চন্দন নন্দী-রানা দাসগুপ্তদের ব্যর্থ করে দিতেই হবে!


ওরা ইসলামি দল খুঁজেছে!
চন্দন নন্দী, রানা দাসগুপ্তদের ব্যর্থ করে দিতেই হবে!
গৌতম দাস

১৫ অক্টোবর ২০২৩    বিকেল ১৭ঃ ২৩

https://wp.me/p1sCvy-55l

          কুমিল্লায় হামলার প্রতিবাদে শাহবাগে অবস্থান হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের

 

এবার ২০২৩ সালের দুর্গাপুজা আগামি সাতদিনের মধ্যেই শুরু হবে। মানে পুজা শুরু বা সপ্তমী হবে সম্ভবত ২১ অক্টোবর শনিবার। কিন্তু ইতোমধ্যেই সেই চন্দন নন্দী বা “কংগ্রেসি ‘র'” কানেকটেড লেখক – তিনি এবার ‘র’ এর হয়ে, গত ২০২১ সালের দুর্গাপুজার সময়ে ঘটা ঘটনার (বসা মুর্তির কোলের উপর কোরান শরীফ রেখে আসা) মত করে আবার খুব সম্ভবত সেই কুমিল্লা থেকেই দাঙ্গা ও উত্তেজনা তৈরি করে এর দায় বিএনপি বা কোন ইসলামি দলের উপর চাপানোর প্রচেষ্টা নিয়েছে।  গত পরশু ১৩ অক্টোবর তিনি লিখেছেন,কুমিল্লা শহরে নাকি হেফাজতে ইসলামিরা শুক্রবারের জুম্মার নামাজের পরে কুমিল্লার হিন্দু মাইনরিটির আক্রমণ করেছে ও ধাওয়া দিয়েছে”

…another crowd of Islamists belong to the Hefazat-e-Islam,
after offering Friday prayers, chased and attacked members
of the minority Hindu community in Comilla district…

