্যাগই একমাত্র সত্য ও পরিণতিতে নিয়ে গেছে। এরই কাফফারা বা খেসারত হিশাবে বাংলাদেশের হিন্দুরা এখন ভিকটিম-হুড বা সংখ্যালঘু ইত্যাদি যা পায় সে বয়ান আকড়ে ধরে থাকতে চেষ্টা করে চলছে আজও।

তবে এখানে আমাদের সকলেরই কিছু গুরুত্বপুর্ণ করণীয় আছে। পুরানা প্রজা-হিন্দু ভুল করেছে বলে আমরা এখন তাদের প্রতি কোন বিদ্বেষ বা বৈষম্যমূলক আচরণ করতে পারিনা। তাতে তাঁরা একালে হিন্দুত্ববাদে উতসাহিত হোক কিংবা মোদির কোলে উঠে তাঁকেই ত্রাতা মনে করুক না কেন; আমাদের কাজ কর্তব্য আমাদের করে রাখতে হবে। তা হল, ধর্ম-নির্বিশেষে বা এমনকি শাঁওতাল বা পাহাড়ি ট্রাইব বা উপজাতি নির্বিশেষে বাংলাদেশের সকল নাগরিকই একই এবং সমান অধিকারের নাগরিক এই ভিত্তিতে ব্যবহারিক রাষ্ট্র তাড় আইন প্রয়োগ ও চর্চায় তা বাস্তবায়ন করতে হবে, প্রতিফলিত করতে হবে। এমন একটা ইনসাফভিত্তিক সমাজ ও রাষ্ট্রের দিকে যেতে হবে। এ’দায় আমাদের সকলের; তাতে পুরানা বিবাদে আমাদের অবস্থান ভিন্নতা যাই থাক। তবেই একটা নয়া বাংলাদেশের স্থিতিশীল সমাজ আমরা পাব।  পুরানা কোন বিবাদ-বৈষম্য জিইয়ে রাখলে এটাই আগামিতে নানা দিকে আমাদের রাষ্ট্র ও সমাজে অস্থিতিশীলতার বড় কারণ হবে।  এটাই সম-সুযোগের [Equal Opportunity], সকলকে নিয়ে [inclusive] এক বাংলাদেশ গড়ার শেষ সুযোগ – যা আমরা যেকোন মূল্যেই হারাতে পারি না।

তাহলে আজ ৫ মে এর তাতপর্য কী?
এদিন থেকেই আমাদের বুঝতে আর বাকি থাকে নাই প্রগতিশীলতা ও তাদের কথিত সেকুলারিজম আর কমিউনিজম কী জিনিষ। শাহবাগ আমাদের চিনিয়েছে প্রগতিশীলতা আর কমিনিজম এর নামের আড়ালে এটা ইসলামবিদ্বেষ আর মূসলমানের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানোর পরিকল্পিত কাজ। যা আমরা হয়ত আগে তত খেয়াল করি নাই। এটাই জমিদার হিন্দুর অসমাপ্ত আধিপত্যকে কালচারাল মোড়কের আড়ালে আবার প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ। এটাই একালে ভারতের রাজনৈতিক ও কালচারাল আধিপত্য যেটাকে বাংলাদেশের উপর আবার জেঁকে বসানোর আমেরিকার সহায়তার নয়া উদ্যোগ। তাই ৫মে এর প্রতিরোধ ছিল এর সম্মিলিত বিরোধিতার দিন, একে সমূলে উপড়ে ফেলার প্রচেষ্টা – এই আত্ম-সচেতনতার দিন!
জমিদার হিন্দুর উত্থান ও আধিপত্য ও স্বার্থকে বিশেষত এর রাজনৈতিক দিকটাকে আমরা উতখাত করতে পেরেছিলাম পাকিস্তান আমলে, বিশেষ করে ১৯৫১ সালে। কিন্তু প্রগতিশীলতার নামে কমিউনিজমের নামের আড়ালে এর সাংস্কৃতিক উপস্থিতি ও আধিপত্য আমাদের সমাজের উচ্চ-অংশ ও শিক্ষিত অংশের মধ্যে কালচারালি টিকেই ছিল, এখনও আছে। আর এভাবেই জমিদার হিন্দুর উত্থান ও আধিপত্য ও স্বার্থ সব বিনষ্ট হয়ে গেলেও এটা কালচারালি-সাংস্কৃতিকভাবে টিকে থাকার চেষ্টা করে গেছে।

