জামায়াতের উপর আনন্দবাজারি ইসলামিবিদ্বেষ


জামায়াতের উপর আনন্দবাজারি ইসলামিবিদ্বেষ
গৌতম দাস
২২ নভেম্বর ২০২৪ বিকাল ১৭ঃ ৫২
https://wp.me/p1sCvy-5OI

 

 

 

১।  রাজনীতি আর চালাকি এক জিনিষ না। এক করে দেখলে খেসারত দিতেই হবে।
২। দাওয়া পার্টি (ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার সংগঠন) আর রাজনৈতিক দল একেবারেই এক নয়।  তাতে আপনারা দাওয়া পার্টিওই থেকে যাবেন, রাজনৈতিক দল কখনই হতে পারবেন না।
৩। সবার আগে রাজনীতি বা পলিটিক্স ধারণাটার অর্থ তাতপর্য কী তা ভাল করে বুঝে নেন।  বিশেষ করে রাজনীতি বলতে কী কী না – তা স্পষ্ট করে বুঝে নেন।

এমন তিনটা প্রশ্নের জবাব নিয়ে সব ইসলামি দলের আগে কিছু হোমওয়ার্ক করে নেয়া উচিত!

জামায়াতের কেন্দ্রিয় সভাপতি ডাঃ শফিকুর রহমানের উপর কিছু একটা খারাপ প্রভাব ভর করেছে, মনে হচ্ছে।  নইলে তিনি কলকাতার ইসলামবিদ্বেষী পত্রিকায় সাক্ষাৎকার দিতে রাজি হবেন কেন???
কলকাতার  আনন্দবাজার পত্রিকা (যেটা ইসলামবিদ্বেষ ছাড়া একটা বাক্য লিখতে পারে না এমন প্রবল হিন্দুত্ববাদী) সেই পত্রিকা ডাঃ শফিক সাহেবের সাক্ষাৎকার ছেপেছে।  সবচেয়ে বড় কথা তাদের করা প্রশ্ন এটা কোন সাংবাদিকতা বা জার্নালিজমের নীতিমালায় পরে না।

যেমন প্রশ্নগুলো দেখেনঃ
১। জামায়াতে ইসলামীর ভারত-বিরোধিতা সর্বজনপরিচিত। কী বলবেন?

২। কিন্তু জামায়াতে ইসলামীকে দেখা হয় কট্টর ইসলামি সংস্থা হিসাবে, অন্যান্য ইসলামি রাষ্ট্রে যে ইসলামিক ব্রাদারহুড রয়েছে তার অংশ হিসাবে। নিজেদের সংগঠনকে কী ভাবে দেখেন?

৩। কিন্তু বিএনপি-র একটি অংশ আপনাদের কট্টরপন্থী মনোভাব নিয়ে অস্বস্তিতে। কী বলবেন?

৪। অন্তর্বর্তী সরকার আসার পর থেকেই সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় তাদের বিরুদ্ধে হিংসার প্রতিবাদে সরব। কী ভরসা দেবেন?

৫। শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। আপনারা সরকারে এলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক কোন দিকে যাবে?

৬। একটা আতঙ্ক তৈরি হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার এবং জামায়াত মিলিমিশে আওয়ামী লীগের পর এ বার বিএনপি-কেও সরিয়ে দিতে চাইছে। দুই বড় রাজনৈতিক দলকে বাইরে রেখে নতুন শক্তির উত্থান হবে। কতটা ঠিক?

অর্থাৎ আনন্দবাজার এটা আসলে কোন মিডিয়া না। এটা  নিজেই -“আরেকটা রাজনৈতিক সত্বা বা এনটিটি” – যার আবার বাংলাদেশ নিয়ে এক হিন্দুত্ববাদি অবস্থান আছে।
আর জামায়াতের সভাপতিকে এখন সেই হিন্দুত্ববাদি আক্রমণ ভেদ করে নিজের কথা বলার জায়গা বের করতে হবে!!!