অথচ বাংলাদেশের যেসব মিডিয়া ঘটনাটা কাভার করেছে তাতে উল্লেখিত বর্ণনায় ফ্যাক্টস হল,  এটা কুমিল্লা আওয়ামি লীগ বনাম রানা দাসগুপ্তের সংগঠন (হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীশ্চান ঐক্য পরিষদ, HBCUC) – এদুই সংগঠনের মধ্যকার গত কয়েকদিনের ঝগড়া ও তর্ক-বিতর্ক; আর তা থেকে কুমিল্লা শহরে গত শুক্রবার তাঁদের দুই মিছিল মুখোমুখি হয়ে গেলে শ্লোগান-পাল্টা শ্লোগানের পরে হাতাহাতিতে ‘ঐক্য পরিষদের’ চারজনের মাথা ফেটে যাবার মত আহত হয়েছে। অর্থাৎ সারকথায় ঘটনা আসলে আপন ঘরে ঘরের বিবাদ! মানে কোন ইসলামি সংশ্লিষ্টতা দূরে থাক কোন ইসলামি গন্ধও নাই! বরং এতা হল, আওয়ামি লীগের সাথে ভারতের তল্পীবাহক এক বাংলাদেশী হিন্দু সংগঠনের ‘ঐক্য পরিষদের’ বিবাদ। অথচ চন্দন নন্দী ঘটনাটার মধ্যে হেফাজতে ইসলামকে আবিস্কার করেছেন। বাংলাদেশের আজকের পত্রিকা, প্রথম আলো, সমকাল, যুগান্তরমানবজমিন, ডেইলি স্টার ইত্যাদি মিডিয়ায় এমনকি চন্দন নন্দীর প্রিয়  বিডিনিউজ২৪ অথবা ‘অসাম্প্রদায়িক’ দেশ রূপান্তর, প্রো-ইন্ডিয়ান কালের কন্ঠ এমন প্রত্যেকটা পত্রিকায় স্পষ্ট করে বলা হয়েছে বিবাদটা  আওয়ামী যুবলীগ ও রানা দাসগুপ্তের ঐক্য পরিষদের মধ্যে।  মানে হেফাজত-সহ কোন ইসলামি সংগঠন এর সাথে -পাঁচেই নাই। কোন ছায়াও নাই!  অথচ চন্দন নন্দী চারদিকে একাই কেবল ইসলামি দল দেখতে পেয়েছেন। কারণ, খোদ রানা দাসগুপ্তও কোন ইসলামি দলকে নয়, খোদ সরকারকে দায়ী করে শাহবাগে বক্তৃতা করেছেন। তিনি বলেছেন, “কুমিল্লায় স্থানীয় সংসদ সদস্য বাহাউদ্দিন বাহারের অনুসারীরা এই হামলা চালিয়েছেন।  প্রথম আলোর সোহরাব হাসানও এবার ছাত্রলীগ-যুবলীগের টার্গেট সংখ্যালঘুরা শিরোনামে উপ-সম্পাদকীয় লিখেছে।
অথচ, চন্দন নন্দীর লেখায় দাবি, বাংলাদেশের মুসলমানেরা হিন্দু মেরেছে। মানে হল, বাংলাদেশের মুসলমানেরা হিন্দু দেখলেই যেন খাবলিয়ে ছিঁড়ে খেতে তেড়ে আসছে নরেন্দ্র মোদির বজরং দলের গুন্ডাদের মতমন কাল্পনিক এক ছবি এঁকে নিজ গল্পগাথার কথা বলে গেছেন চন্দন নন্দী। লিখেছেন, after offering Friday prayers, chased and attacked members of the minority Hindu community in Comilla district। মানে মিথ্যা কাল্পনিক বয়ানেরও একটা সীমা থাকে নন্দী সেটাও মানতে চান নাই। এখন এটা কী ‘র’ এর মরিয়া কোন  পুজা-এজেন্ডা নাকি অর্থের পাহাড় প্রমাণ চাপের কারণে ঘটেছে – তা জানা যায় নাই!
আবার তিনি বাংলাদেশের সকল মিডিয়ায় প্রকাশিত বয়ান যেখানে বলা হয়েছে আক্রমণকারীরা যুবলীগ ও ছাত্র লীগের – সেটাও তিনি নিজেই উল্লেখ করেছেন আর আবার বলছেন আমাদের মিডিয়া নাকি ঢাকাঢাকি করে ভিন্ন লেবেল লাগিয়ে রিপোর্ট লিখেছে –  The Bangladeshi media labelled the attackers as men belonging to the Juba League and the Chhatra League.”। মানে হল নন্দীর দাবি,  বাংলাদেশের সকল মিডিয়াই নাকি মিথ্যা করে আক্রমণকারীরা যুবলীগ ও ছাত্র লীগের বলেছে বা চিহ্নিত (labelled) করা হয়েছে। অর্থাৎ চন্দন নন্দী-ই হলেন একমাত্র সত্যবাদী যুধিষ্ঠির!  তিনি কোন এক গায়েবী চোখে দেখেছেন???

চন্দন নন্দী ও ‘র’ এর এই ডেসপারেট বা মরিয়া হয়ে মিথ্যা বলা – এটাই
আমাদের শঙ্কিত করে যে তারা এবারের দুর্গাপুজার সময়ে এরা আমাদেরকে
শান্তিতে থাকতে দিবে না, এমন কোন পরিকল্পনা করেছে কিনা!
তাই ইতোমধ্যেই কোন একটা ইসলামি সংগঠনের নাম হাতড়িয়ে বেড়াচ্ছে!