আর এর বিরুদ্ধে প্রথম সফল ও সদর্প প্রতিবাদ ছিল শাপলা সমাবেশ। শাহবাগের বিরুদ্ধে শাপলা সফল কালচারাল প্রতিবাদ। এখান থেকেই আমরা প্রথম টের পাই এখনও আমাদের অসম্পুর্ণ কাজ কী এবং আমাদের অর্জন কী কী ছিল।
এখন এর মূলনীতিটাকে এভাবে হয়ত বলা যায়, বাঙালি মুসলমান স্বাধীন। ১৯৭১ সালেও সে বাংলাদেশি হিন্দুর সাথে মিলে নয়া রিপাবলিক গড়েছে। রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম করেছে। কিন্তু কোনভাবেই এর অর্থ এমন নয় যে এখন বাঙালি মুসলমানকে (এবং সেই অর্থে বাংলাদেশের হিন্দু বাঙালিকেও)  কলকাতার বাঙালিকে অনুসরণ করে বাঙালি হতে হবে বা বাঙালিত্ব শিখতে হবে; ইসলামবিদ্বেষ বা মুসলমান-ঘৃণা করতে শিখতে হবে।

বাঙালি মুসলমান কেউ চাইলে মর্ডান জীবন যাপনে অভ্যস্ত হতে চাইলে হতেই পারে। কিন্তু কলকাতা এখানে বাঙালির মুসলমানের (বা সেই অর্থে বাঙালি হিন্দুরও) মডেল (কথিত সেকুলার বা ইসলামবিদ্বেষী) হতে পারবে না। এখানে সচেতনতা লাগবে।  এই নয়া সচেতনতা নিয়ে সামনে আগালে নয়া রাষ্ট্র-রিপাবলিকে ইসলামি-ওরিয়েন্টেড মানুষ [যাদেরকে সাধারণভাবে অনেকে ইসলামিস্ট বলে থাকে ]  এরাও মর্ডান বাঙালি মুসলমানকেও জায়গা করে দিবে।   বলাই বাহুল্য শর্ত একটাই যে সে কলকাতা-অনুসারি বাংলাদেশি মুসলমান বা ঘৃণা-বিদ্বেষী বাঙালিয়ানার চর্চা করবে না। এককথায়, কলকাতায় গড়ে উঠা বাঙালি কালচারাল চোখ ও অভ্যাসকে আমাদের সীমানার বাইরে রেখে আসতে হবে। তাতে কলকাতার প্রতি আমাদের কোন বিদ্বেষ নাই, তারা তাদের কালচার নিয়ে ভাল থাকুক, যা হতে চায় হোক। মোদির হিন্দুত্ববাদকে নিয়ে যা করতে চায় করবে। আমাদের বলার নাই। কেবল মনে রাখতে হবে তারা আমাদের অনুসরণীয় বাতিঘর নয়! তাদের “বিদ্যাসাগরেরা” কেবল তাদেরই থাকুক!

৫মে এর আত্মত্যাগ যেন ভুলে না যাই!  এর তাতপর্য আমাদের মধ্যে জিন্দা থাকুক! আরও বিকশিত, উদ্ভাসিত হোক!

last Edit – 06:35am 06 May 2023


গৌতম দাস
রাজনৈতিক বিশ্লেষক

4 thoughts on “আজ সেই ৫ মে, আবার ফিরে এসেছে!

  1. সাংঘাতিক লিখেছেন গৌতম দা। অনেক কষ্ট করে, অনেক যত্ন নিয়ে। সত্য বলার সাহস
    আপনার অনেক দিনের, যখন থেকে নয়াদিগন্ত- তে লিখেছেন। ভালো লাগে আপনি একজন
    ‘বাংলাদেশী’ হিসাবে সত্য তুলে ধরেন। একটা সুদৃঢ় সমাজ গড়ে তুলতে ইনসাফ বা
    ন্যায়বিচার অপরিহার্য শর্ত। সেই সমাজে আমরা সবাই থাকব মুসলিম, হিন্দু,
    আদিবাসী, উপজাতি সবাই তাদের অধিকার নিয়ে।

    ভালো থাকবেন। মন থেকে দোয়া করি আপনি ভালো থাকেন, সুস্থ থাকেন আর নিরাপদে
    থাকেন।

    নাসিম

    Liked by 1 person

  2. স্যার স্যার আপনার আইডি কি অফ আছে নাকি?
    ফেসবুক এ আপনার আইডি পাওয়া যায়না।

    Like

Leave a comment