প্রস্তুতিহীন জামায়াত সভাপতিঃ
সবার আগে বলি, এবার ৫ আগষ্টের পরে জামায়াতের ভিতর এক স্ফুর্তি দেখা যাচ্ছে যেন দলের রাজনীতি ও অবস্থান কিছুই ঠিক না করে শুধু গলার জোরে বা চালাকি-পুর্ণ বাকচাতুরি দিয়ে সবার মন জয় করে ফেলবে। এমনকি যেন হিন্দুত্ববাদি মনের ভারতেরও!  অথচ সবার আগে নিজেদের কোন কোন অবস্থান-বক্তব্যগুলো দুর্বল তা কাটানো নিয়ে কোন হোমওয়ার্ক করেন নাই জামায়াত গত ১৬ বছর; যা  তাদের এখনকার কাজ-ততপরতায় ছাপ ফেলে চলেছে। কিন্তু কোন রিয়েলাইজেশন বা আত্ম-উপলব্দি নাই।

যেমন ধরেন,  ৫ আগষ্টের পরে বিশেষ করে এবারের দুর্গাপুজা-কেন্দ্রিক মন্দির স্থাপনায় কমিউনিটি-পাহারায় জামায়াতের অংশ নেয়া – এপর্যন্ত ঠিক আছে। বরং ভারতীয় প্রপাগান্ডার বিরুদ্ধে এটা বড় ইতিবাচক জবাব তো বটেই সাথে যাকে বলে ঠেসে চড় মারার মত জবাব, অবশ্যই!
কিন্তু এর পরে কোথায় থামতে হবে তারা সে আক্কেল দেখাতে ব্যর্থ হলেন। তারা জামায়াতের হিন্দু শাখা খুলে বসতে গেলেন। সবচেয়ে মারাত্মক করলেন পুজা মন্ডপ পাহারায় গিয়ে জোশের ঠেলায় ওটা ইসলামের দাওয়া বা প্রচার ছড়ানোর জায়গা মনে করলেন সেটাকে। ‘ইসলামি সঙ্গিত’ পরিবেশন করে আসলেন। কী এক জটিল অবস্থা! ফলাফল বুঝতেই পারেন যা ক্রেডিট এতদিন জামায়াত কামিয়েছিল তা সব পানিতে গেল!

আচ্ছা উপরে  আনন্দবাজারের অগ্নি রায়ের প্রশ্নগুলো দেখেন। এটা দেখার পরে এখন জামায়াতের নেতারা কী বুঝেছেন যে বাংলাদেশে তাদের পুজা বা হিন্দু সার্ভিস দেওয়ার কায়দা ও এর নতিজা কী? কোন ইতিবাচক প্রভাব কী আছে আনন্দবাজারিদের তাদের প্রশ্নের মধ্যে??? নাকি এটা আরো আক্রমাণাত্মক এক হিন্দুত্ববাদের মুখোমুখি হয়েছিলেন সভাপতি ডাঃ শফিক??
যার সোজা মানে হল, কোন কাজ কীভাবে করতে হবে, হিন্দুত্ববাদি মনকে ডিল করবেন কীভাবে? এর জন্য এক ভাল ও আগাম প্রস্তুতি লাগবেই! যতদিন তা রপ্ত না হয় ততদিন নিজেদের বিরত রাখেন, ওদের এড়ায়ে চলেন – এটাই একমাত্র পথ! ৫ আগষ্টের পরের জোশে, সব জয় করে ফেলতে পারবেন বলে বিনা প্রস্তুতিতে আগায় যাওয়া ঘটালে এর চেয়ে বড় আত্মহত্যা আর কী হতে পারে?

আরেকটা দিক হল, জানায়াত নেতাদের মধ্যে এক অদ্ভুত ধারণা। তা হল, তারা এখন ইন্ডিয়ান রাজনীতি মানে, মোদি সরকার, র-এর প্রতিনিধি, বা কোন হিন্দুত্ববাদি নেতা এমন যে কারো সাথে তারা এখন বোধহয় খুবই আপন হয়ে গেছেন!!!!!  এটা হতে পারে কোন র-এর লোকের সাথে কথা হয়েছে আপনাদের, তাদের মিঠা মিঠা কথা ছিল যেখানে ধরা যাক – আওয়ামি লীগের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ না তুললে বা উচ্চবাচ্য না করলে – সদয় আচরণ প্রকাশ করলে বোধহয় তারা জামায়াতকে এখন থেকে অনেক আপন করে নিবে!!! সহাবস্থান তৈরি হবে? তাই কী??? কাজেই জামায়াতের এত উতফুল্ল খোশ-মেজাজের কারণ কী?

