প্রথম আলো পুরানা পথেই; তাহলে সামনে কী!


প্রথম আলো পুরান পথেই; তাহলে সামনে কী!
গৌতম দাস
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪  সন্ধ্যা ০৬ঃ ৫৫
https://wp.me/p1sCvy-66Q

 

 

 

 

 

 

 

 

প্রথম আলো কিছুই বদলায় নাই। মানে শিক্ষা নেয় নাই। আর সে মাপেই তার কথিত ‘কূটনৈতিক প্রতিবেদক” সেও কিছু বদলায় নাই।  রাহিদ-এরা ঝামেলা আছে বুঝলে নাম সরিয়ে পদবী লিখে থাকে। তারা জানে যে এমন কাজ গর্হিত কাজ অপ-সাংবাদিকতা। গত ২১ ডিসেম্বর মানে পরশুদিন এমনই এক কথিত বিশ্লেষণ ছাপা হয়েছে প্রথম আলো তে। শিরোনাম, বাংলাদেশভারত সম্পর্কে নতুন অস্বস্তি সৃষ্টি এড়াতে সচেষ্ট থাকা উচিত এভাবে। প্রথমত ভাসুরের নাম মুখে না নিবার মত করে বলা শব্দ হল অস্বস্তি; মানে বাংলাদেশ–ভারত সম্পর্ক এর মধ্যে “কোন অস্বস্তি বলে” কোন কিছু আছে তাই বুঝানো হচ্ছে। কিন্তু খাড়া বললে এটা হল ইন্ডিয়া ও মোদি অন্তত  আমাদের “আয়নাঘর” আর বিডিয়ার হত্যা ২০০৯  [এছাড়া আরও কত কী যে অপরাধ আছে] এর সাথে সরাসরি যে সংশ্লিষ্ঠতা আছে তা থেকে বাঁচতে বাংলাদেশের উপর হিন্দু নির্যাতন এর প্রপাগান্ডা দিয়ে ব্যাপক চাপ সৃষ্টির পরিকল্পনা নিয়ে এতদিন আগায় ছিল।যার ভিতরে আচে আবার চিন্ময়-ইসপকন সহ আরো কত কী!!! কিন্তু এসব অপরাধগুলো প্রথম আলো উল্লেখ করতে চায় নাই। তাই ছোট শব্দ অস্বস্তি!    এখন এখানে দেখা যাচ্ছে প্রথম আলো এই সম্পর্কে অস্বস্তি নামক শব্দ টা কী নিয়ে তা বলতে চাচ্ছে না। বরং নিরপেক্ষতার ভান ধরেছে।
আসলে প্রথম আলো ভারতের স্বার্থের সক্রিয় প্রপাগান্ডা মেশিন হয়ে যেমন ছিল এতদিন ১৬ বছর জুড়ে তেমনই থাকতে চাচ্ছে। মানে কোন শিক্ষা হয় নাই; শিক্ষা নেয়ও নাই।

