ইমরানের পাকিস্তানে ডোনাল্ড ল্যু, বাইডেনদের অর্জন!
গৌতম দাস
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
https://wp.me/p1sCvy-5nT
ডোনাল্ড লুর সঙ্গে পাকিস্তানি দূতের বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রিত্ব হারান ইমরান
“গণতন্ত্র ও মানবাধিকার” মানে আমেরিকায় ডেমোক্রাট প্রেসিডেন্ট বাইডেনের “গণতন্ত্র ও মানবাধিকার” এর বোলচালের পররাষ্ট্রনীতিটাই ফুটা হয়ে গেছে। একেবারেই ন্যাংটা হয়ে যাওয়া যাকে বলে! আমাদের দেশের সরকারবিরোধীরা এদের বিশ্বাস করে যেভাবে ঠগেছে, লুট হয়ে গেছে সে তো গেছেই। তবে বাইডেন প্রশাসন এখন পাকিস্তানের ঘটনাবলীর পরে একেবারেই ন্যাংটা হয়ে পথচলা শুরু করেছে – তা সন্দেহাতীত বলা যায়। আসলে এবার হামাস যোদ্ধাদের প্রতিরোধের সময় থেকেই বাইডেনের অবলীলায় ইসরায়েলের নেতানিয়াহুর পক্ষ নিয়ে সর্বতোভাবে হাসপাতাল পর্যন্ত গুড়িয়ে দেয়াকে সমর্থন করা থেকে বলা যায় বাইডেন প্রশাসন ফুটা হওয়া স্পষ্ট হয়ে গেছে; তাঁর গণতন্ত্র ও মানবাধিকার এর ভুঁয়া বোলচালসহ-ই! এরা হাসপাতাল পর্যন্ত গুড়িয়ে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার এর সৈনিক হতে চেয়েছেন!
বলেছিলাম বাংলাদেশের মানুষকে পরিত্যক্ত করে ফেলে পালানোতে আমেরিকান পরিণতি হবে কেবল বাংলাদেশ না সারা এশিয়া থেকেই “আমেরিকা আউট” হয়ে যাবে। শুরু হয়েছে!!!
বাংলাদেশের পরে প্রায় একই সুতাতে একইভাবে তা ঘটে গেছে বার্মায়। সেখানেও নিয়মিত চাপা মারা আর বার্মা এক্টের হুমকির শেষ পরিণতিও আমেরিকার পলায়ন বা হাত গুটিয়ে নেয়া! আর তাতে এখন হাহাকার উঠেছে। বিশেষ করে তা সবচেয়ে বেশী দেখা যাচ্ছে বার্মার সিভিল নেত্রী সু চিদের ঘরে। তিনি এতই নোবেল হয়ে উঠেছিলেন যে কেবল মুসলমান বলে লাখ লাখ রোহিঙ্গাদের বার্মা থেকে জেনারেলেরা খেদায় দিয়েছে, উদ্বাস্তু করে দিয়েছে। অথচ এই নোবেল-ধারী নেত্রী সু চি তিনি এর একটু নিন্দাও করতে পারেন নাই। অথচ তাকেই এখন “গণতন্ত্র ও মানবাধিকার” এনে দিবেন বলে সমর্থন জানিয়েছিলেন বাইডেন! অথচ সেই সু চির অবস্থা এখন বাংলাদেশের বিরোধীদের মত তবে – সম্ভবত আরো খারাপ যা একেবারে তাকানো যায় না অবস্থা! নিউইয়র্ক টাইমস এনিয়ে এক আর্টিকেল ছেপেছে তাতে দেখা যাচ্ছে নিজেই নিজেদের দুর্দশার জন্য এরা এখন নিজেদেরকে নিয়েই টিটকিরি দিচ্ছে। লেখার শিরোনাম “Fighting to Govern Myanmar, From a Teeny Office in Washington”। । আর সারাংশে লিখেছে যাদেরকে এখন –“……has to battle global apathy and ignorance as it struggles for recognition. – তাদের রাজনৈতিক দুর্দশার প্রতি দুনিয়ার নুন্যতম সহানুভুতি আর অবজ্ঞা পেরিয়ে এরা একটু করুণা আনার জন্য লড়ছে!
এছাড়া আমার এর আগের বার্মা নিয়ে লেখায় দেখিয়েছি – ডেভিড স্কট, তিনি বলছেন, “একটা ভুল আশা ছড়িয়ে পড়েছিল যে থাইল্যান্ডের মাধ্যমে ইউক্রেনের মতো মিয়ানমারকে অস্ত্র সরবরাহ করবে যুক্তরাষ্ট্র”। বাইডেন বার্মাকেও ফেলে পালিয়ে যাওয়াতে এর খেসারত দিচ্ছে এরা এখন সকলে!
