ভারতের পালিওয়াল গং – মুখে হারের সুর;


ভারতের পালিওয়াল গং – মুখে হারের সুর;
বাংলাদেশের ভারত সমালোচকদের সাথে আপোষের পরামর্শ!

গৌতম দাস
০৭ নভেম্বর ২০২৩    ১৮ঃ ৫৭
https://wp.me/p1sCvy-56t

 

          “The AL believes the use of force and mounting casualties in the Opposition camp will rupture party supremo Tarique Rahman’s command and control over the BNP.”

 

ওরা ভয় পেয়েছে! কমরেড!
সিপিবি-মার্কা স্টাইলে লিখলাম!

কিন্তু ওরা কারা!
অবিনাশ পালিওয়াল এন্ড গং; মনে হচ্ছে এরা ভয় পেয়েছে!  অবিনাশ পালিওয়াল [Avinash Paliwal]; তার নামটা ইংরাজিতে যেভাবে হিন্দুস্তান টাইমস লিখেছে তা উচ্চারণ করার সময়ে সেটা অনুসরণ না করে বরং, আমাদের  বাংলা শব্দে লিখলে যেমন হবে সেভাবে লিখলাম – অবিনাশ পালিওয়াল। এই অবিনাশ আবার একটা লেখা দিয়েছে; তাঁর লেখায় তিনি সাধারণত বাংলাদেশের আর্মি নিয়ে হালকা টাচ রেখে লিখে থাকেন, এবারও তাই করেছেন। তাঁর স্টাইলে তিনি ব্যাপারটাকে সবসময় তিনি লিখে থাকেন সিভিল-মিলিটারি রিলেশন [civil-military relations in Bangladesh] – এভাবে। এবারও ব্যতিক্রম হয় নাই।
তাঁর লেখা হিন্দুস্তান টাইমসে ৪ নভেম্বর ছাপা হয়েছে। শিরোনাম Elections in sight, churn in Bangladesh politics , যার অনুবাদ মানবজমিন ছেপেছে গতকাল ৬ নভেম্বর; শিরোনাম নির্বাচন এবং বাংলাদেশের রাজনীতি, ভারতের যা করা উচিত...। অনেকে বলেছেন মানজমিনের শিরোনামটা মূল লেখার শিরোনামের বাংলা অনুবাদ নয় কেন? প্রথমত বাংলা অনুবাদ দিতে মানবজমিন বাধ্য নয়। আর এর চেয়েও বড়কথা এই শিরোনামটা লেখাটার বিষয়বস্তু যা আছে এর সঠিক প্রতিফলন! অবিনাশ সত্যিই  ভারতের যা করা উচিত তাই নিয়েই লিখেছেন।

কিন্তু অবিনাশ কে? কেমন লেখা তিনি লেখেন?
অফিসিয়ালি তিনি লন্ডনের এইক বিশ্ববিদ্যালয় সোয়াস [SOAS University] এর সিনিয়র লেকচারার যেখাকনে তাঁর ফ্যাকাল্টি সাবজেক্ট হল ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস [IR]। লন্ডনের কিংস কলেজ আর এই সোয়াস বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাথে ( আমেরিকা বা পশ্চিমের অর্থে নয়) বরং ভারতের শীর্ষ ব্যাবসায়ীদের অর্থে পরিচালিত এক থিঙ্কট্যাংক ORF [Observer Research Foundation] আর, এসবের সাথে জড়িয়ে থাকা ইন্টেলিজেন্স প্রতিষ্ঠান র’ – এভাবে সবটা মিলিয়ে কিছু সুনির্দিষ্ট ততপরতা তারা চালিয়ে থাকে লন্ডন শহরে বসে। যেটা দেখে মনে হতে পারে যে এরা তো ভারতের বাইরের কেউ, আলাদা। কিন্তু আসলে এরা ভারত সরকার নিয়ন্ত্রিত ও সংগঠিত। অবিনাশ পালিওয়াল এদেরই নিয়োজিত [assigned] একজন! বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ (বিশেষত বাংলাদেশ আর্মি) তাঁর সাবজেক্ট! অনেক সময় তাঁর মাধ্যমেই ভারতের প্রতিক্রিয়া আমাদের কাছে পৌছানো হয় বা আমাদেরকে জানানো হয় – এভাবেও মনে করতে পারি।