সম্প্রতিকালে অর্থহীন ও কোন ব্যাখ্যা বিহীনভাবে জামায়াতের আওয়ামি লীগ ও ভারতের প্রতি উদারতা প্রকাশ বাংলাদেশের রাজনীতির পরিসরে ব্যাপক সন্দেহ ও ক্ষোভ তৈরি করেছে। তা তো জামায়াত নেতৃত্বের অগোচরে থাকার কথা নয়!  যে উদ্দেশ্য  আওয়ামি লীগ বা ভারত প্রীতি দেখানো – এতে ফলাফল কী একেবারে উলটা হয়ে যায় নাই, উলটা আসে নাই? লাভ দূরে থাক বদনাম আর গায়ে লাগা কালি কী তার চেয়ে বেশি হয় নাই?

সর্বোপরি, কথিত এই সাক্ষাতকার কী প্রমাণ করে?
এই হিন্দুত্ববাদি মিডিয়া জামায়াত দল ও এর সভাপতিকে নুন্যতম মর্যাদা দিয়ে কথা বলেছে? উত্তর হল যে, না।
তাহলে এথেকে জামায়াত দল ও এর নেতারা কী শিক্ষা নিলেন বা নিবেন?
হিন্দুত্ববাদি ভারতের কারও কথায় পটতে হয় না – তাতে তিনি  মিডিয়ার লোক কিংবা র-এর লোক যেই হন না কেন! তাই নয় কী? আর সবার উপরে নিজের সম্মান রক্ষা করতে হয় সবার আগে নিজেকে। কখনও অন্যের হাতে তা ছেড়ে দেয়া যায় না!

জামায়াত ও বিএনপির জন্য কিছু শিক্ষা রেখে গেছেঃ
সবচেয়ে বড় কথা বিএনপি ও জামায়াত কে মনে রাখা দরকার তাদের এই হিন্দুত্ববাদি রাজনীতির সরকারের সাথে অবস্থান থেকে তাদের মিডিয়া ও তাদের আম জনতার অবস্থান এসব কিছু পক্ষে কখনই -বিএনপি ও জামায়াত – বিশেষ করে জামায়াতকে তাদের দরকার কারণ  তাদের সাফাই বা জাস্টিফিকেশন দরকার যে কেন তারা নিজেরা এমন উগ্র হিন্দুত্ববাদি একরোখা? অন্যভাবে বললে, তারা জানে তাদের হিন্দুত্ববাদি রাজনীতির বিরুদ্ধে অজস্র মানুষ প্রশ্ন তুলে থাকে যার জবাব তাদের কাছে নাই। আর সেই ঘাটতি পূরণ  করতে তারা  -বিএনপি ও জামায়াত- কে বাঁকা ভাবে হাজির করবেই। যাতে এটা তাদের অসৎ কাজের সাফাই হয়ে হাজির হয়!!!
কাজেই বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ নেতারা যারা ভাবছেন – ভারতের সমর্থন পিছনে নিয়ে (র-এর লোকেরা মিঠা আশ্বাস দিয়েছে )  বা পিছনে থাকলে তাদের আগামি নির্বাচনে বড় আসন নিয়ে সংসদে হাজির হওয়া প্রায় সমাগত – এই তো একটু দূরে – এমন তাদের সকলের জন্য আনন্দবাজারের এই কথিত সাকক্ষাতকার হল এক কঠিন শিক্ষা! যে গ্রহণ করবে, বুঝবে এটা তার জন্য শিক্ষণীয়; আর যে বুঝবে না তার জন্য এটা তেজপাতা!!!
এরা মুখে যা আশ্বাসই দিক না কেন তারা ইসলামবিদ্বেষের জায়গা থেকে বিএনপি ও জামায়াত এর নেতাদের সুযোগ পেলে অপমান করবেই!
অন্তত জামায়াত নেতাদের এতে কী কোন আক্কেল হবে???

ভারতীয় মিডিয়াকে মোকাবিলা করতে কিছু পরামর্শঃ
প্রথম প্রশ্নটার ক্ষেত্রেই দেখা যাক।

এর জবাবে বলা যেতে পারত যেমন, আমরা ভারত-বিরোধিতা না বরং আমরা বাংলাদেশে ভারতের আধিপত্যের খায়েসের বিরোধিতা করি
এতে ওদের তোলা বয়ানকে ফুটো করে  তা ফিরে ওদেরই মুখে মারা হতে পারত!
সাথে আরেকটা বলা যেত যে ব্যাপারটা – সর্বজনপরিচিত যদি হয়েই গিয়ে থাকে তাহলে আর প্রশ্ন করতে এসেছেন কেন?

