যেকোন রাষ্ট্রদ্রোহী বিবৃতির জবাব, এরদোয়ান-একশনঃ হয় মারো নয়ত মরো!
গৌতম দাস
২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ সকাল ০৭ঃ ৫৪
https://wp.me/p1sCvy-68N
তুরস্কে গুলেন পার্টির ব্যর্থ ক্যু – এর পরে এরদোয়ানের একশন; সরকারী এডমিন কর্তা সহ মিলিটারি, বিচার বিভাগ এবং অন্যান্যা ছুটকা…. গ্রেফতার ও বিচার
বাংলাদেশে গত ২৭ জুলাই বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অ্যসোসিয়েশেনের এক বিবৃতি ছাপা হয়েছে। সোজা বাংলায়, এতে জুলাই-আগষ্টের আন্দোলনকে লেখা হয়েছে, ছাত্র-জনতার জুলাই-আগষ্ট্রের আন্দোলন হল রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকান্ড। এককথায় এটা ইউনুস সরকারের ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ করা। তাহলে এখন!!!!
এই বিবৃতিতে আসলে আগষ্ট অভ্যুত্থানের আপামর ছাত্র-জনতাকেই রাষ্ট্রদ্রোহি বলেছে, চ্যালেঞ্জ করেছে! একদল সরকারী কর্মচারি হয়ে পাবলিকের অর্থে বেতন নিয়ে পাবলিককেই হুমকি দিচ্ছে!!!
গত ২০১৬ সালে জুলাই এরদোয়ানের তুরস্কে গুলেন পার্টিদের (ওবামা প্রশাসনের প্ররোচনায়) এক ব্যর্থ ক্যু ঘটেছিল। সেই ক্যু সামলে নিয়ে ও একে ব্যর্থ করে দেওয়ার পরে জুলাই-নভেম্বর এরদোয়ান যে একশনে গেছিলেন তাতে ১৫,০০০ এডিমিন স্টাফকে তিনি ছাটাই করে দিছিলেন। নিচে টাইম ম্যাগাজিনে সেই সংক্রান্ত নিউজে দেখেন,
Here’s a Time Line of the Insane Number of People Turkey’s President Has Fired Since July 15
আর ঐ রিপোর্টের প্রথম লাইন লেখেছিলঃ Turkey fired 15,000 state employees, including soldiers, police officers, tax inspectors, and midwives in the latest round of purges since the failed coup of July 15.
আর এরদোয়ান তা করেছিলেন স্রেফ দুটা ডিক্রি বা অধ্যাদেশ জারি করে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এনিয়ে লিখেছিলঃ এনিয়ে সবর্সাকুল্যে সোয়া লাখ সরকারী এডমিন কর্তা সহ মিলিটারি, বিচার বিভাগ এবং অন্যান্যা ছুটকা সব মিলিয়ে শেষে মোট সোয়া লাখ রাষ্ট্রবিরোধী দালালের বিরুদ্ধে এজকশনে গিয়েছিলেন এরদোয়ান। [he dismissals, announced in two decrees, bring to more than 125,000 the number of people sacked or suspended in the military, civil service, judiciary and elsewhere since July’s coup attempt. About 36,000 have been jailed pending trial in the crackdown condemned by Western allies and rights groups.] যাদের মধ্যে ৩৬ হাজার এখনও বিচারাধীন।
রাষ্টক্ষমতা কী সেটা আগে বুঝেন। একই কথা বারবার বলতে বিরক্ত লাগে কিন্তু কী করব! আমাদের এমম্নই কপাল প্রাক্তন এনজিও কর্তারাই বাংলাদেশে নিজেদেরকে স পারে সব বুঝে এমন বিশাল ক্ষমতা বুঝা লোক হিসাবে হাজির হয়ে যায়। এদের ধারণা রাষ্ট্র মানে পাবলিককে সেবা দেওয়া সস্তায় ইলিশ মাছ খাওয়ানো। রাষ্টড় পাবলিক সেবা দেয় অবশ্যই। কিন্তু সেটা করতে রাষ্ট্রের অধীনে চার-পাচটা শহরে মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনই যথেষ্ট। ক্কিন্তু রাষ্টড় মানে মেয়রগিরি না। এটা আর কয়বার আমাকে স্মরণ করাতে হব্বএ জানি না।
ক্ষমতা মানে সোজা বাংলায় মার-ধর। আপনার রাষ্ট্রক্ষমতার এনিমি যে তাকে আপনি চিনেনই না; আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন সে আপনাকে মারবে উতখাত করবে। কাজেই জনগণকে বাঁচাতে যদি ক্ষমতায় থাকতে চান তবে আপনাকেই সবার আগে রাষ্ট্রের শত্রু পড়শি দেশের দালালদেরকে উতখাত করতে হবেই। যদি আপনি এখানে শুশীল থাকেন, উদার বা লিবারেল-গিরি মারাতে যান তাহলে আপনি ক্ষমতায় থাকার অযোগ্য, নিকৃষ্ট কোন প্রাণী! এক কথায় ক্ষমতার সাথে শুশীল, উদার বা লিবারেল-গিরির সম্পর্ক নাই শুধু নাই, ক্ষমতা মানে ঠিক এর উলটা! ক্ষমতা খুবই নির্মম নৃশংস কিছুই করার নাই। হয় আপনি মারবেই নাহলে ওদের (শত্রুদের) হাতে মরবেন! এখন চয়েজ আপনার! এতে কোন মাফ নাই; একটা পক্ষে আপনাকে যেতেই হবে!