এবার অবিনাশ কী ভারতীয় ম্যাসেজ নিয়ে এসেছেনঃ 
তিনি শুরুতেই বলছেন, “ঢাকায় সরকার ও বিরোধীদের অচলাবস্থা এটা নির্বাচনী গণতন্ত্রের উপর প্রভাব-প্রতিক্রিয়া তৈরি করবে, এমনকি সিভিল-মিলিটারী সম্পর্কের উপরও ছাপ ফেলবে [The Government-Opposition stand-off in Dhaka will have consequences for electoral democracy, may impact civil-military relations]”। এই বাক্যের নির্বাচনী-গণতন্ত্র না হয় বুঝলাম কিন্তু এতে  সিভিল-মিলিটারী সম্পর্কের উপর ছাপ কথাটা কোথা থেকে এলো আমরা জানি না। কারণ এটা একটা ইঙ্গিতপুর্ণ কিন্তু অস্পষ্ট করে রেখে দেয়া বাক্য! সাধারণত যার উদ্দেশ্য থাকে লেখক নিজে না বলে পাঠককে নিজ অনুমান করে নেয়া কোনহ অর্থ করে নিয়ে বুঝতে বাধ্য করা বা ঠেলে দেয়া।
এটা তো পরিস্কার যে সরকার ও বিরোধীদের অচলাবস্থা বা সংঘাত যেটা লেখক ইঙ্গিত করছেন সেখানে বাংলাদেশের মিলিটারি তো কোন পক্ষই নয়।  বর্তমান দৃশ্যপটের কোথাও মিলিটারির কোন উপস্থিতিই নাই, কোন পক্ষ নয় সে! তাহলে, তা সত্বেও মিলিটারির প্রসঙ্গ তুলে উস্কানি দিচ্ছেন তিনি, এটাই আমরা দেখছি। কেন? এমন কোন ঘটনা মানে আরো গভীর ভারতীয় ধারার কোন ঘটনার মধ্যেই কী তিনি ভারতীয় স্বার্থ দেখতে পাচ্ছেন? এনিয়ে অবিনাশকে আমাদের একটা কথাই বলার আছে তা হল, এটা ২০০৭ সাল নয়! ফলে সেসময়ের মত আরো গভীরভাবে ভারতীয় স্বার্থের পক্ষে কোন ক্ষমতার উত্থান এবার ঘটবে নামূল কারণ এবার বাংলাদেশকে আবার আরো ভারতীয় স্বার্থময় করে ভারতের হাতে তুলে দেয়া ঘটতে দেয়া হবে না। আমাদের  আম-জনগণ এবার নিজ স্বার্থের পাহারাদার।

