ভারতের নির্বাচনী তামাসা ও আগামি দক্ষিণ এশিয়ার হবু চিত্র!


ভারতের নির্বাচনী তামাসা ও আগামি দক্ষিণ এশিয়ার হবু চিত্র!
গৌতম দাস
১৭ মে ২০২৪  সন্ধ্যা ০৬ঃ ৫৪
https://wp.me/p1sCvy-5Cc

 

   “ভারতের নির্বাচন কমিশনের ‘হাঁটু কি এখন দুর্বল’?”  – এটা গত ২০১৯ সালের ভারতের নির্বাচনের সময়ের বিবিসির রিপোর্ট। যা ভারতের নির্বাচনি তামাসা বুঝবার জন্য এখনও গুরুত্বপুর্ণ।

 

ভারতের নির্বাচনী তামাসা!
ভারতে এখন নির্বাচন চলছে। মানে সাতপর্বে ১৯ এপ্রিল থেকে ০১ জুন পর্যন্ত সাতটা আলাদা আলাদা দিনে বিভিন্ন রাজ্যে বিভিন্ন আসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মূলত মোট একই সিকিউরিটি ফোর্স বারবার কিন্তু নানান আসনে ব্যবহারের সুবিধা পাবার জন্য এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। নইলে, যেটা একই দিনে সব আসনে নির্বাচন হলে আসন প্রতি ফোর্সের সংখ্যা কমাতে হত, তা এখানে এড়ানো সম্ভব। আজ ১৭ মে ২০২৪;  মানে ইতোমধ্যে ভারতের চার পর্বেই নির্বাচন সম্পন্ন হয়ে গেছে। এখন বাকি আছে ২০ মে, ২৫ মে আর ০১ জুনের নির্বাচন। মানে ০১ জুনেই সাত পর্বের নির্বাচন সম্পন্ন হয়ে যাবে। এরপর দুদিন গ্যাপ দিয়ে ফলাফলের জন্য ৪ জুন সকাল থেকে সব ভোটের বাক্স নানা রাজ্যে একই দিনে একসাথে গণনা শুরু হবে। আর ঐদিনই দুপুর ১২ টার মধ্যে মিডিয়ায় বিশেষত টিভিগুলোতে কে কোথায় আগিয়ে আছে এই ট্রেন্ড [trend] বা অভিমুখ অনুমানের সুযোগ দর্শক-পাবলিকের কাছে এসে যাবে। যদিও সব ভোট গণনায় আরো সময় লাগবে। এরপর ঐদিনেই সন্ধ্যা সাতটার পর থেকে ক্রমশ আরো স্পষ্ট হতে থাকবে; ভোটের ফলাফলের আরো স্পষ্ট  অভিমুখ কোনদিকে। আর ঐদিনই রাত বারোটার মধ্যে অভিমুখ তো বটেই ফলাফলেও একেবারেই স্পষ্ট হয়ে যাবে যে কোন দলের জোট বিজয়ী হতে যাচ্ছে।  এই হলো এবারের ভারতের নির্বাচনি দিন-তারিখ!

এবারের ভারতের নির্বাচন নিয়ে আমি  এপর্যন্ত এবারের হবু বা ইতোমধ্যেই ঘটে যাওয়া ঘটনাবলী যা আসছে ও ঘটবে এসবের অর্থ তাতপর্য অথবা বিশ্লেষণ নিয়েও কিছুই লিখি নাই। তুলনায় গতবার মানে গত ২০১৯ সালের নির্বাচনের বেলায় সম্ভবত মোট আট / দশটা লেখা দিয়েছিলাম। তাহলে এবার দূরে আছি কেন?
মূল কারণ, ২০১৯ সালে পুরা নির্বাচনের সময়ের ঘটনাবলীর খুবই কমই মনিটর করতে বাদ রেখেছিলাম। যেমন ভোটের আগের অন্তত তিনটা সার্ভে গ্রুপের সার্ভে সম্পর্কে স্টাডি ও ফলো করেছিলাম। যারা আবার একই সাথে  “বুথ ফেরত ভোটারদের” সাক্ষাতকার নিয়ে সার্ভে রিপোর্ট নিয়েও আমার স্টাডিতে অনেক সময় দিয়েছিলাম। শেষের দিকে ভারতের অনেক মিডিয়ার সাথে আমিও ধারণা দিচ্ছিলাম যে মোদির দল বিজেপি ও তাদের জোট[এনডিএ] সম্ভবত নির্বাচনের হেরে যাবে। কিন্তু না। মোদি-অমিত শাহের হাতে ভোটের বাক্স ম্যানিপুলেশনের [অবৈধ হাত ঢুকিয়ে ফলাফল উলটানো] ব্যবস্থা আছে। এবং তা খুবই সুনির্দিষ্ট করে ফল আনতে পারে এমন বা  যেখানে যতটুকু ফলাফল পালটানো দরকার তা করার ক্ষমতা সম্পন্ন। এদিকটা তখন আমল করা হয় নাই। তাই বিপত্তি। আর এবারও অনেক কিছুই পরিবর্তন হলেও মোদি-অমিত শাহের হাতে ভোটের বাক্স ম্যানিপুলেশনের ব্যবস্থা বহাল ও অটুট আছে বলেই জানি। তাই এবার দূরে থেকেছি লিখা থেকে যদিও, এবারেরও খবরাখবর রাখছি কিন্তু কিছু লিখি নাই।