ইতোমধ্যে আরেক দেশ এর শিকার – এবার তা হতে যাচ্ছে পাকিস্তান। তবে পাকিস্তানের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা উলটা। মানে এখানে ব্যাপক জনসমর্থনে থাকা ইমরান-কেই উতখাত করা বা ক্ষমতায় ফিরতে না দেয়াই ডোনাল্ড ল্যু-দের টার্গেট। মানে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে যদি আমেরিকার অন্তত মুখে বলা টার্গেট হয় একটা ফেয়ার ইলেকশন; তবে পাকিস্তানের বেলায় এর উলটা। নির্বাচনে কারচুপি-সহ নির্বাচনে ইমরান ও তার দলের অংশগ্রহণ ঠেকানো সবকিছু করে হলেও পাকিস্তানের জনগণের ম্যান্ডেট যেন ইমরানের পক্ষে না যায় এটাই হল ডোনাল্ড ল্যু-বাইডেনদের টার্গেট! ইমরানকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য সামরিক বাহিনীকে দিয়ে আমেরিকা হেন নিপীড়ন নাই যা প্রয়োগ করে নাই। এমনকি গত ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ইমরান আর তার দল যেন নির্বাচনে অংশ নিবার অযোগ্য থাকে জেলে থাকে; দল নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে ইত্যাদির বাধা তৈরিতে সবকিছু করেছে। এমনকি এখন ভোটগ্রহণ শেষ হবার পরে ৫২ ঘন্টা হয়ে গেছে তবু ফলাফল ঘোষণা এই কেবল শেষ করা হয়েছে!
সবশেষে বারবার বন্ধ করে রাখা কারচুপির ফলাফল ঘোষণা, এখন যেটা প্রকাশ করেছে তাতেও দেখা যাচ্ছে – ইমরান ও তার দলের লোকেরা শেষে দলের হয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে না পেরে সবাই দলের নির্দেশে স্বতন্ত্র-প্রার্থী হিসাবে দাড়িয়েছিল। আর তাতে এমন স্বতন্ত্র প্রার্থীরাই সর্বসাকুল্যে সংখ্যাগরিষ্ট ১০২ টা আসন পেয়েছে। যেখানে দুই প্রমাণিত চোর ভায়ের দল এই কারচুপির নির্বাচন করেও তাদের মুসলিম লীগ নওয়াজ পেয়েছে ৭৫ আসন আর বিলাওয়াল ভুট্টো পেয়েছেন ৫৪ আসন।
এই ফলাফল ডোনাল্ড ল্যু-বাইডেনের কথিত “গণতন্ত্র ও মানবাধিকার” এর পররাষ্ট্রনীতির আসল রূপ উদাম করে দিয়েছে। ডোনাল্ড ল্যু-বাইডেন ন্যাংটা হয়ে গেছেন।
যে অভিযোগে ইমরান ও তার দলের নেতাদের জেলে রাখা হয়েছে, ইমরানকে সাজা দেয়া হয়েছে এই অভিযোগে এবং লোয়ার আদালতগুলোকে প্রভাবিত করেছে – দেখা যাক সেখানে অভিযোগ ঠিক কী ছিল!
প্রত্যেকটাই বেশ তামা্শা। আর এর প্রথমটা হল খোদ ডোনাল্ড ল্যু এর প্রতিশোধ নেয়া। পটভুমিটা হল, ইমরান ক্ষমতাচ্যুতির আগের ঘটনা সেটা। ল্যু আমেরিকায় পাকিস্তানের রাষ্ট্রদুত-কে এর কথোপকথনের সরকার ফেলে দিবার হুমকি দিয়েছিলেন। এর প্রমাণ সহ যে নোট তিনি ততকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরানের কাছে পাঠিয়েছিলেন ইমরান তা হাতে পেয়ে এবার সাংবাদিকদের কাছে ডেকে অভিযোগ আকারে হাজির করেছিলেন। বলেছিলেন, এই ডোনাল্ড ল্যু-রা পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সাথে আতাঁত করে তার সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্র করছেন। বাস্তবেও ব্যাপারটা তাই ঘটেছিল পরে দেখা গেছে!