শিয়াল যেমন মুরগি ধরতে পারলে খুশিতে লোভে চকমকে হয়ে উঠে তেমনি এক শব্দ ধুর্ততা বা ধুর্তামি শব্দ হল কানেকটিভিটি [connectivity]।  যার আসল মানে হল ভারতের নর্থ-ইস্ট অঞ্চল থেকে বাংলাদেশের উপর দিয়ে ইচ্ছামত এবং বিনা পয়সায় করিডোর ও পোর্ট সুবিধা নেয়া! তা এমন ভাবে নেয়া যেন এই সুবিধা নেয়াটা ভারতের বাপের সম্পত্তি। আর কানেকটিভিটির নামে বাংলাদেশ নিজ স্বার্থ খুইয়ে ভুলে গিয়ে ভারতের জন্য কাজ করাই যেন বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের কাজ! এমনকি করিডোরের জন্য রাস্তাঘাট সহ সব অবকাঠামো বা পোর্ট অবকাঠামো বিনির্মাণের জন্য যে সরকারকে যে বিদেশি ঋণ নিতে হবে এটাও আমাদের জনগণের দায়! আর ভারত এখান থেকে বিনা পয়সায় এই সকল নির্মিত অবকাঠামো ব্যবহার করবে – এর নামই কানেকটিভিটি!!!
ঘটনা হল আসামসহ নর্থ-ইস্ট তো বাকি ভারতের সাথে শিলিগুড়ি দিয়ে এখনও ১৯৪৭ এর দেশভাগের  যুক্তই আছে।  সেকালে নেহেরু এসব সুবিধাতেই সন্তুষ্ট ছিলেন বলেই তো তিনি নর্থ-ইস্টের আরোও কোন  করিডোর ও পোর্ট সুবিধা চান নাই। তিনি পুর্ণ সন্তুষ্ট ছিলেন বলেই তো আর কোন কথা তিনি নিজ তার কালে এমনকি পুরা গত শতকে কখনও খায়েজ করেন নাই, কাউকে জানান নাই! অরররথাত করিডোর ও পোর্ট ভারতের জন্য অত জরুরি কিছু নয়।
কিন্তু একালে একটা বিশেষ সরকারকে জবরদস্তিতে ক্ষমতায় রাখার পক্ষে ভারতের সমর্থনের বিনিময়ে বাংলাদেশকে বিনা পয়সায় কানেকটিভিটির ব্যবস্থা করে দিতে হবে সেটা তো বাংলাদেশের সেই সরকারের দায় ও স্বার্থ! এটা কোনভাবেই বাংলাদেশের আম-জনগণ এর স্বার্থ নয়! কাজেই কানেকটিভিটি শব্দটার আমাদের কাছে অর্থ হল রক্তচোষা-লুটেরা!  ।

তামাসার কথা হল, এই রক্তচোষা-লুটেরা! শব্দ কানেকটিভিটি এর দোহাই দিয়েই অবিনাশ নিজের খুশি প্রকাশ করেছেন; আর ভারতের কোর স্বার্থও দেখেছেন। শুধু তাই না দাবি করেছেন যেহেতু বাংলাদেশের কানেকটিভিটি নিতে ভারতের স্বার্থ আছে তএব বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতিতে ভারত শেয়ার হোল্ডার মহয়াজন! [Such deepening of infrastructural connectivity inevitably raises India’s stakes in Bangladesh’s politics.]
অবিনাশ নিজেকে ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস এর শিক্ষক বলে পরিচয় দেন। অথচ কান্ড দেখেন!  এর মানে হল ভারতের কোন বিদেশি ব্যবসায়ীর যদি বিনিয়োগ থাকে তবে ভারতের রাজনীতিতে আবার বলছি ভারতের রাজনীতিতে ঐ ব্যবসায়ীর ভাগীদারি বা স্টেক [stakes] আছে! সোজা কথা অর্থনীতিক বিনিয়োগে ভাগ থাকলে রাজনীতিতেও আপনি ভাগীদার? একথা একজন  ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস এর শিক্ষক বলেন কেমন করে????
সবই আসলে মামার বাড়ীর আবদার! যা ইচ্ছা যা দরকার সবই তারা আবদার করতে পারে। বাস্তবতা হল, বাংলাদেশে এবারের রাজনীতিক অসন্তোষের পরিণতিতে  যদি হাসিনার ক্ষমতার যুগের অবসান ঘটে তবে ভারতের মামার বাড়ী উপভোগের অবসান ঘটবে!  অবিনাশ পালিওয়ালের  উচিত হবে সেসব পরিণতিতে কী করবেন তা নিয়ে মনোযোগী হওয়া!  সবচেয়ে বড়কথা এবারের আমেরিকান স্বার্থ শুধু হাসিনার বাংলাদেশের জন্য বৈরি তাই নয়। এটা মোদির ভারতের জন্যও সমান বৈরি! বাইডেন মোদিকে আবার নির্বাচিত দেখতে চায় না – এর ছায়া ইতোমধ্যেই ভারতের রাজনীতিতে পড়ে গেছে, সরগরম হয়েছে। তা এমনকি ফেসবুকের মজা-তামাসা করার বা ব্যক্তি-নিজেকে তুলে ধরার যে রিল [reel] স্টাটাস; সেখানেও তা ছড়িয়ে পড়েছে। যার মূল ইস্যু মোদি গত প্রায় দশবছর ক্কোথায় কী মিথ্যা বলেছেন তা নিয়ে ভিডিও প্রমাণসহ ট্রল করা!  সেদিকে এত বড় একটা বিষয় থাকতে অবিনাশ খামোখা বাংলাদেশ নিয়ে পড়ে আছে!!! তাই নয় কী??