বিএনপি (আর তার দেখাদেখি জামায়াতও অনেকটাই) ইন্ডিয়ার দাওয়াত-উস্কানিতে যে বিনিময়ে ইন্ডিয়া তাদেরকে কোলে তুলে নিয়ে ক্ষমতায় বসিয়ে দিবে এমন “নয়া হাসিনা” হবার লোভ সামলাওতে পারে নাই। সেদিকে ছুটছে তো ছুটছেই।  একবারও পিছন ফিরে দেখার কথাও মনে নাই যে খোদ ইন্ডিয়াই বাংলাদেশ থেকে ক্রমশ আউট হয়ে যাচ্ছে; অন্তত  আয়নাঘর ও বিডিআর হত্যাকান্ড এই দুইটা ইস্যুও যদি উল্লেখ করি তাহলেও তো কিছু বুঝা যায়! মানে যা নিয়ে সেনাসদরে বিক্রম সাব আমাদেরকে চাপ দিতে এসেছিল তা এখন পুরাই পাবলিকলি উদাম হয়ে গেছে; কারণ এটা আর হাসিনার বাংলাদেশ নয়। কাজেই চিন্ময়-ইসকন ইস্যু বা কথিত হিন্দু নির্যাতনের প্রপাগান্ডা যা দিয়ে ইন্ডিয়া আমাদেরকে চাপে ফেলে কাজ উদ্ধার করতে, নিজের পাপ-ক্রিমিনালিটি ঢাকতে এসেছিল সেই পাশার দানও উলটে গিয়েছে।
এর  দুদিন পরেই ইতোমধ্যেই গুম কমিশনের প্রাথমিক রিপোর্ট প্রকাশ হয়ে গেছে যেখানে আয়নাঘর-অপহরণ ইস্যুতে ভারতের সংশ্লিষ্টতা এখন বিবিসিসহ সব দেশি সকল মিডিয়াতেই।  এছাড়া আজ বিডিআর হত্যাকান্ড তদন্তের নয়া কমিশনও গঠিত হয়ে গেছে। আর ইতোমধ্যেই এদুই ইস্যুতেই ইন্টারনাশনাল ক্রাইম ট্রাইবুনালে মামলা দায়েরও হয়ে গেছে।
কাজেই ভারতকেই এখন রাষ্ট্র হিসাবে আসন্ন এসব ক্রিমিনাল মামলায় সংশ্লিষ্টতা সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক কেলেঙ্কারি মোকাবিলা কেমন করে করবে সেটাই ইস্যু?  এনিয়ে আসন্ন পরিস্থিতি সামলাবে কী করে সে চিন্তায় মোদির ইন্ডিয়ারই ঘুম হারাম হয়ে যাবে এখন। অথচ প্রথম আলো ও তাদের কূটনৈতিক প্রতিনিধিদের ঘুম ভাঙ্গে নাই।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জয়সোয়ালের গলার টোন বদলে গেছে। এটা তো অন্তত কারো না দেখতে পাবার কথা না। তিনি সর্বশেষ এখন বলছেন “দায়ীত্বশীলতার” কথা। বলছেন, “…… আমরা সবাইকে মনে করিয়ে দিতে চাই, প্রকাশ্য মন্তব্য যেন ভেবেচিন্তে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে করা হয়”।

শুধু তাই না, আগামি জানুয়ারি থেকেই ইন্ডিয়া-আমেরিকান বিরোধ আরো তুঙ্গে উঠবে। ইতোমধ্যেই ইন্ডিয়ার উপর আমেরিকার আরোপিত স্যাংশন আমরা যেন ভুলে না যাই। এর সবকিছুর মানে এই বাইডেন আমলের শেষ কদিন থেকেই সব শুরু হচ্ছে।। মানে হল, হাসিনা সহ সারা ইন্ডিয়ার যারাই তাদের ট্রাম্প ভাইয়া এসে তাদের হাতে আবার বাংলাদেশটাই হাসিনা ও ইন্ডিয়ার হাতে তুলে দিবে বলে প্রকাশ্যেই আশা রেখেছিলেন তাদের অবস্থা কী হবে অনুমেয়! এমনকি আমরা নিজেরাই যদি মোদির ভারতের বিবৃতি দেখি বা অনুসরণ করতে জানি তাহলে দেখব ইতোমধ্যেই মোদির ইন্ডিয়ার আমেরিকার বিরুদ্ধে মোদি ফরমাল অভিযোগ তুলেছেন। বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং শিল্পপতি গৌতম আদানিকে নিশানা করেছে আমেরিকান সরকার”। এটা ৮ ডিসেম্বরের ভারতের মিডিয়ার খবর। যার প্রতিক্রিয়ায় আমেরিকা কড়া ভাবে হতাশা জানিয়েছে।