পরে চোর ছোটভাই শাহবাজের সরকার এবারের নির্বাচনের আগে মামলা দেন যে পাকিস্তানী রাষ্টদুতের সেই নোট-চিঠি নাকি ইমরান আর অফিসে ফেরত দেন নাই। আর ঐ চিঠি যেহেতু সরকারি সম্পত্তি তাই এটা নাকি সরকারি গোপনীয়তা ফাঁস করে দেওয়া – এই হলো অভিযোগ । এটাই গোপনীয়তা ভঙ্গ বা [CYPHAR Case] বলেও পরিচিত। আরো জানতে আগ্রহিরা দেখেন এখানে আল-জাজিরার এই নিউজে। What is the cypher case that led to jail term for Pakistan’s Imran Khan? এই মামলায় ইমরানকে (সাথে সেসময়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকেও) দশ বছরের সাজা দেয়া হয়েছে।
পশ্চিমা বা আমেরিকান মুল্যবোধ বা ন্যায্যতাবোধঃ
পশ্চিমা দুনিয়ায় রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে আমেরিকাকে তুলনামূলক সবচেয়ে ফেয়ার দাবি করা মানে তুলনামূলক ভাবে বেশী ন্যায্যতা ও সৎ শাসনের কায়দা-কানুন ও মুল্যবোধ মেনে চলা বলে পশ্চিমাদের অনুমান! তাহলে পাকিস্তানে এখন কী দাঁড়ালো?
ইমরান ডোনাল্ড ল্যু এর বিরুদ্ধে একটা অভিযোগ এনেছিলেন প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায়। আর এতে, সাথে সাথেই আনুষ্ঠানিকভাবে বাইডেন প্রশাসন সেসময় অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। ভাল কথা, সেসব কূটনীতিক রেওয়াজ যদি মেনেও নেই তবে, এখন এর প্রতিশোধ নিতে ডোনাল্ড ল্যু কী করলেন??
তিনি পাকিস্তান সামরিক বাহিনীকে দিয়ে ইমরানকে ক্ষমতাচ্যুত করলেন। নওয়াজ-শাহবাজ দুভাইই প্রমাণিত দুর্নীতিতে ডুবে ছিল। নওয়াজ সাজা খাটা অবস্থায় অসুস্থতার অজুহাতে জামিন নিয়ে লন্ডনে পালিয়েছিলেন। আর শাহবাজ আরেক দুর্নীতির মামলা চলাকালীন অবস্থা। তবু শাহবাজ প্রধানমন্ত্রী পদে বসেছিলেন। অথচ পরে এই দুভাই-ই পাকিস্তানে একাউন্টিবিলিটি ব্যুরোকে প্রভাবিত করে দুভাই-ই বে-কসুর খালাশ নিয়েছে; আমাদের দুদক সমতুল্য প্রতিষ্ঠান হল পাকিস্তানে একাউন্টিবিলিটি ব্যুরো। যদিও অনেক ফারাক আছে। যেমন এই ব্যুরো মামলা দেয় এর জন্য নির্ধারিত করে রাখা ও প্রায় সংলগ্ন বিশেষ আদালতে। আর আমাদের ক্ষেত্রে এটা একেবারেই আলাদা আদালত, যা তুলনামূলক অর্থে ভাল!
সে যাই হোক, এর মানে ডোনাল্ড ল্যু এমন-ই দেউলিয়া অবস্থা যে “দুর্নীতিবিরোধি আর “গণতন্ত্র ও মানবাধিকার” এর প্রবক্তা ডোনাল্ড ল্যু-বাইডেন চক্র নিজ স্বার্থসিদ্ধিতে কত নিচে নামতে পারে এর প্রমাণ তৈরি করলেন। বিশেষ করে ডোনাল্ড ল্যু জিঘাংসা চরিতার্থ করতে ইমরানকে ক্ষমতাচ্যুত করেই থামলেন না। যে দালিলিক প্রমাণ দিয়ে তিনি ডোনাল্ড ল্যু-বাইডেনকে অভিযুক্ত করেছিলেন সেই দলিল প্রকাশ করে দিবার জন্যই তিনি কথিত পাকিস্তানি আর কথিত গোপনীয়তা ভঙ্গের অভিযোগ এনে উলটা ইমরানকেই ১০ বছরের সাজার বন্দোবস্ত করলেন। তাও এটা তারা করেছেন ৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের মাত্র দুসপ্তাহ আগে। কারণ নির্বাচন হলে ইমরান বিপুল জনসমর্থন নিয়ে ফিরে আসবেন তিনি আগেই টের পেয়েছিলেন। তাই এই শেষ মরিয়া আঘাত যেন ইমরান নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে, তাই অযোগ্য করে দেয়া হয় তাকে। আবার সাথে পিটিআই দলকে নিষিদ্ধ করার সাহস হয় নাই। কিন্তু দলের প্রতীক নিষিদ্ধ করে কার্যত এই দল যেন নির্বাচনে নিষিদ্ধ থাকে এই ব্যবস্থা করেছেন!
