প্রথম আলোই  “স্বাধীন সাংবাদিকতা” করছে  আর এরাই স্বাধীন “গণমাধ্যম”!


প্রথম আলোই  “স্বাধীন সাংবাদিকতা” করছে  আর এরাই স্বাধীন “গণমাধ্যম”!
গৌতম দাস
২৯ নভেম্বর ২০২৪
https://wp.me/p1sCvy-5SJ

 

 

 

সব দল ও অংশীজনের সঙ্গে বসে দেশের উত্তেজনা সমাধানের আশা মাহফুজ আলমের

প্রথম আলোই  “স্বাধীন সাংবাদিকতা” করছে  আর এরাই স্বাধীন “গণমাধ্যম?
প্রায় সব রাজনৈতিক দলের দাবী ও সার্টিফিকেট দিয়েছে যে প্রথম আলোই “স্বাধীন সাংবাদিকতা” করছে  আর এরাই স্বাধীন “গণমাধ্যম!

আজ এক খুশির দিন!   বাংলাদেশের মানুষ এখন খুবই স্বস্তি ও নিরাপদ বোধ করতেই পারে! আমাদের আর চিন্তা নাই, বাংলাদেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দল খোদ প্রথম আলোর নেতৃত্বেই – “আক্রমণের মুখে স্বাধীন সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান” বলে প্রথম আলো কে রক্ষা করতে মাঠে নেমে পড়েছেন।
কোন প্রথম আলো আর কোন গণমাধ্যম? যারা গত ১৬ বছর ভারতীয় অর্থে র-এর খেদমত করে গেছে; মিথ্যা রিপোর্ট করে গেছে। এ সকল রাজনীতিবিদেরা প্রথম আলোর এসব ততপরতাকেই জার্নালিজম বলতে চাচ্ছেন? তাও আবার এটা “স্বাধীন সাংবাদিকতা”? “গণমাধ্যম?” – এই আপনাদের দাবী????    “সুত্র বলছে”, “বিশ্বস্ত সুত্রে জানা যাচ্ছে”  ধরণের অসৎ ও মিথ্যা রিপোর্ট যারা ছেপে চলেছে।  এটা কী জার্নালিজম আপনারা বলতে চাচ্ছেন?  যেখানে বাংলাদেশের প্রেস মানে ব্যাপারটা হয়ে দাড়িয়েছিল যেন বাংলাদেশে ভারত রাষ্ট্রের স্বার্থে মিথ্যা রিপোর্ট ছাপানোর এক মহৎ উতসব চলছে!  আর যারাই এর বিরোধিতা করেছে তাকেই জঙ্গী বানিয়ে দিয়ে ভারতীয় অর্থে নিজেদের ব্যক্তিস্বার্থ ও সংসার চালিয়েছে যারা তারা স্বাধীন সাংবাদিক ও প্রেস???