আমার অনুমান আগামি জানুয়ারি মাস থেকেই আমেরিকা-ইন্ডিয়া সম্পর্ক তলানিতে ঠেকবে! অথচ এর কোন কোন খবর নাই প্রথম আলো ও তাদের কূটনৈতিক প্রতিনিধিদের। তারা ধরেই নিয়েছেন র-এর অর্থ আসবেই আর তারা বাংলাদেশে বসে ইন্ডিয়ার খেদমত করা লেখা লিখেই চালায় যাবেন – যেন কিছুই বদলায় নাই। বদলাবে না। এবার আগেই এসেছিল ত্রাতা মির্জা আলমগীর! নিজের মান-ইজ্জত বাজি রেখে এর বিনিময়ে খুবই মারাত্মক অভিনয় করে ……আপনারা চিন্তা করতে পারেন বলে তার সেই ডায়লগ ……. আজও ইতিহাস হয়ে আছে। এতে তখনকার মত লাভের লাভে জনরোষ থেকে প্রথম আলো বেঁচে গিয়েছিল।   কিন্তু শেষ রক্ষা হয় নাই।, খোদ মির্জা কেই বাচাতে, উসিলা করে বা যেভাবেই হোক ১২ দিনের জন্য সরে যেতে হয়েছিল। আর রিজভি তিনি কত বড় ইন্ডিয়াবিরোধী সেই ছল-অভিনয় করে হলেও সেই কার্ড শো করতে হয়েছিল। কিন্তু কেউ শিক্ষা নেয় নাই। তাদের কপালে যা আছে তা আমরা দেখব।

কিন্তু প্রথম আলো নিয়ে কথা বলছি এখানে, তাদের আবার সেই একই কায়দার কু-জার্নালিজম আবার শুরু হয়েছে। শুরুতেই যে লেখাটার কথা বলছিলাম, বাংলাদেশভারত সম্পর্কে নতুন অস্বস্তি সৃষ্টি এড়াতে সচেষ্ট থাকা উচিত, সেটাতে আবার  দালালিশুরু হয়েছে।  লেখার শুরুতেই মাথায় লিখে রেখেছে  এটা নাকি বিশ্লেষণ। কিন্তু ভিতরের বডিতে লেখার স্তাইল সেই পুরানাটাই। গায়েবি রেফারেন্স সুত্রে কথা বলা – এই হল, র-এর দালালির অপ-জার্ণালিজমের বৈশিষ্ট। সেটা এখানেও বর্তমান। তাই এলেখায় অন্তত দুবার লিখেছে বিশ্লেষকেরা বলেছেন; একবার বলেছেন কূটনৈতিক সুত্রে জানা গেছে। আরো একবার বলেছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষক বলেছেন……!!!   এভাবে জার্নালিজমকে পানিতে ফেলে দিয়ে হলেও অর্থ কামাতে হবে, র-এর দালালিই করতে হবে – একাজে প্রথম আলো ও তাদের নানান প্রতিনিধি, বা কথিত কূটনৈতিক প্রতিনিধিরা আবার ফিরে এসেছে!!! এভাবে এবার আরো কতদিন?
এবার মির্জা ফকরুল আসবেন না কারণ, আশা করছি আগামি মাস থেকেই সম্ভবত তারা নিজেরাই আছাড় খাওয়া শুরু করবেন!! আর হায় হায় করে উঠে তারা ভাববেন গত তিন মাস কোন গাছে তারা তাদের নৌকা বেঁধেছিলেন? যেই গাছ নিজেই এখন উপড়ে পরে যাচ্ছে……!!!!

