সরি ইউনুস সাব, আপনার সিপিডি প্রেমে আমরা ক্ষুব্দ হতাশ – চিটেড বোধ করছি
গৌতম দাস
০১ ডিসেম্বর ২০২৪ রাত ২২ঃ ১০
সিপিডির ৩০ বছর পূর্তিতে ড. ইউনূসের বিশেষ বার্তা | Dr Yunus | CPD | Ekhon TV
এটা আন-একসেপ্টেবল! এটা অগ্রহণযোগ্য!
প্রধান উপদেষ্টা ডঃ ইউনুস, আপনি নিজ ব্যক্তিস্বার্থে আর সেই সুত্রে লব্ধ ব্যক্তিবোধ-অনুভব ইত্যাদির সাথে আপনার বর্তমান পদ-পদবীর স্বার্থ ও মর্যাদা মাখায় ফেলতে পারেন না।
এটা অপরাধের পর্যায়ে পরে! কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট – অন্তত এদিকটা আমল করতেই হত আপনাকে!
আমি ক্ষুব্ধ, আমরা হতাশ!!! এটা হতে পারে না।
সিপিডি প্রতিষ্ঠানের ট্রাস্টি হতে পারেন প্রধান উপদেষ্টা ইউনুস!
আর প্রফেসর রেহমান সোবহান তাঁর শিক্ষকও হয়ত!
বাট ডাজ ইন মিন আপনি ইউনুস আপনার এই ব্যক্তিগত আনুগত্য বোধ দিয়ে সিপিডি প্রতিষ্ঠান ও রেহমান সোবহান এর মুল্যায়ন করবেন? আপনি?
যেখানে ছাত্র-জনতার আন্দোলন ৫ আগষ্ট সম্পর্কে আপনি প্রায়ই বলে থাকেন এই শিক্ষার্থী নেতারাই আপনাকে চেয়ারে বসিয়েছে। কিন্তু সিপিডি ও রেহমান সোবহান এদের গত ১৬ বা (তারও বেশি) বছরের অবস্থান ছিল এর একেবারেই উলটা।
কিন্তু আপনি কী জানেন ২০০৭ সালে ১/১১ এর ক্ষমতা দখলের পরপরেই রেহমান সোবহান ভারতের স্বার্থের দালালি শুরু করে দিয়েছিলেন।
তিনি দাবী করেছিলেন ভারতকে করিডোর দিলে [কানেকটিভিটি নামে এক দালালি শব্দ আবিস্কার করেছিলেন] তাতে নাকি বাংলাদেশেরই লাভ হবে। এথেকে মানে ভারতকে করিডোর দিয়ে বিনিময়ে বাংলাদেশ যে প্রচুর আর লাভজনক ভাবে অর্থ আয় করবে। আর সেতা এতই অর্থ যে আমরা নাকি সিঙ্গাপুরের মত উন্নত দেশ হয়ে যাব। উনি এখানেই থামেন নাই, বলেছিলেন যারা তার এই অবস্থানের বিরোধীতা করবে তারা সবাই অশিক্ষিত!
আসলে এই ক্যাম্পেইনের জন্য তার প্রতিষ্ঠান সিপিডি যেন ভারতের সাথে কন্টাক্ট নিয়েছে এমন এক বেপরোয়া ততপরতা আমরা দেখেছি সে সময়ে। দেখেন এখানে
‘ট্রানজিট নিয়ে বিতর্ক অশিক্ষিত বিতর্ক’
এছাড়াও বাস্তবে কী হয়েছিল? হাসিনা সরকারের অর্থ উপদেষ্টা বলেছিলেন কেন ভারতের থেকে অর্থ নেয়া হবে এটা তো অসভ্যতা। ২। বাস্তবে বাংলাদেশ বিদেশি দাতাদের থেকে অবকাঠামো ঋণ নিয়ে সেই অর্থে রাস্তা-ব্রিজ-বন্দর ইত্যাদি যেসব অবকাঠামো তৈরি করেছে সেসবই প্রায় বিনা পয়সায় ভারত ব্যবহার করে গিয়েছে বিনা পয়সায়। বিনিময়ে হাসিনা সরকারকে জবরদস্তি ক্ষমতার রাখার ব্যবস্থা করে গেছে ভারত। আর ঐ ঋণের অর্থ সুদ সহ পরিশোধের বোঝা এখনও বয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের জনগণ!