অবিনাশ ইতোমধ্যেই হাসিনাবিরোধী অবস্থানেঃ
কিন্তু লক্ষ্যণীয় যে অবিনাশের এই লেখায় ইতোমধ্যেই তিনি হাসিনার হাত ছেড়ে দিয়েছেন, এই অর্থে যে তিনি হাসিনার অসংখ্য ভুল ত্রুটি তুলে ধরেছেন আর তা করেছেন বিরোধী অবস্থানে বসে। যেমন তিনি হাসিনাকে ডায়লগ-বিরোধী বলে [Hasina refusing dialogue  দোষারোপ করেছেন। সরকারের পরিচালিত দানবীয় দমন [ State-led crackdowns] চলছে বলেছেন। এমনকি বিএনপির প্রশংসা করে লিখছেন [politics in Bangladesh has evolved along expected lines. ]। বিএনপি সক্ষমতা দেখিয়েছে demonstrated the capability ,  হাসিনাবিরোধীদের জড়ো করেছেন [capitalise politically on widespread discontent against Hasina], আর সবচেয়ে বড় সার্টিফিকেটটা না দিয়ে পারেন নাই। বলেছেন, বিএনপি project itself as a secular-liberal actor by at least publicly disassociating from the Jamaat-e-Islami and mobilise considerable diplomatic support in the West।   যার সোজা মানে হল, অবিনাশ পালিওয়াল ঘুড়িয়ে স্বীকার করে নিছেন যে তার মত ভারতীয়রা হেরে গেছেন, তাঁদের প্রপাগান্ডা ফেল করেছে। তাঁরা এখন হাসিনার পতন দেখছেন টের পেয়েছেন তাই যত দ্রুত সম্ভব হাসিনার হাত ছেড়ে বিএনপির কোলে উঠতে কসরত শুরু করেছেন!

বিএনপি এক শৃঙ্খলা মেনে চলা শক্তিঃ
পালিওয়াল বিএনপিকে এই লেখায় এত বেশি সব সার্টিফিকেট দিয়েছেন যা ধরে রাখার পাত্রের অভাব দেখা দিয়েছে।   গত পনেরো বছর ধরে আমরা শুনে আসছে হাসিনা ছাড়া বিএনপি-জামাত সহ বাকি সবাই আমরা জঙ্গি! আমাদের চিন্তা-রাজনীতি সবই জঙ্গি; মানে হল বাস্কিরা আমরা ভারতের সাথে একই টেবিলে বা একই আসরে বসারই অযোগ্য মানুষ! যেন আমাদের চেহারাটা মা-কালির মত রুদ্র-মুর্তির,  হাতে কোপ-মেরে মাথা আলাদা করার খাঁড়া, আর গা-থেকে পোষাক থেকে রক্ত ঝড়ছে ইত্যাদি। ভারতের চোখে ফলে সেই সুত্রে বাংলাদেশের হিন্দুত্ববাদী প্রগতিবাদীদের চোখে বাংলাদেশের হাসিনা বাদে বাকি আমরা সবাই জামাত-বিএনপির দানব সব একেক জন!  গত প্রায় পনেরো বছর ধরে আমাদের এই চিত্র-কল্প, এই গল্প-গাথা এই ভিতরেই ছিল আমাদের বসবাস; কোন রকমে দিন গুজরান!