চন্দন নন্দীর এমন ভয়ংকর দানব  হয়ে উঠার পিছনে আমাদের প্রগতিশীলদের দায় আছেঃ
চন্দন নন্দী; ভেবেছিলাম একে নিয়ে আর লিখব না, বোধহয় লিখতে হবে না! কিন্তু না। যে এবার একবারে ভারতের গোয়েন্দা-অন্তর্ঘাতমূলক কাজ ও এমন সংস্থা [RAW] এর সাথে সরাসরি জড়িয়েছে। আসলে  যে জীবনে কখনও এমন জড়িয়েছে সে তা আর জীবনেও ছাড়তে পারে না। এই কথাটাই এখন আরো স্পষ্ট করে বলা যায় যে ভারতের চন্দন নন্দীর বাবা – তিনি ছিলেন মানে তিনি সাবেক ‘র’ এর কর্মকর্তা এজেন্ট। কিন্তু সেসব মোদি ২০১৪ সালে প্রথম প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগের ঘটনা। তাই তিনি ‘কংগ্রেসি র’। পরে মোদির জমানায় এসে এরাই হয়ে গেছিলেন মোদির ‘র’ এর  ঢেলে সাজানো নয়া কর্তাদের সহকারী!  কাজেই সেই সুত্রে বাবার ‘র’ কলিগ, জুনিয়র বা কলিগের ছেলে ইত্যাদিদের সুত্রে চন্দন নন্দীও ‘কংগ্রেসি র’। আর এরাই এখন তার গুজব বা আধাসত্য বয়ান বা খবরের উৎস। আর একারণে, অনেক আগে লিখেছিলাম চন্দন নন্দী ‘কংগ্রেসি র’। এমনিতেই ১৯৬৮-৭০ সালের দিকে জন্ম নেয়া ‘র’  এর উত্থান, বিকাশ সবই কংগ্রেসের হাতে আর সেই সুত্রে, ‘কংগ্রেসি র’ মানে প্রায় ঘরের ছেলের অবস্থা ইত্যাদি । যা প্রায় ২০১৩ সালের শেষ পর্যন্ত কমবেশি প্রবল বহাল ছিল।  এছাড়া ‘কংগ্রেসি র’ এই নামকরণ আবার লক্ষ্য করেছি  চন্দনের মত কিন্তু ঢাকার বাসিন্দা এমন ‘কংগ্রেসি র’ যারা আছেন; যারা, বলাই বাহুল্য আওয়ামি জমানায় বহাল তবিয়তে থাকছেন, তারাই নিজেরা নিজেদের পরিচয় দেয় এভাবেই – ‘কংগ্রেসি র’ বলে, তা শুনেছি এছাড়াও এমনকি এসব সুত্রে ঢাকার অনেক সরকারি অফিসও চন্দনের আধাসত্য বক্তব্যের স্কুপ সোর্স হওয়া বিচিত্র নয়, বরং স্বাভাবিক হয়ে গেছে!