ইমরান- ল্যু এর সংঘাত শুরুঃ
গত ২০২২ সালের এপ্রিলে পিটিআই-এর ইমরান খান-কে ক্ষমতাচ্যুত করার কয়েকমাস আগে থেকেই মাঠে নেমেছিলেন ডোনাল্ড ল্যু। আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি বাইডেনের – দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী সেক্রেটারি অফ স্টেট। মানে সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী। যদিও তার আসল কাজ মানে তিনি হলেন এশিয়ায় বাইডেনের ইন্দো-প্যাসেফিক স্ট্রাটেজি [IPS] বাস্তবায়নের মূলকর্তা। অর্থাৎ এশিয়ার দেশগুলো থেকে – এদের উপর চীনের প্রভাব বা চীনের উপর নির্ভরতা পারলে শুণ্যে নামিয়ে আনেন – এরই মন্ত্রী তিনি। অথচ বাংলাদেশ, বার্মা আর পাকিস্তানে বাইডেন নীতি-পলিসি ইতোমধ্যেই পরাজিত। মানে একেবারে অকম্মা বলতে যা বুঝায়! যে এসাইমেন্ট তিনি বাসিডেন নিয়েছিলেন এর বাস্তবায়ন ছিল অসম্ভব, কারণ তা ছিল অবিবেচক টার্গেট, বাস্তবায়ন-অযোগ্য!
কিন্তু এত কিছু করেও ফলাফল? আবার নির্বাচনে কারচুপি করা সত্বেও ফলাফলে ইমরান ও তার দল সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মোট ২৬৩ আসনে নির্বাচনে পেয়েছে ১০২ আসন! আর ঠেকাতে পারেন নাই। এতে কী ডোনাল্ড ল্যু এর জিঘাংসা অনেক সুখ পেয়েছে? আমেরিকান বা পশ্চিমাদের নৈতিকতা, আইনের শাসন বোধ অনেক সুখ আর শান্তি পেয়েছে – মর্ষকামী সুখে সয়লাব হয়েছে? এতে কী ডোনাল্ড ল্যু, আমেরিকা বা পশ্চিমা মুল্যবোধের আর সভ্যতার ভ্যানিটির অনেক অর্জন, অনেক বিজয় আর অনেক অনেক সুনাম হয়েছে???
নাকি পাকিস্তান আজ – নিজ জনগণ এর ম্যান্ডেটে – এর জবাব দিয়ে বিজয়ী হয়েছে? পাকিস্তানে আজ – নিজ জনগণ এর ম্যান্ডেট-টাই বা কী; তা কী বাইডেন প্রশাসন পড়তে পারবে? যোগ্যতা দেখাতে পারবে নাকি এই সুযোগ তারা ইতোমধ্যেই খুঁইয়েছে!
আচ্ছা এই ডোনাল্ড ল্যু-বাইডেন প্রশাসনই কী আমাদের দেশে “গণতন্ত্র ও মানবাধিকার” প্রতিষ্ঠার বিরোধীদলের সহযোগী হতে চেয়েছিল? তাই আসলে থ্যাঙ্কস ডোনাল্ড ল্যু-বাইডেন প্রশাসন কিছুই করার সুযোগ নিতে পারে নাই। সেই চকোলেটের বিজ্ঞাপনের মত – “থ্যাঙ্কস ল্যু-বাইডেন, আপ লোগ কুছ না কিয়া” !!!
আমেরিকান রাজনীতি চর্চার রেওয়াজ অনুসারে কেউ যখন প্রেসিডেন্ট পদে দাঁড়ায় মানে তখনকার শুরু হওয়া তৎপরতায় যেমন, “প্রাইমারি নির্বাচনের”ও আগে থেকেই হবু প্রশাসন বা সরকারের ঘোষিত নীতি-পলিসি কী হবে তা নিয়ে কাজ করার সময় শুরু হয়ে যায়। আর তখন থেকেই যারা এই কাজগুলো করে তারাই পরবর্তিতে (প্রার্থী প্রেসিডেন্ট বিজয়ী হয়ে গেলে) নয়া প্রশাসনে মন্ত্রী বা নানান অফিসের কর্তাপ্রধান হয়ে যান। এই হিসাবে ডোনাল্ড ল্যু গত ২০২০ সাল থেকেই ইন্দো-প্যাসেফিক স্ট্রাটেজি [IPS] বাস্তবায়ন-সংশ্লিষ্ট মূলকর্তা হয়েছিলেন। মানে তিনিই কার্যত আইপিএস [IPS] মন্ত্রী! এখন আইপিএস বলতে আসলে কী বুঝব?