গতবারও এমন সব পর্বের নির্বাচনের পরে গণনার দিন শুরুর আগে এমন চারদিনের গ্যাপ ছিল। মনে করা হয় ঐ গ্যাপের দিনগুলোই মোদি-অমিতের চোখে এসব ম্যানিপুলেশনের উপযুক্ত সময় আর তা তখনই করা হয়ে থাকে বলে এপর্যন্ত যতটুকু জানা যায়। যেমন দেখেন, উপরে যে ছবিটা ব্যবহার করেছি সেটা ২০১৯ সালের নির্বাচনে বিবিসির একটা রিপোর্ট থেকে নিয়েছি। যেখানে তখনকার শিরোনাম ছিল কত এগ্রেসিভ বা উদগ্র আক্রমানাত্মক! শিরোনাম লিখেছিল – ভারতের নির্বাচন কমিশনের ‘হাঁটু কি এখন দুর্বল’!!!
সেসময়ের অমিত শাহ যিনি এখন কেন্দ্র-সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (তখন তিনি কোন মন্ত্রীই ছিলেন না, কেবল ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক) তিনি তখন এক টিভি লাইভ শোতে এসে বলেছিলেন বিজেপি ৩০০ পার করবে। ভারতে সরকার গড়তে ২৭২+ আসনে বিজয়ী হতে হয়। তো ৩০০ পার মানে হল ৩০০ এর বেশী আসন পাবে। সত্যিই তাই ঘটেছিল। ২০১৯ সালে, একা বিজেপির মোট আসন পেয়ে হয়েছিল ৩০৩।  মোদি সেসময় মানে ঐ টিভি শো এর দিন কাশী (উত্তরপ্রদেশের খুবই গুরুত্বপুর্ণ হিন্দুদের এক তীর্থস্থান মনে করা হয়) থেকে ফিরেছেন। সেখানে নাকি তিনি কয়েকদিনের ধ্যানে বসেছিলেন!!! সেবারের নির্বাচনের শেষদিনের আগেই  মোদি কাশীতে গিয়ে ধ্যানে বসেছিলেন তাঁর হরেক রকমের রংঢঙ আর প্রপাগান্ডার অংশ হিসাবে। তাই সেই শো তে তিনি অমিত শাহের পাশে বসে থাকলেও বেশী কথা বলছিলেন না। তবে অমিত শাহের সেদিনের ঘোষণা ছিল যে তারা ৩০০ আসন পার করবেনই, এটা শোনার পর থেকে আমার মনে গভীরতম সন্দেহ শুরু হয়েছিল যে অমিত শাহের কথাই সম্ভবত সত্য হতে যাচ্ছে! আমি বোকা হয়ে যাচ্ছি!

আগেই বলেছি অমিত শাহের কথা সত্য হয়েছিল; নিজ দলের আসন ছিল ৩০৩ আর সাথে বিজেপির নিজ জোট [NDA] এর আসন সহ মোট আসন হয়েছিল ৩৫৩। সেবারের মূলত এমন ম্যানুপুলেটেড বা হস্তক্ষেপ করা ফলাফলের কারণেই এবার ভারতের নির্বাচন নিয়ে কোন ধরণের লেখা লিখিই নাই। এড়িয়ে গিয়েছি। আর তাই এবার এটাই প্রথম লেখা। তাহলে আবার কেন ভোট পর্বের মাঝামাঝি সময়ে এখন লিখতে আসলাম?
সেসব আরেক কাহিনী যা বাংলাদেশেও ছড়িয়েছে। ছড়িয়েছে কারণ এবার এক প্রবল অনুমান হল, মোদি এবার নির্বাচনে নাকি হেরে যাবেন। আর তাতে কংগ্রেসের রাহুল এন্ড গং মানে তাদের জোট ক্ষমতায় আসলে আমেরিকার সাথে তাদের বিশেষ সম্পর্কের সরকার হবে সেটা।  তাই বলাই বাহুল্য এর প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের আয়ুসহ আনাচে কানাচে সেকারণে এখন বাংলাদেশে যাই ঘটছে বা ঘটবে সেসকল ঘটনার সাথেও এইসব (মোদি হারবেন ধরণের) কল্পিত-অনুমিত ঘটানাবলীর মিল আছে কিনা সেই জল্পনা-কল্পনাও প্রবলে উঠেছে।