এবছর চন্দন নন্দীকে নিয়ে লিখেছিলাম আমিই প্রথম যখন তিনি বিডিনিউজ২৪ পত্রিকায় একটা লেখা ছাপেন  গত ২ সেপ্টেম্বর, যা হাসিনা-মোদি দুই সরকারকেই বিব্রত করেছিল। ফলে বিডিনিউজ২৪ ওয়েব পত্রিকাটা বন্ধ হয়ে গেছিল, যা সম্প্রতি আবার খুলেছে। এরপরে লক্ষ্যণীয় যে চন্দন তাঁর লেখার প্রসঙ্গ / বিষয় বদল করে মানে কার দিক থেকে লিখবে সেই এটিচ্যুডে বদল ঘটিয়েছেন। চন্দনের সাধারণ ঝোঁক হল, ‘র’ এর ঘরের তথ্য বাইরে প্রকাশ করে দিয়ে ক্রেডিট নেয়া। আর নন্দীর এমন করার পিছনের সাইকোলজিটা হল – চন্দনের বাবার সাথে চন্দনের বনিবনার অভাব। আবার এর পিছনে ঘটনা হল, চন্দন পশ্চিমে উচ্চশিক্ষা শেষ না করে ভারতে ফেরত আসা, টাইমস অব ইন্ডিয়ায় চাকরিরও সমাপ্তি ইত্যাদি এসব নিয়ে সম্ভবত ‘র’ এর এজেন্ট বাবার সাথে তার ব্যাপক ও গভীর মনোমালিন্য।  বর্তমানে সে কোথাও কোন চাকরিতে নাই। কিন্তু খেপ মারতে হয় ফ্রি-ল্যান্সার নামে আর পুরানা ‘র’ এর যোগাযোগ-গুলো ব্যবহার করে…।
তাই এবার প্রথম বিডিনিউজে সে লেখা ছাপিয়েছিল  হাসিনা-মোদি দুই সরকারকেই জন্য বিব্রতকর হবে এমন বয়ান ছাপিয়ে। চিন্তা না করে কাজে ওস্তাদ চন্দন নন্দী এখানেও ভেবে দেখে কাজ করেব নাই যে এর পরিণতি কী হবে! তাই ঘরের ভিতর খারাপ প্রতিক্রিয়া হওয়া স্বাভাবিক! সম্ভবত সেকারণে, আমরা দেখলাম পরের লেখা থেকে নন্দী এটিচ্যুড বদলে ফেলেছেন। তিনি হয়ে উঠেন আর হাসিনা-মোদি নয় এবার কেবলমাত্র হাসিনার বিরুদ্ধের সত্য-আধাসত্য প্রপাগান্ডা করা। যেগুলো অবশ্যই জার্নালিজমের বিচারে অপ-জার্নালিজম!
সেই থেকে  চন্দন হয়ে যায় হাসিনা বা তাঁর ছেলে বা সরকার সম্পর্কে আধাসত্য বা কোন বিশ্বাসযোগ্য সোর্স ছাড়া গায়েবি সোর্সের নামে ছড়ানো্র এক প্রপাগান্ডা লেখক এছাড়া তিনি তার লেখার জন্য ভারতের নর্থ-ইস্ট অঞ্চলের এক ইংরাজি ওয়েব সাইট NorthEast News কে আপাত স্থায়ীভাবে বেছে নি্য়েতে দেখেছিলাম আমরা। কেন এমন?
ভারতের নর্থ-ইস্ট মানে আসাম-সহ  সাথে ছোট ছোট পাহাড়ি গোত্রভিত্তিক (ট্রাইবাল) মোট সাত রাজ্য। কিন্তু এগুলো ভারতের অবিরাম মাথাব্যাথ্যা যে এরা কে কখন না জানি ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবার জন্য সশস্ত্র আন্দোলন করে বসে। এই ভয় থেকেই এই এলাকায় ভারতের গোয়েন্দা ও ‘র’ ততপরতা ব্যাপক, অনেক বেশি। অনুমান করা হয় সেই সুত্রে সারা নর্থ-ইস্টের প্রায় সব ইংলিশ-ওয়েব পত্রিকা যা আছে তা  প্রত্যক্ষ-পরোক্ষে ‘র’ এর ততপরতায় নিয়ন্ত্রিত। মূলকারণ, এসব মিডিয়া নিজে চলার আয় নিজে করতে পারে না। আর সেই সুত্রে ‘র’ এর অর্থ বা ভর্তুকিই তাঁদের একমাত্র সহায়! একারণে, সারা নর্থ-ইস্ট থেকে নাগাল্যান্ড হয়ে বার্মা – মানে একেবারে থাইল্যান্ড সীমান্ত পর্যন্ত সব ইংরাজি ওয়েব সাইটগুলো এই একই দশায়!  ফলে নন্দীর এবং সময়ে এমন একেকটা ওয়েব পত্রিকায় সুবীর ভৌমিকের আবির্ভাব একারণেই ঘটতে দেখেছি আমরা। আর  এমনই এক NorthEast News এ এবার নন্দীর আবির্ভাব ঘটেছিল।
এদিকে উপরে বলেছি, হাসিনা বিরোধী এবারের প্রপাগান্ডা হাজির করাতে এখনকার বাংলাদেশে মাস-লেবেলে এমনকি বিদেশের বাংলাদেশিদের কাছেও নন্দী ক্রমশঃ আগ্রহের বিষয় হয়ে উঠেছিল। আমি ২০১৫ সাল থেকে নন্দীকে ফলো করি। আমার পুরানা লেখায় সেকারণে “নন্দী কে” তা লিখতে সহজ করে ধারাবাহিক বর্ণনা দিয়েছিলাম।  আর এই লেখা এখনও আমার সাইটে  প্রতিদিন কমপক্ষে পঞ্চাশজন বিদেশে থাকা বাংলাদেশি নক করে থাকে, দেখতে পাই! অনুমান করি তাঁদের মূল বিষয় আসলে চন্দন নন্দী কে? এই কৌতুহল!

