কেন বাংলাদেশ বারবার হিন্দুত্ববাদের কাছে হেরে যায়!


কেন বাংলাদেশ বারবার হিন্দুত্ববাদের কাছে হেরে যায়
গৌতম দাস
২৭ নভেম্বর ২০২৪ বিকেল ০৪ঃ ১১
https://wp.me/p1sCvy-5QA

বুধবার দুপুরে নগরের টাইগারপাস মোড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ সমাবেশ হয়- সমকাল

প্রথমে নিচের  (উপরেরটা নয়) ছবিটার দিকে দেখেন। পরামর্শ হল, “বন্ধু দেশের জন্য তো অনেক লড়ছো এবার ধর্মের জন্য লড়াই করতে প্রস্তুত হও”। এটা একজনের ফেসবুক থেকে নেওয়া।

যা সারকথায় “দেশ অনেক হয়েছে এখন আসো ধর্মের জন্য লড়ি”। এভাবে দেশ-রাষ্ট্র বোধ আর বিপরীতে ধর্মের মধ্যে  গন্ডগোল করে ফেলা – এটার মূলে আছে আমাদের রাষ্ট্রস্বার্থ-বোধ-হীনতা
রাষ্ট্র বনাম মুসলমানিত্ব (ধর্ম) – আসলে আমরা কোনটা পেয়েছি? এই বিভ্রান্তির শুরু সেই ১৯৪৭ সাল থেকে।  যার মূল হল রাষ্ট্রবোধ হীনতা। বা রাষ্ট্রস্বার্থ-বোধ হীনতা।
আর এই রাষ্ট্রস্বার্থ-বোধ হীনতা যেটা আসলে রাষ্ট্র কী ও রাজনীতি কী এর বোধহীনতা – এটার কারণেই আমরা বাংলাদেশ বারবার হিন্দুত্ববাদের কাছে হেরে যাবো ও গিয়েছি

একারণেই বারবার প্রথম আলোর পক্ষে কোন একদল ‘৩৪ জন’ বিবৃতি
দাতা জুটে যাচ্ছে, গিয়েছে সব সময়!
অথচ এযুগে বিশেষ করে ২০০১ সালের পরে জঙ্গী-ইসলামিস্ট ট্যাগ এড়িয়ে মানে সুযোগ না দিয়ে আর নিজ নিজ রাষ্ট্রস্বার্থবোধের উপর দাঁড়িয়ে রাজনৈতিক লড়াই করার কাল এটা।  ধর্মীয় জাতিবাদ বোধ এখানে পিছনে রাখতে হবে নইলে ট্যাগের শিকার হবেন আপনি।  অথচ এসব বিবেচনা ভুলে ধর্মযুদ্ধ যেন সেসব ইঙ্গিত প্রকট করে তুলতে চেয়ে বসছি আমরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে; এটাই প্রধান ধারা হয়ে যায় বলে বহু জেনুইন উদ্যোগ মাঝপথেই মারা যায়!

১৯৪৭ সালের  পাকিস্তান কায়েমকে কী করে দেখাবো বা দেখবোঃ 
১৯৪৭ সালের পাকিস্তান কায়েমকে কী করে দেখবো? মানে সেটা কী রাষ্ট্র পেয়েছি না ধর্ম (ইসলাম / মুসলমান) পেয়েছি? এই বিভ্রান্তি আসলে সেই থেকে। এর উত্তর হল, মুসলমান জনগোষ্ঠির প্রায় সকলে মনে করেছিল তারা নাকি ধর্ম মানে ইসলাম / মুসলমান হতে পেরেছে যেমন সেটা এই অর্থে যে তারা নাকি এখন খোলা বাতাসে শ্বাস নিয়ে বলতে পারবে তারা মুসলমান! কিন্তু তাই যদি হবে তাহলে রাষ্ট্র জিনিষটা কী? বা আরো প্রত্যক্ষ প্রশ্ন, নয়া এমন কি হল যে এখন তারা খোলা বাতাসে শ্বাস নিয়ে নিজেদের মুসলমান ভাববার সুযোগ পাবে? যেমন ধরেন তাহলে জিন্নাহ কে? আর পাকিস্তানই বা কী? কেন পাকিস্তানের ফরমাল নাম “ইসলামি রিপাবলিক অব পাকিস্তান”?
সরাসরি জিজ্ঞাসা করলে যেমন, পাকিস্তান কী তাহলে? এটা অন্তত কিছু একটা নয়া প্রতিষ্ঠান তা তো বুঝাই যাচ্ছে; কিন্তু  এর কী দরকার? জবাবটা হল, এই নয়া প্রতিষ্ঠান এটারই নামই হল রাষ্ট্র যা এর জনগোষ্ঠির (যাদেরকে নাগরিক বলা হয়) স্বার্থ আকাঙ্খা বাস্তবায়ন করবে। কিন্তু রাষ্ট্র (!) সেটা আবার কী? এটা খায় না মাথায় দেয়  – এই ছিল আমাদের বোধের অবস্থা!