যদিও এমন বহু ঘটনা – গুজব, আধা গুজব, আধা সত্যি  ইত্যাদি সবই কানে আসছে। তবুও ভারতের এবারের নির্বাচন নিয়ে আমার নিজ অবস্থান হল, মোদি-অমিত শাহের হাতে বাক্স ম্যানিপুলেশনের মেকানিজম নাই তা খর্ব বা অকেজো হয়ে গেছে একথা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত  শেষ বিচারে মোদির হারের কোন সম্ভাবনা (অন্তত আমার কাছে) নাই আর তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। যদিও এবার ইতোমধ্যেই এমনকি এখন ভারতের ইন্টেলিজেন্স প্রতিষ্ঠান -র- বলতে সেটা,  ‘মোদির র’ আর ‘কংগ্রেসি র’ বলেও ভাগের কথা উঠে গেছে, এমনটা সত্বেও!

এমনিতে রাহুলের কংগ্রেস বা তাদের জোটের [I N D I A] পক্ষে বাইডেন প্রশাসন এবার দাঁড়িয়েছিল বেশ আগেই।  আর তাতেই  মোদিকে বিপুল অর্থদাতা ও তাঁর অবাধে খরচে উৎস যে আদানি গ্রুপ; আর এর বিরুদ্ধে বাইডেন প্রশাসনের লেগে পড়াতেই তাতে এই গ্রুপের শেয়ারে ধ্বস নামিয়ে দিয়েছিল, বলে মনে করা হয়। ওপেন সোসাইটি খ্যাত বা হেজ ফান্ড ব্যবসায়ী জর্জ সোরেস নিজেই [একালে বিভিন্ন দেশের আভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে আমেরিকান হস্তক্ষেপের ধারা বজায় রাখতে যে অর্থের প্রয়োজন হয় তা যোগাতে আমেরিকা প্রশাসন আগের তুলনায় দুর্বল হয়ে গেছে; তাই সেই অভাব পূরণে অর্থের চালান যোগাতে এখন সবচেয়ে বড় যোগান দাতা হয়েছে এই ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশন নামের থিঙ্কট্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠান। পুরানা সোভিয়েত রাষ্ট্র ভেঙ্গে গেলে তা যে ১৫ রাষ্ট্র হয়েছিল এমন সব রাষ্ট্রেই আমেরিকান (এনজিও) হস্তক্ষেপ এর উসিলায় অর্থ ঢেলেছে এই প্রতিষ্ঠান। এটাকে তারা অরেঞ্জ রেভেলিউশন বলে ডেকে থাকে। ]
বাইডেনের হয়ে ভারতে  আদানির বিরুদ্ধে দাড়িয়েছিলেন জর্জ সোরেস; এক পাবলিক বক্তৃতা দিয়ে তিনি নিজে আদানির বিরুদ্ধে মার্কেট তাতিয়ে  ছিলেন। কিন্তু এতকিছু করে বাইডেন প্রশাসন আগিয়েও মাঝে হঠাত কংগ্রেসী রাহুলদের সব ততপরতায় ভাটা দেখতে পাই আমরা। রাহুলের জোটও অসংলগ্ন বা আভ্যন্তরীণ দ্বিধায় শ্লথ হতেই দেখেছিলাম। কিন্তু এবার ডোনাল্ড লু এর সফর [তিনি এমাসে বাংলাদেশে আসার আগে ভারত পরে শ্রীলঙ্কা সফর করে এসেছিলেন।] যেটা  বাইডেন প্রশাসনেরও ভাটা বা শেষ সময়ে সফর এটা; এবার তাঁর রুট ছিল ইন্ডিয়া-শ্রীলংকা হয়ে বাংলাদেশ।  আর লু এর এবারের ভারত সফরের পরে আমরা দেখি যে ‘ইন্ডিয়া’ জোটে সরব বা চাঞ্চল্য শুরু হয়েছে। ওদিকে ভোট প্রদান চতুর্থ পর্বে এসে অবজারভেশন বলছে, ভোটপ্রদানের হার নিম্নমুখি। আর ভারতের ভোট বিশ্লেষকেরা একমত যে  মোট ভোটপ্রদানের নিম্নহার (%) মানে তা মোদির ভোট  কম  হবার লক্ষণ।  আবার ওদিকে ইরানের সাথে মিলে চাবাহার [Chābahār ] সমুদ্র বন্দর চালু ও ব্যবহারের ততপরতা শুরু করেছে ভারত বহুদিন এই প্রকল্প পরিত্যক্ত থাকার পরে। যদিও আবার ততপর হওয়াতে বাইডেন প্রশাসন ভারতকে থ্রেট করেছে, নিষেধাজ্ঞা বা ব্যবস্থা নিবার হুমকি দিয়েছে।
ইত্যাদি এসব কিছু নতুন সব ঘটনাবলীতে মুল ঘটনা হয়ে উঠে আসছে বাইডেন প্রশাসন ও কংগ্রেসের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা অনেকদূর আগিয়ে গিয়েছে। আর তা থেকেই নিট ফলাফল হল, মোদির এবার হেরে যাওয়ার আলাপ, সম্ভাবনা বা গুজব উঠে আসছে তা বলা যায়। এককথায় বললে, বাইডেন প্রশাসনের কাছে, চলতি নির্বাচনে এক প্রো -আমেরিকান নয়া সরকার দেখতে চাওয়া হল তাদের প্রায়োরিটি। এই আকাঙ্খাটা খুব একটা কোথাও লুকানো ঠিক তা নয়। বরং কোথাও কোথাও এনিয়ে গভীর সব পরবর্তি পরিকল্পনা করতে বসে গেছে সংশ্লিষ্ট অনেকেই।  এমনকি তাতে কথিতভাবে মোদি আর অমিত শাহের মধ্যে গভীর দ্বন্দ্বের কথাও আবিস্কার করে রেখেছে অনেকে। অথচ এরা জানেনা মোদি-অমিত এরা দুজন ‘হরি আর হর এর মত’ হরিহরাত্মা!
আর এই মিলিত-আত্মার জন্ম হয়েছিল ২০০২ সালে গুজরাত কিলিং  বা মুসলমান নিধনের কালে যখন গুজরাটি মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন মোদি আর তাঁর ডানহাত ছিল এই অমিত শাহ, যিনি ছিলেন আবার ঐ মোদির রাজ্য সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী! এই যুগল একসাথে আরএসএস-কে হাত করে, প্রভাবিত করে বিজেপি থেকে – লাল কৃষ্ণ আদভানি এবং অন্য দু’জন নেতা মুরলী মনোহর যোশি ও উমা ভারতী (এরা তিনজন হলেন আদালতের খাতায় বাবরি মসজিদ ভাঙার মূল আসামি) সহ অন্যান্য সব বুড়াদেরকে বয়সের অজুহাত তুলে দলের সব কমিটি থেকে বিদায় করে দিয়েছিল!  এরপর গত দশবছর ভারতের ক্ষমতায় থেকে তারা যা যা করেছে তা কেবলমাত্র এদুই জনের আজীবনের প্লান ও খায়েস বলে মনে করা হয়। এদের মাঝে আর কেউ নাই। তবে লিডার কেবল মোদিই। কাজেই যারা মোদি- অমিতের বিচ্ছেদ বা দ্বন্দ্বের কথার গল্প ছড়াচ্ছেন এই বিচারে তারা তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে এখনও শিশু!
এছাড়াও, সবকথার শেখ কথা হল, মোদি-অমিতের হাতে যতক্ষণ ভোটবাক্স ম্যানিপুলেশনের সক্ষমতা আছে ততক্ষণ সব জল্পনা-কল্পনা অনুমান লু-তত্ব সবই ভুয়া আর অকেজো বলে হাজির হবেই বলে আমার ধারণা। মোদি আবার বিজয়ী হবেনই, সম্ভবত এভাবেই। এপ্রসঙ্গ আরেকটু কথায় শের দিকে আবার আসব। এর আগে উপরের কথা শেষ করে নেই।

