ইন্ডিয়ান বিদেশসচিব মিস্রির চীন সফরের তাতপর্য
গৌতম দাস
২৪ জানুয়ারি ২০২৫
https://wp.me/p1sCvy-6fT
নিচের লেখাটা আজ (২৪ জানু.২০২৫) আমার ফেসবুক স্টাটাসে কয়েক ঘন্টা আগে লিখেছিলাম; পরপর লেখা দুইটা স্টাটাস যার শিরোনাম বা প্রথম লাইন হলঃ
১। ট্রাম্পের প্রথম অর্জন!
২। এখন বাংলাদেশে কী দেখব আমরা!
এদুইটা স্টাটাসকেই আরো গুছিয়ে এবং এডিট করে একটা ভাষ্য বানিয়েছি।
ট্রাম্পের প্রথম অর্জন!
ইন্ডিয়ার পররাষ্ট্র সচিব (২০২০ সালের পরে) এবার চীন সফরে (২৬-২৭ জানু. ২০২৫) যাচ্ছেন।
অর্থাৎ ট্রাম্প ইন্ডিয়াকে চীনের কোলে ছুড়ে ফেলে দিলেন, ক্ষুব্ধ মহিষের মত!
ইন্ডিয়ান পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের ভাষ্য হচ্ছে, চীন-ইন্ডিয়া সম্পর্ককে “পরের ধাপে উত্তীর্ণ করতে” ইন্ডিয়ান সচিব মিশ্রি চীনে গিয়ে রাজনৈতিক, ইকোনমিক, সহ সব ইস্যুতে কথা বলবেন।
……next steps for India-China relations, including in the political, economic, and people-to-people domains.
এখন, তামাসার দিকটা হল ইন্ডিয়ান মিডিয়াই জানাচ্ছে যে ইন্ডিয়ান জয়শঙ্কর কোয়াড ফটো সেশন [মানে যেখানে QUAD বা ইন্ডিয়া, জাপান, অষ্ট্রলিয়া, আমেরিকা এই চার পররাষ্ট্রমন্ত্রী একসাথে ট্রাম্পের শপথ অনুষ্টান শেষে একটা ছবি তুলেছিলেন] চীনকে তাইওয়ান আক্রমণের বিরুদ্ধে হুশিয়ারি দিয়েছিলেন; ঠিক এর পরদিনই ইন্ডিয়ার পররাষ্ট্র সচিবের এমন – চীন সফরের কথা ঘোষণা – এসেছে! ফলে বুঝতেই পারছেন, কোন হুমকির আসল অর্থ কী!!!
এখন তাহলে, বাংলাদেশ নিয়ে ট্রাম্পের নয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও এর সাথে জয়শঙ্করের কী আদৌও বিশ্বাসযোগ্য ও উল্লেখযোগ্য কোন কথা হয়েছে? মনে হয় না!!!!!!
ইন্ডিয়ান ভানভনিতার চাপাবাজি! যা ভান করে তাকায় থাকে একদিকে আর ব্যট চালায় আরেকদিকে! এসব আর কত????
ইন্ডিয়ান কথিত মিডিয়ার খোঁচাখুচির ঠেলায় চীনের পররাষ্ট্র মুখপাত্রও ভারতের মিশ্রির সফর কে “ওয়েলকাম” করে বলে জানিয়ে দিয়েছে।
China welcomes Indian foreign secretary’s visit, says FM spokesperson
By Global Times Published: Jan 24, 2025 04:27 PM
Moving to resume bilateral engagements after the disengagement at the India-China border?!
ইন্ডিয়া বলছে এটা চীনের সাথে তাদের সম্পর্ক ফিরে শুরু করাঃ
এখানে resume মানে Moving to resume শব্দ কয়টা খুব গুরুত্বপুর্ণ।
এখানে resume মানে Moving to resume শব্দ কয়টা খুব গুরুত্বপুর্ণ।
resume মানে ফিরে শুরু করা। কাকে ফিরে শুরু করা?