সোজা কথায় আইপিএস হল, এশিয়ায় বেশির ভাগ দেশে চীনের প্রভাব ছেয়ে গেছে। আর চীনের প্রভাব বলতে এসব গরীব বা অবকাঠামোর অভাবে থাকা গরীব ও মধ্য আয়ের দেশ নির্বিশেষে সবাই এমন অবস্থায় আছে বলে অবকাঠামো ঋণ পাওয়ার চাহিদা এশিয়ায় ব্যাপক! এজন্যই চীন আদরণীয়! এছাড়াও স্রেকটা দিক আছে। আশিয়ান দেশ [দশ দেশ ব্রুনাই দারুসসালাম, বার্মা, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনাম] মানে যারা পুর্ব এশিয়া বা খানিকটা দক্ষিণ-পুর্ব এশিয়া দেশ। অদের অনেকেই মধ্যম আয়ের ক্যাটাগরির দেশে পৌছে গেছে। কিন্তু তা হলেও এদের অবকাঠামো ঋণ চাহিদা এখনও বর্তমান। আর বিপরীতে বিশ্বব্যাংক বা এডিবি এরা গরীব দেশেই (মানে যারা বিশ্বব্যাংকের IDA ক্যাটাগরির ঋণ [যার সুদ মাত্র ০.৭৫% আর লম্বা ৪০ বছর পরিশোধের সীমা] পাবার যোগ্য) বেশী করে খাতক দেশ খুঁজতে মনোযোগী যেন। এছাড়া আরো বড় কারণ হল, গরীবদেশের ঋণ চাহিদা পরিমাণের দিক থেকে তুলনামূলক কম। ফলে বিশ্বব্যাংকও তার তুলনামূলক পরিমাণে-স্বল্প সক্ষমতা দিয়ে ঐ গরীব ক্যাটাগরির চাহিদাই ভাল কভার বা মিটাতে পারে। একারণেই নব প্রতিষ্ঠিত চীনা AIIB ব্যাংক আবার আশিয়ান মধ্য আয়ের দেশগুলোর কাছে বেশী গম্য বা আকর্ষণীয়। তাই এশিয়ায় চীনের প্রভাবের পিছনের কথা হল চীনের এই অবকাঠামো ঋণদান সক্ষমতা; এশিয়ায় যার চাহিদা ইউনিক! এটা আফ্রিকার চাহিদা থেকেও আলাদা! অথচ যেটা থেকে বলা যায় আমেরিকাই বহু আগেই নিজেকে প্রায় গুটিয়ে ফেলেছে।
কিন্তু আমেরিকার প্রেসিডেন্টেরা দেশের এই ঋণদান সক্ষমতা কমে যাওয়ার দিকে নজর দিতে নারাজ। তারা মনে করে অর্থনৈতিক সক্ষমতা কমেছে ঠিক আছে আর এটা অস্বীকারেরও উপায় নাই। কারণ, এনিয়ে আমেরিকার নিজেরই নিয়মিত স্টাডি, সার্ভে ও গবেষনার রিপোর্টের সারকথা ২০০৭ সাল থেকে এপর্যন্ত বারবার বলে যাচ্ছে যে চীনের সমক্ষমতা তাদের চেয়ে বেশী হয়ে যাচ্ছে অচিরেই চীন একনম্বর বড় অর্থনীতি হতে যাচ্ছে। আর এরই উলটা অনুপাতে আমেরিকান ঋণদান সক্ষমতা যা নিজ অর্থনৈতিক সক্ষমতারই আরেক প্রকাশ – এটা কমে নাই হব্বার পথে!