 

সফটওয়ার ভিত্তিক বাক্স ম্যানিপুলেশনঃ
ততদিনে কানে আসছিল অন্য আরেক দিকের তথ্য, (দেশি-বিদেশি) ইন্টেলিজেন্স ইনফরমেশন যে মোদি ভোটের বাক্স বা ইভিএম বাক্স ম্যানিপুলেট (বাইরে থেকে প্রোগ্রামিং ব্যবহার করে ফল গণনা শুরুর আগেই হবু ফলাফল উলটে রাখা) করার সফটওয়ার সংগ্রহ করেছেন। অনুমান করা হয়ে থাকে এটা জুয়ারি শহর ম্যাকাও [Macao] আর- উত্তরকোরিয়া ভিত্তিক সফটওয়ার গ্রুপ যারা সাহায্য করছে বা করে চলেছে। অনেকে এমনকি এটাও মনে করেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ হ্যাকিংয়েও এই গ্রুপের কেউ কেউ টেকনিক্যাল কাজ ও দিকে এসব অর্থে ও সুত্রে জড়িত ছিল। তবে সবচেয়ে ভয়ংকর দিকটা হল, এদিকটা নিয়ে মানে ভারতের নির্বাচনে ভোটের বাক্সের স্বচ্ছতা রাখা নিয়ে যত আবেদন  বা দাবি এপর্যন্ত তোলা হয়েছে এর সবই হয় ভারতের নির্বাচন কমিশন নিজে বা সুপ্রীম কোর্ট – এরা সেসব নাকচ করে ফেলে রেখেছে। কখনও সুপ্রীম কোর্ট বলেছে এটা কমিশনের কাজের উপর হস্তক্ষেপ হবে তাই তারা কিছু করবে না; আবার কখনও  (নির্বাচন) কমিশনের  কাছে মামলা ফেরত পাঠিয়ে হাত ধুয়ে ফেলেছে। আর নির্বাচন কমিশন বেশির ভাগ সময় যেকোন পাবলিকের আবেদনের ক্ষেত্রে জবাবই দেয় নাই বা নাকচ করে ফেলে রেখেছে। এনিয়ে আমার অন্তত তিনটা পুরানা লেখায় এসব নিয়ে বিস্তারিত কথা বলেছি। বেশিরভাগ সময় ফেরত পাঠানোর যুক্তিতে বলা হয়েছে যে এতে নির্বাচন ব্যবস্থা ফলাফল দিতে দেরি করবে বা ম্যানুয়াল ভোটের মত হয়ে যাবে তাই এতে হাত দেয়া যাবে না। অর্থাৎ যেন স্বচ্ছ নির্বাচন করা এটা প্রধান বিবেচনা নয়; এর বদলে অস্বচ্ছ ও কারচুপির সুযোগ রেখে দেওয়া আর এভাবেই তাড়াতাড়ি ফল আসার নির্বাচনী ব্যবস্থা গড়ে তোলাটাই আদালত ও কমিশনের কাছে লক্ষ্য!
মজার কথা হল, এই অবস্থা সত্বেও কয়েকমাস আগে ভারতের প্রধান বিচারপতি বাংলাদেশে এসেছিলেন আমাদেরকে সবক শিখাতে যে ভারতের বা কোন দেশের নির্বাচন ব্যবস্থায়  সুপ্রীম কোর্ট আর নির্বাচন কমিশনের ভুমিকা কতই না মহান ও পবিত্র! আগ্রহিরা দেখতে পারেন এনিয়ে আমার পুরানা লেখা।

