বিএনপি-কে নিয়ে গতকাল, রয়টার্স এর রুমা পালের উচ্ছ্বাস!


 

বিএনপি-কে নিয়ে গতকাল, রয়টার্স এর রুমা পালের উচ্ছ্বাস!
গৌতম দাস
১৭ ডিসেম্বর ২০২৩

https://wp.me/p1sCvy-5aD

 

                  Tens of thousands rally in Bangladesh to demand new elections

 

গতকাল মানে ১৬ ডিসেম্বরের বাংলাদেশ নিয়ে বিএনপি কী ততপরতা করেছে তা নিয়ে রয়টার্স এর খবর খুবই তাতপর্যপুর্ণ এবং তা ইঙ্গিতপুর্ণও বটে!
বিজয় দিবসের সমাবেশের উসিলায় গতকাল ১৬ ডিসেম্বর বিএনপি পল্টনে নিজ পার্টি অফিসের সামনে জমায়েত ঘটিয়েছিল। এনিয়ে প্রায় প্রত্যেকটা মিডিয়া রিপোর্ট উল্লেখ করেছে যে গত ২৮ অক্টোবর এর ব্যাপক সমাবেশের পরে এটাই আবার বিএনপির ব্যাপক সমাবেশ।  যেমন ধরা যাক, বিডিনিউজ২৪ এনিয়ে তাদের রিপোর্টে লিখেছে , “……গত ২৮ অক্টোবর নয়া পল্টনে সংঘর্ষের কারণে মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর থেকেই তালাবন্ধ নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়। ওই বন্ধ কার্যালয়ের সামনেই ছোট একটি ট্রাকের ওপরে অস্থায়ী মঞ্চে বিএনপির নেতারা শোভাযাত্রা শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন”
গত ২০১৪ সালের কথিত নির্বাচনের পরে বিএনপি ‘জঙ্গীবাদ’ করছে বা বিএনপি ‘অগ্নিসন্ত্রাস’ করছে ইত্যাদিতে সরকারের দিক থেকে এমন সব অভিযোগ তুলে বিরোধীদের কাবু করা হয়েছিল আর এমন মিথ্যা বয়ানকেই পশ্চিমাদের প্রত্যক্ষ সমর্থন ছিল ব্যাপক। তাই সরকারের পক্ষে ব্যাপকভাবে মামলা দিয়ে সেবার বিএনপির রাজনীতির প্রকাশ্য ততপরতা স্তব্ধ করে দেয়া সহজ হয়েছিল।  সম্ভবত সে অভিজ্ঞতার কথা মনে রেখে  এবার ২৮ অক্টোবর পল্টনে মহাসমাবেশে সরকার পন্ড করে দিবার পরে তাই এবার যারা ব্যাপারটা অবজার্ভ বা মনিটর করে চলেছে এমন দেশি-বিদেশি অনেকের মনে প্রশ্ন ছিল আগামি ৭ জানুয়ারি ‘২৪ ঘোষিত নির্বাচনের  তারিখের আগে আর কী বিএনপিকে তারা আবার রাজপথে দেখতে পাবে? এমন সন্দেহ কার্যকর ছিল। বাইরের অবজারভার, এমনকি যারা আশা করছিল বিএনপি মাঠে ফিরবেই, ব্যাপক সমাগম নিয়েই ফিরবে তারাও মনে একটা সন্দেহ রেখেছিল। যেটা প্রকাশ পেয়েছে  ১৬ ডিসেম্বর বিএনপির বাস্তবে সমাবেশ ঘটিয়ে দিবার পরে এনিয়ে প্রকাশিত দেশি-বিদেশি মিডিয়া রিপোর্টগুলোতে।

