“আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণে বাধা নেই”
গৌতম দাস
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ রাত ১০ঃ ৪০
https://wp.me/p1sCvy-65f

“আওয়ামী লীগের নাকি নির্বাচনে অংশগ্রহণে কোনো বাধা নেই” এমন ফতোয়া মন্তব্য করেছের নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সকালে রংপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয় মিলনায়তনে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার বিষয়ে মতবিনিময় সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
ছাগল দিয়ে ধান মারাই হয় না। এটা বহু পুরানা প্রবাদ। সেই অবস্থা হয়েছে বা করেছে বদিউল আলম মজুমদার। ছাগলের মুরোদ থাকে না ধান মারাই এর মেহনত করার! নামের পিছে একটা ডক্টরেট থাকলেই তিনি সবকিছু করা বা বলার যোগ্য হয়ে যান না। এটা তো উনার নিজেরই জানা না থাকার কোন কারণ নাই। এছাড়া যে ব্যক্তির নিজের সামর্থ সম্পর্কে কোন স্বচ্ছ ও নির্মোহ ধারণা থাকে না – এটা তো নিজের সাথেই অসততা!!! সব সমাজেই এমন ঘাটের মরা দুচারজন আসলে থাকেই!!!
তাবু ইউনুস সাব কথিত এক “নির্বাচন সংস্কার কমিশনের” প্রধান তাঁকেই বানিয়ে দিয়েছেন। যার পিছনের কারণ অথবা উনার এমন নিয়োগ পাবার যোগ্যতা ক্রেডেনশিয়াল কী? যোগ্যতা একটাই উনি বদিউল এক এনজিও দোকানের মালিক!!!
এমনিতেই, এনজিও জগতে যারা ম্যাটেরিয়াল বা বস্তুগত জিনিষ যেমন যেকোন ত্রাণ সামগ্রী বা জন্মনিয়ন্ত্রণ সামগ্রী অথবা এমন কি মাক্রোক্রেডিট (ক্ষুদ্র ঋণ) এমন ফিজিক্যাল জিনিষ বিলি করেন এরা তবু একটা “পদের” হয়। কিন্তু যারা চাপা মেরে খায় মানে যা মনে চায় কথা বেচে খায় ; যেমন ধরেন এককালে (আশির দশক পর্যন্ত) ভুমিহীন সংগঠিত করাও একধরেণের এনজিও ততপরতা মানা হত যা এখন একেবারেই বন্ধ; ওর পিছনের অর্থদাতা (ইউরোপীয় সোশাল ডেমোক্রাট রাজনীতিক মারা গেছে) নাই তাই। অর্থাৎ এরাও গরীব মানুষকে
বস্রংতুগত কোন ত্পুরাণ দিলেন না, চাপাবাজি ছাড়া। আর এর বদলে আমেরিকার সৌজন্যের আরেক ধরনের চাপা বিক্রেতা এনজিও হাজির হয়েছে। তিনারা নাকি আমাদেরকে জনপ্রশাসন (পাবলিক এডমিনিষ্টেশন) শিখাবেন। যার আরো উপরে মেকআপ দিয়ে চেহারা ছুপানী ভাষ্যটা হল এরা নাকি সুশাসন এর ফেরিওয়ালা। এরাও মনে করে রাজনীতি ছাড়া সুশাসন বিলি করা সম্ভব। এমন কী তাহলে রাষ্ট্র বুঝাবুঝির কী হবে? রাষ্ট্র বুঝাবুঝি ছাড়াই গুড গভর্নেস (সুশাসন) – এটা কায়েম করা কী সম্ভব, তাহলে?? গভর্ণ [govern] মানে তো শাসন। তো তাহলে রাষ্ট্র কী, রাজনীতি কী? আপনি বদিউল বুঝেন? বুঝলে তো আপনি চিন্তাচর্চার কোন পাঠচক্র বা কোন রাজনৈতিক গ্রুপ কিংবা চাইলে একটা রাজনৈতিক দলই খুলে বসেছেন, দেখতাম! নাকি!!!! অথচ রাষ্ট্র কী, রাজনীতি কী বুঝাবুঝির খবর নাই; আর এসব না বুঝেই আপনি বদিউল সুশাসন নামে এনজিও দোকান খুলে বসেছেন? আপনি মানুষকে কী বিতরণ করবেন? আপনার মাথায় তো কোন মাল-ই নাই! কত কী যে দেখব?
তো আপনি কী করবেন? অরেঞ্জ রেভেলিউশন? জর্জ সোরেস? ওপেন সোসাইটির ফান্ড? সেই মুরোদও আপনার নাই! দেখা যাচ্ছে আপনি যা পারেন তা হল গুম, খুন, অপহরণের রাষ্ট্র কায়েমকারি হাসিনা লীগের রাষ্ট্র – এই হল আপনার সুশাসন-বোধ???? এনজিওও এর টাকা কী মজা তাই না!!! আপনার মুরোদ হল তৃতীয় শ্রেণীর আওয়ামি দূঃশাসনের, এমন খুনের রাষ্ট্রের দালাল হওয়া!