যেটা অনুমান করা যায় সারকথায়,  মোদির তৈরি এটা একটা বিরাট র‍্যাকেট; অর্থ ও নানান ব্যক্তিগত সুবিধার আয়োজন ঘটিয়ে এই সিস্টেমটা দাঁড় করানো হয়েছে মোদি আর অমিত শাহের জুটিতে।  এবং ততই খোলাখুলি তাদের কাজের ধরণ। যেমন ২০১৯ সালের নির্বাচনে আইনভঙ্গের জন্য অনেক প্রার্থীকে সতর্ক করে ফাইন বা শাস্তি দিয়েছিল কমিশন। কিন্তু মোদির নামে বহু অভিযোগ জমা পড়লেও বা স্থানীয় নির্বাচনী কমিশন কর্তারা একশনের অনুমতি চাইলেও কমিশনারেরা তাতে অনুমতি দেয় নাই। অর্থাৎ প্রার্থী মোদি বিরুদ্ধে নির্বাচনি আইন ভঙ্গের সব অভিযোগই ব্যবস্থাহীন পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে থেকেছিল সেবার।  ভারতের নির্বাচন কমিশন প্রধান-সহ তিন সদস্য বিশিষ্ট। এটা সব সময় তাদের দুই-এক ভোটে এমন সিদ্ধান্ত দিয়েছিল সেসময়। আর তৃতীয় সদস্য অশোক লাভাসা, তাঁর আপত্তি ভোট সবসময় সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেখিয়ে উপেক্ষা করা হয়েছে। সেই নির্বাচন শেষে কয়েক বছরের মধ্যে শেষে অশোক লাভাসাকে কমিশন ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছিল। আপোষ করে তিনি এখন ম্যানিলায় বিশ্বব্যাংক সমতুল্য এডিবি-তে ভারত সরকারের প্রতিনিধি হয়ে লটকে আছেন। মানে নির্বাচন কমিশন থেকে তাঁকে বের করে দেয়া হয়েছে কায়দা করে।
এমনকি এখনকার যে নির্বাচন কমিশন তা এবারের নির্বাচনী তারিখ ঘোষণার আগের সপ্তাহেও হয়ে পড়েছিল, এক সদস্য বিশিষ্ট; মানে কেবল প্রধান কমিশনার বিশিষ্ট। কারণ, আভ্যন্তরীণ আয়োজনে মোদি বাকি দুজনের পদত্যাগ করায়ছেন যাতে মোদি নয়া দুজন নতুন পছন্দের কমিশনার নিতে পারেন। তাই-ই হয়েছিল। আর এরপর তিন-সদস্য বিশিষ্ট হয়েই দুদিন পরে ঐ কমিশন এবারের নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণা করেছিল। আমাদের দুদকের মত তথাকথিত এমন নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান মোদির হাতে অনেকগুলো। যেমন সিবিআই [Central Bureau of Investigation], ইডি[Enforcement Directorate] ,  এনআইএ [National Investigation Agency], আইবি [Intelligence Bureau (India]; এছাড়া আয়কর বিভাগ আছে। আর এর বাইরে যে আর কত এমন প্রতিষ্ঠান আছে অগুনতি। কিন্তু সারকথা হল, বিভিন্ন রাজ্যের বিরোধীদলের বিরুদ্ধে মোদি্র এদের লাগিয়ে দেয়া, হয়রানি করা, বিজেপির সাথে আপোষে আসতে বাধ্য করাই এদের মুল লক্ষ্য হয়ে আছে মোদির ইচ্ছায়। এসবই মূলত পলিটিক্যাল স্বার্থে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের অপব্যবহার।
আর এর বাইরে গত পাঁচ বছরে ধরে চলেছে মোদির আরেক মারাত্মক ব্যবস্থা। এর আনুষ্ঠানিক নাম ইলেকটোরাল বন্ড [electoral bonds] স্কিম। সরকারী ব্যাংক স্টেট ব্যাংক [SBI] থেকে এটা কেবল যেন বিজেপি-কে চাঁদা আদায়ের এ’এক আজিব ব্যবস্থা। এই ব্যাংক আসলে বড় ব্যবসায়ীদেরকে এই বন্ড বিক্রি করে থাকে; কিন্তু কে কিনল সে পরিচয় পাবলিকলি দেখায় না। আর বিজেপি সরকার উপরে যে দুদক সমতুল্য প্রতিষ্ঠানের কিছু নাম দেখালাম, এদেরকে দিয়ে হয়রানির ভয় দেখিয়ে ঐ ব্যাংকে চাঁদা জমা করে আসতে মানে বন্ড কিনতে বাধ্য করে থাকে। এখাতে এখন পর্যন্ত প্রকাশিত তথ্য অনুসারে প্রায় একমাত্র সুবিধাভোগী হল বিজেপি। আর মোট এমন বন্ডের পরিমাণ ১২ হাজার কোটি রুপীরও বেশী। গত ২০১৯ সালের নির্বাচনের আগে থেকে এই ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল। এটা পাঁচ বছর লুটপাট করতে দিবার পরে এবার নির্বাচনের আগে সুপ্রীম কোর্ট বীর হয়ে উঠেছিল। তারা ওসব চাঁদাদাতা সবার নামের তালিকা চলতি নির্বাচনের কয়েকদিন আগেই একদিনের মধ্যে  প্রকাশ করতে “স্টেট ব্যাংক-কে পালনীয় বাধ্যতামূলক” বলে নোটিফাই করেছিল। আর তাতেই সব নাম বের হয়ে আসে। অথচ পাঁচ বছর আগেই একাজ তারা করতে পারত।
সবচেয়ে বড় কথা উপরে যেসব ইনভেস্টিগেশন প্রতিষ্ঠানের অল্পকিছু তালিকা দিয়েছি সেগুলো অপব্যবহার করেই বিজেপি সব বিরোধীদল আর ব্যবসায়ীদেরকে সাইজ করে গেছে যাচ্ছে। অথচ না সুপ্রীম কোর্ট বা নির্বাচন কমিশন এদিকে তাকায়-ই নাই। এটাই মূলত মোদির নামে এখন ফ্যাসিজমের অভিযোগ তুলেঅনেককে আগিয়ে আসতে দেখছি। কিন্তু এমন অভিযোগ তোলার ক্ষমতা এখনও যেন তাদের দেশের বাইরে – বাইডেন প্রশাসনের হাতে! এমনই দুর্দশা!