বিডিনিউজ২৪ কে মনে করা হয় ইন্ডিয়ার গোয়েন্দা বা ফরেন অফিসগুলোর জন্য বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রতিদিনের নিউজ পেপার কাটিং সংগ্রহ ও সরবরাহের প্রতিষ্ঠান। এজন্য তারা নাকি নামে-বেনামে বিডিনিউজের  শেয়ার কিনে রেখেছে এমন কথা ঢাকায় প্রচলিত আছে। আইনি দিক থেকে যা হয়ত তেমন বড় ব্যাপার নয়। তবে বটম লাইনটা হল, আমাদের সমাজের একটা কমন ধারণা যে,  ভারতের সাথে বিডিনিউজ২৪ এর সাথে “কোন একটা বিশেষ সম্পর্ক” আছে।   সে যাই হোক এই বিডিনিউজ এর গতকালের শিরোনাম ছিল –বিএনপির শোভাযাত্রায় নেতাকর্মীদের ঢল। এমনকি বিএনপির এই সমাবেশে সরকারের নির্যাতন বা নিগৃহিত হওয়া এড়াতে বিএনপির আত্মগোপনে থাকা অনেক নেতাও সাহস নিয়ে হলেও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন; এর একটা ছোট তালিকাও বিডিনিউজ তাদের এই রিপোর্টে উল্লেখ করে দিয়ে রেখেছে।   মানে আমি আসলে উপরের কথাগুলো লিখেছি বিডিনিউজ২৪ এর এমন শিরোনামের কথা মাথায় রেখে যে তারো মনে করছে “বিএনপির শোভাযাত্রায় নেতাকর্মীদের ঢল নেমেছিল” ।  এমনকি বিএনপির ১৬ ডিসেম্বরের সভায় যিনি সভাপতিত্ব করেন বিএনপির সেই ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী তিনিও উল্লেখ করেছেন – “সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী কয়েক ঘণ্টার আয়োজনে বিপুল উপস্থিতির উল্লেখ করে বলেন, বিএনপি হারিয়ে যায়নি, বিএনপি পালিয়ে যায়নি” এটাই প্রথম আলো আমাদের জানিয়েছে

কিন্তু আসলে তবুও আজকের এই লিখাটা  লিখার প্ররোচনা আমি তখনও বোধ করি নাই। যদিও গত কয়েকদিন ধরে, বাংলাদেশের কথিত নির্বাচন নিয়ে ভারতসহ বিদেশের অনেক পত্রিকার রিপোর্ট পড়েছিলাম।  যেখানে আনন্দবাজার ছাড়া কোন মিডিয়া রিপোর্টই বাংলাদেশের নির্বাচন পরিস্থিতিতে তাদের খুশি, আস্থা বা সন্তুষ্টি বা ইতিবাচক কোন বক্তব্যের রিপোর্ট আমি দেখি নাই! প্রকাশিত বিদেশি এমন রিপোর্ট মিডিয়ায় ছাপানো হয়েছে যেগুলো, এর একটা বড় অংশই আমেরিকান থিঙ্কট্যাংক-গবেষকদের লেখা। যেমন দ্যা ডিপ্লোম্যাট [The Diplomat.com/] ; এই পত্রিকাটা জাপানি ফান্ডে চলা পত্রিকা যা আমেরিকার ভার্জিনিয়া থেকে পরিচালিত। আর কয়েকবছর আগে (যখন আমেরিকা বাংলাদেশকে ভারতের হাতে তুলে দেয়া আর ভারতকে  চীন ঠেকানোর ঠিকা দিয়ে রেখেছিল] তখন এই পত্রিকার  এক বিশেষ ভার্সান প্রতিদিন জাপান থেকেও প্রকাশিত হত। এখন যা আর দেখি না। সেই ডিপ্লোম্যাটে পরশু ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩ প্রকাশিত বাংলাদেশের নির্বাচন প্রস্তুতি নিয়ে একেবারেই বাস্তব সত্য ফলে নেতিবাচক রিপোর্ট ছাপা হয়েছে। শিরোনাম, কেন বাংলাদেশে একটা ভুয়া (বা ভারসাম্যহীন) নির্বাচন হতে যাচ্ছে [Why Bangladesh is About to Have a Lopsided Election.]।  আর এটা এতই ডিটেইল রিপোর্ট যে আমাদের ঝালকাঠিতে একটা নির্বাচনে কমিশনের তরফে খরচের বরাদ্দকৃত সীমা কত আর তা কেন অবাস্তব সে কথাও বলা হয়েছে। সেখানে [The Commission has declared that the expenditure per voter should not be more than 10 takas, equivalent to 9 cents.] এমন বাক্যও আছে।

এই লেখা লিখতে মূলত কেন প্ররোচিত হলামঃ
এককথায় এর জবাব, ১৬ ডিসেম্বরের বিএনপির সমাবেশ নিয়ে রয়টার্স একটা রিপোর্ট করেছে গতকাল সন্ধ্যা প্রায় সাড়ে সাতটার মধ্যে। দেখা যাচ্ছে এটা আবার বিএনপির জন্য খুবই ইতিবাচক রিপোর্ট। ফলে কদাচিত দেখা যায় এমন।  এমনি এই রিপোর্টের শিরোনাম হল – (বাংলায় বললে) “হাজার হাজার লোক সমাগমে বাংলাদেশের বিরোধী দলের র‍্যালী থেকে সরকারের প্রতি পদত্যাগের আহবান” – [Tens of thousands attend Bangladesh opposition rally calling for government to resign.]। ইংরাজি ফরমাল ডিকশনারী মতে টেন অব থাউজ্যান্ড বলতে সমাগম একলাখের নিচে বুঝাতে যে শব্দ  ব্যবহৃত হয়।