এই অবস্থাটাই এখনও আছে। তাই উপরে দেখেন আমরা অবলীলায় বলে চলছি – এটা একজনের গতকালের  এই উপলব্দি / স্টাটাস। তিনি বলছেন যে  “বন্ধু দেশের জন্য তো অনেক লড়ছো এবার ধর্মের জন্য লড়াই করতে প্রস্তুত হও”!! যেখানে দেশের লড়াই আর ধর্মের লড়াই একেবারেই আলাদা?????
কিন্তু আসলে সেকালে কায়েম হওয়া নয়া রাষ্ট্র পাকিস্তান – এর হাজির হওয়ার মূল তাতপর্য ছিলঃ পাকিস্তান এক নয়া রাষ্ট্র  আর এটাই ছিল ঐ ভুখন্ড অন্তর্গত জনগোষ্ঠির প্রধান ‘রাজনৈতিক’ প্রতিষ্ঠান ও ‘রাজনৈতিক ক্ষমতার’ প্রতিষ্ঠান।  কিন্তু এই রাজনৈতিক এর মানে?
যা হওয়ার কথা ছিল কাম্য ছিল কিন্তু আজও হয় নাই এই আইডিয়াল ধারণাটা হল, নয়া পাকিস্তানের জনগণ এক নয়া রাজনৈতিক জনগোষ্ঠি [পলিটিক্যাল কমিউনিটি বা POLITY] হিসাবে নিজেদের রাজনৈতিকভাবে গঠন [constitute]  করে নিবে, সে অনুসারে তাদের নয়া কনষ্টিটিউশন, নয়া জনআকাঙ্খার প্রকাশ হিসাবে নির্বাচন ও সরকার গঠন করে নিবে।
কিন্তু হতাশার কথা হল, এসবই হয়ে থেকে গেছিল আইডিয়াল কথাবার্তা  বা বইয়ের কথা;   যা এর বিপরীতে রিয়েল [real] বা বাস্তব হয়ে উঠতে পারে নাই কখনই। এর মূল সমস্যাটা হল রাষ্ট্রবোধ শুণ্যতা। আর বিপরীতে যেন পাকিস্তান পাওয়া বা কায়েম যেন ছিল এক ধর্মযুদ্ধ আর সেই ধর্মযুদ্ধে জয়লাভের ঘটনা – এই বোধটাই প্রধান বা আধিপত্যশীল ধারণা হয়ে দাঁড়িয়েছিল।  যদিও রাষ্ট্রবোধের উপর দাঁড়িয়ে এক পাকিস্তান রাষ্ট্র কায়েম  হলে সেই রাষ্ট্রই জনগণের বৈষয়িক স্বার্থ ও স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার রাষ্ট্র এবং একই সাথে  মুসলমানসহ সকল জনগোষ্ঠির নিজ নিজ ধর্মীয় স্বাধীনতা ও ধর্মপালনে স্বাধীনতা রক্ষার রাষ্ট্র হওয়ার কথা ছিল।
বাস্তবের পাকিস্তানে যার কোনটাই হয় নাই।

বরং এরপরেও আবার আরেক বিতর্ক যে পাকিস্তান হওয়াতে আমরা কী ইসলাম পেলাম নাকি ভালো মুসলমান হওয়ার সুযোগ পেলাম, এভাবে রাজনীতিক বা পলিটিক্যাল হওয়ার মানে কী, তা অস্পষ্ট হয়ে থাকায় এসব অপ্রাসঙ্গিক তর্কে সমাজ ডুবে যেতে থাকে। এর সাথে আরো নয়া তর্ক যে কোন ব্যাখ্যার (ফেকড়া বা মাজহাব) ইসলামটা সহি এনিয়ে এক অনন্ত ভেদাভেদের তর্কে আমরা বিভক্ত হয়ে ডুবে যেতে থাকলাম! অথচ রাজনৈতিক হওয়া বা – রাজনৈতিক কমিউনিটি- হয়ে উঠার সাথে নিজ মুসলমান পরিচয় ঢিলা হয়ে যাওয়া বা হারানোর কোন সম্পর্ক না থাকলেও রাজনীতি ও রাষ্ট্র জিনিষটা কী তা আজও সমস্ত বোধ-হুশজ্ঞান থেকে দূর থেকে দুরস্তেই চলে যেতে থেকেছিল। যার প্রভাব এখনও।

“জীবনে কোন দিন নামাজ পড়া ত দূর কি বাত,পশ্চিম দিকে উষ্ঠা না খাওয়া কায়েদে আজম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর কাছে মুসলিমরা আজীবন ঋণী থাকবে
দু’দুটো স্বাধীন মুসলিম ভূখন্ডের জন্য। বৃটিশ আর হিন্দুত্ববাদীদের গ্রাস থেকে এই জমিন আমরা পেয়েছি যার অবদানে তাকে ভুলে গেলে চলবে না। ৪৭ তাই এখনও প্রাসঙ্গিক।”