সবচেয়ে খারাপ কাজ করেছে আমাদের প্রগতিশীল মহল! ফ্যাক্ট চেকিং-এর নামে একজন চন্দন নন্দীকে নাকচ করতে গেছেন। তাও সেটাও আবার (ইসরায়েল-ইন্ডিয়া কানেকটেড) সোয়েব চৌধুরীর আরেক প্রপাগান্ডা পত্রিকা দ্যা ব্লিটজ [The BLITZ] এর রেফারেন্স দিয়ে; মানে ভর করে!! মানে ব্লিটজ যেন এক নুন্যতম বিশ্বাসযোগ্য পত্রিকা এটা ধরে নেয়া হয়েছে সেখানে। মানে, গত শতকে বাংলাদেশের ইনকিলাব পত্রিকা থেকে উত্থিত সোয়েব চৌধুরি সম্পর্কে একালে যাদের কোন ধারণা নাই্‌ তাদেরই এক ছেলেখেলা হয়ে গেছে কাজটা! এককথায় বলা যায় যে ব্লিটজের কোন  পাঠক বিশ্বাসযোগ্যতা নাই, অথচ তার কাঁধে মাথা রেখে আরেক বিশ্বাসযোগ্যতা-হীন চন্দন নন্দীকে নাকচ করার কিছু কী আছে? না থাকতে পারে? এমন চন্দন নন্দীর পক্ষে বা বিপক্ষে কিছু বলা – দুটাই বিপদ হয়ে দাঁড়াতে পারে!
এদিকে অন্যান্য প্রগতিশীলদেরকে দেখা গেছে এই ফ্যাক্ট চেককে আপহোল্ড বা আপন করে  নিয়ে দেখেছেন কেউ!  আবার চন্দন নন্দী সম্প্রতিকালে এক সাক্ষাতকার দিয়েছেন আমেরিকা থেকে প্রচারিত কনক সারোয়ার এর ভিডিও ক্লিপে। এই সাক্ষাতকারকেও একই সাথে প্রগতিশীলদের অনেকেই প্রশংসা করেছেন, আপন করেছেন। এই সাক্ষাতকারের শুরুতে [০২ঃ ২৪ মিনিটে] চন্দন নন্দীর উপস্থিতিতে কনক চন্দনকে পরিচয় করিয়ে দিতে গিয়ে চন্দনের বাবা  যে ‘র’ এর কর্মকর্তা অফিসার ছিলেন ও বাংলাদেশে পোস্টেড ছিলেন, তা কনক আমাদের জানিয়েছেন!  ]
এদিকে প্রগতিশীলতার কাহিনীর শেষ নাই! সিপিডি এর মালিক  ডঃ রেহমান সোবহান আর সাথে ডঃ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য মিলে এরা গত ২০০৭ সালে ভারতের আসামকে বাংলাদেশের উপর দিয়ে করিডোর দেওয়ার পক্ষে প্রপাগান্ডা করবেন, এই ঠিকা পেয়েছিলেন। এমনকি যারা তাঁর বিরোধিতা করছেন তাদেরকে তিনি অশিক্ষিতও বলেছিলেন সেই রেহমান সোবহান আর দেবপ্রিয় গঙ এদের এবারের ঠিকা সম্ভবত রানা দাসগুপ্তের সংগঠন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীশ্চান ঐক্য পরিষদ এর পরামর্শক হওয়া যাতে এই সংগঠন আওয়ামি লীগকে ছদ্ম তুলাধুনা করে আবহাওয়া তৈরি করে বিএনপির কাঁধে রানা দাসগুপ্তকে সওয়ার করানী! এরা গত পনেরো বছর ধরে হাসিনা সরকার হিন্দুদের জন্য কিছু করেন নাই, অবস্থা নাকি আরো খারাপ হয়েছে বলে হাসিনাকে উঠতে বসতে গালাগালি শুরু করেছেন – উদ্দেশ্য বিএনপির কোলে উঠা বা রানা দাসগুপ্তকে তুলে দেওয়া!
এই সকল প্রগতিশীল মহল এখন কুমিল্লার ঘটনায় কী করবেন? এটা তো প্রকাশ্য যে সেখানকার আওয়ামি এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিনের বাহার “মদবিহীন পুজা” করতে আহবান করেছেন। আর সেটার বিরোধিতা করার উসিলায় রানা দাসগুপ্ত মাঠে নেমেছেন। সকল রিয়েল উত্তেজনার শুরু সেখান থেকে। আর কথা তো সত্য যে কলকাতায় পুজার সময় মদের বার বা বেচাবিক্রি বন্ধ রাখা হয়, কারণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বা ঠিক রাখার সাথে এর সরাসরি সম্পর্ক আছে তাই। বাহার এমপি সেটার রেফারেন্স টেনেছেন!  অথচ চন্দন নন্দী এবার ‘র’ এর এজেন্ডা নিয়ে নেমে রানা দাসগুপ্ত দেরকে নাকি হেফাজত ইসলামি বা মুসলমানেরা আক্রমণ করেছে বলে মিথ্যা কথা ছড়াচ্ছেন!। ইতোমধ্যেই প্রগতিশীলদের আদরণীয় হয়ে উঠে চন্দন নন্দীর ধারণা তিনি এবার সেই প্রগতির ইমেজ বিক্রি আর এর ক্যাশ ছিটিয়ে  – মুসলমানেরা হিন্দুদের আক্রমণ করেছে –  বলে মিথ্যা প্রপাগান্ডা ফ্রেমে আওয়ামি বনাম রানা দাসগুপ্তের ঝগড়াকে লুকিয়ে তা ঢেলে সাজিয়ে- এটা হিন্দুদের উপর মুসলমানদের হামলা বলে চালিয়ে দিবেন! সেটা আবার এখন কিছু কাজের অগ্রগতি দেখাতে শুরু করেছে।

