কোথায় ছিলেন বিক্রম?


কোথায় ছিলেন বিক্রম?
গৌতম দাস

১৫ ডিসেম্বর ২০২৪
https://wp.me/p1sCvy-63H

 

 

 

 

একঘন্টা কোথায় ছিলেন বিক্রম? – এটা আজ সন্ধ্যার হট কেকে আলোচনা। বিশেষ করে সামাজিক আলোচনার অন্যতম প্ল্যাটফর্ম ফেসবুকে!
যদিও রাষ্ট্রের গোপন বিষয় বা যেকোন গোপন বা অপ্রকাশ্য বৈঠক নিয়ে আলোচনা তুলে আনা বেশ সীমাবদ্ধতার কাজ । অন্তত এখানে এমন অনেক বিষয়-প্রসঙ্গ থাকে যে চাপ্টারটা জানি বা না-জানি তা নিয়ে প্রকাশ্যে আলোচনা করা যায় না। তা করা একেবারেই সঠিকও না। কারণ রাষ্ট্রস্বার্থের অনেক কিছু তাতে জড়িয়ে থাকতে পারে। সেটা সামলে রাখাই তো দায়ীত্বপুর্ণ নাগরিকের কাজ!  কাজেই কিছু কিছু রেড লাইন আমরা ক্রশ করতেই পারি না; এমনকি নাগরিক অধিকারের দোহাই দিয়েও না।

তবুও উপরের এসব দিক আমলে রেখেও কিছু আলোচনা তো করাই যায়! হ্যা, তাই আমরা করার চেষ্টা করব এখানে।
আমার দেখা তিনটা মানে আসলে দুটা মিডিয়ায় এনিয়ে কিছু আলোকপাত করার চেষ্টা করেছে তারা হল, আউটলুকমানবজমিন (জনতার চোখ) । তবে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি আমাদের সেনাপ্রধান ও সাথীদের সাথে কী বিষয়ে কথা হয়েছে এদিক নিয়ে কেউই কোন হদিস এর ইঙ্গিতও দিতে পারে নাই। এই হল সীমাবদ্ধতার দিকটা।

এখন সেই সীমাবদ্ধতার মধ্যেই থেকেও মানে এটা স্বীকার করে নিয়েও অনেক কথা বলা যায় তাই এখানে বলব।

কথা এভাবে সেভাবে যত যাই বলি, ঐ বৈঠকে কথার ইস্যু যা হতে পারে তা দুই ধরনের। এক. এমন ইস্যুতে যেটা আসলে প্রত্যক্ষভাবে কিছু নাগরিক ব্যক্তিস্বার্থ ও অধিকার সম্পর্কিত দিকও আছে বা থেকে গেছে। আবার এমন হতে পারে, দুই. কিছু ইস্যুতে রাষ্ট্রস্বার্থ একেবারেই প্রধান যার অর্থ হল পাবলিক ইন্টারেস্ট বা জনস্বার্থ সেখানেও আছে তবে একটু পরোক্ষে।

গত মাস খানেকের বেশি হবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছিলেন যে বিডিআর বিদ্রোহ মামলা আরো স্বচ্ছ করে খুঁজে দেখার জন্য, অসমাপ্ত এদিকটা সম্পন্ন করতে একটা কমিশন গঠন করা হবে।  যা সেকালে (২০০৯) কোন মতে ধামাচাপা দেয়া হয়েছিল; সেসব এবার খুলে সাফা করা হবে। কিন্তু  আজকে হাইকোর্টে কে অবহিত করতে গিয়ে এটর্ণীর অফিস থেকে আদালতকে জানানো হয়েছে সরকার আপাতত কমিশন গঠন নিয়ে আগাচ্ছে না। এখানে আপাতত কথাটা গুরুত্বপুর্ণ;  এর মানে হল, এখন না হলেও পরে হতে পারবে বা পারে। আর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার এমন অবস্থানে পিছনের সাফাই যুক্তিতে জানিয়েছে আদালতে নাকি এ’সংক্রান্ত দুইটা আগের মামলা পেন্ডিং আছে। সেগুলো নিষ্পত্তি হয় নাই তাই সরকার করতে পারছে না। যদিও এই রিট যারা আদালতে করেছিলেন সেই বাদীপক্ষ আজ পাবলিকলি জানিয়েছেন যে  এর আগে এমন পেন্ডিং মামলার পরিস্থিতিতেও শেখ মুজিবের হত্যার মামলা বলেছে যা উদাহরণ বা রেফারেন্স আছে। যার অর্থ সরকারী সাফাই সত্যি বা ভ্যালিড নয়; এই হল বাদীপক্ষের দাবি।

যাই হোক আমাদের প্রাসঙ্গিক মুলকথাটা হল, এখান থেকেই জল্পনা-কল্পনা উঠেছে তাহলে এটাই কী – একঘন্টা কোথায় ছিলেন বৈঠকের ইস্যু – ছিল? সেকারণে ইউনুস সরকার পিছু হটছে??? এই হল সন্দেহ!!