কিন্তু অবিনাশ পালিওয়াল আজ আমাদের কী কথা শুনালেন?
BNP’s image as being a disciplined force

তিনি বড় বড় অক্ষরে লিখেছেন –  BNP’s image as being a disciplined force। বাংলায় বললে, বিএনপির আজ ইমেজ নাকি এক সুশৃঙ্খল শক্তির। শুধু তাই না, আরো সাংঘাতিক সব প্রশংসাবাণী! পরে যোগ করেছেন এই বিএনপি নাকি এতই অহিংস যে উলটা তারাই ভিকটিম যারা আওয়ামি ত্রাস গুপ্ত-হত্যাকারী এবং পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে আত্মরক্ষা করে টিকে আছে ...that is defending itself from AL henchmen and the police.

প্রথম কথা কথা হল, গত পনেরো বছর ধরে ভারতের কোন একাদেমিকের বয়ান মানেই ছিল তাঁরা জামাত-বিএনপি নাম করলেই বুঝতে হল এরপর তারা আমাদের সকল হাসিনা-বিরোধীদের বিরুদ্ধে কুতসা আর ঘৃণামূলক বাক্য বলবেন! এই ছিল রুল!! আর তাতে সবচেয়ে বড় ক্রিমিনাল যেন হয়ে থাকতে দেখা যেত তারেক রহমান-কে। কিন্তু আজ এই লেখায়, একেবারেই উলটা। এই আন্দোলনে “বিএনপির অর্জন” এভাবে না বলে, পালিওয়াল লিখছেন  From Rahman’s viewpoint, মানে রহমানের (তারেক রহমান) দৃষ্টিভঙ্গিতে… এভাবে।  যদিও এটা বলার পরের বাক্যে কিছু গড়বড় করেছেন যেটা নিচে সরাসরি কোট করে তুলে আনা হয়েছে আগ্রহিরা দেখতে পারেন। পালিওয়াল দেখছেন, হাসিনা যথেষ্ট কোনঠাসা হয়ে গেছেন। কিন্তু আবার লিখে ফেলেছেন বিএনপি সামরিক হস্তক্ষেপ ডেকে আনতে পারে। যদিও পালিওয়াল বলেছেন, এই ডেকে আনাটা “বিএনপিকে সারবস্তুতে কোন সুবিধা দিবার সম্ভাবনা কম, কিন্তু এই বাহিনী যাই করুক তা রহমানের পক্ষেই যাবে”!
প্রথমকথা বাহিনী নিয়ে এসব আলোচনা অস্বস্তিকর; তাও আবার বিদেশির মুখে! দ্বিতীয়ত, জল্পনা-কল্পনায় এমন যা খুশি লিখে দেওয়া আর আমাদের তাতে অংশ নেয়ার মানে হয় না, তাতে তা যতই পাঠকের আকাঙ্খার পক্ষের বক্তব্য মনে হোক না কেন! আর কিছু শব্দ ও বাক্য যেখানে বাস্তবতা-বর্জিত! কাজেই পালিওয়ালদের এই পল্টি-মারার দিকটা যে বিএনপি-জামাত এখন খুব ভাল সুশৃঙ্খলএদিক্টা  দেখানো ছাড়া আর কোন দকে আমরা আলোচনা নিব না!

From Rahman’s viewpoint, Hasina is cornered enough
to either step down or engage in violence triggering
wider civil strife. The former can enable the formation
of a caretaker government,
the latter could
invite military intervention.
The army’s re-entry into politics is unlikely
to benefit the BNP substantially, but it could
even the playing field in Rahman’s favour.

এছাড়াও LG (retired) Hasan Sarawardi এর গ্রেফতার নিয়েও তিনি অনেক গল্প আর ইঙ্গিত রচনা করেছেন। যেসব অর্থহীন! এসব ভারতের পক্ষেও যায় নাই, পালিওয়াল অনেক করিতকর্মা ও জ্ঞানী বা অনেক জানেন ইত্যাদি এসবের কোনটাই মানে হয় নাই, প্রমাণ হয় নাই। বরং তার নাদানি-ই তুলে ধরেছে!  বুঝা গেছে তিনি প্রপাগান্ডা রচনার জন্যও কত আনফিট!