আর এমন মোদি-ব্যবস্থার মধ্যেই আবার এবারের নির্বাচন হচ্ছে! আর কোর্ট বা কমিশন এব্যাপারে নির্বিকার! দেখেন এটা কমবেশি এখন সবাই জানে যে সরাসরি মুসলমানবিদ্বেষ করে ঘৃণা জাগিয়ে মোদি ভোটের প্রপাগান্ডা পরিচালনা চালিয়ে যাচ্ছে! অথচ এটা ঠেকানোই ছিল কোর্ট এবং কমিশন   এর মুখ্য দায়ীত্ব! কিন্তু এরা নির্বিকার! এটাই প্রমান করে ভারত কোন চুলায় মাথা লুকায়েছে! অথচ সমাজ অসহায়! এমনকি মোদিকে ফ্যাসিবাদ বলতেও যেন সাহস করছে না!

এখন দুইটা শেষ কথাঃ
অনেকাংশেই কথাগুলো বলব ভারত-ইরানের চাবাহার পোর্ট কে কেন্দ্র করে। সম্প্রতি ইরান-ভারত চুক্তি হয়েছে। আর তাতে পোর্ট পরিচালনা ভারতকে দেয়া হয়েছে। আর তাতেই আমেরিকা ভারতকে কড়া স্যাংশনের হুশিয়ারি দিয়েছে।