কিন্তু ওবামা-সহ তার পরথেকে সকল প্রেসিডেন্টই এটা অস্বীকার করেই নীতি-পলিসি নিয়ে গেছে। সেটা এই মনে করে যে অর্থনৈতিক সক্ষমতা নাই তো কী হয়েছে আমেরিকার রাজনৈতিক (চাপ তৈরির সক্ষমতা) ও সামরিক সক্ষমতা (এখনও চীনের চেয়ে ছয়গুণ বেশী) আছে সেটাই তারা ব্যবহার করেও অনেকদিন চীনের চেয়ে বড় প্রভাবের দেশ হয়ে থাকতে পারবে। কিন্তু আমেরিকার অর্থনৈতিক সক্ষমতার অভাব ও ক্রমশ নাই পয়ে পড়া, এটা কী রাজনৈতিক ও সামরিক সক্ষমতা দিয়ে পূরণ সম্ভব? এই মুখ্য প্রশ্নটাই ওবামাসহ সকলএই একেবারেই এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করে যাচ্ছে আর বারবার পরাজিত হয়ে আসছে। ওবামার প্রশাসনের (২০০৯-১৬) বেলায় তাদের এমন সামরিক-কেন্দ্রিক নীতি-পলিসির নাম ছিল এশিয়ান পিভোট [Asian PIVOT] যেটা মুখ থুবড়ে পরে হারিয়ে গেছে। এর আকাশ্চুমী আকাঙ্খায় আমেরিকার গড়া অষ্টেলিয়ায় নির্মিত সামরিক ঘাঁটিতে “গরু চড়ছে” অবস্থা। বাইডেনের এবারের প্রচেষ্টাটাও তেমনি আরেক টা। আইপিএস বা “গণতন্ত্র ও মানবাধিকার” আর ওদিকে স্যাংশন আরোপ বা ডলারে আন্তর্জাতিক ব্যবসা চলতে বাধা ইত্যাদি ছিল এর বৈশিষ্ট। যেগুলা ছিল রাজনৈতিক চাপ (গণতন্ত্র ও মানবাধিকার” আর ওদিকে স্যাংশন আরোপ ধরণের) ও সামরিক শক্তি (বার্মা এক্ট যেমন) দেখানো বৈশিষ্টের; মানে ঋণদান এই দিকটাই এখানে অফ! যা বাইডেন ক্ষমতায় জীবিত থাকতেই তিনবছরের মাথায় পরিস্কার যে তিনি সমূলে পরাজিত হয়েছেন। তবু ল্যু যেন জিদ্দি আর জিঘাইংসায় পরিপুর্ণ যে ইমরান কেন তাঁর কাপড় খুলে নিল – তাই ল্যু এর প্রতিশোধ চাই!
আমেরিকার কোন প্রেসিডেন্ট পাকিস্তানকে বুঝতে চায় নাই, এখন আরোই নাঃ
আমেরিকার কেউ পাকিস্তান বুঝতে চায় নাই। সব প্রশাসন ভেবেছে পাকিস্তান – এটা তো সেই ১৯৭০ সাল থেকে আমাদেরই! এখনো আমাদেরই। পুরানা দিনের বিস্তারে যাব না যা একালের মানে ওবামা আমলের এথেকে কিছু কথা! আমেরিকান প্রধান অপরাধ আত্মঘাতি আচরণ হল মালাক্কা প্রণালীর দিকে চোখ দেয়া।
মালাক্কা প্রণালী [Straits of Malacca] হল – চীনের আটল্যান্টিক বা ভারত মহাসাগর হয়ে যেসব পণ্য চলাচল এছাড়াও আরব সাগর থেকে তেল চীনের একমাত্র (পুর্ব-দক্ষিণ দিক সমুদ্রপথে খোলা) বন্দর দিয়ে প্রবেশপথের সবচেয়ে সংকীর্ণ এক অঞ্চল। এটা ইন্দোনেশিয়া আর মালয়েশিয়ার ভুখন্ডের মাঝের এক সংকীর্ণ জাহাজ চলাচল এরিয়া; যেটা পিরিয়েই কেবল চীনে পণ্য চলাচল সম্ভব। গত ২০০৮ সালে আমেরিকাই সবার আগে এই প্রণালী বন্ধ করে চীনের অর্থনীতিকে একটা সামরিক বাধা বা ধাক্কা দেয়া তৈরি করার দিকে মনোযোগ দিয়েছিল। অর্থাৎ চীনের অর্থনৈতিক উত্থান পালটা অর্থনীতি দিয়ে না এতে হার আশঙ্কা করে সামরিক দিকে একে ঠেলে দেয়ার এটা আমেরিকান পরিকল্পনা। [এনিয়ে বিস্তারে প্রমাণসহ আমার অন্তত দুটা পুরান লেখা আছে আগ্রহীরা দেখতে পারেন।]
কিন্তু আমেরিকার এই বোকা পরিকল্পনা থেকেই তাদের চেনা পাকিস্তান বদলে কোথায় চলে যাবে (ও এখন চলেই গেছে) দিকটা আমেরিকা দেখেছে বা টের পেয়েছে মনে হয় না। হলে এবারের ল্যু-বাইডেন ইমরানের পাকিস্তান নিয়ে আরেক বোকা পরিকল্পনায় আবার যেতো না।