সবশেষে, মোদি সরকারের জন্য পালিওয়ালের পরামর্শঃ
হ্যা, পালিওয়ালের মোদিকে দেয়া পরামর্শটা বরং ইন্টারেস্টিং।  প্রথমত কথাগুলো তিনি ছোট করে এক বাক্যেই লিখেছেন।
যার সারকথাটা হল, হাসিনার দিন শেষ – এটা পালিওয়াল এন্ড গং এরা বুঝে গেছে! যেমন তারা ভারতকে (মানে মোদি সরকারকে) বলছে ইতিবাচক হতে। কোন বলপ্রয়োগে দমনের রাস্তাকে সমর্থন করা ত্যাগ করতে। আর বরং একটা নিরপেক্ষ অবস্থান তৈরি করে নিতে। যাতে বাংলাদেশে যারা ভারতের সমালোচক আছে তাঁদের জন্য দুয়ার খুলে রাখা হয়। বাংলাদেশে যে ঝড় উঠেছে (হাসিনা পতনের লক্ষ্যে) তা পুরণ-সমাপ্ত হলে যেন তাঁদের সাথে একটা আপোষ করে নেয়া যায়!

The best way to ensure that India preserves some positive equities,
and is not compelled to explore high-cost coercive options, is to
craft an impartial position that leaves the door open to
reconciliation with the numerous India critics in
Bangladesh after the storm passes.

কিন্তু অবিনাশ পালিওয়াল এর আহবান ও ততপরতা কী বাংলাদেশের মানুষের মনে আগ্রহ জাগাবে?   সম্ভাবনা কম। কারণ , গত পনেরো বছর যারা লুটে-চুষে খেয়েছে তাদেরকে বাংলাদেশ কীভাবে ও কেন বিশ্বাস করবে? আর কাদেরকে করবে? ভারতের হিন্দুত্ববাদ-কে? আর আমরা তো অনেক দুরের! সবার আগে ভারতের মুসলমান বা মোদি-বিরোধিদের প্রতি যে বৈষম্য চলছে এর অবসান করে দেখান! তাদেরকে সমান নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করে দেখান! নাকি? সবার আগে এই পরীক্ষায় পাশ করে দেখান! এসব একাদেমিশিয়ানেরা এব্যাপারে মুখে কুলুপ এঁটে থাকেন। আগে এরা নিজের অবস্থান জানাক!
আর হাসিনা পরবর্তি (যদি হয়) বাংলাদেশের কাছে ভারত, এটা ক্রমশ ২০০৬ সালের ভারত হতে চলেছে। দিন একই রকম থাকে না, বদলে যায়; গুজর গেয়া!  তাই সেই আগামি দিন থিতু হয়ে উঠার পরে দেখা যাবে! এখন সব পতন আর ভাঙনের দিন! আর কত!
আর আগামিতে ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক ভাল হবার কোন কারণ দেখিনা। তাতে সেই ভারত ২০২৪ সালের মে মাসের নির্বাচন পরবর্তি যতই নয়া ভারত বা হিন্দুত্ববাদ-বিরোধীই হোক না কেন! মূল কারণ, বাংলাদেশের আম-মানুষের ভারতের উপর নুন্যতম আস্থা-বিশ্বাস নাই!  আর বলাই বাহুল্য নয়া সবকিছু শুরু হতে পারে একটা ন্যায়-ইনসাফে পুরান ঘটনাবলীর বিচার থেকে যার কোন সম্ভাবনা আপাতত দেখা যাচ্ছে না! তাই আপাতত ফুলস্টপ! সব ফেলে রাখেন!!!

সর্বশেষ আপডেটঃ  রাত ০৯ঃ ৩৭, ০৭ নভেম্বর    ২০২৩,

গৌতম দাস
রাজনৈতিক বিশ্লেষক
goutamdas1958@hotmail.com

Leave a comment