বিস্তারে যাবার আগে  এই রিপোর্টের রিপোর্টারকে নিয়ে কিছু কথা বলে নেই। এটাই গুরুত্বপুর্ণ।
এর রিপোর্টার হলেন রুমা পাল [RUMA PAUL]।  কোন রুমা পাল? যতদুর অনুমান তিনি কলকাতার বাঙালি যদিও, যে ইংরাজি বানানে তিনি নিজের নামের বানানটা লিখেন তা যদি RUMA PAL (মানে PAUL এর জায়গায় PAL) হত তবে নিশ্চিত হতাম যে তিনি হিন্দু বাঙালি! আর PAUL বানানটা মানে সাধারণত যা খ্রীশ্চান “পল” বুঝাতে ব্যবহৃত হয়। সেক্ষেত্রে তিনি বাঙালি খ্রীশ্চান বলে অনুমান হয়। তবে সেসব যাই হোক, তিনি বাংলাদেশের সচেতন মানুষের কাছে অনেক পরিচিত; আর তা খারাপ বা নেতিভাবেই। আর কবে থেকে? সেটা ২০২০ সাল থেকে তো বটেই! তাকে ভারতের ‘র’-এর স্বার্থ-ইচ্ছার পক্ষে কাজ করতে দেখেছি আমরা!
দুনিয়ায় তিনটা গ্লোবাল নিউজ এজেন্সী প্রভাবশালী ও বড় বিনিয়োগে গড়া প্রতিষ্ঠান যাদের নিজস্ব মালিকানায় স্যাটেলাইট আছে যেমন – রয়টার্স, এএফপি ও এপি। আর এরা যথাক্রমে বৃটিশ, ফ্রান্স আর আমেরিকা ভিত্তিক তাতে তাদের এখনকার অফিস গ্লোবালি যেকোন দেশেই থাকুক। এদের মধ্যে রয়টার্সে সবচেয়ে বেশি ভারতীয় অরিজিন স্টাফ আছে। যারা ভাল প্রফেশনাল আর এমন একগুচ্ছ রিপোর্টারের উপরে একজন করে পশ্চিমা অরিজিন এডিটর রাখা হয়েছে যাদের নামও প্রকাশিত রিপোর্টের মধ্যেই ছাপানো থাকে। যেমন আলোচ্য রিপোর্টের শেষে লেখা আছে [Reporting by Ruma Paul; editing by Clelia Oziel]। নিয়মিত পাঠক হিসাবে রয়টার্স সাধারণভাবে আমার চোখে তুলনামূলক আস্থা বেশি রাখার মত এজেন্সী। কেবল ব্যতিক্রম এই রুমা পাল; যে র’ এর এসাইনমেন্ট কাঁধে নিয়ে ঘুরে আমরা দেখেছি। অল্প করে সেই রেফারেন্স এখানে দিয়ে রাখি।