গতকালের ঘটনা-প্রতিক্রিয়ায় এটা আরেকজনের ফেসবুক প্রতিক্রিয়া, যা ছিল এরকম উপরের এই দুই লাইন। শুনতে ভাল লাগলেও আমার মনে হয় না কথাটা সঠিক। যেমন জিন্নাহর কাছে মুসলিমরা আজীবন ঋণী থাকবে কেন? কেবল, স্বাধীন মুসলিম ভূখন্ডের জন্য? পাকিস্তান রাষ্ট্র পাওয়াটা তাহলে কিছু না? অর্থাৎ এখানে রাষ্ট্র ও রাজনীতি বোধ বাদ দিয়ে বা পাশ কাটিয়ে কেবল “মুসলমান” এর অপ্রাসঙ্গিক জয়গান?? এ’এক না-বুঝ অবুঝ জয়গান! এভাবে এই বোধ নিয়ে কী চলা যাবে আর কতদিন চলা যাবে?
ইতিহাস বলছে না এভাবে একটুও চলে নাই।

ইতিহাস বলছে – না এভাবে চলে নাইঃ
১৯৪৭ সালে পাকিস্তান কায়েমের পরে মাত্র সাত বছর পাকিস্তানের ১৯৫৪ সালের প্রথম নির্বাচনেই সব সাফা – পাকিস্তান কায়েমের নায়ক বিপ্লবী মুসলিম লীগ ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যায়, অন্তত পুর্ব-পাকিস্তান থেকে।  যুক্তফ্রন্ট যা পরে ক্রমশ দশ বছরের মধ্যে আওয়ামি লীগ হয়ে হাজির হয়ে যায়।
এভাবে মাত্র সাত বছরের মধ্যে ইসলাম বা মুসলমানের ভুখন্ড পাওয়া গর্ব এর (রাষ্ট্রবোধ শূন্যতা) পাকিস্তান – সেটা ১৯৫৪ সালের নির্বাচনেই হাওয়ায় মিলিয়ে যায়।
একটা মজার তথ্য দেই।

জমিদারি ব্যবস্থাঃ
১৯৪৭ সালের আগের বৃটিশ-ইন্ডিয়ার বেঙ্গলে পুর্ববঙ্গও সারা বেঙ্গলের মতই জমিদারি ভূমি মালিকানা ব্যবস্থার অন্তর্গত ছিল। ফলে ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান কায়েম হওয়ার  পরের নয়া সোজাসাপ্টা অর্থ হল, পুর্ব পাকিস্তানের হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে সকল প্রজা কৃষকের  আর জমিদার-হিন্দুর প্রজা থেকে যাওয়া নয়; কার্যত এথেকে মুক্ত হয়ে গেছিল তারা। একেবারে জমিদারি উচ্ছেদ হয়ে যাওয়া আর সেই প্রথম সমাজের সবচেয়ে নিচে পড়ে থাকা অসহায় উপেক্ষিত তুচ্ছ ‘মুসলমান চাষা’ এই প্রজা-মুসলমান পরিচয় ঘুচিয়ে তাদের এই প্রথম ভূমি মালিক মুসলমান হওয়া, এই ছিল পাকিস্তান কায়েমের মুখ্য তাতপর্য।  আর আইনগতভাবে তা ঘটেছিল ১৯৫১ সালে নয়া প্রজাস্বত্ব আইন [সরকারি কাগজে এই নামে – রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ প্রজাস্বত্ব আইন ১৯৫০] ।  

এখন আমাদের নিজেরাই নিজেদের সাথে কেমন তামাসা করেছি দেখেন। গ্রামের গরীব মুসলমানেরা এই আইনের কারণে, [আসলে জমিদার হিন্দুকে খাজনা দেয়া মাঠে বন্ধ হয়ে যায় ১৯৪৭ সালের পর থেকেই, শুধু তাই না পরে ১৯৫১ সালে  জমিদারি উচ্ছেদ ও নিজে  ভূমি মালিক মুসলমান হওয়ার পক্ষে আইনি দলিল হাতে পায়]; তাই এই প্রথম নিজেদের জীবন-মান উন্নতির পথে যাত্রার দিশা পেয়েছিল। ফলে স্বভাবতই এবার প্রান্তিক মুসলমান চাষা ভূমি মালিক মুসলমান হওয়ার  যার সোজা মানে হল তখন থেকে অনেক প্রান্তিক মুসলমানের ছেলেরাও তাদের বাপের অর্থে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যেতে পারে।