আর তাই আপনি চিন্তার স্টুপিডিটিতে ভাবছেন এটা লিবারেলিজম! অতএব আপনি দাবি করেছেন, “আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণে কোনো বাধা নেই”।
আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণে কোনো বাধা নেই বলে মন্তব্য করেছের নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সকালে রংপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয় মিলনায়তনে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার বিষয়ে মতবিনিময় সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
রংপুরে নির্বাচন সংস্কার কমিশন প্রধান
আগামিতে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণে কোনো বাধা আছে কিংবা নাই – এটা দেখতেই কী ইউনুস সাহেব বদিউলকে নিয়োগ দিয়েছিলেন।
আসলেই এসব একেকটা বদিউলে্রা কোথা থেকে জনসমাজে উদয় হয়??? সরকারের উচিত এমন ব্যক্তিত্ব এরা যেন আর কখন জনস্বার্থ বিষয়ক কোন কাজে জড়িত হওয়া বা কাছাকাছি হওয়া চিরদিনের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়!
কাজেই এখন প্রধান উপদেষ্টা ইউনুস সাবের জন্য কাজটা একেবারেই সোজাঃ
ইউনুস সাহেবকে এখন জনগণের সামনে জানাতে হবে, যে তিনি বদিউল আলম মজুমদার কে কী কাজের জন্য নিয়োগ দিছিলেন? সেই ট্রার্মস এন্ড কন্ডিশনে কী ছিল? তা জনগণের সামনে এসব এখন উন্মুক্ত করতে হবে। আর দেখাতে হবে যে সেখানে এবিষয়ে ঐ চুক্তিপত্রে কী লিখাছিল? আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণে কোনো বাধা আছে কিনা সেটা যাচাইয়ের জন্যই কী বদিউল কমিশন? এনিয়ে আমরা জনগণের অংশ নিজেরা যাচাই করতে চাই এটা কীভাবে সম্ভব হল!!
আর একই ভাবে বদিউল আলম মজুমদার কেও দেখাতে হবে (তার কনট্টাক্ট বা নিয়োগ ডকুমেন্ট ) এর কোন অধিকার বলে তিনি এই মন্তব্য করেছেন যে “আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণে কোনো বাধা নেই”। এটা কী তার ম্যান্ডেট? তার এক্তিয়ারভুক্ত কাজ ও মন্তব্য?
জনগন জানতে চায়। আর সবার আগে অবিলম্বে ইউনুস সাবের উচিত নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান পদ থেকে ড. বদিউল আলম মজুমদার এর নিয়োগ বাতিল ও প্রত্যাহার করে নেওয়া।
অবিলম্বে ইউনুস সাবের উচিত নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান পদ থেকে ড. বদিউল আলম মজুমদার এর নিয়োগ বাতিল ও প্রত্যাহার করা।
বদিউল সাবের কথা অনুযায়ী কী তাহলে এখন কোন আদালত হাসিনা বা আওয়ামি লীগকে আগামি নির্বাচনে নিষিদ্ধ ধরনের কোন শাস্তি আর দিতে পারবে না? উনার কথিত কমিশন হাসিনা লীগকে এসব থেকে একেবারে খালাস করে দিয়েছেন কী?
অবস্থা এখন যেন এমন যে বদিউল সাব একেবারে বিচার বিভাগের উপরেও এক মাতবরি রায় ঘোষণা দিয়েছেন!!!!!
বদিউল আলম মজুমদার – তিনি আসলে যে কী হয়ে গেছেন, যার কোন আর সীমা নাই! তিনিই সব……। অথচ এমন যেকোন মন্তব্য করার এক্তিয়ার তাকে কে দিয়েছে???