চীনা করোনা টিকা ইস্যুতে সেকালে মানে ২০২০ সালের ঘটনা। টিকা ইস্যুর একেবারে প্রথম দিকে যখন দুনিয়াতে কোন উতপাদকের হাতে বা বাজারে টিকা তখনও আসে নাই। ভারতীয় টিকাও আমাদের দরবেশ-কে চারশ মিলিয়ন ডলারে গছানো হবে (যা শেষ পর্যন্ত সময়ে সরবরাহ করা হয় নাই) – সেই চুক্তিও হয় নাই; আসলে সেই প্রসঙ্গও তখনও আসে নাই! সেসময়ে মূলত, চীন আমাদেরকে তাদের টিকা গবেষনার থার্ড ফেজ বা তৃতীয় ও শেষ পর্যায়ে যুক্ত হতে কিছু বাংলাদেশিকে পরীক্ষামূলকভাবে টিকা দেওয়ার প্রোগ্রাম ছিল সেটা।  মানে মুল পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ হয়েছে চীনের বাইরে যেমন বাংলাদেশিদের শরীর এই টিকার গ্রহণযোগ্যতা কেমন হবে এই পরীক্ষায় পর্যায়। আর এতে অংশ নিলে পরোক্ষিত এই টিকার বাণিজ্যিক উতপাদনের বিনা পয়সায় হকদার হব আমরা। যেমন চীনা উতপাদিত কিছু টিকা পাবে আর টিকার ফর্মুলা নিজ দেশে ব্যবহার করে নিজ উতপাদনেও যেতে পারবে বাংলাদেশ। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার এই প্রোগ্রামে রাজি হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তিতে সইয়ের যে আনুষ্ঠানিকতা ছিল তা সময়সীমার মধ্যে সম্পন্ন করে নাই। কারণ, এসময়েই ভারত ঐ প্রাইভেট অফার দিয়েছিল যে বাংলাদেশের প্রাইভেট কোম্পানি চারশ মিলিয়ন ডলার আগাম বিনিয়োগ দিলে তারা বাংলাদেশ সরকারের জন্য টিকা নিতে পারবে। মূলত বাংলাদেশ এই অফারটা নিবে না চীনের সাথে গবেষণায় অংশ নিবে এনিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় সময় নষ্ট করে ফেলেছিল। ওদিকে চীনাদের পক্ষেও বাংলাদেশের জন্য তার টিকা পরীক্ষার শেষ পর্যায়টায় বাংলাদেশকে আরো সময় দেয়া সম্ভব ছিল না কারণ চীনা ঐ সিনাভ্যাক টিকা ছিল চীনের উতপাদিত প্রথম টিকা; তাই এটা শেষ করার তাদের প্রচন্ড তাগিদ ছিল। তাই চীন বাংলাদেশের জন্য আর অপেক্ষা না করে ইস্ট এশিয়ার এক দেশ (সম্ভবত ইন্দোনেশিয়াকে বাংলাদেশের জায়গায়) সামিল করে নিয়েছিল।  আর এদিকে বাংলাদেশ পরে চীনা টিকা পাওয়ার সম্ভাবনা খুইয়ে আর সাথে ভারতীয় টিকা প্রাইভেট কোম্পানিকে দিকে কিনিয়ে ব্যবসা হবার লোভে ভারতের সাথে যুক্ত হওয়াকেই প্রেফার করেছিল। সেই সাথে নিজেদের অবহেলাকে ঢাকতেই এক প্রপাগান্ডা বা নিউজ-টুইস্ট করেছিল যে চীনের ঐ টিকা পরীক্ষার প্রোগ্রামে বাংলাদেশকে সামিল করতে টাকা চেয়েছিল বলেই নাকি চুক্তিটা সই হয় নাই…। আর এই রিপোর্টাই করেছিল রুমা পাল। আগ্রহিরা এখানে সে রিপোর্টটা এখনও দেখতে বা পেতে পারেন। আমাদেরসহ অনেক দেশি-বিদেশি পত্রিকা রয়টার্সের রিপোর্ট বলে রুমা পালের সেই রিপোর্ট রয়াটার্সের বরাতে ছেপেছিল বা কপি করেছিল। ফলে এই নিউজ-টুইস্ট বাজার পেয়েছিল। কিন্তু একই সাথে কয়েকদিনের মধ্যে বেনার নিউজও এনিয়ে একটা রিপোর্ট করেছিল। বেনার নিউজ [benarnews]  আমেরিকা ফান্ডেড একটা ইংলিশ পত্রিকা যার বাংলা ভার্সানও আছে।  বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এক সাক্ষাতকারের ভিত্তিতে রুমা পালের ঐ রিপোর্ট ছিল। যদিও তা ছিল একটা পুর্ব-বুঝাবুঝির ভিত্তিতে। বেনার নিউজের রিপোর্ট সেটাও ছিল স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বরাতে। কিন্তু এখানে কিছু বাড়তি কথা পুরা জিনিষটাকেই ওপেন করে দিয়েছিল। আমাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বলা সেই বাড়তি বাক্যটা হল,

“Possibly, they want to leave since we are unable to pay them the money they asked for the trial.”