উপদেষ্টা মাহফুজ আলম প্রসঙ্গঃ
সবশেষে, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম প্রসঙ্গ। রোগ সেই পুরানা কমিউনিস্ট রোগ…! তাতে রোগটা নিজের বা তাদের কমিউনিস্ট গুরুর যারই হোক না কেন তাতে ফলাফল পরিণতি কিন্তু একই!
বাস্তবের দুনিয়াটা কী?  আর এতে দুনিয়াদারিটা কী ও কেমন এ’সম্পর্কে কমিউনিস্টদের কোন ধারণাই নাই। কোনদিনই ছিল না। আমি অনেকবারই বলেছি, ১৯৪৫ সালের দুনিয়াটায় সবচেয়ে গভীর বদলগুলো কী তা এরা একেবারেই জানে না। তাদের গুরুই স্টালিন-ই জানত না। খেয়াল করেন নাই যে সারা দুনিয়া থেকে কলোনিদখল সব উতখাত হয়ে গেল কেমনে? কোন যাদুতে? আবার  এমনকি স্টালিন; তিনিসহ একাল পর্যন্ত সব কমিউনিস্টেরা মনে করেন দুনিয়া ১৯৪৫ সালের পরে কলোনিমুক্ত হয় নাই। সবচেয়ে আজীব কথাটা হল, খোদ স্টালিন ১৯৪২ সালের ১ জানুয়ারি এক ঐতিহাসিক দলিলে স্বাক্ষর করেছিলেন।  [ততদিনে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট রুজভেল্টের নেতৃত্বের জোটে  স্টালিন হিটলারবিরোধী( এন্ড গং -বিরোধী) এই জোটে যোগ দিয়ে ফেলেছেন] আর ঐ দলিলেই লেখা ছিল যে  হিটলার এন্ড গংয়ের পতন আর এই জোট বিজয়ী হলে নয়া দুনিয়াটা একেবারে কলোনিমুক্ত হয়ে যাবে। মানে যারা রুজভেল্টের পক্ষের শক্তি অথচ যারাই মূলত দুনিয়াতে সবচেয়ে বেশি কলোনিদখলদার দেশ তারাই হিটলারের পরাজয়ের পরে নিজ নিজ দখলদারি ছেড়ে নিজ দখলিকৃত কলোনিগুলোকে আপোষে মুক্ত করে ছেড়ে দিয়ে এরপর সোজা হেঁটে  নিজ নিজে মূল দেশে ফিরে  চলে যাবে। [এভাবেই আর সবার মত বৃটিশ-ইন্ডিয়া মুক্ত হয়েছিল ১৯৪৭ সালে। ] আসতে এই শর্ত বা প্রতিশ্রুতি সব কলোনিদখলদারদের পক্ষ থেকে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী চার্চিল রুজভেল্টকে দিয়েছিলেন। আর এর বিনিময়ে যুদ্ধের প্রধান খরচের দায়ভার একা আমেরিকা নিজের কাঁধে নিয়েছিল।

ঘটনা হল, স্টালিন নিজে ঐ ১৯৪২ সালের ১ জানুয়ারির দলিল যেখানে তিনি স্বাক্ষর করেছিলেন তা ডিটেল পরে দেখেন নাই; বলে অনুমান করা হয়। কেবল হিটলার উতখাত হবে – এতটুকুতেই ছিল তার মূল আগ্রহ,  সম্ভবত সেই কারণে। আর ইতিহাসে ১৯৪২ সালের ১ জানুয়ারির ঐ দলিল – এটাই জাতিসংঘের জন্ম ঘোষণার দলিল বলে পরিচিত। ইংরাজিতে [Declaration by the United Nations, January 1, 1942]  আর ঐ দলিলের সারকথা হল, কলোনি দখল হারাম! কোন দুই জাতিসংঘ সদস্য রাষ্ট্র কেউ কারো ভুখন্ড দখল বা পুরা দেশটাই দখল করলে ( জাতিসংঘের মোট ১৯৩ রাষ্ট্রের সিংঘভাগ সদস্য রাষ্ট্র দখলকারির বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিবে – ঠিক যেমন অবস্থা শেষ পর্যন্ত হয়েছিল সাদ্দাম হোসেনের কুয়েত দখলে………। সেটাই ঘটবে।  যেকোন দুই রাষ্ট্র যদি তাদের সীমান্ত একসাথে বসে মাপামাপি করে একবার একই দলিল ম্যাপ তৈরি করে নেয়; এরপরে ঐ একই ম্যাপের দুইটা কপি দুই দেশের কাছে থেকে যায় তবে সেই মামলা হবে মারাত্মক! কারণ সেক্ষেত্রে আর কখনও তাদের মধ্যে কোন সীমানা নিয়ে যুদ্ধের সুযোগ থাকবে না।  বৃটিশ ইন্ডিয়াতে বেশির ভাগ সীমান্ত শাসক বৃটিশেরা এমন কমন ম্যাপ করে রেখে গেছে। কিন্তু যেগুলা করদ রাজ্য ছিল সেগুলো বৃটিশেরা এই এলাকা গুলোতে তা করতে পারে নাই এক্তিয়ার ছিল না বলে। তেমনই এক সীমান্ত (করদ রাজ্য কাশ্মীরের অংশ বলে) হল ভারত-চীন এদের লাদাখ এলাকা। যেটা একালে নিজেরা বসে আপোষে করে নিতে হত কিন্তু হয় নাই।