তাঁকে এসবের জবাবদিহিতার অধীনে এখন আনতে হবে। এটাকী কোন ষড়যন্ত্র? বদিউল কী এর অংশঃ
মূল সমস্যা আসলে ইউনুস সাবের মনগঠনে; দেখা যায় এনজিও এর সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিত্বের প্রতি তাঁর বাছবিচার-হীন আনুগত্য-পছন্দ! এরই প্রচন্ড ক্ষতিকারক ফল এখন সারা বাংলাদেশের উপর।
এই ড. বদিউল আলম মজুমদার এন্ড গং এদের উত্থান এরশাদ আমলের স্থানীয় সরকার প্রশাসন কেমন হওয়া উচিত এ’সংক্রান্ত পরামর্শক কনসালটেন্ট হিসাবে নিয়োগ পেয়ে সেসময় তারা হাজির হয়েছিলেন। প্রশাসন কী জিনিষ আর বিশেষত “ম্যানেজমেন্ট” যা এখানে বিশেষত রাষ্ট্র পরিচালনা এই অর্থে ম্যানেজমেন্ট – এই প্রসঙ্গে; অথচ এসব ব্যক্তিদের এনিয়ে কোনই মৌলিক জ্ঞান-ধারণাই নাই। আর সেকারণের আজকের বাংলাদেশে যে দলবাজির প্রশাসন এর কাঠামোগত ভিত্তি তৈরি হয়ে গিয়েছে এর আসল নায়ক এক বদিউল সাব। আর উনার সাথে আরো ছিল ডঃ তোফায়েল আহমেদ (সাবেক জনপ্রশাসনের শিক্ষক ঢাবি )। এরাই একটা শ্লোগান এনেছিলেন – “পিপলস পার্টিশিপেশন” – “জন-অংশগ্রহণের প্রশাসন” । এটা করতে গিয়ে এই বিজ্ঞরা একেকটা জেলাশহর যেন এমপি দেরকে বন্ধক দিয়ে দেবার ব্যবস্থা করেছিলেন। যেহেতু এমপি মানেই জন নির্বাচিত ফলে উনার হাতেি সর্বময় ক্ষমতা দেয়া মানে যেন ওটাই সেই “পিপলস পার্টিশিপেশন” এর প্রশাসন ; এই ছিল তাদের গাধা-গরু মার্কা কনসালটেন্সি চিন্তা।
অর্থাৎ কেউ জন-নির্বাচিত হলে তাকে আর কোন জবাবদিহিতা বা কোন স্থায়ী (স্টাটিটুরি) আইন কনষ্টিটিউশন ইত্যাদির অধীনে আনার আর দরকার নাই। কার্যত সেজন্য জন-নির্বাচিত শব্দের মানে হয়ে গেছিল সাক্ষাত ভগবান; যা বোধহয় কোন রাজার আমলেও রাজারও এমন হুইম [খেয়ালি] শাসন-চিন্তা ছিল না! আর এতে ডিসি হয়ে উঠেছিল এই সাক্ষাত ভগবানের ক্ষমতার আড়ালে নিজ যথেচ্ছাচার! যেমন খাস জমি কীভাবে বিতরণ হবে এর যে সরকারী বিজনেস রুল আছে তা পালনের দায় এই জন-নির্বাচিত প্রতিনিধির নাই! আর ডিসি তো ভগবানের আড়ালে, ফলে ত্রাও আগে যতটুকু জবাবদিহিতা ছিল এখন তাও নাই। এই ছিল বদিউল-তোফায়েলের জনপ্রশাসন এর উন্নতমানের জ্ঞান!!! বাইরে থেকে এটাকের আবার আমরা আওয়ামি লীগের ক্যাডার প্রশাসন বলে চিনে; আর বদিউল-তোফায়েলেরা থেকে যায় আড়ালে! সব দোষ হল রাজনীতিবিদ-দের; এনজিও মালিকদের প্রপাগান্ডাও এতে সবল হয়!
এসবই হল প্রাক্তন পেটি-চিন্তার কমিউনিস্টদের বোধ-বুদ্ধি বা তাদের প্রভাবে বেড়ে উঠা চিন্তার স্টুপিডিটি। যেন আমলা এটা খুবই একটা খারাপ শব্দ। আমলা শব্দটা পজিটিভ ছিল। অর্থ স্কিল্ড – পোড় খাওয়া বা দক্ষ প্রশাসক। অথচ এই ধারনাটাকে তারা উলটে দিয়েছেন। দুনিয়ার সৎ লোক মানেই যিনি জন-নির্বাচিত??? এমনকি তারও কোন দক্ষতার দরকার নাই যেন!!!!
ঠিক সেই কাজটাই তিনি এখানেও করেছেন। একটা কাজ কাউকে করতে দিলে এর কী কী এক্তিয়ার তাঁকে দেয়া হয়েছে সেদিকে এদের মনোযোগ নাই। এটাই যেকোন পেটি-চিন্তার মৌলিক বৈশিষ্ট! এমনকি টার্ম-কন্ডিশনে না বলা থাকলেও যিনি প্রুডেন্ট [prudent] তাঁর তো নিজেই বুঝা উচিত কোনটা করলে সেটা তাঁর এক্তিয়ারের বাইরের কাজ (সেটা নিয়োগবিধিতে উল্লেখ থাক আর নাই থাক) বলে বিবেচিত হবে। অথচ সেই আক্কেল ইনাদের কে আল্লায় দেয় নাই। এনজিও এর দকান খললেই এরা সব একেকজন দ্বিগগজ সবজান্তা হয়ে উঠেন!!!
দুর্ভাগ্য আমাদের জনগোষ্ঠির!!!
লেখকঃ
গৌতম দাস
রাজনৈতিক বিশ্লেষক
goutamdas1958@hotmail.com
আপডেটঃ রাত ১১ঃ ১৯ ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
সর্বশেষ আপডেটঃ রাত ১২ঃ ২৩ ২০ ডিসেম্বর ২০২৪