অথচ  ভূমি মালিক মুসলমান এই নয়া শ্রেণীই পরের বছর মানে ১৯৫২ সালে আরেক রূপে হাজির হয়েছিল।  ভাষা আন্দোলন ইস্যুতে সেই প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পাঠানো তাঁর সন্তানের উপর কেন গুলি চালানো হলে এটা তাঁর আগামি তাঁর স্বপ্নের পথে বাধা গণ্য করে সেবার থেকে সে শাসক মুসলিম লীগ এর হাত ছেড়ে দিয়েছিল। আর সেই থেকে  বা তাই থেকে; ক্রমশ কমিউনিস্ট-প্রগতিশীল বয়ানের চক্করে পড়ে এই নয়া শিক্ষিত মুসলমান মধ্যবিত্তের ঝোঁক বাড়তে থাকে কথিত প্রগতিশীলতার ঝান্ডা ধরার। এডুকেটেড মুসলমানেই এর অর্থ হয়ে যায়, হয়ে দাড়ায় যে – কিসের জিন্নাহ কিসের পাকিস্তান ইত্যাদি সব ফেলে দেও; আর হয়ে যাও জেনে না জেনে প্রত্যক্ষে-পরোক্ষে “প্রগতিশীল”।  প্রগতিশীলতাই যে আসলে হিন্দুত্ববাদ তা আজও শিক্ষিত মুসলমানের মধ্যে তাই স্পষ্ট সচেতনা নাই এই অবস্থা হয়ে যায়।

অনেকে আমার উপরের এই বাক্য শুনে মনে করবেন বা মিথ্যা প্রপাগান্ডা করবেন বা করতে পারেন যে আমি বোধহয় হিন্দুত্ববাদের কথা তুলে শিক্ষিত মুসলমানদেরকে ইসলামিস্ট (জঙ্গি) হতে উস্কানি দিলাম! তাই, কী করে বুঝবেন আমি ঠিক কী বলেছি?
কথাটা বুঝা একদম সোজা। আমি বলতে চেয়েছি আপনাকে যা হতে হবেঃ

আপনি বাংলাদেশি নয়া শিক্ষিত মুসলমান (হিন্দুসহ সকলেই) জনগোষ্ঠি যারা অন্তত আর
১। কলকাতাকে কেবলা মনে করেন না।
২। তারা মুসলমান হয়েই পাপ করেছেন
এমন কোন ধারণা মনে জায়গা দেন না;
৩।  বরং তারাও কলকাতার চেয়ে ভিন্ন আরেক ধরণের বাঙালি যারা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে ফলে নয়া রাজধানি ঢাকা-কেন্দ্রিক তাদের
এক নয়া বৈশিষ্টের বাঙালি তাঁরা ও তাদের বাংলা ভাষা; রা তাই কলকাতা বাঙালি জনগোষ্ঠির কাউকে ফলো করে না, চলে না।
৪। তাই তাদের কালচারাল প্রকাশ নয়া, আগের সবার চেয়ে ভিন্ন। ৫। কলকাতার
জমিদার-হিন্দুর প্রভাবের হাতে আকার পাওয়া কালচার তা, কোন সুত্রেই এটা তাদের পুর্বপ্রজন্ম নয়। ফলে এর আনুগত্য তাদের জন্য হারাম। কলকাতাকে আমাদের পুর্বপুরুষ গণ্য করে আবার নিজে মুসলমান বলে মনে কোনভাবেই কোন পাপবোধে কলকাতা তাদের নমস্য বা অনুকরণীয় ইত্যাদি এসব কথা কঠোর ভাবে মনে থেকে বের করে দিতে হবে –
এনিয়ে কোন ধরণের হীনমন্নতাবোধ যেন জায়গা পায়। এই হলো মূল ফ্রেম বা চিন্তা কাঠামোটা।

 

এরপর বাংলাদেশের এই নয়া জনগোষ্ঠি্র মধ্যকার কে কে আধুনিক হবে, তাতে পশ্চিমা অনুসরণ করবে বা একেবারেই করবে না; কে অল্প বা বিস্তর ভাবে সাথে মুসলমান পরিচয়ও ধারণ করবেঃ এমনকি কী মাত্রায় ইসলামিস্ট হবে বা একেবারেই হবে না ইত্যাদি এসবের যে কোনটা পছন্দ করবার স্বাধীনতা তাদের যার যার।  কথা একটাই কোনভাবেই কলকাতার কালচারাল আনুগত্য নয় বা ভারতের আধিপত্যের আনুগত্য নয় – এব্যাপারে কঠোর হারাম জ্ঞান ভিতরে জাগাতে হবে। ককথায় এটা হতে হবে এডুকেটেড মুসলমান এবং এডুকেটেড যে কোন বাংলাদেশির নয়া রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অভিমুখ।