২০১৮ সালে প্রথম এক বিশেষ ফরম্যাটে শি-মোদির মিটিং হয়েছিল চীনের উহান শহরে যেটা [Wuhan Summit] নামে পরিচিত। ওর বৈশিষ্ট ছিল এই শীর্ষনেতা দুজন সরাসরি (কেবল দুজনই একজনকে করে নিজ নিজ অনুবাদক সাথে নিয়ে) আর এই মিটিং ছিল ইনফরমাল মানে, এই মিটিং যেকোন কথাই বলা যাবে যেকোন ইস্যু তোলা বা প্রশ্ন করা যাবে। কিন্তু সেখানে যা কথা হবে তা পরে কোথাও রেফারেন্স দেয়া যাবে না; যেন বলেই নাই এরকম। তাই এই মিটিঙ্গকে বলা হয় ইনফরমাল।
এনিয়ে আরো জানতে চাওয়া আগ্রহীরা আমার পুরানা লেখা দেখতে পারেন https://wp.me/p1sCvy-2w6
এর পালটা পরের বছর ইন্ডিয়াতেও একই ফরম্যাটে সভা হয়েছিল। কিন্তু সেই শেষ।
একারণে, ভারতের resume শব্দটার ব্যবহার গুরুত্বপুর্ণ!
উপরের এই ঘটনাবলীর প্রেক্ষিতে, এখন বাংলাদেশে কী দেখব আমরা!
উপরের এই ঘটনাবলীর প্রেক্ষিতে, এখন বাংলাদেশে কী দেখব আমরা!
ট্রাম্পের ক্ষমতায় আসা কেবল আমেরিকা বা চীনে না বরং, এটা সারা দুনিয়া জুড়েই এক বিরাট ওলট-পালটের ঘটনা এনে ফেলবার আগমনী বার্তা!
এই হল, বড় বা গ্লোবাল দিকটা!
আর সুনির্দিষ্ট করে বাংলাদেশে এর প্রভাব হবে আগামি ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৫ থেকে পরের মার্চ ২০২৫ মাসের মধ্যে আমরা যা কল্পনাও করি নাই, এমন এক ওলট-পালট এর বাংলাদেশ আমরা দেখতে যাচ্ছি!
যার মধ্যমনি ঘটনাটা হবে – ইন্ডিয়া বাংলাদেশের কেউ না; সেই বাংলাদেশের কেউ গোনায় ধরছে না ইন্ডিয়াকে!
ফলে সেই বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের পক্ষে-বিপক্ষের সকলেই (হবু ক্ষমতাসীন ভাবা রাজনৈতিক দল সহ) নয়া প্রেক্ষিতে নিজের অবস্থান ঠিক করে নিবেন বা নিতেই হবে!!
বিশেষ করে যারা ধরেই নিয়েছিলেন বাংলাদেশের রাজনীতি-ক্ষমতায় যেতে হলে ইন্ডিয়ার হাতে-পায়ে চুম্মা দিতেই হবে, মেলা কিছু ধরতে হবে – এরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। এমনকি তাদের রাজনৈতিক জীবন এখানেই ইতি হয়ে যেতে পারে!!!!!
তবে কেবল, একটা সাবধান বাণীঃ
আমরা কেউ যেন আবার ট্রাম্পভক্ত না হয়ে পড়ি!
ট্রাম্প নিজেও তার দেশে সবচেয়ে অজনপ্রিয় হয়ে পড়তে যাচ্ছেন আর সেটা ক্ষমতার প্রথম দুবছরের মধ্যেই! এখানে ধরে নিয়েছি তিনি তার নির্বাচনে দেয়া নীতি-পলিসিতেই আটকে থাকবেন। যেটা অর্থনীতিক জাতিবাদি আর ইমপেরিয়াল (পানামা দখলের হুমকির মত)। অতএব বুঝো সুজন!!!
অনেকে আরো বিস্তারিত করে লিখতে বলেছেনঃ
আমি বলেছিঃ দেখি! মনে রাখব আপনার কথা!