এরদোয়ান ক্ষমতা রক্ষার কাজটা ঠিক ঠিকভাবেই বুঝেছিলেন। কিন্তু আমরা ?????
ইউনুস সাহেব, আমাদেরকে দয়া করেন, মাফ করেন! একটা পক্ষ নেন। কারণ আপনি এখন প্রধান ক্ষমতায়!
জনগণের স্বার্থের মূল ধারক প্রতিষ্ঠানটাই হচ্ছে রাষ্ট্র ও এই রাষ্ট্রের নির্বাহী ক্ষমতায় যিনি আছেন। অর্থাৎ যেটা এখন আপনি। এখন এতে এই বুড়া বয়সে আপনার যদি নির্মম নৃশংসতা ভাল না লাগে তাহলে একটা কেবল ছোট কাজ আছে। কাউকে, ধরেন সেনাপ্রধান বা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এমন কাউকে রাষ্ট্রক্ষমতাকে রক্ষার কাজটা আপনার পক্ষ থেকে অফিসিয়ালি এসাইন করে দেন। আর নিয়মিত ফলাফল কতটুকু হল গেল কেবল সেটুকুর নিয়মিত রিপোর্ট নেন। আর নইলে শেষ উপায় হল, আপনি প্রধান নির্বাহী মানে প্রধান উপদেষ্টা পদ থেকে সরে আসেন। প্রেসিডেন্ট হতে চাইলে হন। অথবা শুভানুধ্যায়ী হয়ে বাসায় রেষ্ট করেন। কিন্তু দয়া করে বাংলাদেশ রাষ্ট্রক্ষমতাটাকে হাসিনা-মোদির পায়ের নিচে রেখে দিয়েন না।
পাঠক নিশ্চিয় বুঝতে পারছেন আমি কী বলছি। সরকারী কর্মচারীরা তাদের এর আগে অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অ্যসোসিয়েশেনের বিবৃতি ছাপা হয়েছে। এখন আপনি ইউনুস সাহেব কী এটা জেনেছেন?
অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অ্যসোসিয়েশেনের বিবৃতি
এটা কোন সরকারী কর্মচারীদের বিবৃতি মনে হয় নাই। মনে হয়েছে এরাই রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী পদের কেউ, মানে প্রধানমন্ত্রী! এমনকি হাসিনা-মোদির যৌথ বিবৃতিও মনে হয়েছে সময়ে! খোদ বাংলাদেশে যেন তাদের মানি ব্যাগের সম্পত্তি! কিংবা চাকর-বাকর! ইচ্চছে করলেই যাদেরকে তারা ধমকাতে পারে। বিবৃতির শুরুটা দেখেনঃ
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড,………।।
মানে কী দাঁড়ালো? ছাত্র-জনতার জুলাই-আগষ্ট্রের আন্দোলন হল রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকান্ড????? ৫ আগষ্টের হাসিনার পলায়ন ও ৮ আগষ্টে নতুন সরকার গঠনও তো তাহলে মারাত্মক রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড? এমনকি আপনি ইউনুস সাহেব তাহলে আপনিও সবচেয়ে বেশি অপরাধী কারণ আপনি হাসিনা উতখাত পরবর্তি প্রধান উপদেষ্টা!!!!
এখন জানতে চাই এই বিবৃতি কী আপনি এখনও দেখেছেন? কোন পদক্ষেপ নিয়েছেন? নাকি যমুনা ভবনে খুন হয়ে যাবার জন্য অপেক্ষা করছেন!!!!!! রাষ্ট্রক্ষমতার শত্রুদের আগে মারতে হয়, নয়ত নিজে মরতে হয়। সবকিছু শেষ হয়ে যাবার আগে – ক্ষমতা কী – সেটা একটু বুঝেন অন্তত!! নিজেকে রক্ষা করার স্বার্থে!
এরা চাকরিরত অবস্থায় অফিসের কাজ ফেলে প্রকাশ্য সমাবেশ করে সরকারকে আলটিমেটাম দিয়েছে। আর ইউনুস সাহেব আপনি উদার – ভেবেছেন না হয় একটু বলেছেই!!!!!
এরপর সচিবালয়ে আগুন দিয়ে পুরা মন্ত্রণালয়ই সাফা করে দিয়েছে। তাতেই একশন নাই।
আর তাতে এরা, আপনি ইউনুস সাহেব আপনার ক্ষমতাকেও চ্যালেঞ্জ করেছে!
এখন??????
একটাই পথ আমাদের এখন নির্মম “এরদোয়ান একশন” দরকার? অথবা উলটা করে বললে যিনি একশন নিতে পারবেন তিনি হবেন বাংলাদেশের এরদোয়ান; যিনি ওবামাকেও পরোয়া করেন নাই!!!
লেখকঃ
গৌতম দাস
রাজনৈতিক বিশ্লেষক
goutamdas1958@hotmail.com
আপডেটঃ সকাল ৯ঃ ০৭ ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪


Sir, we like to see your writing in national news papers. Thank you
LikeLike
Sorry, not depending on me.
LikeLike