আর এটাই হল সিপিডি ও রেহমানের সোবহানের ১৬ বছরের ততপরতার কিছু অবদান! আমার পাঠকেরা জানেন নিশ্চয় এনিয়ে আমি গত চারমাসে অন্তত তিনটা লেখা দিয়েছি।
বিশেষ করে, আপনি ইউনুস বেপরোয়াভাবে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যকে আপনি এক সংস্কার কমিটির নেতা করেছিলেন যখন।
আরো আছে যেমন, সিপিডি এই প্রতিষ্ঠানটা হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশের ইসকনি হিন্দুদের সাথে মোদির যোগাযোগ করিয়ে দেয়ার বৈঠকখানা! শ্রীরাধা দত্ত এখন আমেরিকান ফান্ডেডঃ এশিয়ান থিঙ্কট্যাঙ্কে নিজেকে যুক্ত করেছেন। এর আগে পুরা সময়টাই তিনি ছিলেন আরএসএস এর মালিকানায় পরিচালিত থিঙ্কট্যাঙ্ক বিবেকানন্দ ফাউন্ডেশন এর কর্তা। অজিত দোভাল যে দলীয় থিঙ্কট্যাঙ্কের প্রধান কর্তা। আর বাংলাদেশের ইসকনি হিন্দু নেতারা এই শ্রীরাধা দত্তকে কল করেই এই মাধ্যমেই মোদির কাছে নালিশ ইত্যাদি পৌছাতেন। শ্রীরাধা ঢাকায় এলে এই সিপিডি তেই আসন গাড়তেন। হাসিনা আমলে সিপিডি ও রেহমান সোবহান এভাবে হয়ে উঠেছিলেন ভারতের স্বার্থ দেখভালের লোকাল স্টেশন। বাংলাদেশে মোদির এজেন্ট প্রতিষ্ঠানে রানা দাসগুপ্তের হিন্দু বৌধ্য সংগঠনের সভার প্রধান অতথি বা বিশেষ অতিথি হয়ে থাকতেন রেহমান সোবহান ও দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
বাইডেনের আমলে তার সাময়িক কিছু নয়া নীতিতেই বিরোধিদল রাস্তায় নামতে পেরেছিল। বাইডেন হাসিনার বাংলাদেশকে ১০ডিসেম্বর ২০২১ এক মানবাধিকার সম্মেলনে দাওয়াত দেন নাই। এজন্য সিপিডির সভায় শ্রীরাধা দত্ত এন্ড গং সকলে এজন্য যেন এক শান্ত্বনা সভার আয়োজন করেছিল। দেখেন গণতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণ না পাওয়া আশীর্বাদ।
রেহমান সোবহান ছিলেন (হয়ত এখনও আছেন) প্রথম আলোর সাথে হাসিনার বিরোধ কমিয়ে একসাথে ধরে রাখার এজেন্ট। কোন প্রথম আলো? প্রথম আলো বন্ধুসভার এক ট্রাস্টি হলেন, হাসিনার এক ক্যাশিয়ার সামিট গ্রুপের মূলকর্তা। অর্থাৎ এবার নেটওয়ার্ক টা বুঝে নেন! এমন
আরো রেফারেন্স দিবার দরকার নাই।
আর আপনি ইউনুস আজ সিপিডি আর রেহমান সোবহান কে সার্টিফিকেট দিয়ে ভাষায় দিলেন! আমার যতটুকু ধারণা প্রধান উপদেষ্টা হয়ে যাবার পরে আপনার এর আগের সব অলংকার, কোন কমিটির কে ইত্যাদি সবই সাময়িক জুতে বাইরে খুলে ঘরে প্রবেশের মত বাইরে রেখে আসার কথা। যে পুর্বশর্ত যেমনই থাক নিজেকে সৎ ও নৈতিকভাবে পরিকার রাখার জন্য আর সবচেয়ে বড় কথা অন্য যেকোন প্রতিষ্ঠানের সাথে আপনার প্রধান উপদেষ্টা পদবি ও চেয়ারটাকে – কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট – এড়ানোর স্বার্থে আপনি ত্যাগ করে আসবেন এটাই কী কায় ছিল না???
আপনি প্রধান উপদেষ্টা হবার পরেও সিপিডির ট্রাস্টি সদস্য থাকেন কেন? কী করে?
বিশেষ করে যে সিপিডি যখন বাংলাদেশে ভারতের স্বার্থের এক এজেন্ট প্রতিষ্ঠান!
আবার আপনি ছাত্র বা শিক্ষার্থীদের ৫ আগষ্ট বিপ্লবের প্রতিনিধি হিসাবে প্রধান উপদেষ্টা বলে পরিচয় দিতে ভাল বাসেন! এর মানে হল, শিক্ষার্থীদের এই অর্জনের গায়ে ভারতের স্বার্থের প্রতীক সিপিডি ও রেহমান সোবহান এর আবর্জনা ঢেলে দিলেন????
অথচ আজ আপনার সাহসেই দেবপ্রিয় এখন ৫ আগষ্ট বিপ্লবের নেতা হয়ে উঠা বা দাবী করতে চাইছেন……!
লেখকঃ
গৌতম দাস, রাজনৈতিক বিশ্লেষক
goutamdas1958@hotmail.com
০১ ডিসেম্বর ২০২৪ রাত ১১ঃ ৩৯
আপডেটঃ ২০২৪