১। এই নির্বাচনে মোদি ফিরে জিতুক কিংবা বিরোধি কোয়ালিশন জিতুক – একটা মূল কথা হল, ভারত ক্রমশ আমেরিকা থেকে দূরে যেতে থাকবে।  মানে ততই ভারত একেবারে চীনের কোলে উঠে না গেলেও অন্তত নিউট্রাল বা একধরণের গভীর ব্যবসায়িক সম্পর্ক করতে অনেক ধাপ আগিয়ে যাবে। এককথায় বললে, চীন-ভারত উভয়ের স্ট্রাটেজিক স্বার্থ বিষয়ক দুরত্বটা ফিকে হতে থাকবে। আর ব্যবসায়িক স্বার্থ ততই ওর জায়গা নিবে।
বাংলাদেশের গত কথিত নির্বাচনের কয়েকদিন আগে আমি লিখেছিলাম আমেরিকা আমাদেরকে রাস্তায় ফেলে চলে গেলে তা এশিয়া থেকেই আমেরিকার বিদায়ের সুত্রপাত ঘটবে। এখানে সেই কথাটাই বলছি তবে আরেক ভাবে আরেক দিক থেকে। এবার মোদি ক্ষমতায় নিজেকে বিজয়ী দাবি করে টিকে গেলে ইন্ডিয়া-আমেরিকার সম্পর্কের পতন ও পারস্পরিক দুরত্ব ঘটবে খুবই দ্রুত। আর যদি কংগ্রেস এন্ড গং জিততে পারে তবে সাময়িক এই নয়া সরকার আমেরিকা-ঘনিষ্ট বলে নিজেদের দেখানো শুরু করবে। কিন্তু সেটা হবে সাময়িক ক্ষীণ আয়ুর এক ঘটনা। মানে জমবে না। অচিরেই একেবারে সাধারণ ব্যাবসায়িক স্বার্থের বিরোধ বাধা হবে।
যেমন ধরা যাক, ভারত-ইরানের চাবাহার পোট [Chabahar Port ]। এটা এদুই দেশের জন্যই গুরুত্বপুর্ণ , তবু ভারতের জন্য বেশী।  পাকিস্তানের গোয়াদর গভীর সমুদ্র বন্দর ভারত পুরানা ক্যাচালের কারণে ব্যবহার করতে পারবে না। এর মানে হল, সেন্ট্রাল এশিয়া বা আফগানিস্তানে (ল্যান্ডলক দেশ) পণ্য পাঠাতে অসুবিধায় পড়তে হবে। অথচ ঐ রুটে শুধু গোয়াদরের সুবিধা না। আর গোয়াদর ব্যবহার করতে পারলে এরপর ওদিকে চীনের বেল্ট-রোধ ধরে একদিকে একেবারে ইউরোপ পর্যন্ত ট্রেন বা সড়ক পথে পরিবহনের যে সুবিধা; অন্যদিকে ইরান থেকে পুবে সেন্ট্রাল এশিয়া আফগানিস্থান যে সড়ক ও রেল সুবিধা তৈরি হয়েছে তা থেকে ভারত বঞ্চিত হয়ে আছে।  এসব কিছুরই অন্তত এক ছোট বিকল্প হলেও চাবাহার ভারতের জন্য এক ভাল বিকল্প ও বাস্তবতা।
কিন্তু আমেরিকা ইরানের সাথে কোন সম্পর্কই রাখা যাবে না কেউ রাখলে তার উপর স্যাংশন দেয়া হবে – এই হুশিয়ারিই আমেরিকার এশিয়া থেকে বিদায় হয়ে যাবার পথেই তাকে কয়েক ধাপ ঠেলে দিবে। কারণ, ভারতে মোদি অথবা রাহুল যাদের সরকারই আসুক কারোই চাবাহারের পক্ষে না থাকার বিকল্প নাই। কারণ, এটা ভারতের জন্য বিরাট এক বাণিজ্যিক সুযোগ। কাজেই আমেরিকা বিরোধিতার পথেই ভারতকে যেতে হবে।