ল্যু-বাইডেন এর পরিকল্পনা হল এশিয়াকে অন্তত চীনা (বিনিয়োগ) নির্ভরশীলতা ও প্রভাব থেকে মুক্ত করা তবে সেটা আমেরিকার রাজনৈতিক ও সামরিক সক্ষমতা দিয়ে। অথচ তারা খেয়ালই করে নাই যে পাকিস্তানে চীনা বিনিয়োগ কেমন ও পরিসর কত বিস্তৃত! শুধু গোয়াদর (গভীর সমুদ্র বন্দর কেন্দ্রিক) প্রকল্প যেটা চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর প্রকল্প (CPEC) নামে পরিচত এই প্রকল্পের পরিকল্পনায় তা প্রায় ৬৫ বিলিয়ন ডলারের। পর্যায়ের পরে পর্যায় হিসাবে এর বাস্তবায়ন চলছে। ইতোমধ্যেই ২৫ বিলিয়নের আশে পাশের কাজ সমাপ্ত। যেটা মূল পয়েন্ট এর নামে করিডোর শব্দটা কেন? আবার কেউ যেন কোন মিথ্যা প্রপাগান্দা না করতে পারে তাই পরিস্কার করে বলা যে এটা কোন রাজনৈতিক প্রকল্প বা রাজনৈতিক (মানে সামরিকও) করিডোর একেবারেই নয়। এটা অর্থনৈতিক করিডোর মানে যার উদ্দেশ্য একেবারেই বাণিজ্যিক! কিন্তু করিডোর কেন? এর ভিতরেই সবকথা লুকিয়ে আছে! অথচ খুব কম পাঠকই এশব্দের দিকে গুরুত্ব দিয়েছে। এমনকি ল্যু-বাইডেনও সেটা আমল করেছেন তা তাদের পরিকল্পনা দেখে মনে হয় না।
সাধারণভাবে অন্যদেশকে যখ নিজ ভুখন্ড ব্যবহার করতে দেয়া হয় কিছু শর্তে সেটাই ওদেশকে দেয়া করিডোর (Corridor)। এই করিডোরের একপ্রান্ত হল করাচি-বেলুচিস্তানের সমুদ্রসীমান্তের বন্দরে; আর এটা পাকিস্তানের বুক চিরে সবগুলো প্রদেশের ভিতর দিয়েই পাকিস্তান পার হয়ে পাক-কাশ্মীর পেরিয়ে চীনের জিনজিয়াং বা উইঘুড়ে প্রবেশ করেছে। আর এটা দিয়েই সাড়ে তিনদিকে ল্যান্ডলকড চীন (আর তা হিমালয়ের মত পর্বতমালায় ঘেরা) এবার পশ্চিম দিক থেকেও একেবারে আরব সাগরের গোয়াদর গভীর সমুদ্র বন্দরের মাধ্যমে সংযুক্ত হয়ে গেল। অর্থাৎ এটা দিয়ে চীনা পশ্চিম ভুখন্ডও বন্দরে প্রবেশের যোগ্য বা করিডোর পেয়ে গেল। তাই এটা চীনের কাছে যে সে করিডোর পাওয়া নয়। এটা চীনের কাছে অর্থনৈতিক সামরিক রাজনৈতিক সব অর্থেই যা প্রাপ্তি ঘটল তাতে এটা একা চীনের কাছেই এক স্ট্রাটেজিক প্রাপ্তি ও উপহার – যা অর্জলে চীন যদি বিনা পয়সায় পাকিস্তানে এটা গড়েও দেয় তাতেও তা চীনেরই লাভ – এমন উপহার এটা। কাজেই যারা চীন ঋণ দেয় ফাঁদে ফেলার জন্য, নাকি চুষে খাবার জন্য নাকি কাবুলিওয়ালা সুদী ব্যবসা করার জন্য ইত্যাদি বলে শতভাগ অবাস্তব ও মিথ্যা প্রপাগান্ডা করেছেন তারা এখন অফ যান! নিজ জ্ঞানবুদ্ধিকে এভাবে আর ন্যাংটা করেন না! এককথায় গোয়াদ্র বা (CPEC) চীনের জন্য স্ট্রাটেজিক প্রকল্প, এক পরে পাওয়া অমুল্য উপহার!
কিন্তু কেন এটা এত গুরুত্বের?
সেটাই হল, আমেরিকান খাউজানি – সবকিছুকে অপ্রয়োজনে লাড়াচাড়া দিবার আমেরিকান খাউজানিকে চীন নিজের জন্য আশীর্বাদ হিসাবে হাজির করে নিবার সুযোগ আর আমেরিকার দিক থেকে কাফফারা! আগেই বলেছি ২০০৮ সালে গায়ে পড়ে আমেরিকা মাল্লাকা প্রণালী আটকানো যায় কিভাবে মানে চীনের একমাত্র সমুদ্রগামি প্রবেশপথে প্রতিবন্ধকতা তৈরির বিরুদ্ধে চীনা পাল্টা জবাব। এতে চৈন পুব দিকের বন্দর তো রাখলোই পশ্চিম দিক দিয়েই সমুদ্রপথে প্রবেশের নয়া রাস্তা খুলে নিল!!