যেমন লক্ষ্য করেন, এখনকার সাদা আমেরিকানেরা, এরা আর বৃটিশেরা উভয়েই একই বৃটিশ (আমেরিকার বেশির ভাগ) এথনিক অরিজিনের মানুষ। মানে উভয়ের এথনিক অরিজিন একই।  কিন্তু তা হওয়া সত্বেও ১৭৭৬ সালের [১৭৭৬ সালে আমেরিকা বৃটিশবিরোধী, বৃটিশ কলোনিশাসন বিরোধী এক স্বাধীন রাষ্ট্র হয়ে যায়] পরের স্বাধীন আমেরিকা (যেমন তাদের পুরানা এথনিক পরিচয় যে তারা) বৃটিশ- এংলো এটা পরিত্যাগ করে নিজেদের নয়া যেন এক এথনিক পরিচয় ধারণ করেছিল যে তারা স্বাধীন আমেরিকান; (আসলে বাস্তবে সেটা হয়েছিল আর কোন এথনিক-ই নয় বরং রাজনৈতিক পরিচয়) এমন এক নয়া পরিচয় প্রতিষ্ঠা করেছিল;  আমাদেরকেও সেটাই বা তেমনই একটা কিছু করতে হবে। ফলে বুঝতেই পারছেন ভারতের আধিপত্য এর বিরোধিতা ও কলকাতার কালচারাল আধিপত্য এদুটাকে ত্যাগ করে নিজেদেরকে নয়া ভাবে উঠে গড়া – আমি এর কথাই বলছি। বলাই বাহুল্য এটা কোন সুনির্দিষ্ট ইসলামিজম বা ধর্মীয় কোন কিছুই নয়।  ভারতের আধিপত্য এবং কলকাতার কালচারাল আধিপত্যকে অস্বীকার ও বিরোধিতা করতে বলা মানেই আমি কোন ইসলামিজমের কথা বলছি না।  যদিও বুদ্ধিমান হলে, ইসলামিজমকে একেবারেই অন্তরের, ভিতরের বিষয় করে সাথে রাখতে পারেন। নইলে না।

এই কথাগুলো যতক্ষণ আমরা রিয়েলাইজ বা অনুভব না করব ততক্ষণ আমরা বারবার হারতেই থাকবো। প্রথম আলো-রা ফাঁকফোকড় দিয়ে টিকে যাবে। বারবার ৩৪জন করে হিন্দুত্ববাদি=প্রগতিবাদিরা প্রথম আলোদের পক্ষে বিবৃতি দিয়ে উঠে দাঁড়াবে আর অভিযোগ করবে যে যারা প্রথম আলোর বিরুদ্ধে তারা নাকি  –“সাম্প্রদায়িক উসকানি ও বিভেদ (আসলে কলকাতা থেকে বিভেদ)”  ছড়াচ্ছে তাই তাদের এই বিবৃতি।
এধরণের সাফাই চলতেই থাকবে যতদিন আমাদের রাষ্ট্রস্বার্থ বোধ কাজ না করবে। সবকিছুকেই যেন ধর্মযুদ্ধ – এমন ধর্মীয় বয়ানে নিজেদের হাজির করতে থাকবো ততবার এটা এসব ৩৪ বুদ্ধিহারানোদের বিবৃতি আসতেই থাকবে ও তাদেরকে সুবিধা করে দেয়া হবে। আর তাদেরকে বিরোধিতা করা মানেই আমরা “ইসলামিস্ট” ততপরতা করছি  বা তাদের ভাষায় ‘সাম্প্রদায়িক’ বা ‘মৌলবাদি’ কাজ করছি ইত্যাদি এসব বয়ান দিয়ে তাদেরকেই শক্তিশালী করা হবে। তা আমরা না চাইলেও। এই ফাঁক দিয়ে তারা ভারতীয় দালালি ও ভারতীয় বয়ানের আড়ালে নিজেদের লুকিয়ে রাখার জায়গা করে নিবে।
আর একারণেই ইসকন নিয়ে তাদেরকে কোন অসুবিধা বা অস্বস্তি বোধ করতে দেখবেন না। ইসকন বা চিন্ময়দের ততপরতা এমনকি এরা সরকারী পিপি কে হত্যা এটা কোন ব্যাপারই হবে না কোন ইস্যু হবে না তাদের কাছে। বরং উলটা চিন্ময়ের পক্ষে দাঁড়িয়ে দাবী করবে যে আমাদের ইসকনের বিরোধিতা নাকি – “আত্মঘাতী সাম্প্রদায়িক রাজনীতি” -এভাবে খোলাখুলি ভারতের দালালি শুরু করেছে ও করে যাবে এরা। যেমন ফকরুল বলতে চাচ্ছেন – আসুন, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবীতে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকি

