যেন এইবার ইন্ডিয়ার নেতৃত্বে বাংলাদেশে “গণতন্ত্র” ফিরে আসবে!
গৌতম দাস
৩ ডিসেম্বর ২০২৪ রাত ২১ঃ ৪৬
https://wp.me/p1sCvy-5gC
যেন এইবার ইন্ডিয়া বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবে। নাকি অন্যকিছুর পায়তারা??? তবে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। সর্বশেষ ভারতের শ্রীরাধা দত্ত আজ ডি ডাব্লু বাংলা [DW Bangla] তে জায়গা কিনে [ব্রডকাস্টিং টাইম কিনে] কিছু একটা ছেড়ে দিয়েছে। তাতে এটা পরিস্কার যে গত ১ জানুয়ারি থেকে আমরা দেখতে পাচ্ছিলাম ভারতের পেট কামড়ে উঠেছে। কিছু একটা বের হতে চাচ্ছে। সেজন্য সুবীর ভৌমিক বা চন্দন নন্দি একযোগে মাঠে নেমে এসেছিল। আমাদের আর্মির বিরুদ্ধে সব উস্কানি দেয়া ভিত্তিহীন ‘নিউজ’ করেছিল। আজ শ্রীরাধাও বক্তব্য রেখে ভারতের সেই ততপরতার প্রথম পর্ব পর্যন্ত শেষ করলেন। পরে যার আরও পর্ব আছে, আসছে।
এটা আসলেই একটা রেকর্ড যে ভারতের কোন সরকারি কর্তা এমনকি মন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রী অথবা একাদেমিক, গবেষক ইত্যাদিদের কেউ বাংলাদেশে তো বটেই এমনকি কোন পড়শি দেশে দুইটা সুনির্দিষ্ট কথা গণতন্ত্র আছে কী নাই, নির্বাচন ঠিক হচ্ছে না এসব বিষয় নিয়ে কথা বলেছে। কিন্তু শ্রীরাধাদত্ত আজ রেকর্ড করলেন। এমনকি একদুই বছর আগেও শ্রীরাধা বাংলাদেশ নিয়ে এমন কথা কখনও বলেন নাই। এবার শুধু তাই না, আরো সরেস তিনি, – অভিযোগ করে বলেছেন, “গণতান্ত্রিক নির্বাচন নিয়ে বিভ্রম তৈরি করছে আওয়ামী লীগ’। অবিশ্বাস্য!!! ভারতের এই শ্রীরাধাদত্ত কে আমরা আগে দেখি নাই। চিনি না। এতদিন শ্রীরাধাসহ সকল ভারতীয়ের যে বার্তা বা বক্তব্য দিতেন তা ছিল সরকথায় যে – আমাদের হাসিনা কেই চাই, আমরা ভাল পাই। আমাদের খুব সুখ হয় – চার হাত পায়ে লুটে খেতে পাই বাংলাদেশকে। এটা আমাদের মুখ থেকে কেড়ে নেয়া যাবে না। কোথাকার কোন আমেরিকা স্যাংশন দিয়ে হাসিনাকে সরানোর চেষ্টা করে কেন? এমনকি আরো এগিয়ে মহাকূটনীতিক অবস্থান যেন ভারত প্রকাশ করতেছে এমন ভাব দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবেও বলেছে – দক্ষিণ-পুর্ব এশিয়া এটা ভারতের বাগান বাড়ি। এখানে আমেরিকা ভারতের সুখের দিকটা আমল না করে হাসিনাকে সরাতে চেষ্টা করতে পারে না। অথচ এধরণের ছ্যাচরামো বক্তব্যে বাংলাদেশে ভারতের স্বার্থ কী তা বুঝা গেলেও বাংলাদেশের বাসুন্দা-নাগরিক যারা তাদের ইচ্ছা মতামত কেউ আমলে নেই নাই – সেখবর নাই। সবই যেন ভারত আর আমেরিকার কামড়াকামড়ি করে নির্ধারণ করবে! আমরা বাংলাদেশিরা কেউ না।
আজ শ্রীরাধাদত্ত একেবারে “গণতন্ত্র” দিয়ে সব ভাজা-পোড়ার আইটেম সব খেয়ে এসেছেন । তাই মুখ খোলা মাত্রই কেবল গণতন্ত্রই বের হয়েছে। আজিব কথা হল, তিনি বলছেন ২০১৪ আর ২০১৮ নির্বাচনও নাকি সুষ্ঠ হয় নাই। ও মোর খোদা একী শুনতেছি?? হে প্রভু……!
তাহলে সুজাতা সিং ভারতের কে? শ্রীরাধাদত্ত কী ভারতের এই কুখ্যাত পররাষ্ট্র সচিব-কে অস্বীকার করছেন? তিনিই বাংলাদেশে সেই কারিগর যিনি ২০১৩ সালে বিরোধীদল কে হবে – মানে জাতীয় পার্টি-ই হবে এর নির্ধারক সেটিং-কারি কর্তা! আমরা কীভাবে সুজাতাকে ভুলি???
তাই এখনও এটা অবিশ্বাস্য-ই যে তিনি কাল সকালেই আবার বলবেন না তো যে সাময়িক হ্যাক হয়ে গেছিলেন ঠিক যেমন শুনি মানুষের ফেসবুক একাউন্ট নাকি হ্যাক হয়ে যায়??? দেখা যাক! DW বাংলা কিন্তু কার্যত পেইড চ্যানেল। মানে এটা সাংবাদিকতা নয়! ফেলো কড়ি কড়ি মাখো তেল! সবাই আপন!
তবে শ্রীরাধার মূল বাক্য যেটাকে শিরোনাম করা করেছেন তারা তা হল, ‘বহুদলীয় গণতান্ত্রিক নির্বাচনের বিভ্রম তৈরি করছে আওয়ামী লীগ’।
তার মানে কী এখন নির্বাচন স্থগিত করে দিয়ে বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার লিডার এবার ইন্ডিয়া হয়ে যাচ্ছে???? না! মাথা ঘুরাচ্ছে!
আসলে কোন প্রশ্নেরই উত্তর নাই অথচ শ্রীরাধা বিরাট এক মুখ হা করে খুলে রেখেছেন! যেমন তাহলে হাসিনার কী হবে? এটা কী শুরু না শেষ? শেষেই বা কী হবে???
আর বিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন এটা কোন ভারত? কেন সে এতদিন পরে পল্টি দিতেছে? কী উদ্দেশ্যে? সে কী জানে বাংলাদেশে ভারতের কোনই বেইল নাই! নুন্যতম কোনই বিশ্বাসযোগ্যতা নাই!
সর্বশেষ আপডেটঃ ০৪ জানুয়ারি ২০২৪, মধ্যরাত ১২ঃ ৩৫
গৌতম দাস
রাজনৈতিক বিশ্লেষক
goutamdas1958@hotmail.com