এই ছবিটা খুবই সিম্বলিক। একেবারে প্রতীকী! বহুকথা একটা শব্দও খরচ না করে বলে দেয়া হয়েছে এখানে।
১। যারা নির্বাচনি রাজনীতি করে এমন কোন দল (কয়েকটা ইসলামি সহ) যেন বাকি নাই এখানে।
৩। মূলত যেসব দল বা নেতার সাথে চিন্ময় (আসল নাম অন্যকিছু) এর সাথে ছবি তুলেছেন ফেসবুকে পাওয়া যাচ্ছে তারাই আসলে ক্ষমতার বা উচ্ছিষ্ট খার লোভে ‘র’-এর কবলে পড়েছেন। নিজেদের সঁপে দিয়েছেন।
২। কারা এদেরকে এক ব্যানারে জড়ো করল? মাঝখানে আছে মির্জা  সাহেব। তিনি? অনেকেই এমন মতামত দিবেন হয়ত। ব্যাখ্যাও দিতে পারেন হয়ত এগুলা সংবাদপত্র-মত্র বা এর স্বাধীনতা এসব কিছু না। আসল ঘটনা হল (কমিউনিস্ট বাদে) ছোট দলগুলো  আগামি সংসদে উচ্ছিষ্টের মত দু-একটা আসন পাওয়া (যেখানে দা্তা হল বিএনপি) যাতে ছুটে না যায় তাই তাঁরা মির্জার পাশে দাঁড়িয়ে সেই অর্থ তৈরিতে ছুটে এসেছেন। আর তাতেই সবার অলক্ষ্যে এমন ম্যাসেজ তৈরি হয়ে গেছে যে বিএনপি কে ঘিরে থাকা আসন পাবার জন্য তারা এমনটা করেছেন। তাতে পিছনের ব্যানারে কী লেখা থাকলো – যাই লেখা থাক তাদের এনিয়ে পরোয়া করার সময় নাই এখন। এভাবে উচ্ছিষ্ট এক-দুইটা আসন পাওয়া বা খাওয়ার লোভে গাদ্দারি আবার ১৬ বছরের দেশবিক্রি এটাই কী বাংলাদেশের আগামি ভবিষ্যত??
৩। কিন্তু তাহলে আবার ফিরে প্রশ্ন, বিএনপির পিছনে কে তাহলে? বিএনপির ইতিহাসে এই দল কী এমন প্রথম আলো ঘনিষ্ট নাকি? নাকি ডিইউজে এর দলবাজিতে বিএনপি-জামাতের ডিইউজে অংশ বা এর সদস্যরা প্রথমালো-স্টার বা এই প্রগতিশীল=হিন্দুত্ববাদি অংশের সাংবাদিক??? তাহলে এখন প্রথম আলো  “স্বাধীন সাংবাদিকতা” করছে  আর এরাই স্বাধীন “গণমাধ্যম?”এমন সার্টিফিকেট বিতরণে বিএনপি প্রধান দল কবে থেকে? ডিইউজে-বিএফইউজে [DUJ-BFUJ] এসব ভাগাভাগি কী তাহলে সত্য না, ভুল ইতিহাস?
৪। তাহলে এই ছবিটা হল, বাংলাদেশের র-এর ক্ষমতা কী ও কতখানি এর প্রকাশিত রূপ। মানে আমাদের দলগুলো কতটা র-এর চাকর-বাকর বা এর হাতের মুঠোয় এরই প্রতিচ্ছবি এটা! এক বিএনপি-জামায়াত কে কব্জা করেই র’ সিপিবি থেকে বিএনপি হয়ে জামাত পর্যন্ত সকলকে প্রথম আলো রক্ষা করতে হাজির করে ফেলেছে। যা বাংলাদেশের ইতিহাস এটা অকল্পনীয় ছিল এতদিন।

তাহলে বাংলাদেশের ভবিষ্যত কী?
সেটারও প্রতিচ্ছবি উপরের এই ছবি! সব কথা লিখা আছে এই ছবিতে।

মানে হল, এমন সব দলকে বগলদাবা করে ভারতের চাহিদা ও দাবির মত রোড ম্যাপ চাই বলে ইউনুস সাব কে একটা হুঙ্কার দিলেই তো সরকার কাপড় খারাপ করে ফেলার কথা, নাকি!!!!
এটাই তো বাংলাদেশের ভবিষ্যত, নাকি!!!

তবে মুল বিষয়টা হল, এতে মির্জা সাহেবের চেয়ারম্যান বা বিএনপি দলের গায়ে যত পুরান কালিমা লেগে আছে বা ভারত লাগিয়ে রেখেছে যেমন জেএমবি, দশ ট্রাক, বা গ্রেনেড ইত্যাদি এসবের একটাও র-এর মুছবে না। বরং হানি ট্রাপের (যেকাজে দক্ষতার জন্য র-এর কুখ্যাতি) মত মানে মধুমক্ষির মত এগুলোকে একেক টা ট্রাপ হিসাবে বিএনপি-জামাতের উপর ক্রমাগত ও বারবার ব্যবহার করেই চলবে – যখন ভারত যেভাবে যা বলবে র-যা চাইবে তাই তখন করে দিতে হবেই। নিজের ‘বলস’ কারো হাতে তুলে দেওয়ার ফলাফল তো এমনই হবার কথা!