এখন মূল প্রসঙ্গে প্রবেশ করি – মাহফুজ জানেই (কারণ জানলে করত না) না যে, একজন উপদেষ্টা [সরকারী মন্ত্রী] হওয়া মানে কী? তাঁর প্রতিটা আচরণ উনার ব্যক্তিক আচরণ নয়, বরং রাষ্ট্রীয় আচরণ, সিদ্ধান্ত বলে গণ্য হবে যার জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী হবেন এখনকার রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহি যিনি মানে, প্রধান উপদেষ্টা ইউনুস সাহেব!
মাহফুজ আলম মনের খায়েসে পোলাপান যেভাবে ফেসবুকে কতকিছু করে যার সীমা থাকে না। তিনি বাংলাদেশের বাইরে ভারতের এক বিরাট অংশ সাথে যুক্ত করে এক ম্যাপ ছেপে দিয়েছেন। আবার বলছেন মেলা কাজ নাকি বাকি???? মানে ইঙ্গিত হল সেগুলোও দখল করতে হবে – যেন এর ইঙ্গিত দিচ্ছেন!!!

আমাদের ভাগ্য ভাল যে এই আচরণের জন্য দিল্লিতে আমাদের রাষ্ট্রদুতকে ভারত সরকার তলব করেন নাই; ব্যাখ্যা চান নাই। কেবল মুখপাত্র জয়সোয়াল তার বিবৃতিতে উল্লেখ করে রেখেছেন!

কিন্তু কেন হল এরকম?
কারণ তাদের গুরুরা কমিউনিস্ট; ১৯৪৫ সালের আগেপিছের দুনিয়ার জন্য সবচেয়ে নির্ধারক দুনিয়ার ইতিহাস তারা জানেন না, পড়েন নাই। কারণ স্টালিন-ই ীই দলিলে সই করলেও মনোযোগে পড়ে দেখেন নাই! [এর সবচেয়ে বড় প্রমাণ হল তার নিও-কলোনিজম বলে নয়া নামকরণ করা বা নয়া ভোকাবুলারি এর জন্ম দেয়া] সবচেয়ে বড়কথা জাতিসংঘ! মানে ১৯৪৫ সালের পরে দুনিয়াতে যে একটা গ্লোবাল পলিটিক্যাল সিস্টেম [দয়া করে সিস্টেম শব্দটাকে বন্দোবস্ত পড়বেন না] এটা কোন কমিউনিস্টই এখনও খেয়াল করেছেন জানেন, পড়েছেন – আমি দেখি নাই!  তাদের কথিত “এক সাম্রাজ্যবাদ” বলে এক গালির শব্দ ছাড়া তাদের মাথায় কিছুই নাই। তাও শব্দের ব্যবহারের আগা-মাথা নাই।
যেমন প্রত্যেক দেশের দেশিয় পর্যায়ে যে পলিটিক্যাল সিস্টেম এটাকেই আমরা নিজ নিজ রাষ্ট্র বলে থাকি!  এমন সদস্য রাষ্টগুলোকে নিয়ে তৈরি হওয়া এক গ্লোবাল পলিটিক্যাল সিস্টেম, এমন প্রতিষ্ঠানের নামই হচ্ছে জাতিসংঘতবে বুঝাবুঝিতে কেবল একটাই সাবধানতা দিয়ে রাখি, জাতিসংঘ ঠিক প্রত্যেক সদস্য রাষ্ট্রের উপরে বাপ-কর্তা ধরনের প্রতিষ্ঠান; ঠিক এমনটা নয়! তাহলেও জাতিসংঘের অনেক বাধ্যবাধকতার অধীনে আমরা, বিশেষ করে যারা আমাদের মত ছোট দেশ!