পরের প্রশ্নঃ জামায়াত কে নিয়ে এই প্রশ্ন প্রায়ই আমাদের দেশেও প্রগতিবাদই=হিন্দুত্ববাদিদের থেকে  উঠতে দেখা যায় যা খুবই বিরক্তিকর। প্রশ্নটা হল যেমন – “জামায়াতে ইসলামীকে দেখা হয় কট্টর ইসলামি সংস্থা” বা জামায়াত একক কট্টর সংগঠন বা অনেক বলে এক জঙ্গি সংগঠন!

এর জবাব হতে পারত যা তা নিয়ে কথা।  আসলে জামায়াত কখনও এসব ফালতু অভিযোগ কে চ্যলেঞ্জ করে নাই বা করতে পারে নাই।  অথচ জামায়াতের উচিত সোজা পালটা চ্যালেঞ্জ করা। দেখাতে বলা যে কোন ঘটনার কারণে কট্টর, জঙ্গী বা এজাতীয় বিশেষনের প্রমাণ কী? বা  এটা বলতে কী বুঝাতে চাইছেন? জামায়াত কী কোন সশস্ত্র সংগঠন? কেন এসব বিশেষণ ব্যবহার করা হুচ্ছে? বাংলাদেশের রাজনৈতিক কালচারে যা পারমিশেবল (মানে চলে বা গ্রহণযোগ্য) যেমন ককটেল, লাঠি, ইট ইত্যাদি বড়জোর কখনও দেশি পিস্তল  বিশেষ করে তা ছাত্র সংগঠন পর্যায়ে লীগ, বিএনপি, জাসদ ইত্যাদি সকলেই করে থাকে। জামায়াতও এসবের বাইরে না। কিন্তু গত ১৬ বছরের ছাত্রলীগ যেভাবে পেটোয়া বাহিনী, হেলমেট লীগ, বা পুলিশের  হাত ধরে পাশাপাশি অস্ত্র হাতে বিরোধিদলের মিছিলে আক্রমণ, খুন করে ফেলা ইত্যাদি করে গেছে – আর যারা এসবের দিকে নজর করে নাই এরা সকলেই হিন্দুত্ববাদি…! মিলিয়ে দেখেন।  এরকম পালটা জবাবে রুখে দাঁড়ানো যেত!
সোজাকথা, আমাদের গড়ে উঠা নিজের রাজনীতির কালচার অনুযায়ী লীগ, বিএনপি, জাসদ ইত্যাদি যা করে জামায়াত কখনই এর বাইরে নয়; বাইরে যায় নাই। কাজেই এসব কট্টর বা জঙ্গী শব্দের ব্যবহার কেন? বরং এসব প্রশ্নের বিরুদ্ধে পালটা অভিযোগ করা যায় যে আপনি কী উতরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগীর কট্টরতা (মুসলমান হলেই তাঁর বাড়িঘর বুলডোজ করায় চ্যাম্পিয়ান) ও নৃশংসতার সাথে তুলনা করে কথা বলছেন?
যেমন আমাদের এক নারী উপদেষ্টা একইভাবে – বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন প্রসঙ্গে জবাব দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, যে না তেমন কিছু না। অন্তত ভারতে বাবরি মসজিদ ভাঙ্গার সাথে যে তান্ডব ঘটেছিল এর তুলনায় কিছুই হয় নাই বাংলাদেশে!

তিন নম্বর প্রশ্নটা দেখেন। বলছে, – বিএনপি-র একটি অংশ আপনাদের কট্টরপন্থী মনোভাব নিয়ে অস্বস্তিতে আছে – এরপালটা জবাবে বলা যেত যেমন, আপনি কী বিএনপির সাথে আমাদের ঝগড়া লাগিয়ে দেবার চেষ্টা করছেন? কিন্তু সেটা কী আপনার কাজ? আপনার এসব হাইপথিটিক্যাল (কল্পনা করে নেয়া প্রশ্ন) প্রশ্ন আনবেন না প্লিজ! সরি আপনার প্রশ্ন ঠিক নাই। এই বলে এই প্রশ্নের আর কোন কথা বলতেন না, এমন করা যেত!