 

মির্জা ফকরুল দুদিন আগে ইউনুসের সাথে দেখা করেছিল। যেদিন সারাদিনের ঘটনায় (সরকারী পিপি আলিফ কে নৃশংস হত্যার পরদিন) মির্জা একবারের জন্যও এই হত্যা বা চিন্ময় প্রসঙ্গ প্রকাশ্যে কোথাও তুলে নাই; নিন্দা করেন নাই। সন্ধায় ইউনুসের সাথে দেখা করে বেরিয়ে সাংবাদিকের সাথে কথা বলার সময় তিনি ও পাশে দাঁড়ানো ঞ্জরুলের সাহেদের সাথে তিনি এক মিচকি হাসি দিচ্ছেলেন। সাইকোলজির টার্মে এটাকে বলে যখন মানুষ অন্যের তুলনায় নিজেকে বড়-শ্রেষ্ঠ বোধ আছে, অন্যকে তুচ্ছ মনে করেন সেটারই বডি-ল্যাঙ্গুয়েজ হল এটা। তিনি কী বলতে চাইছিলেন যে র-এখন বিএনপির মাথায় হাত রেখেছে কাজেই ইউনুস সাহেব কে যখন চ্যলেঞ্জ করেছি চিন্ময় কে ধরেছেন কেন, ওকে ছেড়ে দেন সব আপোষ মীমাংসা করে ওদেরস আথে আপোষ করে নেন –  এভাবে চিন্ময়-ইসকন-র-ভারতের সেবাদাস হতে ইউনুসের উপর দাবি বা চাপ সৃষ্টিকেই মির্জা দাবী করেছেন – এটাই নাকি মির্জার কথিত   জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির আহ্বান !!!! মানে যেটা হল প্রত্যক্ষ র-এর প্রতিনিধি চিন্ময়, একে জড়িয়ে ধরে চুম্মা দিয়ে চিন্ময়-কেন্দ্রিক এক কথিত ‘জাতি’ আর এরই জাতীয় ঐক্য!  ভারী মজার না! (এখানে একটু হাততালি হবে) আর একাজ করে আসতে পেরে নিজের পারফরমেন্সের প্রশংসা করছিলেন কী তিনি মনে মনে তাই এই ভ্রুকুটি তোলা হাসি!!!!
তা হতেও পারে। যদিও বলতেই হয় যে এই হাসিটা অভদ্রতা! মানুষের সাথে মানুষের স্বার্থের,  বা ক্ষমতা পাওয়া নিয়ে দ্বন্দ্ব লড়াই হতেই পারে কিন্তু সেজন্য অভদ্রতা ম্যান্ডেটারি  তো নয়, তাই না!!!

আচ্ছা চিন্ময়কে বিএনপি তার চেয়ারম্যান করে নিলেই তো সব লেঠা চুকে যায়!

নাকি কোন মিরাকল কিছু ঘটবে? দালাল ও দেশ বেচা স্বার্থের সব দলকে মাটি চাপা দিয়ে জনগণ উঠে দাঁড়াবে, প্রায় অসম্ভব মনে হওয়াকেই সম্ভব করে দেখাবে?
পাবলিক কে সাথে নিয়ে ইউনুস ও আমরা সব বাহিনী উঠে দাঁড়িয়ে যাব, যা ভারতের পরিকল্পনা নস্যাত করে ও এজেন্টদের উপরে ফেলে দিবে???

 

লেখকঃ
গৌতম দাস, রাজনৈতিক বিশ্লেষক
goutamdas1958@hotmail.com

আপডেটঃ  নভেম্বর  ২০২৪
শেষ আপডেটঃ      ২০২৪

 

Leave a comment