তবে একেবারে স্পষ্ট করে বললে, এর পক্ষে কোন কনফার্মেশন কোন নিশ্চয়তা কোথাও কার কাছে এখনও নাই! এই অর্থে এটা জল্পনা-কল্পনা পর্যায়েই এখনও থেকে আছে!
যাই হোক এটা তবে আমার উপরে বলা সেকেন্ড ইস্যুর উদাহরণ। অর্থাৎ পরোক্ষে সব নাগরিক ক্ষতিগ্রস্থ এখানে, আর দেশের নাগরিকের রাষ্ট্র সেই রাষ্ট্রস্বার্থের ক্ষতিগ্রস্থতার উদাহরণ হবে এটা।

আর প্রথম উদাহরণটা যেখানে কিছু নাগরিক প্রত্যক্ষ ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার মামলা।

এখন আমার সাফ কথাটা বলবঃ
মামলা নাগরিকের পরোক্ষে সবার অথবা প্রত্যক্ষ কিছু নাগরিকের স্বার্থ ঘটিত যাই হোক না  – যেটা ঘটবেই তা হল, ঐ একঘন্টা কোথায় ছিলেন বৈঠকের আলোচনায় কোন আপোষ রফা যদি হয়েই থাকে সেক্ষেত্রে কিন্তু এটা নিয়ে যেকোন পাবলিক আদালতের শরাণাপন্ন হবেনইআমরা নিশ্চিত থাকতে পারি। অন্তত এখনকার মানের সুপ্রীম কোর্ট যদি থেকে যায়। আর সেক্ষেত্রে কোর্টের রায়  “একঘন্টা কোথায় ছিলেন বৈঠকের” সংশ্লিষ্টরা আর খোদ ইউনুস সরকার সবার জন্যই মারাত্মক বিব্রতকর একটা রায় হবে।
খোদ ইউনুস সরকারও দায়ী হবেন এজন্য যে ঐ রিপোর্ট বলছে ঐ একঘন্টা কোথায় ছিলেন বৈঠকে যেটাই আলোচনা হোক না কেন তা ইতোমধ্যেই সেনা সদস্যরা ইউনুস সাহেব ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবগত বা রিপোর্টেড হয়ে গেছে।

আর যদি, আগামিতে আদালতের মান বদলে দেয় বা যায় কেউ হাসিনা আমলের ও স্টাইলে চলে যায় আদালত  – তবে বলাই ভাল ক্ষুব্ধ নাগরিক জনগণ আবার এক ৫ আগষ্ট সারা বাংলাদেশ দেখবে!

কাজেই একঘন্টা কোথায় ছিলেন বৈঠকই কোন শেষ কথা নয়। আমরা বহু পথ পরিক্রমা ইতোমধ্যে পার করে ফেলেছি। পিছন ফিরার পথ আর নাই!

কাজেই একঘন্টা কোথায় ছিলেন বৈঠকই কোন শেষ কথা নয়।

আসলে ইউনুস সরকার ইতোমধ্যে একটা কথা উচ্চারণ করে ফেলেছেন। কথাটা হল, ভারতের সাথে সম্পর্ক হতে হবে সম মর্যাদার আর ন্যায্য অধিকার এদুইয়ের উপর ভিত্তি করে। যারাই এর ব্যত্যয় ঘটাবেন তারা নাগরিক জনগণের কাছে বেঈমান বলে পরিচিত হবেন!

তাই হবু ক্ষমতার কোন রাজনৈতিক দল, বর্তমান ইউনুস সরকার (সাথে সেনা অংশসহ) কারও পক্ষেই ভারতের সাথে কোন আন্ডারহ্যান্ড ডিল – করতে চাইলেও সেটাই শেষ কথা নয়! হবে না! আমার বিশ্বাস সকল পক্ষই আমার একথাটা মনে রাখবেন!

 

 

লেখকঃ
গৌতম দাস
রাজনৈতিক বিশ্লেষক
goutamdas1958@hotmail.com

 

 

Leave a comment