চতুর্থ প্রশ্নঃ ……অন্তর্বর্তী সরকার আসার পর থেকেই সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় তাদের বিরুদ্ধে হিংসার প্রতিবাদে সরব। কী ভরসা দেবেন?
জবাবে বলা যেতঃ আপনার প্রশ্নটাই কী বলছে না যে এটা আপনাদের উস্কানি! না হলে, “অন্তর্বর্তী সরকার আসার পর থেকেই” – এভাবে বলছেন কেন? আমাদের বর্তমান অন্তর্বর্তি সরকার বহুবার বলেছে এটা বাড়িয়ে বলা ভারতের প্রপাগান্ডা। এনিয়ে অন্তত আপনাদের প্রিয় বিবিসি বাংলার রিপোর্ট টা দেখে নিয়েন! তারা কেন এটাকে প্রপাগান্দা বলেছে দেখে নিতে পারেন!

পঞ্চম প্রশ্নঃ শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। আপনারা সরকারে এলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক কোন দিকে যাবে?
এখানে বলা যেত, এর মানে তাহলে,  হাসিনার ১৬ বছরের ফ্যাসিজম ও এই গুম-খুনের শাসনের পিছনে ও সহায়তায় যে ভারত ছিল তা স্বীকার করে নিচ্ছেন? তবে আপনার প্রশ্নের জবাব হল, এটা ভারতের উপরই নির্ভর করে। ভারত যদি আবার হাসিনা মত ঘনিষ্ট কাউকে তার পেতেই হবে বলে খুঁজে এর দায়ভার ও পরিণতি ভারতকেই নিতে হবে! তাই না?

ষষ্ঠ প্রশ্নঃ
একটা আতঙ্ক তৈরি হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার এবং জামায়াত মিলিমিশে আওয়ামী লীগের পর এ বার বিএনপি-কেও সরিয়ে দিতে চাইছে। দুই বড় রাজনৈতিক দলকে বাইরে রেখে নতুন শক্তির উত্থান হবে। কতটা ঠিক?
এর জবাব হতে পারত এভাবে –  এটা আপনার  সীমা ছাড়ানি এক কল্পিত বা হাইপথিটিক্যাল প্রশ্ন ? আপনি নিজেই তো এখনও নিশ্চিত হন নাই যে আপনার কথা-অনুমান সঠিক কিনা। তাই না? তো আগে সিওর হয়ে নেন এর পরে না এই প্রশ্ন করবেন?

সারকথায়, জামায়াতের প্রতি আনন্দবাজারি এই ঘৃণ্য আচরণ থেকে বিএনপিও চাইলে শিক্ষা নিতে পারে। যারাই ভারতের মোদির সাথে ঘনিষ্ট হতে যাবে, সবকিছুকে খুব সহজ মনে করবে তাদের সবার জন্য এই একই ফলাফল অপেক্ষা করছে!  ভারতকে ডমিনেট বা আধিপত্য করতে দেয়া, বাংলাদেশের বাপ-মা হয়ে উঠতে চাওয়া – এটা নিয়ে যে কেউ নিশ্চিত থাকতে পারে যে যা দেখছেন এটাই এর পরিণতি হবে। আর এটাকেই তো আমরা নাম দিয়েছে ইন্ডিয়ান হেজিমনি বা ভারতীয় আধিপত্য!!!
এমনকি হাসিনাও  – “ভারতকে আমি যা কিছু দিয়েছি ……” ডায়লগটা স্মরণ করতে পারেন, যদি না ইতোমধ্যেই অন্ধ না হয়ে গিয়ে থাকেন! আর বাংলাদেশের পাবলিক!!!
ইতোমধ্যেই জনপরিসরে আপনাদের ইজ্জতের কী হয়েছে তা সাহস করে একটু খবর নিতে পারেন। যা সামনে আপনাদেরকে আরো ছিন্নভিন্ন করে দিবে!!!  চুড়ান্ত গণবিচ্ছিন্ন হবেন আপনারা!! – যদি চান, চাইতেই থাকেন!!!

লেখকঃ
গৌতম দাস, রাজনৈতিক বিশ্লেষক
goutamdas1958@hotmail.com

আপডেটঃ  সন্ধ্যা ০৬ঃ ৪০   ২২ নভেম্বর  ২০২৪
শেষ আপডেটঃ      ২০২৪

Leave a comment