এখন আমার একটা দুঃখের কথা বলিঃ
ইদানিং দেখলাম, অনেকে ফেসবুকে তর্ক তুলছেন যে পাকিস্তান কায়েম হয়েছিল তাতে আমার প্রধান অর্জন কোনটা এনিয়ে। তারা দাবী করছেন যে এখন মানে পাকিস্তান কায়েমের পর থেকে তারা কোরবানি দেওয়া (গরু কোরবানি বা জবেহ দেওয়া) দেওয়ার ক্ষেত্রে স্বাধীনতা ভোগ করা শুরু করেছেন।
ঠিক এটাই আমার দুঃখ যে পাকিস্তান কায়েমের ফলে আমাদের প্রধান অর্জন হল জমিদারি উচ্ছেদ। যা না হলে, আমরা এখন গরীর প্রান্তিক ও সমাজের সবচেয়ে নিচু জাতের ( চরম জাতপ্রথা চিন্তায় দুষ্ট হিন্দুধর্মীয় সবচেয়ে নিচের জাত বলে চিহ্নিত যে মুসলমানের অবস্থান ছিল) এই অবস্থানে থাকা প্রজা মুসলমানেরা কোনদিনই এই সামাজিক অবস্থান থেকে মুক্তি পেত না – কোনদিনই নিজ চাষের জমির মালিক নিজেই হতে পারত না। যেই মুসলমান জনগোষ্ঠিই এখন সেই থেকে আপন উত্থান আমার মুক্তির দুয়ার খুলতে খুলতে আজ ৫০ বিলিয়নের ডলারের এক্সপোর্ট ব্যবসা সামলানোর মত ম্যানেজমেন্ট তারা দক্ষ হয়ে উঠেছে – আমাদের সেই মুসলমান চাষা জনগোষ্ঠিই। (কারণ মনে রাখতে হবে এই রপ্তানি মানে হল, যেদিন যতটার সময়ের মধ্যে মাল পৌছানোর কথা থাকবে তা ঘটাতে না পারলে ঐ সমস্ত মালামাল বিদেশি আমদানিকারক-গ্রহিতারা আর গ্রহণ করবেন না। তাই দক্ষতায় উতকর্ষ না হলে আপনি এই উতপাদন ব্যবস্থায় টিকতে পারবেন না। )   তাই এটা অকল্পনীয় উন্নতি, সুযোগ দিলে দাবিয়ে রাখা এই চাষা মুসলমান কত উপরে উঠতে পারে এর এক চমকপ্রদ উদাহরণ এটা। অথচ আমরাই মানে আমাদের একাংশ দাবী করছে পাকিস্তান কায়েমের ফলে আমাদের উন্নতি বা অগ্রগতির মাপকাঠি হল  কোরবানি দেওয়ার স্বাধীনতা অর্জন……!!!!!
আর ওদিকে আমাদের এই চিন্তা-কৌশল ও নিজেকে উপস্থাপনের এই ব্যর্থতার দশা – এটাকে দেখিয়েই প্রথম আলো-রা দেখায় যে আমরা পশ্চাতপদ, আমরা জঙ্গী, ইসলামিস্ট! এসব আঙুল তুলবার সুযোগ নিয়ে প্রগতিবাদের নামে ভারতের আধ্যিপত্যের দালালেরা নিজেদের অপরাধ লুকিয়ে ফেলার সুযোগ নেয়, কত শত ৩৪জনও জুটে যায় তাদের পক্ষে বিবৃতি দেওয়ার জন্য!!!!!

বলস [balls] – এই বল মানে মূলত খেলাধুলার বল। কিন্তু এই একই শব্দের একটা স্ল্যাং ব্যবহারও আছে। বহুবচনে ‘বলস’ বলা হয় তখন।  আমি প্রায়শই -মুরোদ- বলে একটা শব্দ ব্যবহার করে থাকি।  কথাটা মুলত ক্ষমতা – মানে যেমন আপনার “ক্ষমতা” আছে  কিনা এটা বুঝাতে ব্যবহার করি। এই মুরোদ বা ক্ষমতা আছে কিনা তা বুঝাতেও স্ল্যাং শব্দ হিসাবে ‘বলস’ ব্যবহার দেখা যায়।   যেমন আপনার ‘বলস’ আছে? মানে আপনার মুরোদ আছে? অথবা ধরেন বলা হল, ‘বলস’ কাকে দিয়ে আসছেন? মানে হল, কার দালালি করতে, কার মুঠোর মধ্যে আপনার বলস দিয়ে এসেছেন বা আপনার সমস্ত ক্ষমতা আটকে রেখে আসছেন?

তো ইদানিং ঢাকায় এমন আরেকটা কথার প্রচলন বাড়ছে। যেমন, আজকাল “র-এর হাতে বলস আটকে যাওয়া” লোকের সংখ্যা বাড়ছে বা বেশি দেখা যাচ্ছে। মানে শুধু র-এর প্রভাবের প্রথম-আলো বা ডেইলিস্টারের মত প্রতিষ্ঠানই না, এমন প্রভাবের ব্যক্তির সংখ্যা বা কথিত বুদ্ধিজীবির সংখ্যাও বাড়ছে। এরা এমনকি এটাও লিখছেন – “আন্তর্জাতিক ভূরাজনৈতিক বাস্তবতা বাংলাদেশের পক্ষে নয়”তাই দালালি করতে হবে, দালালিটা জায়েজ ইত্যাদি! অথচ অন্তত বিশ বছর আগে এরাই ক্ষমতাসীন সরকারের সাথে জেএমবির সম্পর্ক করিয়ে দেয়াকে সেকালে সাম্রাজ্যবাদবিরোধী বিপ্লবীপনা গণ্য করেছিলেন।
অর্থাৎ এদের এখন নিজের বলস র-এর হাতে আটকে পড়ার কারণে বা ছেড়ে দিয়ে আসার কারণে সবহারিয়ে এরাই এখন এসব বলে মানে করছেন যে – তখন বাস্তবতা নাকি “আমাদের  জেএমবির পক্ষে” ছিল, এখন নাই!!!!  তাই তিনি সব ধ্বংস করে নিজে ধ্বংস হয়ে এখন ইসকন-চিন্ময়-ভারতীয় আধিপত্যের পক্ষে নিজের বলস ভাড়া দিয়েছেন।