সারকথায়, কমিউনিস্টদের কাছে ১৯৪৫ সালের পরের দুনিয়াটা কী? এখানে নয়া কী কী হয়েছে তাতে কী করা যায়; আর কী একেবারেই করা যায় না – রাষ্ট্রের মন্ত্রী দূরে থাক ব্যক্তি নাগরিকও করতে পারে না; সরকারের দায়ীত্ব হয়ে যায় তাকে বাধা দেয়া ইত্যাদি এসব এদিকটা নিয়ে কমিউনিস্টেরা একেবারেই সীমাহীন অন্ধকারে। এগুলো অযোগ্য চিন্তার স্টুপিডিটির অবশ্যই; আর এর কারণে এরকম বিপদে বাংলাদেশও আগে পড়েছে। মজার কথা হল, যেসব কমিউনিস্টেরা এমন কান্ড করে বাংলাদেশকে বিপদে ফেলেছে তারা এতই নাদান যে তারা এখনও ঠিক জানেন না যে তারা কী ও কত বড় অপরাধ করেছে!!!!

এদেরই কিছু চেলা এখনও আজকাল দেখবেন বাহাদুরি করে লিখে নয়া-উপনিবেশ [ইংরাজিতে Neo-colony]; কেউ কেউ আরো ওস্তাদ। এরা লিখবে বি-উপনিবেশায়নডি-কলোনাইজেশন থিউরি আউরাইবেন। অথচ দুনিয়ায়ে যে একটা গ্লোবাল পলিটিক্যাল সিস্টেম খাড়া হয়ে গেছে; এটা কোথা থেকে কীভাবে ঘটলো এদের খবরই নাই!

এসবের পরিণতি হল, একেকজন শিষ্য মাহফুজ আলম! মন্ত্রী জানেনই না তিনি কী করতে পারেন না অথবা কী করলে এর পরিণতি কী হয়!!!!!

যাহোক এলেখায় মূল প্রসঙ্গ হল, প্রথম আলো ও তাদের নানান প্রতিনিধি, যারা আবার একইভাবে র-এর দালালি চালায়ে যেতে শুরু করে দিয়েছেন! কিন্তু সমস্যা হল এবার আর কোন (র-এর হাত ধরে ক্ষমতায় যেতে আগ্রহী ফলে) উদ্ধারকর্তা, মির্জা নামে কাউকে পাওয়া যাবে না!

আর মাহফুজের কথা লিখতে হল কারণ, প্রথম আলোর লেখাটা শুরু হয়েছিল এভাবেঃ
“৫ আগস্ট–পরবর্তী রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক এক টানাপোড়েনের মধ্যে পড়েছে। এমন এক পরিবেশে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি ঢাকায় এসে পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করে গেছেন। দুই দেশের সম্পর্কের ইতিহাসের বিরল এই অস্বস্তি কাটানোর প্রথম ধাপ বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে এই সফরকে। পরিবর্তিত পরিস্থিতির নিরিখে সম্পর্কের ইতিবাচক বিবর্তনের এমন এক সময়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে ভারত”।

সেসব দিন আর একই রকম নাই! তাই এখন বাঁচতে চাইলে প্রথম আলোকে নতুন রাস্তা খুঁজতে হবে! বাকি সিদ্ধান্ত তাদের নিজের! হিন্দুত্ববাদ-চাটা আর এসব অপ-জার্ণালিজম দিকটা বাদ দিলে প্রতিষ্ঠানটা ভাল, সবচেয়ে বড় কথা অনেকজনের মেহনতের ফল এটা!  তবে এটাকে ধ্বংস করে ফেলতে চাইলে কে আর তা ঠেকাতে পারে!!!

লেখকঃ
গৌতম দাস
রাজনৈতিক বিশ্লেষক
goutamdas1958@hotmail.com

আপডেটঃ  রাত  ১০ঃ ১৫   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

Leave a comment