তবে আমার লেখার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা এসব হবু বা আসন্ন ঘটনাবলীর টাইমিং নির্দিষ্ট করে বলা – এটা খুবই কষ্টকর! তাই আমার কথাগুলো যদি অভিমুখ বা ট্রেন্ড [trend] কোন দিকে সেটা বুঝার দিক থেকে পাঠ করেন তবে আমার বক্তব্যের প্রতি সঠিক বিচার হবে। কারণ, একেবারে সুনির্দিষ্ট করে টাইম বলা খুবই কঠিন! যেমন, এখন ১৫ ফেব্রু-মার্চ মাস পার হয়ে গেলেও যদি এটা সেক্ষেত্রে এরপরেও আরো কয়েক মাস সময় নিতেই পারে। কিন্তু এটাই ঘটতে যাচ্ছে কথাটা অভিমুখ হিসাবে দেখেন তবেই আমার বক্তব্যের প্রতি সঠিক বিচার হবে।
তবে আমার লেখার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা এসব হবু বা আসন্ন ঘটনাবলীর টাইমিং নির্দিষ্ট করে বলা – এটা খুবই কষ্টকর! তাই আমার কথাগুলো যদি অভিমুখ বা ট্রেন্ড [trend] কোন দিকে সেটা বুঝার দিক থেকে পাঠ করেন তবে আমার বক্তব্যের প্রতি সঠিক বিচার হবে। কারণ, একেবারে সুনির্দিষ্ট করে টাইম বলা খুবই কঠিন! যেমন, এখন ১৫ ফেব্রু-মার্চ মাস পার হয়ে গেলেও যদি এটা সেক্ষেত্রে এরপরেও আরো কয়েক মাস সময় নিতেই পারে। কিন্তু এটাই ঘটতে যাচ্ছে কথাটা অভিমুখ হিসাবে দেখেন তবেই আমার বক্তব্যের প্রতি সঠিক বিচার হবে।
সাধারণভাবে আমি বেশির ভাগ সময় টাইমিং বলতে গিয়ে বেশি আগের সময় বলে ফেলি, ফেলতে হয়। যেটা বাস্তবে আরো পরে ঘটেছে। যেমন চীন-ইন্ডিয়া য়ুহান সামিট [Wuhan Summit] ২০১৮-১৯ সাল এর সময় থেকেই বলে আসছি যে ইন্ডিয়াকে আল্টিমেটলি চীনের কোলে উঠতেই হবে। কিন্তু সেটা ঘটার আলামত শুরু হচ্ছে এখন। তবে ২০৩০ সাল নাগাদ এটা একেবারেই ফকফকা স্পষ্ট হয়ে যাবে! অন্যভাবে বললে, ২০২৮ সাল পর্যন্ত ট্রাম্পের ক্ষমতাকাল। উনিই সম্ভবত শেষ চীনবিরোধী নীতির প্রেসিডেন্ট! এরপরে, এখন যেমন আমেরিকা- ইংল্যান্ডের সম্পর্ক তেমন (আমেরিকা অনুসারী ইউকে) হয়ে যাবে বা হতে শুরু করবে তখনকার চীন-আমেরিকার সম্পর্ক। মনে রাখতে হবে ইংল্যান্ড ছিল আমেরিকার আগের দুনিয়ার সবচেয়ে বড় নেতা, এই আলোকে!
কিন্তু সবসময়ই টাইমিং টা “বেশি আগের টাইমিং” হিসাবে বলে ফেলি বেশির ভাগ সময়ই; তা হলেও এর ঘটনা-অভিমুখ কোনদিকে এটা ক্রমশ যাচ্ছে এনিয়ে যেটা বলি সেটা মিলে ভালভাবে বেশিরভাগ সময়। তাই সাবধান আমাকে গণক যেন না বানানো হয়, মনে না করেন। আমি ঘটনা বিশ্লেষক মাত্র! আমি এমন একজন যার দুনিয়ার পুর্বের ইতিহাসের ঘটনার আলোকে একালের ঘটনার অনেক কিছুই ব্যাখ্যা করতে পারি; আগাম দেখতে পাই – এতটুকুই।
লেখকঃ
গৌতম দাস
রাজনৈতিক বিশ্লেষক
goutamdas1958@hotmail.com
আপডেটঃ জানুয়ারি ২০২৫