সবচেয়ে মজার কথা হল, বলস আটকা পড়াদের এই লেখা দেখে অনেকে আবার এর মধ্যে বিরাট জ্ঞানের কথা আবিস্কার করেছেন। এটা নাকি  – তুলসি গ্যাবার্ড [Tulsi Gabbard] a Samoan American এর সঙ্গে সদ্ভাব করে আমাদের এখন বাঁচবার নাকি একমাত্র পথ বলে এসব নয়া মুরিদ অর্থ বের করেছেন। তাই চিন্ময়ের পায়ে ধরে মাফ চাইতে হবে – আর এটাই সঠিক লাইন – বলে দাবী করছেন। বলস আটকা পড়া বুদ্ধিবীচিদের পক্ষে সাফাই যোগাড় করে দিচ্ছেন। বুঝেন অবস্থা!

কিন্তু তুলসি গ্যাবার্ড – এটা আবার কেঃ
আসলে ‘র’ এখন – তাদের হাতে এসব বলস আটকানো লোকের মাধ্যমে আমাদেরকে জুজুর ভয় দেখাতে নেমে পড়েছে। আর এই ফাঁকে এসব পতিতরা ভারতীয় দালালিটা হালাল করে নিতে চাচ্ছেন।
এদের কয়জন তুলসি গাবার্ডকে চিনেন কবে থেকে? কী জানেন তার সম্পর্কে?

তুলসি আসলে আমেরিকার এক সাবেক নারী লেঃ কর্ণেল; মানে আমেরিকার দ্বীপ রাজ্য হাওয়াই এর মিলিটারিতে ছিলেন তিনি সেখান থেকে এই পদবী। পরে ২০১৮ সালে দুবছরের জন্য কংগ্রেস সদস্যও হয়েছিলেন।  এদের দাবী তুলসির মা সাদা চামড়ার হলেও তিনি নাকি হিন্দুত্ব নিয়েছেন। তবে তুলসি নন। কিন্তু তুলসির সাথে মোদির  ফলে আরএসএস ও ইসকন এর সাথে তিনি সম্পর্কিত।  সবচেয়ে মজার কথা হল যারা তুলসিকে নিয়ে আমাদেরকে ভয় দেখাচ্ছেন বা এই সুযোগে নিজেদের দালালি হালাল করতে চাচ্ছেন তারা কী জানেন তুলসি আমেরিকার কোন দলের সাথে সম্পর্কিত – ডেমোক্রাট নাকি রিপাবলিক?

এবারের আমেরিকান নির্বাচনকালে সেপ্টেম্বরে ট্রাম্পের নির্বাচন-প্রচার কালে হঠাত তুলসি ট্রাম্পের পক্ষে প্রচারণায় প্রথম অংশ নিতে শুরু করেন। যার মানে হল, তুলসি আগে ডেমোক্রাট ছিলেন; মানে যতদিন ইসকনে ছিলেন তুখন তিনি আসলে ট্রাম্পের দলে না বরং বিপরীতে ডেমোক্রাট দলের লোক ছিলেন। এবং মোদির অর্থে প্রতিপালিত হতেন (এনিয়ে বিস্তারিত আমার পুরানা লেখা দেখতে পারেন, প্রিয়া সাহা- ইসকন ইস্যুতে)।
কিন্তু এবার তিনি পুরানা দলসহ সবকিছু ছেড়ে ট্রাম্পের রিপাবলিকে যোগ দিয়েছেন। আর ট্রাম্প তাকেই নিজের আগামি প্রশাসনে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর উপরে কো-অর্ডিনেটর প্রধান হিসাবে বসাতে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এখন যদি আমেরিকান দুই হাউজ এটা অনুমোদন করে।

আর এটা শুনেই মোদি এন্ড গং আগেই প্রপাগান্ডা শুরু করে দিয়েছেন যে ট্রাম্প নাকি মোদির পক্ষে চলে গেছে? কিন্তু কীভাবে, এর কোন হদিস বা ব্যাখ্যা দিতে তারা রাজি না।  শুধু তাই নয়; এর মাধ্যমে ট্রাম্প নাকি একেবারে ইসকনকেই কোলে তুলে নিয়েছে। আসলে প্রপাগান্ডা গল্প বানাতে হয় কী করে তা যেন আমরা র-এর কাছ থেকে একটু শিখি, কানে কানে বলে মিথ্যা প্রচার কী জিনিষ তা যেন একটু শিখি জানি।