যেমন ডেইলি স্টার ইতোমধ্যেই রানা দাসগুপ্তের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। পাঠককেও নিতে উস্কানি তুলেছে। তাই এনিয়ে তাঁদের রিপোর্টে এমপি বাহারের   ‘এটা শুধু আমার কথা নয়, দিল্লি থেকেও এটা বলেছে।’ বলে উপ-শিরোনাম করেছে। সম্পাদক মাহফুজ আনাম এতদিন নিজে ‘র’ বা ভারতের দালালির লোক বলে পরিচিত হয়ে যাওয়াকে অসুবিধা নাই মনে করলেও তাঁর নিজের আওয়ামি লীগের সাথে সম্পর্ক নাই – সেতা প্রমাণ করে রাখতে নিজ আওয়ামি বিরোধিতাকে খুব সিরিয়াসলি নিতে দেখছি আমরা। তাই এর আগে ওবায়দুল কাদেরের আমরাও আছি দিল্লি­ও আছে, বক্তব্যের সমালোচনা করে উল্টা নিজেই এক কলাম লিখে ফেলেছেন। আর মাহফুজ সাহেব এখন কুমিল্লার আওয়ামি এমপি বাহারের বিরুদ্ধে দাড়িয়েছেন। মানে এই এমপিকে নিচা করেছেন বা ভিলেন করে এঁক্কে দিয়েছে! এতে সার মানে দাঁড়িয়েছে যে রানা দাসগুপ্তকে সাপোর্ট করা মানেই তো চন্দন নন্দীকে সাপোর্ট করা! অর্থাৎ এখানে পরোক্ষে কায়দা করে ‘র’ এর পক্ষে দাঁড়িয়েছে ডেইলি স্টার।