আবার সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ  আরেকদিকের কথা বলিঃ
ইরানের ভারতকে দেয়া এই অফার – এবিষয়ে আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি এতে চীনের সম্মতি আছে। আর আছে বলেই ইরান সহজেই এতদুর আগিয়ে পোর্ট পরিচালনার ভার ভারতকে দিয়ে দিয়েছে। যেখানে আমেরিকান সুবিধা খেতে ট্রাম্পের আমলে ভারত ইরানের হাত ছেড়ে পালিয়েছিল। সেসময় ইরান তেল ভারতে পৌছে দিতে চেয়েছিল তাও ভারত ইরানের তেল কিনতে রাজি হয় নাই। বরং রাজি না হয়ে এই সিদ্ধান্তকে বিক্রি করে আমেরিকার থেকে সুবিধা নিয়েছিল। সেই থেকে চাবাহার প্রায় পরিত্যক্ত হয়ে গেছিল। কিন্তু প্রতিশোধ ভুলে এখন ইরানের আবার আগানো এটা চীনের আগ্রহ ও প্ররোচনাতেই বলে অনুমেয়। চীনের ক্যালকুলেশন পাকা যে ইরান এই সুবিধা দিলেই ভারতের আমেরিকার বিরোধিতা বাস্তবতা হয়ে উঠবে।  আর সেটা দেখতেই ইরানকে দিয়ে এই অফার। বাণিজ্যিক দিক থেকে এতে ইরানেরও তো ক্ষতি নাই।
আবার এ’ঘটানার মাধ্যমে চীন ভারতের কাছে ম্যাসেজ দিয়েছে যে ভারতেরও বাণিজ্য সুবিধা কার্টেল / ছেটে ছোট করা চীনের নীতি নয়, তাতে চীন-ভারত যতই বিরোধ থাকুক। আসলে চীন ভারতকে বলতে চায় ভারতও গোয়াদর ডিপ পোর্ট হয়ে বেল্ট-রোড ধরে সেন্ট্রাল এশিয়া বা আফগানিস্থানে বা অন্যদিকে, ইউরোপ পর্যন্ত চীনা বেল্ট-রোডের রেল ও সড়ক ফেসিলিটিজও ব্যবহার করতে পারে। চীন এনিয়ে বাধা তৈরির বদলে পজিটিভলি আহবান জানাচ্ছে। ভারতের অর্থনীতি বিকাশে চীনের ক্ষতি নাই, লাভ আছে। এছাড়া সবচেয়ে বড় লাভ দক্ষিণ এশিয়া থেকে আমেরিকাকে আউট করা হবে তাতে। কারণ, আমেরিকা ভারতে পা রাখতে সুযোগ পায় বলেই বার্মা, বাংলাদেশের মত দেশে যা খুশি করার চেষ্টা করে থাকে।
এখন মোদি ক্ষমতায় ফিরলে আমেরিকা-ভারতের সম্পর্কের ইতি দ্রুত ঘটবে। আর আমেরিকা ভারতের উপর স্যাংশন দিলে তাতে ভারতও দ্বন্দ্ব ভুলে বাধ্য হয়ে ডলার ফেলে ইউয়ানে বাণিজ্য শুরু করে দিবে।  আবার যদি কংগ্রেস কোয়ালিশন ক্ষমতায় আসে তাহলেও এটাই ঘটবে। হয়ত শুরুর এক বড় জোর দুই বছর একটু আমেরিকান-ভারত (কংগ্রেস) ঘষাঘষি জারি থাকবে। আর ক্রমশ সেটা ভারতের বাণিজ্য স্বার্থেই হবু কংগ্রেস সরকারও একই পথ ধরবে। খুব সম্ভবত সেক্ষেত্রে মোদির চেয়ে দ্রুতই কংগ্রেস চীনের কোলে গিয়ে উঠার সুযোগ নিতে চাইবে।

২। মোদি যদি ক্ষমতায় ফিরতে পারেনঃ
সেক্ষেত্রে এটা চরম দানব এক মোদি হবে। বিরোধী বলে কারো অস্তিত্ব নিয়ে টিকাই মুশকিল হয়ে যাবে। ইতোমধ্যেই কানাঘুষা তিনি ভারতের কনষ্টিটিউশনেও হাত দিবেন।  এই ধারা যতই তীব্র হবে হিন্দুত্ববাদী – এই উগ্র জাতিবাদি মোদির ভারত ততই পরিণতিতে বিচ্ছিন্নতা বাদের মুখোমুখি হবে। আর তা ঘটে গেলে ভারত মেজর তিন টুকরা হবে। মোদি এখন ক্ষমতায় টিকে আছে ভারতরাষ্ট্র গঠনগত দিক থেকে এক সেন্ট্রালাইজড কুক্ষিগত ক্ষমতার আর এর উপর আবার উগ্র হিন্দু-জাতিবাদি রাষ্ট্র বলে। আবার এটাই আবার মোদির আগামিতে ক্ষমতায় উত্থান ঘটলে এই গঠন বৈশিষ্টই মোদির ভারতকে ভাঙ্গনের দিকে নিয়ে যাবে দ্রুত!

সব মিলিয়ে ভারতের প্রতিটা পরিবর্তনের ধাক্কা চাপ (এমনকি শরণার্থীর) বাংলাদেশে এসে আছড়ে পড়তে পারে সেক্ষেত্রে! বাকি যা কিছু পাঠক আন্দাজ করে নিয়েন। এই হল, আগামি দিনের দক্ষিণ এশিয়ার কিছু বিচ্ছিন্ন চিত্র!

লেখকঃ
গৌতম দাস, রাজনৈতিক বিশ্লেষক
goutamdas1958@hotmail.com

[এই লেখা কোন নিউজ নয়, ব্যক্তির নিজস্ব রাজনৈতিক বিশ্লেষণ মাত্র। ফলে পাঠকের এ’লেখা পড়ে কিছুই বহন করা বা মান্য করার বাধ্যবাধকতা নাই। কেবল জানলেন যে এমন একটা মতামত আছে!]

আপডেটঃ    ১৭ মে ২০২৪  সন্ধ্যা ০৭ঃ ১৮
শেষ আপডেটঃ   ২৪ মে ২০২৪  বিকাল ০৩ঃ ৫৫

Leave a comment