বাংলায় বললে মন্ত্রী বলছেন,  তারা (মানে চীনারা) টীকা ট্রায়ালের জন্য চাওয়া অর্থ আমরা দিতে পারি নাই বলেই  সম্ভবত ঐ প্রোগ্রামে আমাদের ছেড়ে চলে গেছে”। অর্থাৎ মন্ত্রী নিশ্চিত নন যে কেন চীনারা নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছে। কিন্তু এর পরেও মন্ত্রীর বরাতে লেখা হয়েছে চীনারা নাকি অর্থ চেয়েছিল (কো-ফাইন্যান্সিং)! মহার কথা হল, রুমা পাল  – অর্থ চেয়েছিল (কো-ফাইন্যান্সিং) শব্দটা শিরোনামে এনেছিল। কিন্তু বেনার নিউজ তা করে নাই। কেবল সাদামাটা বলেছে চীনার প্রোগ্রামটা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। আবার মজার কথা হল চীনারা যে অর্থ চেয়েছে এর স্বপক্ষে মন্ত্রী কোন (চীনাদের বাংলাদেশকে দেয়া চিঠি) চিঠি বা ডকুমেন্ট দেখাচ্ছেন না বা রেফার করছেন না। কিন্তু প্রপাগান্ডা সমানে চলছে। বেনার নিউজের সেই রিপোর্ট এখানে পেতে পারেন।

কিন্তু অসততার কপাল সবসময়ই মন্দ হবার সম্ভাবনা থাকে! হয়েছিলোও তাই। অর্থলাভের লোভে বাংলাদেশের ক্ষমতাবানেরা সকলে ভারতের টিকা কিনতে ছুটেছিল অথচ এই টিকা পরে মোদি আর বাংলাদেশে সরবরাহ-ই হতে দেন নাই। আগে ভারতের চাহিদা মিটবে (মানে আমাদের অর্থে ভারত আগে নিজের চাহিদা মিটাবে এরপর) – এই উগ্র হিন্দুত্ববাদী-অর্থনীতি বয়ানের ঝাপ্টা। কারণ, এই বাংলাদেশের (প্রাইভেট ব্যবসায়ীর হাত দিয়ে) আগাম অর্থ পরিশোধ এটা ঠিক কোন পণ্যকেনার জন্য আগাম পেমেন্ট ছিল না বরং এটা ছিল ঐ টিকা উতপাদক কোম্পানির উতপাদন সক্ষমতা বারানোর জন্য কারখানা সম্প্রসারণে আগাম বিনিয়োগের অর্থ দান। ফলে এতে কারখানার যে সক্ষমতা বেড়েছিল এই অংশের পুরা উতপাদনের হকদার বাংলাদেশ একা!
পরিণতিতে আবার চীনের কাছে সরকার ফিরে যায়। হাত-পা ধরে একটা খারাপ চুক্তিতে আমরা চীনা টিকা পেয়েছিলাম, তবে ভাল দিক হল আমাদেরকে আর সকল চাহিদার টিকা পাবার জন্য কোন অর্থই দিতে হয় নাই। এই হল, ‘র’-এর এসাইনমেন্ট হোল্ডার রুমা পাল আর বাংলাদেশের সম্পর্ক আর গল্প!

এখন প্রশ্ন হল, সেই রুমা পাল এখন বিএনপিকে প্রশ্নগসা বা সম্ভাবনা হিসাবে দেখে গতকালের রিপোর্ট-টা কেন?
এর অর্থ কী? ভারত হাসিনার উপর আস্থা হারিয়েছে? অনেকের ধারণা ফিল্ড লেভেলে ‘র’ ততপর থাকলেও  জয়শঙ্করের ফরেন অফিস মানে মোদিসহ এরা দুরত্ব তৈরির অবস্থান নিয়েছে।
একথা সত্যি যে এখন তো ভারত-আমেরিকান সম্পর্ক তলানিতে। বিশেষ করে কানাডায় কানাডীয় শিখ নাগরিক হত্যার পরে আবার খোদ আমেরিকায় শিখ হত্যার উদ্বোগ আমেরিকা ব্যর্থ করে দিবার পরে এই অবস্থায় দুই দেশ!
ফলে মোদির অবস্থান এখন এপিজিং [appeasing] মানে বাংলায় যেটাকে আমরা মান ভাকঙ্গানো বা তেল মারা বলি! আরো বিশেষ করে আমেরিকার বাইডেন আগামি ২৬ জানুয়ারি ভারতের রিপাবলিক ডে [১৯৫০ সালে যেদিন প্রথম  নয়া কনষ্টিটিউশন চালু বা কার্যকর ঘোষণা করা হয়]  উদযাপনে প্রধান অতিথি হতে অ-রাজি হন।

সেজন্যই কী রুমা পাল এবার উজানে উল্টা বাইতেছেন!!! এছাড়া ভারতের বেশিরভাগ মিডিয়াই এবার রয়টার্সের রুমা পালের খবরটাই  ছেপেছে?

 


সর্বশেষ আপডেটঃ  ২০২৩,  রাত

গৌতম দাস
রাজনৈতিক বিশ্লেষক
goutamdas1958@hotmail.com

Leave a comment