তুলসি ডেমোক্রাট বা বাইডেনকে ছেড়েছিলেন ২০২০ সালে তিনি নিজেই প্রথম যখন সেবার ডেমোক্রাট প্রাইমারিতেই নিজেকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী করতে খায়েশ করেছিলেন, এর পরপরেই। স্বভাবতই এতে প্রথম ধাপই তিনি পার হতে পারেন নাই।  আর পরে বাইডেনের সাথে তাঁর মৌলিক বিরোধ বাধে যখন তিনি হঠাত যুদ্ধবিরোধী বলে নিজেকে হাজির করেন; ফলে বিশেষ করে ইউক্রেনের যুদ্ধ এর। এথেকে তিনি ডেমোক্রাট দলত্যাগ করে বসেছিলেন। আর ট্রাম্প তাকেই এবার নির্বাচনি প্রচারের শেষের দিকে তুলে নেন মূলত তুলসির যুদ্ধবিরোধি অবস্থান এটাকেই তিনি ব্যবহার করতে চান তাই। আমাদের মনে রাখতে হবে ট্রাম্পের নির্বাচনি নীতি হল – বিজয়ী হলে তার আমলে আমেরিকা কোন যুদ্ধে মেতে উঠবে না। মূলত এটা ট্রাম্পের রাষ্ট্রের ব্যয় সংকোচনের নীতি, তাই। তাই বেকার বসে থাকা তুলসিকে একাজে ব্যবহারের   ইচ্ছা থেকেই তুলসির আবার দৃশ্যপটে হাজির হওয়া। কিন্তু ট্রাম্পের বাকি সব নীতি কী প্রো-ইন্ডিয়ান?
না বরং একেবারেই উলটা। আর তুলসি কী এখনও মোদি-ইসকনের সাথে যোগাযোগ রাখেন? জবাব হল দেখা যায় নাই, জানা যায় না।
তার মানে মূলত ট্রাম্পের ভারত ইস্যুতে আসল অবস্থান কী দাড়ায় (ট্রাম্পের নীতির বেশির ভাগই ভারতের স্বার্থবিরোধি বলে প্রকাশিত) এর উপর সুযোগ হবে তুলসি ভারতের আদৌও কোন কাজে লাগে কিনা।  অথচ এখনই র-এর হাতে বলস ছেড়ে দেওয়া লোকেরা নিজেদের ভারতীয় দালালি হালাল করতে এখনই এরা তুলসি প্রপাগান্ডা হাজির করে দিয়েছে।

এখন আসল কথায় আসি। ধরা যাক আগামিতে ট্রাম্প-তুলসি মিলেই ইসকনকে জাপ্টায় ধরলো সেক্ষেত্রে বা সেজন্য কী আমরা আগেই এখন থেকেই ইসকন-চিন্ময়-ভারতীয় আধিপত্যের পায়ে চুম্মা দেয়া শুরু করবো?
আর কেউ যদি বুদ্ধিবীচি না হন, তিনি কী আমাদেরকে এখনই পদচুম্বনে শরিক করাতে মাঠে নেমে যেতে পারেন? আহবান জানাতে পারেন?
নাকি এসবের বিপরীতে আমাদের এখনই আমাদের স্বার্থের ভিত্তিতে ভারতীয় আধিপত্যবিরোধী মেরুকরণে মাঠে নেমে যাওয়ার কৌশলের পথে চলে যেতে হবে? কোন যুক্তিতেই কী আমরা বাংলাদেশে আবার ১৬ বছরের ভারতীয় র-এর আধিপত্য ডেকে আনতে পারি? পারি না। আমেরিকা সহ সারা পশ্চিমও যদি আরেকবার তা চায় সেক্ষেত্রে আমাদের এর প্রাণপণ বিরোধিতার নেমে পড়া ছাড়া আর কী করার আছে????
কমাত্র ভারতীয় দালাল ও যাদের বলস আটকে গেছে র-এর হাতে এমন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান তারাই কেবল তাদের নিজেদের দালালির পক্ষে সাফাই যোগাড়ের জন্য আমাদের বিরোধিতা করতে পারে…।

সব শেষে  আজ বিএনপি-জামায়াত কী নিয়ে ব্যস্তঃ
তারা ব্যস্ত যে সরকারী পিপি সাইফুল ইসলাম আলিফ কে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে – সে কী বিএনপি নাকি জামায়েতের সমর্থক লোক? এই হল, তাদের গতকাল থেকেই ব্যস্ততার মূল ইস্যু। কারণ সাইফুলের বাডী লোহাগড়া জামায়াতের শাহজাহান চৌধুরি এর কনস্টিটুয়েন্সি। একই দাবী বিএনপির। অর্থাৎ সব বিবেচনা এখন লোহাগড়ার কনষ্টিটুয়েন্সি কেন্দ্রিক – আগামি নির্বাচনি বক্তৃতায় কে কী বলবেন, তাই। এই হল তাদের ইস্যু। তাই দুপক্ষই দলিল দস্তাবেজ বের করে সাইফুলকে তাদের লোক প্রমাণ করতে। কাজেই সব কী সুন্দর তাই না?

লেখকঃ
গৌতম দাস, রাজনৈতিক বিশ্লেষক
goutamdas1958@hotmail.com

আপডেটঃ  সন্ধ্যা ০৬ঃ ১০   ২৭ নভেম্বর  ২০২৪
শেষ আপডেটঃ   সকাল ১১ঃ ৩০   ৩০ নভেম্বর ২০২৪

Leave a comment