তাহলে রানা দাসগুপ্ত গত পনেরো বছর ধরে আওয়ামি মাখন লুটে এখন আওয়ামি-বিরোধী ঝান্ডা দেখানো কেনঃ
হা এটাই ঘটনা কেন্দ্র! অল্পকথায় বললে, হাসিনার আওয়ামি লীগের ক্ষমতার অবস্থা ভাল নয়! কখন কী হয়ে যায় ঠিক নাই। এই হল এদের মূল উপলব্দি! সবচেয়ে সাড়ে সর্বনাশ হল, সেই আওয়ামি লীগ ছাড়া মোদির ভারত বাংলাদেশে বিএনপি বা আর অন্য কোন দলের দিকে এতদিন ফিরেও তাকায়ও নাই! তাই এ’বস্থায় বিএনপির কোলে উঠতে রানা দাসগুপ্তসহ মোদির ভারতের আগ্রহটাই মুখ্য হয়ে উঠতে দেখা যাচ্ছে! আর তা থেকেই – সেটারই মরিয়া দশা দেখছি আমরা! রানা দাসগুপ্ত  চরম বেচাইন হয়ে উঠেছেন!  এরই গ্রাউন্ড সাজাতে সম্ভবত রানা দাসগুপ্ত মোদির ভারতের হয়ে প্রক্সি-যোদ্ধা বা এডভান্স পার্টি হয়ে উঠতে চাইছেন! যাতে বিএনপি এখন মোদির এডভান্স পার্টি রানা দাসগুপ্তের দিকে একট কোল দেয়! সেকারণেই রানা চরম আওয়ামি-বিরোধীতা শো করছে্ন – যা জরুরত সে জাদা – সেটা তো অবশ্যই!
এটাই আমরা দেখছি।  আর এটা দেখে ততধিক জ্বলে উঠছে আওয়ামি লীগ মানে যুবলীগ-ছাত্রলীগ! আর মহড়াস্থল কুমিল্লা কারণ ২০২১ সালে ভারত এখানে সফল হয়েছিল! কোরান শরীফ রাখা ইকবাল কে?  সেটা নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক ভিডিও ক্লিপের প্রমাণ দাখিল করার পরও ইকবালের পিছনে কে তা আর হাজির না করে আওয়ামি লীগ বরং উলটা ভারতকে বাঁচিয়ে  দিয়ে সেই সুবিধায় নিজ ক্ষমতায় থাকার ক্ষেত্রে ভারত সহায়তা দিয়ে যাক – এভাবে ক্যাশ করতে কাজ করে গেছিল! এনিয়ে এখন হয়ত আপশোষ করছে! আর ইকবাল?
১৬ মাসের সাজা দেয়া ইকবাল এখন বেকসুর খালাসের পরে লাপাত্তা করে দিয়েছে সরকার!  আর ওদিকে রানা দাসগুপ্ত এখন বিরাট বিপ্লবী – এক বছর ঘুমিয়ে কাটিয়ে এখন ইকবাল খুঁজে ফিরছেন, তাঁর আরো শাস্তি দিতে চেয়ে উলটা সরকারের বিরুদ্ধেই তিনি সোচ্চার! বেচারা হাসিনা সরকার!!!
আবার ওদিকে খেয়াল করেন, মোদির এডভান্স পার্টি বলতে সেটা কিন্তু ঠিক রানা দাসগুপ্ত নন। বরং মোদি-আরএসএস বেটার প্রতিনিধিত্বের পার্টি হল গোবিন্দ প্রামানিক এরটা। তাহলে রানা কেন এখন গুরুত্বপাবে? এনিয়ে প্রামানিককে রানাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। তবু রানা দাসগুপ্তই এখন মোদির এক নম্বর আদরের দল কারণ, যেমন ধরেন রেহমান সোবহান আর দেবপ্রিয় গঙ এদের মত লোকদের পক্ষে সরাসরি আরএসএস এর গোবিন্দ প্রামানিক হল একটু অস্বস্তিকর, এর চেয়ে রানা দাসগুপ্ত এই গংদেরকে একটু আড়াল দেয়! তাই এই আয়োজন! নিঃসন্দেহে পরিকল্পিত আয়োজনই চলছে!

নন্দী আর দাসগুপ্ত গং ওরা এখন হন্যে হয়ে যুতসই  ইসলামি দল খুজছে। যাতে সবমিলিয়ে হেফাজত-সহ ইসলামি দলগুলোর অন্তত কাউকে তার ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে তাদেরকে বলির বখড়া বানাতে রানা-নন্দীরা উঠেপড়ে লেগেছে! কিন্তু এবারের পরিকল্পনা আমরা বাস্তব হওয়া ঠেকাতে পারি এবং অবশ্যই ঠেকাতে হবে। সেজন্য আমাদেরকে সচেতন ও সাবধান হতে হবে। কারো সাজানী ফাঁদে বা উস্কানিতে পড়া যাবে না। আর এভাবে তাঁদের অসৎ পরিকল্পনা উন্মোচিত করে দিয়েই একমাত্র আমরা তাদেরকে পরাজিত করতে পারি! রানা-নন্দীদের পরিকল্পনাসহ সব ততপরতার নিন্দা জানাই!

 

 

আপডেটঃ ১৬ অক্টোবর ২০২৩,    রাত ০১ঃ ১৭
সর্বশেষ আপডেটঃ ১৬ অক্টোবর ২০২৩,    রাত ০১ঃ ৫০

গৌতম দাস
রাজনৈতিক বিশ্লেষক
goutamdas1958@hotmail.com

 

Leave a comment