আর এথেকে পড়ে পাওয়া সুবিধা হল, পাকিস্তানে চীনের এই বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ থেকে পাওয়া পাকিস্তানের উপর প্রভাব!
এখন ল্যু-বাইডেন কী জবাব দিবেন যে এশিয়ায় চীনের প্রভাব ছুটাবেন, চীনা নির্ভরশীলতা নাই করে দিবেন আর এই লক্ষ্য এক ইন্দো প্যাসেফিক স্ট্রাটেজি খাড়া করে সফল করবেন, চীনকে বের করে দিবেন বা চীনা প্রভাবমুক্ত এশিয়া বানাবেন? কিভাবে? আপনারা সম্ভবত খেয়ালও করেন নাই পুর্বসুরি ওবামা মালাক্কা প্রণালি নিয়ে হাত ঢুকানোতে তারা নিজেদের কী ক্ষতি করেছেন – (CPEC) কী একটু চেয়ে দেখেন! এসব কিছু মুল্যায়ন করেছেন আগে? মনে হয় না। হলে অন্তত পাকিস্তানে চীনা প্রভাব ছুটানোর কথা স্বপ্নেও উচ্চারণ করতেন না!
তাই ল্যু এর ততপরতার পরিণতি ব্যক্তিগত জিঘাংসা চরিতার্থ করাতেই পরিণত হবে ছাড়া আর কী?
ইমরানের বিয়ে ইদ্দতকাল পার হয়ে করা হয়েছে কী না – সেটাই এখন ল্যু মহাশয়ের ভরসা! এটাই কী হবার কথা না! এটা তো ডোনাল্ড ল্যু এর জন্য বিরাট গৌরবের আর বিরাট এচিভমেন্ট! একেবারে পাহাড়সম অর্জন!! বেচারা প্রগতিশীল, সভ্য, কালচার্ড উচা মুল্যবোধের ডোনাল্ড ল্যু আপনি শেষ পর্ন্নত ইমরানকে ঠেকাতে না পেরেআপনাকে “ইদ্দতকাল তুলে” সাজার আয়োজন করতে হচ্ছে! বা! বা! আপনার রুচির প্রশংসা করতেই হয়! আপনারই বিজয় ঘটেছে! ল্যু-বাইডেন আপনারাই দেখাইলেন, যে কত্ত ক্ষমতাবান আপনারা!!
আর আমেরিকার জন্য শিক্ষা এটাই যে, যা পারবেন না অযথা তা লাড়তে যাবেন না!
যদিও পাকিস্তানে তাদের লাড়াচাড়া শেষ হয় নাই। ইমরানকে সরকার গঠন ঠেকাতে প্রমাণিত চোর নওয়াজ দাবি করছেন যে দল হিসাবে তিনিই জিতেছেন। মানে ইমরান বা পিটিআই জিতলেই তাঁর দলের চেয়ে বেশী আসন পেলেও তো ইমরান তো দল হিসাবে না স্বতন্ত্র হিসাবে জিতেছেন। অথচ ইমরানের দলের প্রতীক কেড়ে নিয়ে কার্যত দল শুণ্য করেছেন নওয়াজের ভাইরা ভাই ল্যু এর সৈনিক পাক-আর্মি! মানে নওয়াজ মিথ্যা ধারণা ছড়াচ্ছেন যে তাঁর দলই সবচেয়ে বেশী আসন-ধারী! এটা পুরাতাই আইনিভাবে মিথ্যা। কারণ, আইনত আনুষ্ঠানিক সব আসনের ফলাফল ঘোষণার পরের ৭২ ঘন্টা সময় পাওয়া যায়। এসময়ের মধ্যে স্বতন্ত্র বিজয়ীরা কোন দলে যোগ দিতে পারেন নয়তো নতুন দল গঠন করে তাতে যোগ নিতে সুযোগ ও সময় পাবেন!
আর দ্বিতীয়ত, নওয়াজের প্রধানমন্ত্রী হবার সুযোগ সমানে কমতেছে। কারণ, বিলাওল ভুট্টোকে প্রধানমন্ত্রী করতে রাজি না হল, নওয়াজ-ভুট্টোর কোয়ালিশন সরকার হবে না। অথচ ল্যু এর চামচারা ইতোমধ্যেই প্রপাগান্ডা শুরু করেছে যে নওয়াজ-ভুট্টোর কোয়ালিশন জোট সরকার হয়েই গেছে এমনকি কে কোন মন্ত্রী হচ্ছেন। এরই ছাপ দেখছি আমরা প্রথম আলো পর্যন্ত!
সর্বশেষ আপডেটঃ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, সন্ধ্যা সাতটা ১৮
গৌতম দাস
রাজনৈতিক বিশ্লেষক
goutamdas1958@hotmail.com

